aurnabarc.wordpress.com লাখো শহীদের রক্তলাভায় প্লাবিত হয়ে যখন স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান ঘটেছিল তখন আমজনতা কিংবা মন্ত্রী মহোদয়ের ভাষ্যমতে আমাদের মতো টোকাই ছাত্রসমাজ সবাই ভেবেছিল স্বাধীন বাংলাদেশের জমিনে আর কখনো রক্ত ঝরবে না। আজ আমরা স্বাধীন, কতটুকু স্বাধীন সেটা বলার সাংবিধানিক অধিকার আমাদের নেই তবু এটুকু আমরা জানি আমাদের এখনো অধিকার আদায়ে, নিজের দেশের সম্পদ পাচার বাঁচাতে কিংবা মা বোনদের ইজ্জত লুঠকারী পিশাচদের বিচারের দাবিতে মাঠে নামতে হয়। কোন বৃটিশ বাহিনী বা পাকসেনা নয় আমাদের দেশের জনগণের দেয়া রাজস্বে লালিত পুলিশ বাহিনীর আক্রমনে আমাদেরকেই রক্তাত্ব হতে হয়। সেইসাথে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সংসদ গঠনকারী সরকারের ভূমিকায় মুখের কথা সেমিনার আর মিটিং মিছিলের গণতন্ত্র বার বার ভূলুণ্ঠিত-লাঞ্ছিত হয়ে ক্রমশ এক সংকটময় অবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।
আমার লেখার বিষয়বস্তু এটি না হলেও সমসাময়িক বাস্তবতায় এই অপ্রাসঙ্গিক বিষয়টি নিতান্ত প্রাসঙ্গিক ও যৌক্তিকভাবে কেন? কিভাবে আলোচনার টেবিলে স্থান পায় তা আমরা সবাই জানি।
একাত্তরের ইতিহাসে ফিরে গেলে দেখি হানাদার পাকবাহিনী আর তাদের দোসরদের হাতে মা বোনদের সম্ভ্রমহানির পর যখন স্বাধীনতার লাল সূর্য কিনতে পেরেছিলাম তখন কেউ ভাবিনী আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশেও আমাদের মা বোনদের নির্যাতিত হতে হবে আর তাদের জন্য একাত্তরের মর্চে ধরা হাতিয়ার গুলোতে আবার শান দেয়ার চিন্তা করতে হবে কিংবা গলায় প্লাকার্ড ঝুলিয়ে রাস্তায় নামতে হবে। একাত্তরে নির্যাতিত মা বোনদের চিৎকারে যখন বাংলার আকাশ ভারী হয়েছিল তখন আমরা কিছুই করতে পারিনি তবুও জবাব দিয়েছিল হাতের উদ্ধত স্টেনগান, নির্যাতনকারী পকিস্তানিরা পালিয়েছিল, গা ঢাকা দিয়েছিল তাদের দোসররা। আর সেই সময়ে সবাই স্বাভবিকভাবে ভেবে নিয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশ অন্যরকম কিছু একটা হবে যেখানে আর যাই হোক মা-বোনদের সম্ভ্রম নিয়ে কোন ভাবনা থাকবে না। কিন্তু খোদ মন্ত্রী মহোদয়ই যখন বলেন আমরা নাকি টোকাই তখন আমাদের ভাগ্য এতো ভাল কিভাবে কেনই বা আমরা রঙিন স্বপ্ন দেখি। হায় আফসোস !! পলাশীর প্রান্তরের সেই বিশ্বাসঘাতক বাঙালি আজো বাঙালিই থেকে গেছে স্বাধীন বাংলাদেশের আলোবাতাসে চার চারটি দশক পার করলেও স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশী হতে পারেনি।
আমাদের দুই হাত আইনের বেড়াজালে বাঁধা আমাদের চারপাশ ঘিরে রেখেছে সংবিধানের মতো একটি শক্তিশালী বেষ্টনী তাই আর একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে ওঠার পথ চিরতরে বন্ধ। আমাদের মুখ গনতন্ত্রের লেবাসে বার বার সিলগালা করে দেয়া হচ্ছে যার প্রমান হিসেবে দেখেছি অন্যায়ের প্রতিবাদকারী একটি দৈনিকের বন্ধ হয়ে যাওয়া আর পত্রিকাটির সম্পাদকের দীর্ঘদিন কারারুদ্ধ থাকা।
আমরা আতঙ্কের সাথে লক্ষ্য করছি একাত্তর ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের পাশাপাশি আর একটি সারমেয় গোষ্ঠী সবার অগোচরে জন্ম নিয়ে পুরো জাতির উপরে অনেকটা ঘোড়ার জীনের মতো জাতির পিঠে সওয়ার হয়েছে আর সুযোগ বুজে জাতির উদরে একের পর এক লাথি কষে যাচ্ছে। এই সব শুশীল নামধারী জোঁকদের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাবে সমর্থন পুষ্ট হয়ে একের পর এক অপকর্ম করার পথ পাচ্ছে অপরাধীরা। এই সব মুখোশধারী শয়তান একদিকে সরকারের পদযুগল পরিচ্ছন্ন রাখতে সদালেহনে ব্যস্ত থাকে অন্যদিকে বিরোধীদলের হরতালকেও বৈধতা দেয়।
এই তো এই রকম এক মহৎপ্রাণকে বলতে শুনেছি ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হরতালের আওতামুক্ত রাখা হোক’ । কিন্তু উনি বেমালুম ভুলে গেছেন এটা বাংলাদেশ টেক্সাস কালিফোর্নিয়া নয়। আমরা গরিব বাংলাদেশী আমরা চলচল করি বাসে, টেম্মুতে বড় জোর কারে। আপনার দাদা হয়তো জমিদার ছিলেন কিংবা সরকারে পদলেহন করে উপার্জিত অর্থে আপনার জন্য একটা ঘোড়া ক্রয় করা সহজ। আর আপনি আপনার ঘোড়ায় চড়ে ক্লাসেও যেতে পারবেন।
আমরা কেউ ঘোড়া ব্যবহার করি না যাতে চড়ে আমরা স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব। হ্যা আপনি কি তাহলে আমাদের কোলে করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে পৌছে দিবেন। জি হ্যা আপানাকেই বলছি। আমেরিকার ফুটপাথ থেকে ১০ ডলারে ৩০ টা সায়েন্স ফিকশন কিনে এনে তার অনুবাদ করে মনে মাধুরী মিশিয়ে সাইয়ান্স ফিকশনের বাংলারূপ তৈরী করে সস্তায় জনপ্রিয় লেখক হওয়া যায়। আর দুই চারটে গদাই এর মতো মন্তব্য করে খবরে আসা যায় ।
আপনি যদি খবরে আসতে চান আসুন। তবে শুধু এটুকুই বলবো বাস্তবতা আর খবর অনেক দুরের কথা।
আপনি আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলতে পারেন। ওখানে হল আছে এটা বলতে পারেন কিন্তু আপনি কিভাবে নিশ্চিত হলেন আপনাদের মদদে লালিত সোনার ছেলেদের প্রভাবে ওখানকার সকল ছাত্র হলে থাকে?? তাহলে কি হলের বাইরের ছাত্রদের আপনি নিজ দায়িত্বে কোলে তুলে পৌছে দিবেন। মাইরি বলছি আপনার কোলে উঠতে কিন্তু কেউ অখুশি হবেনা।
কিছুদিন পূর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রুমানা মনজুরের স্বামী নামের কলঙ্ক সাইদ যখন তাঁর নাক খুবলে খেয়েছিল তখন আমাদের তথাকথিত শুশীল সমাজ টিভি চ্যানেল আর সংবাদ মাধ্যমগুলোতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বাক্যবানে জর্জরিত করেছিলেন দেশের পুরুষ সমাজকে। আর সাইদের মতো একজন নপুংশককে মডেল ধরে দেশের সকল পুরুষকে দুষতে অর্থলোভী এই সব শুশীলদের আক্কেল গুড়–ম ধরণের চিত্ত কিঞ্চিত বিচলিত হয়নি। কিন্তু অর্থযোগের বিলম্বে এই সকল শুশীলদের মুখ খুলতে যে বিলম্ব দেখা দিয়েছিল তাতে পেরিয়ে গেছে অনেকটা সময়। পরে জানাগেল এই সাইদ নাকি কোন এক মন্ত্রী মহোদয়ের ভাতিজা। আসলে শুশীল নাম তো একটা ব্রাণ্ড এটা সবাই পছন্দ করে।
জনগণের পাশে দাড়ালেই বরঞ্চ বিপদ। একে সরকারের হুমকি-ধামকি, পুলিশের ধোলাইয়ের আশংকা বৈকি লাল দালানের অন্নে উদর পুর্তির সমূহ সম্ভাবনা। কিছুদিন আগে যখন নারী নীতি ঘোষণার পাশাপাশি আমাদের দেশের টিভি চ্যানেল আর সংবাদপত্রগুলো মোটা অংকের অর্থলগ্নি করলো এই সব ‘মহা পণ্ডিত’ শুশীলদের অত্যাচারে সংবাদ পত্রের সম্পাদকীয় পাতা খুলতেই ভয় হতো ।
বাদশাহ আকবর বীরবলের সহায়তায় এক রাজাকে একপাত্র জ্ঞান পাঠিয়েছিলেন কিন্তু আমাদের টিভি চ্যানেলে প্রচারিত টক শো গুলোতে যে প্রশান্ত মহাসাগর তুল্য জ্ঞান বন্টন শুরু হলো রাত বারোটা নাগাদ জনগণ টিভি চ্যানেল টিউন করাই বাদ দিয়ে দিল। সকল অপরাধীর অপরাধ আড়াল করে ইভটিজিং আইনের নাম সংকীর্তনের এতটাই মাতোয়ার হলো তারা যেখানে বাস্তবতার কোন যোগই থাকলো না।
এই সকল ‘মহা পণ্ডিত’ দেশের নারী সমাজের অধিকার হরণের জন্য কেবল মাত্র পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে দায়ী করে একের পর এক নিজেদের বানানো ফতোয়া জারি করতে শুরু করেন। যেখানে আইন করে আমিনীর মতো হুজুরদের ফতোয়া জারি করা আমাদের সরকার বন্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু আমি আইনের ছাত্র না তাই জানি না ওই আইনে কি বলা ছিল ‘ফতোয়া জারি হুজুরদের জন্য নিষিদ্ধ শুশীল বাচালদের জন্য নয়’। আর সাইদের মতো কিছু নপুংশকের অপকর্ম এই সব বাচালদের সামনের মডেল হিসেবে দাঁড়ালে নারী নীতির প্যাচালে মুখে ফেনা তুলার কাজ আরো অনেক সহজ হয়ে যায়। এই সব স্বঘোষিত পণ্ডিত বাচালদের প্যাচাল শুনে আমার মনে হয়েছে ‘অক্ষম পুরুষদের অক্ষমতাকে সক্ষমভাবে জনতার সামনে উপস্থাপনে সস্তা জনপ্রিয়তা লাভের অপচেষ্টাই নারীবাদ’।
বেশ কিছু দিন পিছিয়ে গেলে ইভ টিজিং ও নারী নীতি বিষয়ক সরকারী নীতিমালা প্রকাশের পর বিষয়টি যখন হটকেক ঠিক তখনই আমাদের দেশের বেশ কিছু মডেল অভিনেত্রীর সাথে তাদের প্রাক্তন ছেলেবন্ধুর ফস্টি-নস্টির ভিডিও চিত্র প্রকাশিত হয়। আমাদের দেশের নারী নীতিতে মেয়েদের প্রতি কোন অশ্লীল উক্তি করা, অঙ্গভঙ্গির করার জন্য যেখানে শাস্তির বিধান হয়েছে তার নগ্ন চিত্র দুনিয়ার সারা দুনিয়ার মানুষের সামনে প্রকাশ করায় কি শাস্তির বিধান সেখানে ছিল না ? কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে অনেকে বর্তমান ঘটনায় ভিকারুননিসার হোসনে আরা স্টাইলে বলেছিলেন বিষয়টিতে দুই জনের সম্মতি ছিল। তাহলে আপনাদের কথায় মেনেই নিলাম আপনারা বেশ্যবৃত্তিকে বৈধতা দিলেন। তাই বলে এই ভিডিও ক্লিপস এখনকার ডিজিটাল(?) যুগের প্রতিটি যুবক, কিশোর এমনকি শিশুদের মোবাইলে যখন ছড়িয়ে পড়েছে তাদের নৈতিকতাকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে এই বিষয় বিবেচনা করে শিশু অধিকার আর শিশুবিষয়ক সংগঠন গুলোর ও কিছু করার ছিলনা। সেই প্রভা-রাজিব থেকে শুরু একে একে আরো অনেক অভিনেত্রীর ভিডিও ক্লিপ নিজেরাই বাজারে ছেড়ে খবরে আসার চেষ্টা আমরা দেখেছি।
আমি মানলাম ব্যাঙের সর্দি হয়না। যারা ক্যামেরার সামনে অর্ধউলঙ্গ পোজ দিতে পারেন তাদের নগ্নচিত্র বাজারে এলে তাদের কিছু হবে না। কিন্তু দেশের যুব সমাজ আর শিশু কিশোররা যে উচ্ছনে যাচ্ছে তার দায় ভার কে নেবে। কয়দিন আগে ঘটে যাওয়া ভিকারুননিসার ঘটনায় ঠিক ওই ঘটনার ই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। রাজিবের কোন শাস্তি না হওয়াতেই যেন অনুপ্রাণিত হয়ে নরাধম পরিমল অসহায় কিশোরীকে হাত পা বেঁধে ধর্ষণ করেছে।
তার ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করেছে আর ইন্টারনেটে তা ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে বারংবার তাকে ব্লাকমেইল ও করেছে। আসলে প্রশাসনিক কাঠামো যেখানে কিছু মেরুদণ্ডহীন কর্তাব্যক্তির প্রভাবে জর্জরিত সেখানে এটা অবাস্তব ঘটনা নয় বরং একান্ত বাঞ্চনীয় ঘটনা। অন্যদিকে প্রায় প্রতিদিনই দৈনিক পত্রিকায় নজর দিলে চোখ পড়ে বাসায় গৃহকর্মী নির্যাতনের খবর। আমার দেশ পত্রিকার সাহসী একজন রিপোর্টার তুলে ধরেছিলেন দেশে গৃহকর্মী নির্যাতন কতটা মারাত্বক পর্যায়ে পৌছেছে। নির্মম নির্যাতনে গৃহকর্মীর মৃত্যুর পর আমরা পত্রিকায় পাতায় দেখেছিলাম একজন দ্বিতীয় শ্রেণীর অভিনেত্রী যার বিরুদ্ধে বেশ্যাবৃত্তি আর পর্ণগ্রাফীরও ঢের অভিযোগ আছে সেই নিশি গ্রেপ্তার হয়েছিল।
কিন্তু কোন বিচারে তার শাস্তি হয়েছে এমন কোন খবর পত্রিকার পাতায় আসেনি। কয়েকদিন পূর্বে ঘটে যাওয়া ঘটনায় দেশের যুব সমাজ সোচ্চার হলে সাইদ গ্রেপ্তার হয় । কিন্তু তাকে আদেও শাস্তির আওতায় আনা হবে কিনা এ নিয়ে জনমনে সংশয় এখনো কাটেনি।
আর ভিকারুননিসার মতো দেশের প্রথম শ্রেণীর একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ন্যাক্কার জনক ঘটনা ঘটার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের হটকারী বক্তব্যের জন্য তার শাস্তি ছিল আবশ্যিক। তিনি এই নির্মম নির্যাতন আর ধর্ষণের ঘটনাকে মিউচুয়াল এর মাধ্যমে সংঘটিত ঘটনা বলে দাবি করেছিলেন।
কিন্তু দেশের প্রচলিত আইন একজন নাগরিক হিসেবে আপনাকে বেশ্যাবৃত্তি করার অধিকার দিলেও কোন শিক্ষককে তার কিশোরী ছাত্রীর সাথে সমঝোতামূলক নির্যাতন করার অধিকার দেয়নি এটা আপনি বেমালুম ভুলে গেছেন। তাইতো আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ২০১০ প্রকাশিত মানবাধিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে ইভ টিজিং আর নারী নীতিমালা প্রকাশ করা হলেও আশংকাজনক হারে নিপীড়নের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। কেবলমাত্র বিগত ২০১০ সালেই ৬২৫টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের মেরুদণ্ডহীন আচরণে মামলা হয়েছে মাত্র ৩২৩টি। অবাক করার মতো বিষয় এই ক্ষেত্রে ২৯ জন নারীকেই অমানুষিক নির্যাতন আর ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয়েছে। আতœহত্যাও করেছে পাঁচ নারী।
গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৪৫ জন। কিন্তু আমাদের পদলেহী বাচাল শুশীল সমাজ নিজেদের অবস্থানের দায় মেটাতে প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়েও এব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি। আমি নারী নীতির স্বপক্ষে বেশ কিছু উপসম্পাদকীয় লিখে একে তীব্র সমর্থন জানালেও আজকে এর অসারতা পুরোপুরি ধরতে পারি। তথাকথিত নীতিমালা প্রকাশের পরে ২০১০ সালে মোট ৯৩টি এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটলেও মামলা হয়েছে মাত্র ৩৯টি। দেশের শুশীল সমাজ যৌতুক আর পারিবারিক অশান্তিকে বার বার দায়ী করলেও এই ৯৩ টি ঘটনার মাত্র ২১টির সাথে পারিবারিক সমস্যা জড়িত।
বাকিগুলো প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান আর পরকীয়ার জের ধরে হয়েছিল। একটা কথা বলে রাখা ভাল এখানে যে লোকদেখানো মামলাগুলো করা হয়েছিল তার বদৌলতে কোন অপরাধীর সাজা হয়েছে পতিকার পাতায় হারিকেন ধরিয়ে খুজেও তার নজির পাওয়া যাবে না। পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় আসাদের সুপ্রিম কোট থেকে ২০১০ সালে নারী নির্যাতনের বিচারাধীন মামলার যে পরিসংখ্যান জানা যায় সেখানে ৬৬হাজার ৮১৭টি বিচারধীন মামলা ছিল । নারী নীতিমালা প্রকাশের পর ২০১১ এসে সেই সংখ্যা কমে নি বরঞ্চ সেই মামলার ফাইলগুলো জমে দিনকে দিন হিমালয় সমান উচু হয়েছে আর আইনজীবিদের পকেট পুরার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১১ সালের জানুয়ারী মাসে এই সংখ্যা ছিল ৭৩হাজার ৮৫১টি বর্তমানে কি হয়েছে তা আল্লাহ মালুম।
আমাদের দেশের প্রচলিত তথাকথিত গনতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে যেমন কথা দেয়া হয় কথা ভঙ্গ করার জন্য তেমনি দেখি আইন করা হয় আইনের ফাঁকে অপরাধীকেই নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। আর মামলা করা হয় মামলার নিষ্পত্তি না করে আইনজীবি আর সরকারী আমলাদের পকেট ভরানোর জন্য। এই প্রচলিত বস্তাপচা নীতির শেষ না হলে দেশের মানুষ সুবিচারের জন্য কার কাছে যাবে। আর দিনের পর দিন বিচার না হওয়া আর একটি পদলেহী বাচাল গোষ্ঠীর আজন্ম কাপুরুষোচিত আচরণ এই দিনের পর দিন জু দেবে এই সব পরিমল সাইদ নিশিদের। যাদের অপকর্মে একদিকে যেমন পুরো জাতি ছি ছি করবে অন্যদিকে তাদের কাজে সাফাই গাওয়ার লোকের ও অভাব থাকবে না ।
তাই যুব সমাজকে এখন সোচ্চার হতে হবে। এই সব পদলেহী শুশীল নামধারী দেশের শত্র“দের চিহ্নিত করতে হবে। মেরুদণ্ডহীন প্রশাসণকে শক্তিশালী করার গুরুদায়িত্ব স্বেচ্ছায় কাঁধে তুলে নিতে হবে। তবেই এই সব পরিমল সাইদদের ইতিহাসের পাতায় ইতি টানা সম্ভব হবে। নয়তো চিরদিন এরা এদের অপকর্ম চালিয়ে যাবে আমাদের রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হবে আর কোন মন্ত্রী আমাদের টোকাই বলে মজাও করবেন।
মোঃ আদনান আরিফ সালিম অর্ণব
ব্লগার ও কলামিস্ট
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।