পথ হারানোর কথা স্বীকার করে ১৬৮ বছর পর শেষ হলো ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ডের পথ চলা। পাঠকের কাছে ক্ষমা চেয়ে আজ রোববার বিদায় নিল ব্যাপক আলোচিত ও সমালোচিত পত্রিকাটি।
এত দিন চমকপ্রদ খবরই ছিল পত্রিকাটির সম্বল। কিন্তু আজ তার শিরোনামে বিচ্ছেদের করুণ সুর। শেষ সংখ্যায় সাদামাটাভাবে ‘থ্যাঙ্ক ইউ, অ্যান্ড গুডবাই’ বলে পাঠকের উদ্দেশে বিদায়ের জানান দিল পত্রিকাটি।
রাজ পরিবারের সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেকের টেলিফোনে আড়িপাতার অভিযোগ মাথায় নিয়ে জনপ্রিয় এই পত্রিকাটির শেষ সংখ্যা প্রকাশিত হলো আজ। দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে পত্রিকাটির সম্পাদক কলিন মাইলার বলেছেন, ‘আমরা এটা চাইনি, আমরা এটার উপযুক্ত নই। ’
নিজেদের কৃতকর্মের জন্য পত্রিকাটির শেষ সংখ্যার ভেতরের পৃষ্ঠায় পাঠকের কাছে ক্ষমা চেয়েছে কর্তৃপক্ষ। পৃষ্ঠাজুড়ে লেখা সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘সামগ্রিকভাবে আমরা আমাদের পথ হারিয়েছি। ’
যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া এ পত্রিকাটির শেষ সংখ্যা সাজানো হয়েছে বিভিন্ন সময় প্রকাশিত সংখ্যার প্রচ্ছদ দিয়ে।
শেষ সংখ্যার প্রচ্ছদে লেখা হয়েছে, ‘১৬৮ বছর পর আমরা দুঃখের সঙ্গে ৭৫ লাখ পাঠকের কাছ থেকে গর্বের সঙ্গে বিদায় নিচ্ছি। ’"
রুপার্ট মারডকের প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন ৭৪ লাখ প্রচার সংখ্যার এই পত্রিকাটির প্রধান উপজীব্যই ছিল অপরাধ ও যৌনবিষয়ক খবর। প্রতি রোববার ব্রিটিশদের দিন শুরুর অন্যতম অনুসঙ্গ ছিল নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড।
পত্রিকাটির যাত্রা শুরু ১৮৪৩ সালের ১ অক্টোবর। শুরু থেকেই পত্রিকার লক্ষ্য ছিল কাটতি বাড়ানো।
আর এ জন্য যৌনতা ও অপরাধের খবরকে পুঁজি করে লক্ষ্য অর্জনে সফলও হয় পত্রিকাটি। ১৮৮০ সাল নাগাদ পত্রিকাটির প্রচার সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। ১৯৫০-এর দশকে নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ডের প্রচার সংখ্যা ছিল ৮০ লাখ।
মিডিয়া মোগল রুপার্ট মারডক ১৯৬৯ সালে পত্রিকাটি কিনে নেন। তাঁর মালিকানায়ও পত্রিকাটির কাটতি ছিল রমরমা।
তবে আজকের পর থেকে প্রতি রোববার ব্রিটিশদের ঘুম ভাঙাবে না নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড। কোনো চমকপ্রদ খবরের জন্য রোববার পর্যন্ত আর কেউ অপেক্ষায়ও থাকবে না।
বড় করুণই হলো এই জনপ্রিয় পত্রিকার বিদায়টা! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।