বদলে গেছে দিন......বদলাইনি আমি বয়স আমার বেশিনা। মা বলে ১৫ আর বাবা বলে ১৮...সার্টিফিকেট এ ১৬ কিন্তু আসল বয়স ১৭। বয়স মাথাবেথার বিষয় নয়। আসল কথা যেটা বলতে চাচ্ছি তা হল আমাদের (হাস্যকর) রাজনৈতিক দলগুলো। বয়স হয়ত বেশি না কিন্তু এই অল্প বয়সে এই রাজনৈতিক দল গুলো সম্পর্কে আমি যত হাস্যকর কথা শুনেছি তা শেয়ার না করে পারলাম না।
এদের মধ্যে কিছু আবার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে নেয়া। তো শুরু করা যাক কি বলেন?
১ম কাহিনীঃ সে প্রায় ৩ বছর আগের কথা। সবে ক্লাস ৮ এ পড়ি। স্কুল ছুটির পর বাসায় যাচ্ছি। পথে ১ টা বিশাল মাঠ পরে।
আমি প্রতিদিন ওই মাঠের মাঝখান দিয়ে হেটে বাসায় যেতাম। হটাত একদিন আমার দৈনন্দিন রুটিন এ বাধা পড়ল। ঐদিন ওই মাঠে ছিল ১ নেতার সভা। মাঠে মানুষ আর ধরেনা!!নেতা কি যেন বলছেন আর সবাই তার কথায় তালি দিয়ে যাচ্ছেন ! আমার ও একটু শুনতে ইচ্ছে হল। যেই ভাবা সেই কাজ।
তো কিছুক্ষণ পর নেতা একটি মহান বাক্য উচ্চারণ করলেন, অনেকটা এইরকম "আমরা ভবিষ্যতেও এই এলাকার অনেক উন্নতি করেছি এবং অতীত এও করবো ইনশাল্লাহ!!!!!" তার এই কথা শুনেও ব্যাপক তালি শুনে আমি ত মারাত্মক হতভম্ব হলাম! এখানে কি আমিই কি একমাত্র শিক্ষিত?
২য় কাহিনীঃপহেলা বৈশাখ ১৪১৪। আমাদের এলাকায় রাতের বেলা একটা কনসার্ট প্লাস সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শোনার পর আর নিজেকে আটকাতে পারলাম না। দে দৌড়! গিয়ে দেখলাম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছে। যাইহোক বেপার না।
কনসার্ট দেখার জন্য সারারাত থাকতে পারি। ত শুরু হল অপেক্ষার পালা। হটাত আমাদের অবাক করে দিয়ে উপস্থাপক এক নেতাকে মঞ্চে আসার অনুরোধ করলেন তার মূল্যবান বক্তব্য দেয়ার জন্য। সবার ত মাথায় হাত। শুরু হল নেতার ভাষণ।
"আমরা আপনাদের জন্য সর্বস্ব বিলিয়ে দিতে পারি..আপনাদের জন্য আমাদের নিবেদিত প্রান। আর আমাদের কাজে বাধা দেয়ার জন্য বিরোধী দল উঠে পরে লেগেছে। তাদের এ দেশের জন্য কোনও দয়া মায়া নেই ইনশাল্লাহ(এখানে কেন ইনশাল্লাহ বলেছিলেন তা আমরা আজও ভেবে পাইনা)" তিনি ৮ টায় মঞ্চে আসেন তার মূল্যবান ভাষণ দেয়ার জন্য এবং তা শেষ হয় রাত ১০ টায়। পাঠকদের এখানে বলা উচিত যে তিনি এই দীর্ঘ সময়ে ১ বারের জন্যও পহেলা বৈশাখ নিয়ে কিছু বলেন নাই। আর আমাদের জন্য ব্যাড নিউজ ছিল একটা।
তা হল ব্যান্ড টিম চলে গেছে আরও ৩০ মিনিট আগে!!!মনে মনে ওই নেতাকে অনেক কিছু বলেছি যা এখানে বলা বোধহয় ঠিক হবেনা!
৩য় কাহিনীঃএইতো কিছুদিন আগের কথা। গ্রাম এলাকায় চেয়ারম্যান এবং মেম্বার নির্বাচন চলছে। দুর্ভাগ্যবশত আমি তখন গ্রীষ্মের ছুটিতে নানুর বাড়ি। প্রতিদিন দেখতাম ২-৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী নানু বাড়িতে আসেন যাদের মুখে একটাই কথা"খালা আমাকে ভোট দিচ্ছেন ত?" আমার নানুও ভারী চালাক মানুষ। সবার কাছে তিনি ১ টাই উত্তর দেন"আরেহ মিয়া প্রতিবার ত তোমারেই ভোট দেই,এইবার ও তোমারে দিমু।
তয় একখান কথা,এইবার আমারে খাওয়ার জন্য কি দিবা?"এই বেপারে কোনও নেতাই কার্পণ্য করেন না। প্রায় সবাই নানুকে হাত খরচ হিসেবে ৫০০ টাকা দিয়ে যান(ভোট এর জন্য নেতারা কি না করেন!আর এই সুযোগে জনগন ও একটু মজা লুটে নিতে কার্পণ্যবোধ করে না!)
৪র্থ কাহিনীঃ এইটা বোধহয় অনেকেই শুনেছেন। উপরের ৩ টা জীবন থেকে নেয়া। আর এইটা একটা জনপ্রিয় কৌতুক। নেতা গেছেন ভাষণ দিতে।
দীর্ঘ ভাষণ শেষে তিনি বলছেন,"ভাইসব আপনারা আমাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমার কাছে ঘড়ি ছিল না,তাই আমি সময় বুঝতে পারিনি,ভাষণ একটু দীর্ঘ হয়ে গেছে। "তখন সামনের সারির ১ সাংবাদিক দাড়িয়ে বললেন,"আপনার সামনে ত ক্যালেন্ডার ছিল! ওইটা দেখতে পারেন নাই?জত্তসব" ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।