ধুর শুরতেই বলে নেই! এই পোষ্টের মধ্যে কিঞ্চিত বিজ্ঞাপন মূলক কথা-বার্তা আছে, যদিও চেষ্টা করেছি পাঠককে বিরক্ত না করতে এবং সবার কাছে কিছু অষ্পষ্ট বিষয় তুলে ধরতে। ভূল ক্ষমা করে সুন্দরটুকু দেখবেন সেই প্রত্যাশা রইল।
ব্লগে বিভিন্ন সময় দেখা যায় অনেকই পোষ্ট করেন যে ডোমেই এবং হোস্টিং কিনতে কি কি বিষয় লক্ষ্য করা উচিত। এখানে আমি তার কিছু অংশ তুলে ধরবার চেষ্টা করছি। যদিও আসলেই পূর্ণাঙ্গভাবে সব কিছু তুলে ধরা বা আলোচনা করা সম্ভব নয়, তবুও যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করব।
ডোমেইন রেজিষ্ট্রেশনঃ
ডোমেইন রেজিষ্ট্রেশনের ক্ষেত্রে প্রথমেই যেই সমস্যা দেখা দেয় তা হল কি নাম হবে! মনে রাখবেন আপনার প্রতিষ্ঠানের সাথে সঙ্গতিপুর্ণ নাম ব্যবহার করাই উচিৎ। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখাযায় যে কাঙ্খিত নামের ডোমেইনটি কেনা হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে যেই কাজটি করনিয় তা হল সাথে কিছু লাগিয়ে দেওয়া যা আপনাকে ডোমেইন পেতে সহোযগিতা করবে, কিন্তু মনে রাখবেন এমন কিছু যোগ করবেন না যা মানুষের মনে রাখতে কষ্ট হয়। উদাহরণ স্বরুপ, ধরুন আপনি xyz.com কিনতে চান, কিন্তু তা হয়ত ইতিমধ্যেই আছে। তাহলে তার সথে bd যোগ করে xyzbd.com কিনতে পারেন।
আপনি ডোমেইন ইন্টানেটে বিভিন্ন সাইট থেকে কিনতে পারেন। গো ড্যাডি ডট কম এ ক্ষেত্র অনেক নির্ভরশীল একটি সাইট। কিন্তু এখানে সমস্যা হল ক্রেডিট কার্ড লাগবে। এক্ষেত্র সহজ সমাধান হল দেশি কোন কম্পানির থেকে কিনে নেয়া। কিন্তু সাবধান! কারণ গো ড্যাডি ডট কম যেমন আপনাকে ডোমেইন কন্ট্রোল প্যানেল দিবে, দেশের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই আপনাকে এটি দিবে না।
তারা নানা তাল-বাহানা করে। অনেকেই বলেন যে ডোমেইন কন্ট্রোল প্যানেল দরকারী নয়। কিন্তু কথাটা পুরোপুরি মিথ্যা বা ভূল। কারণ আপনি যদি ডোমেইন ট্রান্সফার করতে চান, বা নতুন হোস্টিংএ যেতে চান, তাহলে আপনার ডোমেইন কন্ট্রোল প্যানেল থাকতেই হবে। আর কোম্পানিগুলো যদি আপনাকে ডোমেইন কন্ট্রোল প্যানেল না দেয়, তাহলে আপনি এক কথায় তাদের হাতে বন্দি।
দেশে হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এই সেবাটি দেয়। মনে রাখবেন, ডোমেইন কন্ট্রোলপ্যানেল এবং হোস্টিং কন্ট্রোল প্যানেল পুরাই আলাদা জিনিস। সবাই সাধারণত হোস্টিং কন্ট্রোলপ্যানেল দেয়, ডোমেইনেরটা দেয় না।
আপনি ডট কম ডট বিডি কিনতে পারেন, কিন্তু এর জন্য আপনাকে বিটিআরসির নির্ধারিত ফরম পূরণ করে ফিস দিতে হবে, এবং কিছু ঝামেলাতো পোহাতে হবেই (যেহেতু এটি সরকারি)।
অনেকেই আবার কম দামি ডোমেইনের দিকে ঝুকেন।
কয়েকদিন আগে আমাকে একজন ফোন করে বলল সে আমার কাছ থেকে ডোমেইন কিনবে, কিন্তু সে পরে যেই দামের কথা বলল তাতে আমার পক্ষে কেন, কারও পক্ষেই দেওয়া সম্ভব নয়। তার দাবি সে একটি ওয়েব সাইটে দেখেছে। এর পর তার কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে দেখি যে তারা ঐ দামে ডোমেইন অফার করেছে ঠিকই, কিন্তু আসলে তা হোস্টিং কিনলে কার্যকর হবে, এবং হোস্টিংএর দাম রেখেছে হাকিয়ে। সুতরাং সাধু সাবধান! আবার অনেকেই বলে ৩০-৬০ ডে মানি ব্যাক গ্যারান্টি। কিন্তু কেউই এটা বলে না যে শুধু হোস্টিংএর ক্ষেত্রে।
কারণ ডোমেইন একবার রেজিষ্ট্রেশন করলে তার টাকা আর ফেরত দেওয়া হয় না। এবং তখন দেখাযায় টাকা ফেরত নিতে গেলে ডোমেইনের দাম কম্পানিগুলো অনেক দাবি করে বসে।
হোস্টিং:
১. হোস্টিং নির্বাচন করা কিছুটা কঠিন বিষয়। এটি অনেক বিষয়ের উপর নির্ভর করে। প্রথমত সাইজ।
কত মেগা বা কত গিগার হোস্টিং নিবেন তা ঠিক করতে হবে আপনাকেই। অনেক সময় দেখা যায় আপনার ওয়েব সাইটটি হবে অনেক ছোট, কিন্তু হয়ত আপনার মেইল দরকার হবে অনেক। এক্ষেত্রে মনে রাখবেন আপনার কেনা হোষ্টিংএর মেইল সংখ্যা যাই হোক না কেন, সব মেইল কিন্তু আপনার কেনা হোষ্টিংএর মধ্যেই থাকবে। আর একটু ব্যাখ্যা করে বলি। আপনি কিনলেন ১০০মেগার হোষ্টিং, এবং সাথে পেলেন আনলিমিটেড ইমেইল।
এই আনলিমিটেড দেখে খুশি হবার কিছুই নেই। কারণ আপনার সব মেইল জমা হবে এই ১০০ মেগার মধ্যেই। তবে এই ক্ষেত্রে সহজ সমাধান গুগল এ্যাপস। আমি নিজে যখন ডোমেইন হোস্টিং বিক্রয় করি, তখন আমার ক্রেতাকে গুগুল এ্যাপস সেটআপ করে দেই (ফ্রি)।
এর সুবিধা হল আপনি আপনার হোস্টিং এর বাইরে মেইল পাবেন কিন্তু মেইল এড্রেস হবে ফরম্যাটে।
প্রতি মেইলে পাবেন প্রায় ৫গিগা করে। তাই এটা আপনার হোস্টিংএর উপর কোন প্রভাব ফেলবেনা।
২. আরও দেখতে হবে আপনি কোন সার্ভারে হোস্টিং কিনছেন। সার্ভার সাধারণত উইন্ডোজ বা লিন্যাক্স হয়ে থাকে। এএসপি ফাইল সহ কিছু ফাইল ফরম্যাট লিন্যাক্সে সাপোর্ট করে না।
কিন্তু পিএইচপি ইত্যাদি সুন্দর ভাবেই চলে। তবে সাধারণত সবাই লিনাক্সই ব্যবহার করে।
৩. সাবডোমেইন, পার্কড ডোমেইন এবং এডঅন ডোমেইন কতটি করে পাচ্ছেন এটিও একটি গুরুত্ব পূর্ণ বিষয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে কমদামে হোস্টিং নিতে গেলে এইগুলা পাওয়াই যায় না।
৪. সার্ভার আপ টাইম! সবাই আপনাকে বলবে ৯৯.৯% আপটাইম।
আপনার সাইট যত বেশি আপটাইমের হবে, তত ভাল। আমি আমার সব ক্লায়েন্ট কে হোস্টিং নেবার আগে আমার কাছ থেকে একটি সাবডোমেইন নিতে বলি যাতে করে সে আমার সব ফিচারস দেখে নিতে পারে কেনার আগেই। সার্ভার লোকেশন, সার্ভার পিসির স্পিড/কনফিগারেশন ইত্যাদিও গুরুত্বপূর্ণ।
৫. দাম! আমরা সব সময় কমদামিটার দিকেই ঝুকি! দয়া করে ডোমেইন এবং হোস্টিংএর ব্যপারে এমন করবেন না। একটু দাম দিয়ে কিনুন, কিন্তু কম দামি কিনে পস্তাবেন না।
এতে পরে আপনি নিজেই ঝামেলায় পড়তে পারবেন।
৬. সাপোর্টঃ মেইল বা ফোন সাপোর্ট একটি গুরুত্ব পূর্ণ বিষয়। এটি মাথায় রাখতেই হবে।
আমি নিজে যখন আমার ডোমেইন এবং হোষ্টিং কিনি তখন আমি অনেক কিছুই জানতাম না। কিন্তু কিছু দিন আগে নিজের ডোমেইন রেজিষ্ট্রেশন এবং হোষ্টিং এর ব্যবসা শুরু করতে গিয়ে বুঝেছি যে কত গুলো ভূল করেছি।
কষ্ট লাগে যখন দেখি বিদেশী সাইটগুলি যেই শয়তানি না করে, আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠান গুলি সেই শয়তানি করে ছাড়ে। এইগুলি নিয় খুব ক্ষুব্ধ হয়ে আমার চেনা একজনকে বলছিলাম, সে আমাকে বলল, তুমি ভাল থাক। প্রচার করতে থাক, হয়ত আরও অনেকেই তখন এই সমস্যা গুলি বাদ দিয়ে সার্ভিস দিবে। আমার পোষ্টের মূল উদ্দেশ্য আমার নিজের ব্যবসার প্রচার বা প্রসার নয়। মূল উদ্দেশ্য হল সবাইকে সতর্ক করা।
যাই করবেন বুঝে করবেন। আর আপনাদের যেকোন প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে করতে পারেন। আমি উত্তর দেবার চেষ্টা করব। আর সরাসরি কথা বলতে চাইলে ০১৯১৪৪৭৫৫৩৪ বা ০১৮২০৫৮৩২২৮ বা ০১৬৮০০৮০২৯১ বা আমার অফার করা প্যাকেজ সমূহ দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন ।
আর এই পোষ্টের মাধ্যমে যদি কারও কোন ক্ষতি করে থাকি বা কাউকে আঘাত করে থাকি, তাহলে ক্ষমা করবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।