রফিকুল ইসলাম ॥ ট্রানজিট কিংবা ট্রানশিফমেন্ট দিয়ে বছরে বাংলাদেশের আয় হবে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির চেহারা পাল্টে দেবে। নিশ্চিত করবে বিপুল কর্মসংস্থান ও দেশের সমৃদ্ধি। সংশিস্নষ্ট এলাকার জীবনধারণ মানের উন্নয়ন ঘটাবে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল আর ভুটানের মধ্যে এ উপ-আঞ্চলিক ট্রানজিটের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের বিভিন্ন মহলের নানামুখী প্রতিক্রিয়ার মুখে এমন তথ্য তুলে ধরেছে দেশের একটি নীতিনির্ধারণী গবেষণা প্রতিষ্ঠান। 'বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পস্নানার্স'র নিয়মিত প্রকাশনায় 'রিজিওনাল কানেক্টিভিটি : অপচুনিটিস ফর বাংলাদেশ টু বি এ্যা ট্রান্সপোর্ট হাব' শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধে বছরে তিন হাজার ৫শ' কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনার কথা বলা হয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নীতিনির্ধারকদের অভিমত_ ট্রানজিট কিংবা প্রতিবেশী দেশকে পোর্ট ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে পৃথিবীর কোন দেশ লোকসান গুনেছে এমন নজির নেই। বরং মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন করে প্রাণসঞ্চারিত হবে। বিশেষজ্ঞরা জাতীয় স্বার্থে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার এ পদৰেপ নিয়ে রাজনৈতিক ইসু্য তৈরির চেষ্টা থেকে বিরোধী দলকে বিরত থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধানত্ম গ্রহণে সময়ৰেপণে ভারত বিকল্প হিসেবে কালাদান বন্দর তৈরির প্রকল্প গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
'রিজিওনাল কানেক্টিভিটি : অপচর্ুনিটিস ফর বাংলাদেশ টু বি এ্যা ট্রান্সপোর্ট হাব' শীর্ষক প্রবন্ধটি ড. এম রহমতউলস্নাহর লেখা।
এ প্রবন্ধে ট্রানজিটের নানা দিক, ট্রানজিট নাকি ট্রানশিপমেন্ট কোন্টি প্রাধান্য পাওয়া উচিত, বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিসত্মারিত তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়। গবেষণাধর্মী দীর্ঘ এ প্রবন্ধে তিনি আঞ্চলিক সম্পৃক্ততাহীনতার পরিণতি, আঞ্চলিক সম্পৃক্ততায় বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য সুযোগসমূহ, যেভাবে আঞ্চলিক সম্পৃক্ততা জোরদার হতে পারে, উপ-আঞ্চলিক কাঠামো, যুতসই অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিবর্তিত প্রেৰাপটে নতুন কৌশল, আঞ্চলিক-দ্বিপাৰিক উদ্যোগসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি বিসত্মারিত তথ্যচিত্র তুলে ধরেন। ড. এম রহমতউলস্নাহ এ প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে দেয়া বক্তব্যে বলেছেন, দীর্ঘদিনের অনাস্থা-অবিশ্বাস দূর করে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে নতুন দিগনত্ম উন্মোচনে বর্তমান সরকারের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। রিজিওনাল কানেক্টিভিটি বিষয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ড. এম রহমতউলস্নাহর লেখা গবেষণাধর্মী তথ্যবহুল এ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ-ভারতের সঙ্গে নৌ, সড়ক ও রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে।
তবে তিনি পণ্য পরিবহনে রেলপথের ওপর জোর দিয়ে বলেন, এতে খরচ হ্রাস পাবে। সড়কপথে ২০ ফুট দীর্ঘ কন্টেনার দিলস্নী থেকে ঢাকা আসতে সময় লাগবে ৩০ থেকে ৪৫ দিন এবং খরচ হবে ২ হাজার ৫শ' মার্কিন ডলার বা ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। পৰানত্মরে রেলপথে দিলস্নী হয়ে ঢাকা আসতে সময় লাগবে মাত্র ৪ থেকে ৫ দিন। এতে খরচ হবে ৮শ' ৫০ মার্কিন ডলার কিংবা ৩১ হাজার ৫শ' টাকা। সড়কপথে রেলপথের চেয়ে ৬গুণ বেশি খরচ হবে।
বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ভারত ট্রানজিট দেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। এৰেত্রে বাংলাদেশ এবং নেপাল দু'টি রাষ্ট্রকেই ভারতের সঙ্গে দ্বিপাৰিক চুক্তি করতে হবে।
এখানে ত্রিপৰীয় চুক্তির চেয়ে দ্বিপাৰিক চুক্তিই দু'দেশের জন্য ভাল হবে। ভারতের ত্রিপুরার দৰিণাঞ্চল চট্টগ্রাম পোর্ট থেকে মাত্র ৭৫ কিলোমিটার দূরে। পৰানত্মরে ত্রিপুরার দৰিণাঞ্চল থেকে কলকাতা পোর্ট ১ হাজার ৬শ' ৪৫ কিলোমিটার দূরত্বে।
কলকাতা পোর্ট থেকে ত্রিপুরায় আমদানি পণ্য পাঠাতে পরিবহন খরচের কারণে দাম বেড়ে যায় প্রকৃত মূল্যের কয়েকগুণ। অন্যদিকে চট্টগ্রাম পোর্ট দিয়ে ত্রিপুরায় পণ্য পাঠানো গেলে নামমাত্র পরিবহন খরচ হবে। এসব রম্নটে ভারতকে ট্রানজিট কিংবা ট্রানশিপমেন্ট দিলে বাংলাদেশ যেমন লাভবান হবে তেমনি একই সঙ্গে ভারতের পরিবহন ব্যয় অনেক সাশ্রয় হবে। তবে ট্রানজিট দেয়া হলে উপ-আঞ্চলিক নেটওয়ার্কের অনত্মর্ভুক্ত সব দেশের ভিসা সিস্টেম আরও সহজ করতে হবে। বর্তমানে ভারতের ভিসা পেতে অনেক ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হয়।
ট্রানজিট কার্যকর হলে ভিসা সিস্টেম আরও সহজতর করতে হবে।
বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান নেপাল, ভুটান এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে সহজ যোগাযোগের সেতুবন্ধন হতে পারে। ট্রানজিট না দিয়ে ট্রানশিপমেন্ট দিলে বাংলাদেশ নিজস্ব পরিবহন ব্যবসা গড়ে তুলতে পারবে। ট্রানজিট কিংবা ট্রানশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে তাও কমিয়ে আনতে পারবে। বিশেষত এ ট্রানজিট দু'দেশের জন্যই 'উইন-উইন' সিচু্যয়েশন নিশ্চিত করবে।
বাংলাদেশের মংলা বন্দর ভারত, নেপাল কিংবা ভুটান ব্যবহার করলে সেটি সম্মিলিত বিনিয়োগে আরও আধুনিকায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে সংশিস্নষ্ট এলাকার পণ্য পরিবহন সড়ক লাগসই করে নির্মাণ করতে হবে, যা পৰানত্মরে বাংলাদেশের যোগাযোগ অবকাঠামোতে বিপুল উন্নয়ন সাধন করবে। সড়ক, রেল ও নৌপথে বাংলাদেশ এ এলাকার উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। ভারতের জন্য অধিকতর উপকারে আসবে চট্টগ্রাম পোর্ট এবং নেপাল-ভুটানের জন্য উপকারে আসবে মংলা পোর্ট। মংলা পোর্টের ২০ ভাগ ৰমতা ব্যবহার করা হয়।
বাকি ৮০ ভাগ ৰমতা থেকে যায় অব্যবহৃত। চট্টগ্রাম পোর্টের ৪০ শতাংশ ৰমতা থেকে যায় অব্যবহৃত। অন্যদিকে সিলেট-অষ্টগ্রাম এবং করিমগঞ্জে নতুন করে শক্তিশালী সড়কব্যবস্থা দু'দেশকে মিলে তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশ শুরম্নতেই এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হলে এৰেত্রে অনেক সুবিধা পেত। কিন্তু কথিত ভারতবিরোধিতার কারণে বিগত বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে তৎকালীন জোট সরকার এশিয়ান হাইওয়ের মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে বাংলাদেশকে।
কেবল দু'টি সরকার সম্মত হলেই হবে না মনত্মব্য করে গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশনাল কর্মকা- শুরম্ন করা দরকার। বাংলাদেশ সরকারকে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করে ট্রানজিট দেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। পাঁচ থেকে ছয়টি রম্নটে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলে প্রবন্ধে এসব রম্নট চিহ্নিত করে দেয়া হয়। ভারি পরিবহনের ৰেত্রে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি কিংবা ভারত-বাংলাদেশের যৌথ কোম্পানি পরিবহন ব্যবস্থার দায়িত্ব নিতে পারে।
ট্রানজিটের ৰেত্রে যে নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বলা হচ্ছে সেটি নির্ভর করবে ট্রানজিটের বিভিন্ন কার্যক্রমের ওপর।
পোর্ট কিংবা বন্দরে কড়া পরিদর্শন, স্ক্যানিং এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে নিরাপত্তা শঙ্কা দূর করা সম্ভব।
বর্তমান মহাজোট সরকারের বিরম্নদ্ধে ভারতপ্রীতির অভিযোগে বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের সমালোচনার জবাবে বিশিষ্টজনদের মধ্যে নানান প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তাঁদের মতে, বর্তমান সরকার ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী উলফার বিরম্নদ্ধে অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে দীর্ঘদিনের অবিশ্বাস দূর করেছে। একই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে সম্ভাব্য হামলা থেকে দেশকে বাঁচিয়েছেন দ্বিতীয় মেয়াদে ৰমতায় আসা শেখ হাসিনা প্রশাসন। গত বছর শেখ হাসিনার ভারত সফর দু'দেশের সম্পর্কে আস্থা ও বিশ্বাসের নতুন দিগনত্ম উন্মোচন করেছে।
ট্রানজিট কিংবা পোর্ট ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পদৰেপের বিরম্নদ্ধে যাঁরা দেশ বিক্রির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলছেন, তাঁরা হীনরাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিভ্রানত্মি ছড়াচ্ছেন। বিশিষ্ট নাগরিকদের অনেকেই মনে করেন, পোর্টে আমাদের ম্যানেজমেন্ট থাকলে কিভাবে দেশ বিক্রি হয়ে যাবে_ বিরোধী দলের সেই প্রশ্নের জবাব দেয়া উচিত।
এক আলোচনায় অংশ নিয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান এমপি তথ্যপূর্ণ বক্তব্যে বলেন, সরকারবিরোধী মহল পলিটিক্যাল গেইনের জন্য মিসট্রাস্ট তৈরি করছে। পাকিসত্মান জঙ্গীদের প্রশ্রয় দেয়ার দায়ে আজ একের পর এক আক্রমণের শিকার হচ্ছে। বিগত সরকার বাংলাদেশে যেভাবে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রশ্রয় দিয়েছিল তাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ নিয়েও শঙ্কার কারণ ছিল।
বর্তমান সরকার উলফার বিরম্নদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে ভারতের সঙ্গে আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এ সরকার সামান্যতম জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে কোথাও কোন চুক্তি করবে না। আপনারা শেখ হাসিনাকে চেনেন না-এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান এমপি বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ। তাঁর চেয়ে দেশপ্রেম কার বেশি আছে-প্রশ্ন করে তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের মুখের ওপর শেখ হাসিনাই বলেছিলেন, ৫০ বছরের গ্যাস রিজার্ভ রেখে তবেই গ্যাস রফতানির কথা চিনত্মা করব। এমন কথা কেবল বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার পৰেই বলা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের দূরদৃষ্টির অভাবে এশিয়ান হাইওয়ে ও সাবমেরিন কেবলের মৌলিক অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ। '৭৫-এর পর বাংলাদেশ রেলপথের দৈর্ঘ্য সম্প্রসারিত নয়, কেবল সঙ্কুচিত হয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন হলে বর্তমান সরকারের ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা নিয়ে সংশয়ের প্রশ্নে তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তন হলে বাংলাদেশে-ভারত সম্পর্কের ৰেত্রে হয়ত নীতি পরিবর্তন হতে পারে। তবে দেশের মানুষ বাংলাদেশ-ভারত যৌথ ঘোষণা বাস্তবায়নে কাঙ্ৰিত সুবিধা পেলে কেউই আর এসব বাতিল করতে পারবে না। সাহসী ও প্রতিবাদী ভূমিকা ছিল তাঁর সব ক্ষেত্রে
ট্রানজিটে বছরে আয় হবে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা
সম্পূরক চার্জশীটে হারিছ সাকা বাবর মুজাহিদ আসামি
সংলাপে বিএনপি না এলেও সুপারিশ চূড়ান্ত করবে ইসি
ফ্লাইট কমিয়ে দিয়েছে বিমান_ সুযোগ নিচ্ছে বিদেশী এয়ারলাইন্স
ইস্কাটনে ডাকাতির ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি
শ্যামপুরে গৃহকর্মীকে হত্যা, গেণ্ডোরিয়ায় যুবক খুন
সংস্কৃতি সত্যসুন্দরের পতাকা উর্ধে তুলে ধরে_ শিল্পকলায় সেমিনার
ভৈরবে গুলিতে আহত রহিমা র্যাবের দুই মামলায় হাসপাতাল থেকে কারাগারে
পাঁচ শিক্ষাবিদকে জাতীয় অধ্যাপক নিয়োগে রাষ্ট্রপতির সম্মতি
পুঁজিবাজার পরিস্থিতি নিয়ে ২৩ জুন সংসদীয় কমিটির বৈঠক
প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা বিনিময় বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ ভারতীয় সেনাপ্রধানের
রাজনীতিকদের দুর্বলতায় তৃতীয় শক্তি যেন ক্ষমতা নিতে না পারে, সজাগ থাকুন
বিদ্যুতে ৭শ' কোটি ডলার সৌদি বিনিয়োগ চায় সরকার
ভ্রাম্যমাণ আদালতে হরতালকারীদের শাস্তি দেয়া অবৈধ ॥ খন্দকার মাহবুব
জগন্নাথের ১৬৮ শিক্ষক চার মাস বেতন পাচ্ছেন না
বিরোধী দলকে সংসদে এসে কথা বলার আহ্বান
সাবধানবাণী: বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এই সাইটের কোন উপাদান ব্যবহার করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ এবং কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
ট্রানজিটে বছরে আয় হবে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা
নিশ্চিত করবে বিপুল কর্মসংস্থান ॥ গবেষণা প্রবন্ধ
মামুন-অর-রশিদ ॥ ট্রানজিট কিংবা ট্রানশিফমেন্ট দিয়ে বছরে বাংলাদেশের আয় হবে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির চেহারা পাল্টে দেবে। নিশ্চিত করবে বিপুল কর্মসংস্থান ও দেশের সমৃদ্ধি। সংশিস্নষ্ট এলাকার জীবনধারণ মানের উন্নয়ন ঘটাবে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল আর ভুটানের মধ্যে এ উপ-আঞ্চলিক ট্রানজিটের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের বিভিন্ন মহলের নানামুখী প্রতিক্রিয়ার মুখে এমন তথ্য তুলে ধরেছে দেশের একটি নীতিনির্ধারণী গবেষণা প্রতিষ্ঠান। 'বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পস্নানার্স'র নিয়মিত প্রকাশনায় 'রিজিওনাল কানেক্টিভিটি : অপচুনিটিস ফর বাংলাদেশ টু বি এ্যা ট্রান্সপোর্ট হাব' শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধে বছরে তিন হাজার ৫শ' কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনার কথা বলা হয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নীতিনির্ধারকদের অভিমত_ ট্রানজিট কিংবা প্রতিবেশী দেশকে পোর্ট ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে পৃথিবীর কোন দেশ লোকসান গুনেছে এমন নজির নেই। বরং মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন করে প্রাণসঞ্চারিত হবে। বিশেষজ্ঞরা জাতীয় স্বার্থে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার এ পদৰেপ নিয়ে রাজনৈতিক ইসু্য তৈরির চেষ্টা থেকে বিরোধী দলকে বিরত থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধানত্ম গ্রহণে সময়ৰেপণে ভারত বিকল্প হিসেবে কালাদান বন্দর তৈরির প্রকল্প গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
'রিজিওনাল কানেক্টিভিটি : অপচর্ুনিটিস ফর বাংলাদেশ টু বি এ্যা ট্রান্সপোর্ট হাব' শীর্ষক প্রবন্ধটি ড. এম রহমতউলস্নাহর লেখা।
এ প্রবন্ধে ট্রানজিটের নানা দিক, ট্রানজিট নাকি ট্রানশিপমেন্ট কোন্টি প্রাধান্য পাওয়া উচিত, বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিসত্মারিত তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়। গবেষণাধর্মী দীর্ঘ এ প্রবন্ধে তিনি আঞ্চলিক সম্পৃক্ততাহীনতার পরিণতি, আঞ্চলিক সম্পৃক্ততায় বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য সুযোগসমূহ, যেভাবে আঞ্চলিক সম্পৃক্ততা জোরদার হতে পারে, উপ-আঞ্চলিক কাঠামো, যুতসই অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিবর্তিত প্রেৰাপটে নতুন কৌশল, আঞ্চলিক-দ্বিপাৰিক উদ্যোগসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি বিসত্মারিত তথ্যচিত্র তুলে ধরেন। ড. এম রহমতউলস্নাহ এ প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে দেয়া বক্তব্যে বলেছেন, দীর্ঘদিনের অনাস্থা-অবিশ্বাস দূর করে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে নতুন দিগনত্ম উন্মোচনে বর্তমান সরকারের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। রিজিওনাল কানেক্টিভিটি বিষয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ড. এম রহমতউলস্নাহর লেখা গবেষণাধর্মী তথ্যবহুল এ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ-ভারতের সঙ্গে নৌ, সড়ক ও রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে।
তবে তিনি পণ্য পরিবহনে রেলপথের ওপর জোর দিয়ে বলেন, এতে খরচ হ্রাস পাবে। সড়কপথে ২০ ফুট দীর্ঘ কন্টেনার দিলস্নী থেকে ঢাকা আসতে সময় লাগবে ৩০ থেকে ৪৫ দিন এবং খরচ হবে ২ হাজার ৫শ' মার্কিন ডলার বা ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। পৰানত্মরে রেলপথে দিলস্নী হয়ে ঢাকা আসতে সময় লাগবে মাত্র ৪ থেকে ৫ দিন। এতে খরচ হবে ৮শ' ৫০ মার্কিন ডলার কিংবা ৩১ হাজার ৫শ' টাকা। সড়কপথে রেলপথের চেয়ে ৬গুণ বেশি খরচ হবে।
বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ভারত ট্রানজিট দেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। এৰেত্রে বাংলাদেশ এবং নেপাল দু'টি রাষ্ট্রকেই ভারতের সঙ্গে দ্বিপাৰিক চুক্তি করতে হবে।
এখানে ত্রিপৰীয় চুক্তির চেয়ে দ্বিপাৰিক চুক্তিই দু'দেশের জন্য ভাল হবে। ভারতের ত্রিপুরার দৰিণাঞ্চল চট্টগ্রাম পোর্ট থেকে মাত্র ৭৫ কিলোমিটার দূরে। পৰানত্মরে ত্রিপুরার দৰিণাঞ্চল থেকে কলকাতা পোর্ট ১ হাজার ৬শ' ৪৫ কিলোমিটার দূরত্বে।
কলকাতা পোর্ট থেকে ত্রিপুরায় আমদানি পণ্য পাঠাতে পরিবহন খরচের কারণে দাম বেড়ে যায় প্রকৃত মূল্যের কয়েকগুণ। অন্যদিকে চট্টগ্রাম পোর্ট দিয়ে ত্রিপুরায় পণ্য পাঠানো গেলে নামমাত্র পরিবহন খরচ হবে। এসব রম্নটে ভারতকে ট্রানজিট কিংবা ট্রানশিপমেন্ট দিলে বাংলাদেশ যেমন লাভবান হবে তেমনি একই সঙ্গে ভারতের পরিবহন ব্যয় অনেক সাশ্রয় হবে। তবে ট্রানজিট দেয়া হলে উপ-আঞ্চলিক নেটওয়ার্কের অনত্মর্ভুক্ত সব দেশের ভিসা সিস্টেম আরও সহজ করতে হবে। বর্তমানে ভারতের ভিসা পেতে অনেক ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হয়।
ট্রানজিট কার্যকর হলে ভিসা সিস্টেম আরও সহজতর করতে হবে।
বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান নেপাল, ভুটান এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে সহজ যোগাযোগের সেতুবন্ধন হতে পারে। ট্রানজিট না দিয়ে ট্রানশিপমেন্ট দিলে বাংলাদেশ নিজস্ব পরিবহন ব্যবসা গড়ে তুলতে পারবে। ট্রানজিট কিংবা ট্রানশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে তাও কমিয়ে আনতে পারবে। বিশেষত এ ট্রানজিট দু'দেশের জন্যই 'উইন-উইন' সিচু্যয়েশন নিশ্চিত করবে।
বাংলাদেশের মংলা বন্দর ভারত, নেপাল কিংবা ভুটান ব্যবহার করলে সেটি সম্মিলিত বিনিয়োগে আরও আধুনিকায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে সংশিস্নষ্ট এলাকার পণ্য পরিবহন সড়ক লাগসই করে নির্মাণ করতে হবে, যা পৰানত্মরে বাংলাদেশের যোগাযোগ অবকাঠামোতে বিপুল উন্নয়ন সাধন করবে। সড়ক, রেল ও নৌপথে বাংলাদেশ এ এলাকার উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। ভারতের জন্য অধিকতর উপকারে আসবে চট্টগ্রাম পোর্ট এবং নেপাল-ভুটানের জন্য উপকারে আসবে মংলা পোর্ট। মংলা পোর্টের ২০ ভাগ ৰমতা ব্যবহার করা হয়।
বাকি ৮০ ভাগ ৰমতা থেকে যায় অব্যবহৃত। চট্টগ্রাম পোর্টের ৪০ শতাংশ ৰমতা থেকে যায় অব্যবহৃত। অন্যদিকে সিলেট-অষ্টগ্রাম এবং করিমগঞ্জে নতুন করে শক্তিশালী সড়কব্যবস্থা দু'দেশকে মিলে তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশ শুরম্নতেই এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হলে এৰেত্রে অনেক সুবিধা পেত। কিন্তু কথিত ভারতবিরোধিতার কারণে বিগত বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে তৎকালীন জোট সরকার এশিয়ান হাইওয়ের মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে বাংলাদেশকে।
কেবল দু'টি সরকার সম্মত হলেই হবে না মনত্মব্য করে গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশনাল কর্মকা- শুরম্ন করা দরকার। বাংলাদেশ সরকারকে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করে ট্রানজিট দেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। পাঁচ থেকে ছয়টি রম্নটে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলে প্রবন্ধে এসব রম্নট চিহ্নিত করে দেয়া হয়। ভারি পরিবহনের ৰেত্রে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি কিংবা ভারত-বাংলাদেশের যৌথ কোম্পানি পরিবহন ব্যবস্থার দায়িত্ব নিতে পারে।
ট্রানজিটের ৰেত্রে যে নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বলা হচ্ছে সেটি নির্ভর করবে ট্রানজিটের বিভিন্ন কার্যক্রমের ওপর।
পোর্ট কিংবা বন্দরে কড়া পরিদর্শন, স্ক্যানিং এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে নিরাপত্তা শঙ্কা দূর করা সম্ভব।
বর্তমান মহাজোট সরকারের বিরম্নদ্ধে ভারতপ্রীতির অভিযোগে বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের সমালোচনার জবাবে বিশিষ্টজনদের মধ্যে নানান প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তাঁদের মতে, বর্তমান সরকার ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী উলফার বিরম্নদ্ধে অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে দীর্ঘদিনের অবিশ্বাস দূর করেছে। একই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে সম্ভাব্য হামলা থেকে দেশকে বাঁচিয়েছেন দ্বিতীয় মেয়াদে ৰমতায় আসা শেখ হাসিনা প্রশাসন। গত বছর শেখ হাসিনার ভারত সফর দু'দেশের সম্পর্কে আস্থা ও বিশ্বাসের নতুন দিগনত্ম উন্মোচন করেছে।
ট্রানজিট কিংবা পোর্ট ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পদৰেপের বিরম্নদ্ধে যাঁরা দেশ বিক্রির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলছেন, তাঁরা হীনরাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিভ্রানত্মি ছড়াচ্ছেন। বিশিষ্ট নাগরিকদের অনেকেই মনে করেন, পোর্টে আমাদের ম্যানেজমেন্ট থাকলে কিভাবে দেশ বিক্রি হয়ে যাবে_ বিরোধী দলের সেই প্রশ্নের জবাব দেয়া উচিত।
এক আলোচনায় অংশ নিয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান এমপি তথ্যপূর্ণ বক্তব্যে বলেন, সরকারবিরোধী মহল পলিটিক্যাল গেইনের জন্য মিসট্রাস্ট তৈরি করছে। পাকিসত্মান জঙ্গীদের প্রশ্রয় দেয়ার দায়ে আজ একের পর এক আক্রমণের শিকার হচ্ছে। বিগত সরকার বাংলাদেশে যেভাবে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রশ্রয় দিয়েছিল তাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ নিয়েও শঙ্কার কারণ ছিল।
বর্তমান সরকার উলফার বিরম্নদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে ভারতের সঙ্গে আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এ সরকার সামান্যতম জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে কোথাও কোন চুক্তি করবে না। আপনারা শেখ হাসিনাকে চেনেন না-এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান এমপি বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ। তাঁর চেয়ে দেশপ্রেম কার বেশি আছে-প্রশ্ন করে তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের মুখের ওপর শেখ হাসিনাই বলেছিলেন, ৫০ বছরের গ্যাস রিজার্ভ রেখে তবেই গ্যাস রফতানির কথা চিনত্মা করব। এমন কথা কেবল বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার পৰেই বলা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের দূরদৃষ্টির অভাবে এশিয়ান হাইওয়ে ও সাবমেরিন কেবলের মৌলিক অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ। '৭৫-এর পর বাংলাদেশ রেলপথের দৈর্ঘ্য সম্প্রসারিত নয়, কেবল সঙ্কুচিত হয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন হলে বর্তমান সরকারের ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা নিয়ে সংশয়ের প্রশ্নে তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তন হলে বাংলাদেশে-ভারত সম্পর্কের ৰেত্রে হয়ত নীতি পরিবর্তন হতে পারে। তবে দেশের মানুষ বাংলাদেশ-ভারত যৌথ ঘোষণা বাস্তবায়নে কাঙ্ৰিত সুবিধা পেলে কেউই আর এসব বাতিল করতে পারবে না। সাহসী ও প্রতিবাদী ভূমিকা ছিল তাঁর সব ক্ষেত্রে
ট্রানজিটে বছরে আয় হবে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা
সম্পূরক চার্জশীটে হারিছ সাকা বাবর মুজাহিদ আসামি
সংলাপে বিএনপি না এলেও সুপারিশ চূড়ান্ত করবে ইসি
ফ্লাইট কমিয়ে দিয়েছে বিমান_ সুযোগ নিচ্ছে বিদেশী এয়ারলাইন্স
ইস্কাটনে ডাকাতির ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি
শ্যামপুরে গৃহকর্মীকে হত্যা, গেণ্ডোরিয়ায় যুবক খুন
সংস্কৃতি সত্যসুন্দরের পতাকা উর্ধে তুলে ধরে_ শিল্পকলায় সেমিনার
ভৈরবে গুলিতে আহত রহিমা র্যাবের দুই মামলায় হাসপাতাল থেকে কারাগারে
পাঁচ শিক্ষাবিদকে জাতীয় অধ্যাপক নিয়োগে রাষ্ট্রপতির সম্মতি
পুঁজিবাজার পরিস্থিতি নিয়ে ২৩ জুন সংসদীয় কমিটির বৈঠক
প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা বিনিময় বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ ভারতীয় সেনাপ্রধানের
রাজনীতিকদের দুর্বলতায় তৃতীয় শক্তি যেন ক্ষমতা নিতে না পারে, সজাগ থাকুন
বিদ্যুতে ৭শ' কোটি ডলার সৌদি বিনিয়োগ চায় সরকার
ভ্রাম্যমাণ আদালতে হরতালকারীদের শাস্তি দেয়া অবৈধ ॥ খন্দকার মাহবুব
জগন্নাথের ১৬৮ শিক্ষক চার মাস বেতন পাচ্ছেন না
বিরোধী দলকে সংসদে এসে কথা বলার আহ্বান
সাবধানবাণী: বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এই সাইটের কোন উপাদান ব্যবহার করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ এবং কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
ট্রানজিটে বছরে আয় হবে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা
নিশ্চিত করবে বিপুল কর্মসংস্থান ॥ গবেষণা প্রবন্ধ
মামুন-অর-রশিদ ॥ ট্রানজিট কিংবা ট্রানশিফমেন্ট দিয়ে বছরে বাংলাদেশের আয় হবে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির চেহারা পাল্টে দেবে। নিশ্চিত করবে বিপুল কর্মসংস্থান ও দেশের সমৃদ্ধি। সংশিস্নষ্ট এলাকার জীবনধারণ মানের উন্নয়ন ঘটাবে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল আর ভুটানের মধ্যে এ উপ-আঞ্চলিক ট্রানজিটের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের বিভিন্ন মহলের নানামুখী প্রতিক্রিয়ার মুখে এমন তথ্য তুলে ধরেছে দেশের একটি নীতিনির্ধারণী গবেষণা প্রতিষ্ঠান। 'বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পস্নানার্স'র নিয়মিত প্রকাশনায় 'রিজিওনাল কানেক্টিভিটি : অপচুনিটিস ফর বাংলাদেশ টু বি এ্যা ট্রান্সপোর্ট হাব' শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধে বছরে তিন হাজার ৫শ' কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনার কথা বলা হয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নীতিনির্ধারকদের অভিমত_ ট্রানজিট কিংবা প্রতিবেশী দেশকে পোর্ট ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে পৃথিবীর কোন দেশ লোকসান গুনেছে এমন নজির নেই। বরং মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন করে প্রাণসঞ্চারিত হবে। বিশেষজ্ঞরা জাতীয় স্বার্থে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার এ পদৰেপ নিয়ে রাজনৈতিক ইসু্য তৈরির চেষ্টা থেকে বিরোধী দলকে বিরত থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধানত্ম গ্রহণে সময়ৰেপণে ভারত বিকল্প হিসেবে কালাদান বন্দর তৈরির প্রকল্প গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
'রিজিওনাল কানেক্টিভিটি : অপচর্ুনিটিস ফর বাংলাদেশ টু বি এ্যা ট্রান্সপোর্ট হাব' শীর্ষক প্রবন্ধটি ড. এম রহমতউলস্নাহর লেখা।
এ প্রবন্ধে ট্রানজিটের নানা দিক, ট্রানজিট নাকি ট্রানশিপমেন্ট কোন্টি প্রাধান্য পাওয়া উচিত, বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিসত্মারিত তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়। গবেষণাধর্মী দীর্ঘ এ প্রবন্ধে তিনি আঞ্চলিক সম্পৃক্ততাহীনতার পরিণতি, আঞ্চলিক সম্পৃক্ততায় বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য সুযোগসমূহ, যেভাবে আঞ্চলিক সম্পৃক্ততা জোরদার হতে পারে, উপ-আঞ্চলিক কাঠামো, যুতসই অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিবর্তিত প্রেৰাপটে নতুন কৌশল, আঞ্চলিক-দ্বিপাৰিক উদ্যোগসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি বিসত্মারিত তথ্যচিত্র তুলে ধরেন। ড. এম রহমতউলস্নাহ এ প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে দেয়া বক্তব্যে বলেছেন, দীর্ঘদিনের অনাস্থা-অবিশ্বাস দূর করে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে নতুন দিগনত্ম উন্মোচনে বর্তমান সরকারের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। রিজিওনাল কানেক্টিভিটি বিষয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ড. এম রহমতউলস্নাহর লেখা গবেষণাধর্মী তথ্যবহুল এ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ-ভারতের সঙ্গে নৌ, সড়ক ও রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে।
তবে তিনি পণ্য পরিবহনে রেলপথের ওপর জোর দিয়ে বলেন, এতে খরচ হ্রাস পাবে। সড়কপথে ২০ ফুট দীর্ঘ কন্টেনার দিলস্নী থেকে ঢাকা আসতে সময় লাগবে ৩০ থেকে ৪৫ দিন এবং খরচ হবে ২ হাজার ৫শ' মার্কিন ডলার বা ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। পৰানত্মরে রেলপথে দিলস্নী হয়ে ঢাকা আসতে সময় লাগবে মাত্র ৪ থেকে ৫ দিন। এতে খরচ হবে ৮শ' ৫০ মার্কিন ডলার কিংবা ৩১ হাজার ৫শ' টাকা। সড়কপথে রেলপথের চেয়ে ৬গুণ বেশি খরচ হবে।
বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ভারত ট্রানজিট দেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। এৰেত্রে বাংলাদেশ এবং নেপাল দু'টি রাষ্ট্রকেই ভারতের সঙ্গে দ্বিপাৰিক চুক্তি করতে হবে।
এখানে ত্রিপৰীয় চুক্তির চেয়ে দ্বিপাৰিক চুক্তিই দু'দেশের জন্য ভাল হবে। ভারতের ত্রিপুরার দৰিণাঞ্চল চট্টগ্রাম পোর্ট থেকে মাত্র ৭৫ কিলোমিটার দূরে। পৰানত্মরে ত্রিপুরার দৰিণাঞ্চল থেকে কলকাতা পোর্ট ১ হাজার ৬শ' ৪৫ কিলোমিটার দূরত্বে।
কলকাতা পোর্ট থেকে ত্রিপুরায় আমদানি পণ্য পাঠাতে পরিবহন খরচের কারণে দাম বেড়ে যায় প্রকৃত মূল্যের কয়েকগুণ। অন্যদিকে চট্টগ্রাম পোর্ট দিয়ে ত্রিপুরায় পণ্য পাঠানো গেলে নামমাত্র পরিবহন খরচ হবে। এসব রম্নটে ভারতকে ট্রানজিট কিংবা ট্রানশিপমেন্ট দিলে বাংলাদেশ যেমন লাভবান হবে তেমনি একই সঙ্গে ভারতের পরিবহন ব্যয় অনেক সাশ্রয় হবে। তবে ট্রানজিট দেয়া হলে উপ-আঞ্চলিক নেটওয়ার্কের অনত্মর্ভুক্ত সব দেশের ভিসা সিস্টেম আরও সহজ করতে হবে। বর্তমানে ভারতের ভিসা পেতে অনেক ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হয়।
ট্রানজিট কার্যকর হলে ভিসা সিস্টেম আরও সহজতর করতে হবে।
বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান নেপাল, ভুটান এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে সহজ যোগাযোগের সেতুবন্ধন হতে পারে। ট্রানজিট না দিয়ে ট্রানশিপমেন্ট দিলে বাংলাদেশ নিজস্ব পরিবহন ব্যবসা গড়ে তুলতে পারবে। ট্রানজিট কিংবা ট্রানশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে তাও কমিয়ে আনতে পারবে। বিশেষত এ ট্রানজিট দু'দেশের জন্যই 'উইন-উইন' সিচু্যয়েশন নিশ্চিত করবে।
বাংলাদেশের মংলা বন্দর ভারত, নেপাল কিংবা ভুটান ব্যবহার করলে সেটি সম্মিলিত বিনিয়োগে আরও আধুনিকায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে সংশিস্নষ্ট এলাকার পণ্য পরিবহন সড়ক লাগসই করে নির্মাণ করতে হবে, যা পৰানত্মরে বাংলাদেশের যোগাযোগ অবকাঠামোতে বিপুল উন্নয়ন সাধন করবে। সড়ক, রেল ও নৌপথে বাংলাদেশ এ এলাকার উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। ভারতের জন্য অধিকতর উপকারে আসবে চট্টগ্রাম পোর্ট এবং নেপাল-ভুটানের জন্য উপকারে আসবে মংলা পোর্ট। মংলা পোর্টের ২০ ভাগ ৰমতা ব্যবহার করা হয়।
বাকি ৮০ ভাগ ৰমতা থেকে যায় অব্যবহৃত। চট্টগ্রাম পোর্টের ৪০ শতাংশ ৰমতা থেকে যায় অব্যবহৃত। অন্যদিকে সিলেট-অষ্টগ্রাম এবং করিমগঞ্জে নতুন করে শক্তিশালী সড়কব্যবস্থা দু'দেশকে মিলে তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশ শুরম্নতেই এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হলে এৰেত্রে অনেক সুবিধা পেত। কিন্তু কথিত ভারতবিরোধিতার কারণে বিগত বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে তৎকালীন জোট সরকার এশিয়ান হাইওয়ের মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে বাংলাদেশকে।
কেবল দু'টি সরকার সম্মত হলেই হবে না মনত্মব্য করে গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশনাল কর্মকা- শুরম্ন করা দরকার। বাংলাদেশ সরকারকে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করে ট্রানজিট দেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। পাঁচ থেকে ছয়টি রম্নটে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলে প্রবন্ধে এসব রম্নট চিহ্নিত করে দেয়া হয়। ভারি পরিবহনের ৰেত্রে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি কিংবা ভারত-বাংলাদেশের যৌথ কোম্পানি পরিবহন ব্যবস্থার দায়িত্ব নিতে পারে।
ট্রানজিটের ৰেত্রে যে নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বলা হচ্ছে সেটি নির্ভর করবে ট্রানজিটের বিভিন্ন কার্যক্রমের ওপর।
পোর্ট কিংবা বন্দরে কড়া পরিদর্শন, স্ক্যানিং এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে নিরাপত্তা শঙ্কা দূর করা সম্ভব।
বর্তমান মহাজোট সরকারের বিরম্নদ্ধে ভারতপ্রীতির অভিযোগে বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের সমালোচনার জবাবে বিশিষ্টজনদের মধ্যে নানান প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তাঁদের মতে, বর্তমান সরকার ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী উলফার বিরম্নদ্ধে অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে দীর্ঘদিনের অবিশ্বাস দূর করেছে। একই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে সম্ভাব্য হামলা থেকে দেশকে বাঁচিয়েছেন দ্বিতীয় মেয়াদে ৰমতায় আসা শেখ হাসিনা প্রশাসন। গত বছর শেখ হাসিনার ভারত সফর দু'দেশের সম্পর্কে আস্থা ও বিশ্বাসের নতুন দিগনত্ম উন্মোচন করেছে।
ট্রানজিট কিংবা পোর্ট ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পদৰেপের বিরম্নদ্ধে যাঁরা দেশ বিক্রির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলছেন, তাঁরা হীনরাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিভ্রানত্মি ছড়াচ্ছেন। বিশিষ্ট নাগরিকদের অনেকেই মনে করেন, পোর্টে আমাদের ম্যানেজমেন্ট থাকলে কিভাবে দেশ বিক্রি হয়ে যাবে_ বিরোধী দলের সেই প্রশ্নের জবাব দেয়া উচিত।
এক আলোচনায় অংশ নিয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান এমপি তথ্যপূর্ণ বক্তব্যে বলেন, সরকারবিরোধী মহল পলিটিক্যাল গেইনের জন্য মিসট্রাস্ট তৈরি করছে। পাকিসত্মান জঙ্গীদের প্রশ্রয় দেয়ার দায়ে আজ একের পর এক আক্রমণের শিকার হচ্ছে। বিগত সরকার বাংলাদেশে যেভাবে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রশ্রয় দিয়েছিল তাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ নিয়েও শঙ্কার কারণ ছিল।
বর্তমান সরকার উলফার বিরম্নদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে ভারতের সঙ্গে আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এ সরকার সামান্যতম জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে কোথাও কোন চুক্তি করবে না। আপনারা শেখ হাসিনাকে চেনেন না-এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান এমপি বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) ভিন্ন প্র।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।