আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভিকারুননিসায় শ্লীলতাহানি : লম্পট শিক্ষক পরিমল বরখাস্ত : সাসপেন্ড আরও ২ শিক্ষক

ভিকারুননিসা নূন স্কুল বসুন্ধরা শাখার (দিবা) দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির দায়ে লম্পট শিক্ষক পরিমল জয়ধরকে স্কুলের চাকরি থেকে বরখাস্ত এবং তার সহযোগী শিক্ষক বরুণচন্দ্র বর্মণ ও আবুল কালাম আজাদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার কারণে বসুন্ধরা শাখার ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক লুত্ফর রহমানকে পদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সিদ্ধেশ্বরী মূল শাখায় অনুষ্ঠিত গভর্নিংবডির রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এদিকে বাড্ডা থানায় যোগাযোগ করে জানা যায়, ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে গতকাল বিকেলে একটি মামলা করেছেন। অন্যদিকে লম্পট শিক্ষক পরিমলকে গ্রেফতার করতে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল বাসায় হানা দিলেও তাকে খুঁজে পায়নি বলে জানা গেছে।

শ্লীলতাহানির ঘটনায় কয়েকদিন ধরেই ভিকারুননিসা স্কুলের ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল সকাল থেকে বসুন্ধরা শাখার ওই ছাত্রীর সহপাঠী এবং তাদের অভিভাবকরা স্কুলের আজিমপুর ও ধানমন্ডি শাখায় বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিল শেষে তারা সমবেত হয়ে স্কুলের সিদ্ধেশ্বরীর মূল ক্যাম্পাস ঘেরাও করে। তারা অভিযুক্ত শিক্ষক পরিমল ও তার সহযোগীদের কঠোর বিচার দাবি করেন। ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টার অভিযোগ এনে ছাত্রী ও অভিভাবকরা বলেন, লম্পট শিক্ষকদের উপযুক্ত বিচার না হলে আমরা আমাদের মেয়েদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দেব।

ছাত্রীদের দাবি, উপযুক্ত বিচার না পেলে আমরা নিজেরাই এর বিচার করব। অভিভাবকরা বলেন, আমরা জেনেছি, রোববার পরিমল প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপালের সঙ্গে তার বাসায় দেখা করেছেন। আমরা পরিমলের কঠোর শাস্তি ও তাকে গ্রেফতারের দাবি করলেও প্রশাসন গুরুত্ব দিচ্ছে না। যার কারণে শেষ পর্যন্ত আমাদের রাস্তায় নামতে হলো। অভিভাবকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন বন্ধে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

পরিস্থিতি খারাপ দেখে ভিকারুননিসার গভর্নিংবডি জরুরি বৈঠকে বসে নরপশু পরিমলকে বরখাস্ত এবং তার সহযোগী লম্পট শিক্ষক বরুণচন্দ্র বর্মণকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। সভা সূত্রে জানা যায়, বসুন্ধরা শাখার শিক্ষিকারা গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল হোসনে আরা বেগমের কাছে এসব শিক্ষকের আচরণ নিয়ে অভিযোগ করেন। এতে প্রিন্সিপাল শিক্ষিকাদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। তাদের উল্টো শাসিয়ে তিনি বলেন, আপনারা এতো কনজারভেটিভ কেন? পরে বাংলা বিষয়ের শিক্ষক পরিমল জয়ধর ও বরুণচন্দ্র বর্মণের বিরুদ্ধে ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের সঙ্গে অনৈতিক আচরণের অভিযোগ বাড়তে থাকে। কিন্তু প্রিন্সিপাল তাদের সতর্ক না করে উল্টো মদদ দিয়েছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, যৌন নিপীড়নের শিকার ছাত্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লিখিত অভিযোগ করলে প্রিন্সিপাল বলেন, ‘মেয়েটি ভালো নয়, পরিমল ভালো’। শিক্ষিকারা জানান, প্রিন্সিপালই ভালো নয়। নির্মম পরিস্থিতির শিকার একটি মেয়েকে তিনি কিভাবে খারাপ বলেন? শিক্ষিকারা এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিংবডির কাছে পরিমলসহ অন্যান্য লম্পট শিক্ষকের বিচার দাবি করেন। প্রসঙ্গত, এ ঘটনায় গতকাল বসুন্ধরা শাখার (দিবা) ক্লাস বাতিল করা হয়েছে। শাখার ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা গত সোমবার স্কুলে বিক্ষোভ মিছিল করে।

ছাত্রীরা ক্লাস শেষে স্কুলের ভেতরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিলসহ শাখার ভারপ্রাপ্ত প্রধানকে অবরুদ্ধ করে রাখে। তারা প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল হোসনে আরার অপসারণ এবং যৌন নিপীড়নকারী নরপশু শিক্ষক পরিমলের বিচার দাবি করেন। ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।