ইঞ্জিন চালুর সঙ্গে সঙ্গেই বিকট শব্দ। অসহনীয় এই শব্দ নিয়ে রাজধানীর সদরঘাট থেকে আমিনবাজার নৌপথে চলছে নতুন চারটি ওয়াটার বাস। অথচ রাজধানী ঢাকার নৌপথে আরামদায়ক যাতায়াতের কথা বলে ৪ জুলাই তৃতীয়বারের মতো ওয়াটার বাস উদ্বোধন করেছিল বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)।
নগরের যানজট এড়িয়ে পুরান ঢাকায় যাতায়াতে ওয়াটার বাসকে বেছে নেওয়া যাত্রীদের স্বস্তি নেই বিকট শব্দের কারণে। গতকাল সোমবার বিকেলে সদরঘাটে ওয়াটার বাসে চড়ে যাত্রীদের কাছ থেকে এই অভিযোগই মিলেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিকেল সোয়া চারটায় সদরঘাট ছেড়ে যাওয়া ওয়াটার বাসের ৮১ আসনের প্রায় সব কটিতেই যাত্রী ছিল। ছাড়ার পরপরই পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি স্টিমারকে সজোরে ধাক্কা দেয় ওয়াটার বাসটি। কিন্তু ইঞ্জিনের প্রচণ্ড শব্দের কারণে একেবারেই বাকশূন্য সব যাত্রী। অনেক যাত্রী তাদের দুই কানে হাত দিয়ে রাখে। আরমান মিয়া নামের এক যাত্রীকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি চিত্কার করে বলেন, ‘বুঝতে পারছেন না, আওয়াজ, আওয়াজ।
’
কিছু সময় পর আরমান আবার বলেন, ‘ভাই, বাসে যাইতে খরচ হইত ২৫ টাকা। জ্যামের লাইগা ৪০ টাকা দিয়্যা যাইতাছি। কিন্তু অহন কান তো জ্যাম হইয়া গ্যাছে। ’
লোহার পাতের ওপর বসানো প্লাস্টিকের আসন দেখিয়ে এক যাত্রী তাঁর সঙ্গে থাকা আরেকজনকে বলেন, ‘এখনই নড়তাছে। দুদিন পর এখানে বসাই যাইব না।
’
ওয়াটার বাসের এক কর্মচারী জানান, উদ্বোধনের পর যাত্রী তেমন ছিল না। এক-দুজন নিয়েও কখনো কখনো ওয়াটার বাস ছাড়তে হয়েছে। গত সপ্তাহে টানা হরতালের পর যাত্রীসংখ্যা বেড়েছে।
এদিকে যাত্রীদের আসনের পাশে শৌচাগারের দরজা উন্মুক্ত করে গোসল করছিলেন ওয়াটার বাসের একজন কর্মচারী। এতে অনেককেই অস্বস্তিতে পড়তে দেখা যায়।
বুড়িগঙ্গা নদীতে সোয়ারীঘাট, খোলামোড়া স্টেশনে থামিয়ে মাত্র সোয়া এক ঘণ্টায় তুরাগ নদীর তীরে আমিনবাজারে যখন ওয়াটার বাসটি থামে, ঘড়ির কাঁটায় তখন বিকেল সাড়ে পাঁচটা। তবে কোনো পাটাতন বা সিঁড়ি না থাকায় ওয়াটার বাস থেকে নামতে গিয়ে বিপত্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের। কিছুটা থমকে গিয়ে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুদের নামতে হয় অন্যের সাহায্য নিয়ে। ফিরতি যাত্রায় অপেক্ষমাণ যাত্রীরা একইভাবে ওঠে ওয়াটার বাসে।
বিআইডব্লিউটিসির বক্তব্য
ওয়াটার বাসের এই অসহনীয় শব্দের ব্যাপারে যাত্রীদের অভিযোগ স্বীকার করে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মজিবর রহমান আজ মঙ্গলবার প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘নতুন ওয়াটার বাসগুলোতে চীনের ইঞ্জিন বসানোয় শব্দ বেশি হচ্ছে।
লঞ্চেও এমন শব্দ হয়। এই শব্দ দূর করতে আমরা টেকনিক্যাল কমিটিকে বলেছি। ’
ওয়াটার বাসের ভেতরের অস্বস্তিকর পরিবেশ সম্পর্কে মজিবর রহমান বলেন, ‘আমাদের অভ্যাস গড়ে ওঠেনি। নতুন আরও চারটি ওয়াটার বাস আসছে, সেগুলোতে শব্দ ও পরিবেশগত সমস্যা থাকবে না। যাত্রী ওঠানামায় সিঁড়ি আছে।
কিন্তু কেন দেয়া হয়নি, সেটি আমি জানি না। ’ আর ভাড়া ৪০ টাকা করার পরও লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।