একদিন জন্মের চিৎকারে পৃথিবীতে এসেছিলাম। আবার একদিন কিছু চিৎকারের মাঝ দিয়েই চলে যাব।
ঘটনাটি কুষ্টিয়ার। আজই দেখলাম দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার প্রথম পাতায়। শিরোণাম 'পাশপাশি দুটি রাজনৈতিক সাঁকো'।
কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার মৃত্তিকাপাড়া গ্রামে পাশাপাশি দুটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। একটিতে চারদলীয় ঐক্যজোটের সমর্থকরা চলবেন। অপরটিতে চলবেন মহাজোটের সমর্থকেরা। সংবাদটি পড়েই আমার এক বন্ধু জিজ্ঞেস করল, যারা কোন দলেরই নয় তারা কি করবেন? আমি বললাম, মাঝখানে বেশ খানিকটা স্থান ফাঁকা আছে। সেখানে নিরপেক্ষদের উচিত আরো একটি সেতু নির্মাণ করা।
বলে দুজনেই হেসে উঠলাম। কিন্তু ব্যাপারটি মোটেই হাসির নয়।
আমি যেমন জানি। ঠিক তেমনি আমার বন্ধুটিও। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিরোধ কতোটা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে এটি একটি প্রমাণ হতে পারে।
বাস্তবতা হয়ত আরো ভয়ঙ্কর। সত্যিটা আমরা কেউই জানতে চাই না। সত্যি জানা তো ভাল নয়। কেন? তাহলে মেনে নেয়ার একটি দায় থাকে। না জানলে মানার কোন ঝামেলা নেই।
আমরা বাংলাদেশি বাঙ্গালিরা তাই চোখ বন্ধ করে সত্যি থেকে বাঁচার চেষ্টা করি। রাজনীতি দুটি ধারাই এখন প্রধান। কিন্তু কোন ধারাই যে সঠিক পথে নেই এর আলোচনা কারো মুখেই নেই। প্রমাণ কিন্তু ঠিকই আছে। সবচেয়ে বড় প্রমাণ তো এই যে, কোন একটি দলও টানা দুবার নির্বাচিত হচ্ছে না।
অথচ আমেরিকাতে একবার যিনি প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন তিনি দ্বিতীয়বারের জন্য নিশ্চিত। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের জন্যও কথাটি সত্যি। কিন্তু আমরা পারছি না। স্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা ছাড়া আমরা কখনোই সামনে যেতে পারবো না। আমরা ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করি।
সেই সরকার ক্ষমতায় আসার পর সর্ব প্রথম কাজটি করেন নাম পরিবর্তন। গত সরকারের আমলে যে নাম ছিল তার আমূল পরিবর্তনই হয়ে উঠে তাদের প্রধান কাজ। আবার সামনের দিনগুলোতে উল্টো ঘটনাও দেখতে হতে পারে।
রাজনৈতিক সমস্যা বর্তমানে এমন একটি পর্যায়ে চলে গেছে যেখানে সমাধান খুঁজতে যাওয়া পাগলের প্রলাপ মাত্র। কিন্তু যদি আজকের তরুণ মঞ্চে এর আলোচনা না হয়।
যদি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা আগামী দশটি বছর এমনই থাকে। তবে দুঃখ আছে আমাদের জীবনে। অনেক দূঃখ। আমরা দুঃখেই আছি। কিন্তু তারপরও স্বাধীন দেশে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছি।
কিন্তু এমন একদিন আসতে পারে যেদিন এই সুখের নিদ্রায় থাকতে পারবো না আমরা। সেদিন আসার আগে আমাদের তরুণ সমাজকে সচেতন হতে হবে।
দুটি রাজনৈতিক সেতুর মাঝখানে যে নিরপেক্ষ সেতুর রচনা হচ্ছে তা খুবই মজবুত। সম্ভবত আগামী দিন হবে তাদেরই। সাধারণ মানুষ তো সারা জীবনই দুঃখ কষ্ট ভোগ করে।
কিন্তু তারা জ্বলে উঠলে অবস্থা কতোটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তা ফরাসি বিপ্লব পৃথিবীবাসীকে জানিয়ে গেছে আরো দুইশ বছর আগেই। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ হঠাৎ জ্বলে উঠবে বলে আমি বিশ্বাস করি না। কিন্তু একথাও সত্যি আজকাল বাসে কিংবা চায়ের দোকানে যেমন আলোচনা শুনছি তাতে স্পষ্ট হচ্ছে যে, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ দুটি রাজনৈতিক ধারার উপর থেকেই বিশ্বাস হারাচ্ছে। তৃতীয় পক্ষ তাদের পথ ঠিকই খুঁজে নিবে। যদি রাজনৈতিক অবস্থা ঠিক না হয় তবে তা নিশ্চিতভাবেই হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।