আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।
শিবগঞ্জের কানসাটস্থ চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতি কর্তৃপক্ষ আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুত পুনরায় চালু করতে না পারলে শিবগঞ্জের প্রায় ৬ হাজার বিঘা জমির বোরো ধান সম্পূর্ণভাবে ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে ঐসব জমিতে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ফাটল ধরেছে এবং ধানক্ষেত শুকিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষি দফতর সূত্রে জানা গেছে, শিবগঞ্জের ১৫টি ইউনিয়নে ১শ’ ৫০টি গভীর নলকূপের মধ্যে ১শ’ ১৭টির মাধ্যমে ১ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হচ্ছে। তার মধ্যে প্রায় ৬ হাজার বিঘা জমির বোরো ধান হুমকির মধ্যে পড়েছে কানসাটের পল্লী বিদ্যুত অফিসে অগ্নিকা-ের ফলে।
স্থানীয় কৃষি দফতর সূত্রে জানা গেছে, যে সমস্ত ইউনিয়নে বিদ্যুতের কারণে জমিতে সেচ দেয়া বন্ধ হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রীর নিজস্ব ইউনিয়ন শাহবাজপুরে ১শ’ ৫০ হেক্টর, মোবারকপুর ইউনিয়নে ১শ’ ৪৭ হেক্টর, দাইপুকুরিয়া ইউনিয়নে ২শ’ ৪৩ হেক্টর, ধাইনগর ইউনিয়নে ২শ’ হেক্টর, চককীর্তি ইউনিয়নে ১শ’ ৯০ হেক্টর ও কানসাট ইউনিয়নে ১শ’ ১০ হেক্টর। কৃষি দফতর সূত্রে আরও জানা যায়, শিবগঞ্জের ১৫টি ইউনিয়নে ১ হাজার ৪শ’ ৯৯টি অগভীর নলকূপের মাধ্যমে ৩ হাজার ৩৮ হেক্টর জমিতে ও ১৫টি লো-লিফট পাম্পের মাধ্যমে ৯২ হেক্টর জমিতে যে বোরো ধানের চাষ হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত। এছাড়াও অনেক গভীর নলকূপের অধীনে বোরো ধান আবাদ হচ্ছে সেগুলোতে অগভীর মেশিন বসিয়ে সেচ দেয়া হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল ফারুক জানান, ঐসব গভীর নলকূপ এলাকায় বিকল্প পথে সেচ দেয়া হলেও আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে ঐসব গভীর নলকূপ এলাকায় বিদ্যুত সঞ্চালন না করতে পারলে ঝুঁকি আসতে পারে। বর্তমানে ঐসব জমিতে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো অবস্থা হয়ে রয়েছে।
কোন রকমে কৃষকরা ঐসব বোরো ধানে অগভীর নলকূপের মাধ্যমে ধানের জীবন বাঁচে এমন করে সেচ দিয়ে যাচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতির দেয়া তথ্যে যে ৮ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান হুমকির মুখে উল্লেখ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। কেননা ঐ ৮ হাজার হেক্টরের মধ্যে রয়েছে গম, আখ, রসুন ও পেঁয়াজ। এ সমস্ত ফসলের মধ্যে ইতোমধ্যেই গম, রসুন ও পেঁয়াজের ক্ষেতে পানির প্রয়োজন নেই। সেগুলো পরিপক্ক হয়ে যাওয়ায় কেটে নেয়া হচ্ছে।
আখ ক্ষেতে আগামী ১৫/২০ দিনে সেচ না দিলেও কোন ক্ষতির আশঙ্কা নেই। অন্যদিকে গত ১৫ দিন থেকে পল্লী বিদ্যুতে সরবরাহ বন্ধ থাকায় শিবগঞ্জ উপজেলার শতাধিক রাইসমিল, অর্ধশত মিল ও বেশকিছু তেল মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষেরা বিপাকে পড়েছে। ধান ভাঙ্গানোর জন্য দূর-দূরান্ত থেকে আসতে হচ্ছে শিবগঞ্জ পৌর এলাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে। মিলগুলো বন্ধ থাকায় সকল প্রকার কাঠ চেরাই বন্ধ হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে কাঠমিস্ত্রিদের কারখানা।
শুধু তাইনয় রানীহাটি, ছত্রাজিতপুর, মোবারকপুর, ধোবড়া, চককীর্তি, কানসাটের ওয়েল্ডিংয়ের দোকান মালিকরাও পড়েছে বিপাকে। কবে নাগাদ বিদ্যুত চালু হবে সঠিকভাবে কেউ বলতে পারছে না। বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সার্কিট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, যতদূর সম্ভব তাড়াতাড়ি বিদ্যুত সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় ঘোষণার দিন সারাদেশের মতোই শিবগঞ্জেও হরতালের সময় সন্ত্রাসীরা কানসাটস্থ পল্লী বিদ্যুতের সদর দফতরে লুটপাট, ভাংচুর ও অগ্নিকা-ের মাধ্যমে বিদ্যুত প্লান্ট ধ্বংসের কারণে গত ১৫ দিন ধরে শিবগঞ্জ উপজেলা রয়েছে ঘোর অন্ধকারে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।