বর্তমান প্রযুক্তির এক বিস্ময়কর আবিষ্কার মোবাইল ফোন। টিভি কিংবা কম্পিউটারের মতো মোবাইল ফোনও এক ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস। এ জন্য মোবাইল ফোনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া একে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারলেও অনেক সময় সমস্যা হয়। মোবাইল ফোন ব্যবহারে সাবধান এবং সচেতন হলে এ ধরনের সমস্যার হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
এ রকমই কিছু কৌশল বা টিপস তুলে ধরা হলো।
আইএমইআই নম্বরের মাধ্যমে
মোবাইলের তথ্য জেনে নিন
প্রতিটি মোবাইল ফোনের স্বতন্ত্র আইএমইআই (ওগঊও) নম্বর থাকে। এই আইএমইআই নম্বর দ্বারা জানা যায় মোবাইল সেট কোন ব্র্যান্ডের, কোন মডেলের এবং কোথায় তৈরি হয়েছে। আইএমইআই নম্বর জানতে প্রথমে মোবাইল ফোনে *#০৬# চাপলে ১৫-১৭ ডিজিটের সিরিয়াল নম্বর বা আইএমইআই নম্বর আসবে। অথবা মোবাইল ফোনের ব্যাটারি খুললে সেটের সঙ্গে স্টিকারে সিরিয়াল নম্বর বা আইএমইআই নম্বর লেখা পাওয়া যাবে।
স্পিকারফোন ব্যবহার করুন
বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনোকিছুই মাথার কাছাকাছি থাকা ঠিক নয়। কয়েক ইঞ্চির ব্যবধান দূরত্বে রাখুন আপনার মোবাইল সেট। এক্ষেত্রে এক বা দুই ফুট দূরত্বে রাখা উত্তম। যত দূরে রাখা যায় তত তাপ বা রশ্মির ঝুঁকি কমে। প্রতি দুই ইঞ্চি দূরত্বে থাকা মোবাইল ঝুঁকি কমায় চারগুণ করে।
প্রতি চার ইঞ্চি দূরত্বে রাখলে ঝুঁকি কমে ষোলগুণ। অর্থাৎ ‘প্রতিটি মিলিমিটার এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ’।
ব্যবহার করুন একটি ফেরিট গুটিকা (ferrite bead) দ্বারা তৈরি তারযুক্ত হেডসেট। ফেরিট গুটিকা হচ্ছে একটি ক্লিপ যা একটি হেডসেটের তারে লাগানো হয়। সমস্যার কথা হলো, তার নিজেই আপনার কানে রশ্মি/তাপ প্রেরণ করে।
এই গুটিকা ডিজাইনই করা হয়েছে যাতে এটি রশ্মি/তাপ চুষে নিতে পারে আর আপনার কান যেন থাকে সুস’। অবশ্য যদি ফোনটি আপনার পকেটে থাকে বা বেল্টের সঙ্গে লাগানো থাকে, সে ক্ষেত্রে রশ্মি/তাপ আপনার শরীরে সরাসরি প্রবেশ করবে। সুতরাং আপনি যদি রশ্মি/তাপ-এর ব্যাপারে চিন্তিত হন, ফোনকে যতটা দূরে সম্ভব রাখা যায় রাখুন এবং নিশ্চিত হন তার আপনার শরীর যেন ছুঁয়ে না থাকে।
ব্লুটুথ কানের পিস ব্যবহার করুন
যদিও একটি বৱুটুথ কানের পিসও রশ্মি/তাপ ছড়ায় কিন্তু এটি ১০০ গুণ কম। আপনি একটি মোবাইল কানে ধরে রেখে তাপ বিকিরণের চেয়ে।
ব্লুটুথ শুধু ফিসফিস করে রশ্মি/তাপ বিকিরণ করে আপনার কানে। সমস্যা হলো, অনেকে এটিকে সারাক্ষণ পরে থাকে। সেটা করলে ধীরে ধীরে রশ্মি/তাপ বিকিরণ বিরাট সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
একটি ‘ফাঁপা টিউব’ কানের পিস ব্যবহার করুন
এটি অন্যান্য সাধারণ তারের কানের পিসের মতোই, পার্থক্য হলো শেষ ছয় ইঞ্চির মতো অংশটুকু যা কানের কাছেই, একটি ফাঁপা টিউব। ড. ডেভিড কার্পেন্টারের (আলবানি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর) ভাষায়, ‘আপনি শব্দটুকু পাচ্ছেন বায়ুর মাধ্যমে।
আপনাকে রেডিওফ্রিকোয়েন্সি প্রবাহের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে না। ’
কম তাপ/রশ্মি বিকিরণকারী ফোন ব্যবহার করুন
ফোনের তাপ/রশ্মি বিকিরণ মাপা হয় নির্দিষ্ট শোষণ মাত্রার ওপর ভিত্তি করে, যাকে বলা হয় SAR (Specific Absorption Rate)। ফোন নেয়ার আগে SAR যাচাই করে নিন এবং যেটি কম মাত্রায় পাবেন সেটিকেই বেছে নিন।
একটানা কম সময় কথা বলুন
মোবাইল ফোন ব্যবহারে পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়। মোবাইল চালু করে প্যান্টের পকেটে রাখলে পুরুষের শুক্রাণুতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে এবং তা কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়।
খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
সংবাদ মাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, মোবাইল ফোন ব্যবহারে প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায় এ বিষয়টি নিয়ে সমপ্রতি সাতটি দেশের গবেষকরা গবেষণা চালিয়েছেন। আমেরিকা, চীন এবং অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা জানিয়েছেন, চালু থাকা মোবাইল ফোন প্যান্টের পকেটে হলে তা শুক্রাণু তৈরির পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
নোবেলজয়ী মার্কিন গবেষক ডেভরা ডেভিস জানিয়েছেন, ‘বাবা হতে চাচ্ছেন এমন যুবকদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে চার ঘণ্টা মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে তার শুক্রাণু অর্ধেক হয়ে যায়। তিনি আরো জানিয়েছেন, শুক্রাণুর ওপর মোবাইল ফোনের বিকিরণ প্রয়োগ করলে শুক্রাণু দুর্বল, চিকন এবং সাঁতারে অক্ষম হয়ে পড়ে।
আর মোবাইল ফোন হলো এক ধরনের স্বল্প কম্পাঙ্কের তরঙ্গ প্রেরক যন্ত্র। এ তরঙ্গের অন্য নাম মাইক্রোওয়েভ। অন্যদিকে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল জানিয়েছে, মোবাইল ফোনের ব্যবহার মারাত্মক টিউমারের সৃষ্টি করে। এ জন্য একটানা মোবাইল ফোনে কথা না বলাই ভালো। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।