আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিজেই বানাই হোম থিয়েটার (নন-টেকি দের জন্য টেকি পোস্ট)

মুভি দেখতে ভালোবাসেনা এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন, হোক তা পথের পাঁচালি বা পাইরেটস অফ ক্যারাবিয়ান। অনেক বছর আগে যখন ডিভিডি কিনতাম বা ভাড়া নিতাম তখন বুঝেছিলাম দুই ধরনের দর্শক আছে, কেউ কেউ খুজেন এক ডিভিডি তে অনেক মুভি আবার কেউ কেউ খুজেন এক ডিভিডি তে এক মুভি। মুভির সাইজের উপর নির্ভর করে তার কোয়ালিটি। অনেক দামি লেটেস্ট হোম থিয়েটারে খারাপ কোয়ালিটির মুভি দেখা আর নরমাল টিভিতে দেখার মধ্যে মুলত কোন পার্থক্য নেই, কাজেই হোম থিয়েটার বানানো বা কিভাবে অপটিমাম সেটাপ করতে হবে তা জানার আগে সোর্স বা ডিস্ক সম্পর্কে জানা বেশি জরুরি। আসুন আগে আমরা মুভির মিডিয়া সম্পর্কে একটু আলোচনা করি।

এরপর আমরা প্রয়োজনিয় হার্ডওয়ার ও তাদের সম্ভাব্য কানেকশন দেখবো। মুভি সোর্স: ছোট বেলায় আমাদের মুভি দেখার একমাত্র ব্যাবস্থা ছিল বিটিভিতে মুভি অব দা উইক এ বস্তা পচা সাদাকালো মুভি দেখা, তখন অবশ্য বুঝতাম না কারন আমাদের টিভিটাও ছিল সাদাকালো , পরবর্তিতে বাসায় কালার টিভি আর ভিসিপির আগমন। দোকান থেকে ১৫টাকা করে ভি-এইচ-এস ক্যাসেট ভাড়া আনতাম, ঝকঝকে ছবি আর শব্দ, মনে হতো আহা কত সুন্দর। বেশ কিছুবছর পর ভিসিডি আসলো বাজারে, দেখার ব্যাবস্থা একমাত্র কম্পিউটারে কারন ভিসিডি প্লেয়ার সবার ছিলো না। ভিসিডিতে মুভি দেখে মনে হলো হায় হায় এতদিন কিভাবে ক্যাসেটে দেখতাম ! এইভাবেই বিবর্তন, ভি-এইচ-এস থেকে ভিসিডি, সেখান থেকে ডিভিডি, তারপর ব্লুরে চলে আসলো।

ভিএইচএস: ভিএইচএস ক্যাসেটে প্যাল অথবা এনটিএসসি ফরম্যাটে (কিছু কিছু দেশে সেকাম ফরম্যাটে) ম্যাগনেটিক টেপে এনালগ ভাবে ছবি ও শব্দ থাকে। ছবির রেসুলেশন ২৩০পি (হরাইজন্টাল ২৩০ লাইন) যা কিনা ডিজিটাল ৩৩৩ X ৪৮০ পিক্সেলের কাছাকাছি। শব্দ মোনো ফরম্যাটে (১ চ্যানেল) থাকতো। ভিসিডি: সাধারন সিডি বা কমপ্যাক্ট ডিস্কে এমপিইজি-১ ফরম্যাটে ভিডিও ও শব্দ থাকে, রেজুলেশন ৩৫২X২৮৮ পিক্সেল, সেকেন্ডে ডাটা ট্রান্সফার রেট ১১৫০ কিলোবিট, শব্দ স্টেরিও ফরম্যাটে (২ চ্যানেল) এমপিইজি ১ লেয়ার ২ পদ্ধতিতে রেকর্ড করা হয়। ডিভিডি: ডিভিডি তে ছবির ও শব্দের মান অনেক উন্নত করা হয় মুভি ইন্ডাস্ট্রির জন্য, ছবির রেজুলেশন ৭২০X৫৭৬ পিক্সেল (৪৮০পি অথবা ৫৬০পি ), শব্দ একই সাথে কয়েক ফরম্যাটে থাকে যেমন ডলবি সারাউন্ড ২ চ্যানেল, ডলবি ডিজিটাল ৬ চ্যানেল (৫.১), ডিটিএস ৬ চ্যানেল ইত্যাদি, কিছু কিছু মুভির ভিন্ন ভাষাতেও শব্দ থাকে।

বোনাস হিসাবে আরো থাকে কয়েক ভাষার সাবটাইটেল। ডিভিডিকে মনে করা হত সবচেয়ে ভালো কোয়ালিটির মুভি ধারনের মাধ্যম, কারন মুলত ২ টা, প্রথমত ডিজিটাল রাইট ম্যানেজমেন্ট প্রয়োগ যার ফলে ডিভিডি মুভি কপি করা সম্ভব না (বিভিন্ন রিপার সফটওয়ার দিয়ে পরে যদিও সেটা করে ফেলা হয়েছে) আর দ্বিতিয়ত ডিস্কের বিশাল ধারন ক্ষমতা (প্রায় ৯ গিগাবাইট স্পেস ডিভিডি ৯ ফরম্যাটে) যার ফলে ছবির ও শব্দের মান থিয়েটারের কাছাকাছি আনা সম্ভব হয়েছিল। ভিএইচএস এর পরে মুভি ইন্ডাস্ট্রি গুলি এলডি (বিশালাকার ওপটিকাল ডিস্ক, ওনেকটা এলপি রেকর্ডের মত) তে মুভি রিলিস করতো, পরবর্তিতে ডিভিডি তে চলে আসে তারা (কম ধারন ক্ষমতা ও সহজে কপি করা যায় বিধায় ভিসিডিতে খুব কমই মুভি রিলিজ হতো)। ব্লুরে ডিস্ক: হাই ডেফিনেশন টেলিভিশন ও ডিসপ্লে আসার পর অনেক দিন যাবত দুইটা ফরম্যাটের মধ্যে টানাটানি চলছিল, ব্লুরে এবং এইচডি-ডিভিডি, অবশেষে ব্লুরে স্ট্যান্ডার্ড হিসাবে মনোনিত হয়। ব্লু-রে ডিস্কে সিন্গেল লেয়ারে ২৫ গিগাবাইট (যা কিনা সিডিতে ৭৫০ মেগা ও ডিভিডি তে ৪.৫ গিগা) ও ডুয়েল লেয়ারে ৫০ গিগাবাইট (ডিভিডিতে ৯ গিগা) স্পেস থাকে।

এই বিশাল ধারন ক্ষমতা ব্যাবহার করে ভিডিওর রেজুলেশন ১৯২০X১০৮০ পিক্সেল (১০৮০ পি)ও শব্দের মান ডলবি এইচডি ও অন্যান্য ফরমেটে রেকর্ড করা সম্ভব হয়। এই রেজুলেশনের ভিডিওকে বলা হয় এইচডি ভিডিও। সিডি/ডিভিডি/ব্লুরে রিপ: ইন্টারনেটে পাইরেটেড মুভি আমরা যা ডাউনলোড করি তা অরিজিনাল ডিস্ক থেকে স্পেশাল সফটওয়ারের মাধ্যমে কপি করা, এটাকে বলা হয় রিপ কপি, কোয়ালিটি নির্ভর করে কোন ডিস্ক থেকে রিপ করা তার উপর। রিপ করার সময় সাইজ ছোট করার জন্য অনেক সময় কোয়ালিটি বা রেজুলেশন কমিয়ে দেয়া হয়, কখন বা কম্প্রেশন বেশি করার ফলে কোয়ালিটি কমে যায়। কিছু কিছু রিপে সাউন্ডের বিভিন্ন ট্রাক বাদ দেয়া হয়।

ভালো রিপ মুভি কোনটা নামাবেন নেট থেকে তা নির্ভর করছে আপনার সেটাপের উপর। এইচডি কোয়ালিটি (৭২০ পি) সাথে ডলবি বা ডিটিএস ৬ চ্যানেল শব্দ পেতে চাইলে ৮ থেকে ১২ গিগা বা তার বেশি সাইজের ফাইল হবে একটা মুভির। এইচডি ১২৮০পি হলে সাইজ আরো বড় হয়ে যাবে। সারাউন্ড শব্দ: উপরে বিভিন্ন মিডিয়া সম্পর্কে জানলাম, এখন আসুন আমরা শব্দ নিয়ে আলোচনা করি। ভিডিও ভালো হবে রেজুলেশন বেশি হলেই, কিন্তু শব্দের অনেক ব্যাপার আছে যা আমরা অনেকেই খেয়াল করি না বা জানিনা।

ডিভিডি, ব্লুরে বা রিপ করা ফাইল চালালে কমপক্ষে ডলবি ডিজিটাল ৫.১ বা ডিটিএস চালানোর চেষ্টা করা উচিত (ধরে নিচ্ছি আপনার সারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেম আছে) এই ধরনের সাউন্ড ট্রাকে আপনি রিয়েলিস্টিক এফেক্ট পাবেন, সামনের শব্দ সামনে থেকে এবং পেছনের শব্দ পেছন থেকে আসবে, পাশেরগুলোও একইভাবে পাশে পাবেন। উধাহারন: ধরুন নায়কের পেছন থেকে কেউ রিভলবারের সেফটি অফ করলো, এই ক্লিক শব্দটা আপনি আপনার পেছন থেকে শুনতে পারবেন, আবার মনে করুন মাথার উপর দিয়ে একটা স্টেল্থ বিমান চলা গেলো তখন শব্দ টা পেছন থেকে শুরু করে সামনে চলে যাবে ছবির সাথে মিল রেখে। একই মুভি সাধারন স্টেরিও সাউন্ডে দেখা আর ডলবি বা ডিটিএস এ দেখার মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য (অনেকটা সাদাকালো টিভিতে এভাটার দেখার মতো ) তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম মোটামোটি একটা হোম থিয়েটার বানাতে হলে তার ২ টা কোয়ালিটি থাকা লাগবে। ১. এইচডি বা সমমানের ডিসপ্লে বা টিভি। ২. সারাউন্ড সাউন্ড স্পিকার সিস্টেম।

১. এইচডি বা সমমানের ডিসপ্লে বা টিভি: এখনকার বেশিরভাগ এলসিডি টিভিই এইচডি রেজুলেশন সাপোর্ট করে, যদি আপনি তেমন ভাগ্যবান কেউ হন তাহলে তো চিন্তাই নাই, ভালো মতো কানেকশন পার্ট টা দেখুন নীচে। যারা কম্পিউটারে মুভি দেখেন তারা দেখুন মনিটরের রেজুলেশন কতো সাপোর্ট করে। এখনকার বড়ো (১৭+) এলসিডি মনিটর গুলা এইচডি রেজুলেশন সাপোর্ট করে ভালোভাবেই। এইচডি মুভি দেখতে ভিএলসি প্লেয়ার ব্যাবহার করতে পারেন। ২. সারাউন্ড সাউন্ড স্পিকার সিস্টেম: আপনার বাসার টিভিতে কখনোই ডলবি বা ডিটিএস ৬ চ্যানেল শব্দ পাবেন না।

এই শব্দ শোনার জন্য রিসিভার প্রয়োজন। এছাড়াও এনালগ সাউন্ড আউটপুট নিয়ে নরমাল পিসি স্পিকারে শোনা সম্ভব। রিসিভার: যদি আপনি সেইরকম ভাগ্যবান হন যার একটা এলসিডি/প্লাজমা টিভি আর একটা রিসিভার আছে তাহলে এই পোস্ট পড়া আপনার জন্য বৃথা, কিন্তু তারপরো কানেকশন পার্ট টা একটু দেখে নিয়েন। একটা ৫.১ রিসিভারে বিভিন্ন ধরনের সাউন্ড ইনপুট থাকে আর থাকে ৬ টা স্পিকারের আউটপুট, মেইন ইনপুট গুলা হচ্ছে: এইচ ডি এম আই (১ টি এইচডিএমআই জ্যাক), অপটিকাল (টিওএস লিন্ক, ১টা ফাইবার অপটিকস জ্যাক), কোয়াক্সিয়াল (এসপিডিএফ, ১ টা আর সি এ জ্যাক), এনালগ (৬ টা আর সি এ জ্যাক) এছাড়াও আরো কিছু অন্যান্য জ্যাক। একটি রিসিভারের পেছনের ছবি: রিসিভারের ৬ টা আউটপুট থেকে ৬ টা স্পিকার নিচের ছবির মতো করে লাগাতে হবে, সবগুলি স্পিকার টিভির পাশে রেখে দিলে সাউন্ড এফেক্ট বুঝতে পারবেন না: কম্পিউটার স্পিকার: মজার অভিজ্ঞতা দিয়ে শুরু করি, স্টুডেন্ট লাইফের শুরুতে একটা এলটেক ল্যান্সিং ৪.১ (৪টা ছোট স্পিকার আর ১টা সাব উফার) স্পিকার কিনেছিলাম, সেটা লাগানো ছিল আমার কম্পিউটারের সাউন্ড ব্লাস্টার কার্ডের সাথে।

এই স্পিকার টাতে এনালগ ইনপুটের সাথে সাথে একটা ডিজিটাল ইনপুটও (এস/পিডিআইএফ) ছিল। আমি যেহেতু একটু বেশি সাউন্ডের ব্যাপারে খুতখুতা তাই একটা কোয়াক্সিয়াল কেবল দিয়ে সাউন্ড সিস্টেমের সাথে সাউন্ড কার্ড জুড়ে দিলাম। মন বেশ খুশি, এনালগ কানেকশনের ঝামেলা নাই, একটা মাত্র তার দিয়ে কানেকশন। ঘরের চার কোনায় চার টা স্পিকার, মজা করে গান শুনি। কিছুদিন পর একটা ডিভিডি রোম লাগিয়ে মুভি দেখা শুরু করলাম ডিভিডি তে।

কিছু কিছু মুভি বেশ ভালো চলে কিন্তু কিছু কিছু মুভির কথা শোনা যায় না, গাড়ি ঘোড়ার শব্দ আছে, মারামারির শব্দ আছে কিন্তু কথা বলতে গেলে শোনাই যায়না..... বেশকয়েকদিন ধরে বন্ধুরা মিলে অনেক গবেষনা করে বের করলাম যেসব ডিভিডি তে ডিটিএস বা ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড চলছে সেগুলোর কথা শোনা যায় না, কিন্তু পুরাতন মুভি বা তখনকার হিন্দি মুভিগুলা শোনা যায় কারন ওগুলোর সাউন্ড নরমাল অডিও। ব্যাপার টা ক্লিয়ার হয়ে গেলো যে আমার স্পিকারের ৪.১ সেটাপে ডিভিডির সেন্টার চ্যানেল বাদ পড়ে যাচ্ছে, আর এই সেন্টার চ্যানেলেই থাকে কথা বার্তা। নতুন স্পিকার কেনার মতো টাকা নাই, কি আর করা, ডিজিটাল কানেকশন খুলে ২টা এনালগ ইনপুট (ফ্রন্ট লেফট ও রাইট এবং রিয়ার লেফট ও রাইট) দিলাম সাউন্ড কার্ড থেকে। সাথে একটা ছোট স্পিকার লাগায়ে দিলাম সাউন্ড কার্ডের সেন্টার আউটপুটে, ব্যাস, চমৎকার সারাউন্ড সাউন্ড। এখন বাজারে মোটামোটি দামে ক্রিয়েটিভ/এলটেক/মাইক্রোল্যাবের ৫.১ স্পিকার কিনতে পাওয়া যায়।

এমন একটা স্পিকারকে ডলবি বা ডিটিএস এর জন্য ব্যবহার করা যাবে রিসিভারের পরিবর্তে। এই স্পিকার গুলাতে ইনপুট হিসাবে ৬ টা আরসিএ জ্যাক বা ৩ টা স্টেরিও জ্যাকের কানেকশন থাকবে, সেগুলো হলো ফ্রন্ট লেফট ও রাইট, রিয়ার বা সারাউন্ড লেফট ও রাইট, সেন্টার এবং সাবউফার। এই তার গুলো মিলিয়ে মিলিয়ে আপনার ডিভিডি প্লেয়ার বা কম্পিউটারের সাউন্ড কার্ডে লাগান। চাইনিজ ডিভিডি প্লেয়ারে ৬ টা এনালগ আউটপুট থাকবে, যদি না থাকে তাহলে আপনার চেস্টা করতে হবে এমন স্পিকার কিনতে যেটাতে অপটিকাল বা নিদেনপক্ষে কোয়াক্সিয়াল এস/পিডিআইএফ ইনপুট আছে। মিডিয়া প্লেয়ার গুলাতে এনালগ আউটপুট নাই, এস/পিডিআইএফ বা আপটিকাল ই ভরসা।

বিভিন্ন ধরনের কানেকশন ও তাদের কার্যক্ষমতা: আজকালকার টিভি, ডিভিডি প্লেয়ার, ল্যাপটপে বিভিন্ণ ধরনের ইনপুট আউটপুট থাকে, আসুন দেখি কোনটার কি কাজ: ভিডিওর জন্য: এইচ ডি এম আই: হাই ডেফিনেশন মাল্টিমিডিয়া ইন্টারফেস, একই সাথে এইচডি ছবি ও ডলবি/ডিটিএস শব্দ বহন করতে পারে। ডিভিআই: ডিজিটাল ভিসুয়াল ইন্টারফেস, এইচডি ছবি বহন করতে পারে। খুব একটা কমন না আধুনিক সেটাপে, তবে পুরাতন টিভি, মনিটর ও গ্রাফিক্স কার্ডে দেখা যায়। স্পেশাল ডিভিআই কেবল প্রয়োজন হবে ব্যাবহার করতে। ভিজিএ: আমরা কম্পিউটারে যে এনালগ কানেকশন ব্যাবহার করি, এইচডি ছবি মনিটরে পাঠাতে পারে।

মনিটরের সাথে ক্যাবল এটাচ থাকে, তার বড় করতে হলে শিল্ডেড টুইস্টেড পেয়ার কেবল (ল্যান কেবল) ব্যাবহার করা সম্ভব। কমপোনেন্ট: ৩টা আর সি এ টাইপ জ্যাক থাকে, Y, Pb, Pr লেখা। যেকোন অডিও ভিডিও কেবল দিয়ে কম দুরুত্বে কানেকশন দেয়া সম্ভব, বড় করতে হলে আর ষি এ প্লাগ কিনে ৭৫ ওহমের কেবল দিয়ে বানানো সম্ভব, আমি ব্যাবহার করি সস্তা আরজি৬ কেবল (কেবলটিভির কেবল)। এনালগ ভাবে এইচডি ভিডিও বহন করতে সক্ষম। এস ভিডিও: পুরাতন এনালগ সিস্টেম, খুব একটা দেখা যায় না আজকাল।

এইচডি ভিডিও ক্যারি করতে পারে না। কমপোসিট: আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি ব্যাবহৃত সিস্টেম। এনালগ ভিডিও যেখানে সব ইনফরমেশন একই সাথে মিক্স করা থাকে। এইচডি ভিডিও বহনে সক্ষম না। অডিওর জন্য: এইচ ডি এম আই: ডিজিটাল ভাবে এইচডি অডিও (ডলবি ট্রু এইচডি, ডিটিএস মাস্টার, ৮ বা তারো বেশি চ্যানেল) বহনে সক্ষম।

অপটিকাল: ডিজিটাল ভাবে ডলবি/ডিটিএস (৬ চ্যানেল) শব্দ ক্যারি করে। স্পেশাল ফাইবার অপটিক কেবল প্রয়োজন। এস/পি ডি আই এফ কোয়াক্সিয়াল: ডিজিটাল ভাবে ডলবি/ডিটিএস (৬ চ্যানেল) শব্দ ক্যারি করে। নরমাল অডিও/ভিডিও ক্যাবল ব্যাবহার করা যায়, বড় করতে হলে ৭৫ ওহম ইমপিডেন্সের কোয়াক্সিয়াল সাথে আরসিএ প্লাগ ব্যাবহার করতে হবে, সস্তা আরজি৬ এ ভালো কাজ হয়। এনালগ ৫.১: ৬টা আরসিএ জ্যাক থাকে ফ্রন্ট লেফট, ফ্রন্ট রাইট, রিয়ার/সারাউন্ড লেফট, রিয়ার/সারাউন্ড রাইট, সেন্টার, সাবউফার।

এনালগ ভাবে প্রতিটা চ্যানেলের শব্দ সোর্স থেকে এম্পলিফায়ার বা স্পিকার সিস্টেমে যায়। এনালগ স্টেরিও: ২টা আরসিএ জ্যাক থাকে লেফট ও রাইট লেখা। আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি ব্যাবহৃ্ত কানেকশন। এনালগ ভাবে লেফট ও রাইট দুই চ্যানেলের শব্দ পাওয়া যায়। সারাউন্ড বা ডলবি/ডিটিএস সম্ভব না।

সবার প্রশ্ন আসতে পারে মনে যে এতধরনের কানেকশন, সবই কাজ করে তাহলে কোনটা ব্যাবহার করা উচিত? নিচে ভালো থেকে খারাপ ক্রমানুশারে দেয়া হলো, ভালোর দিকে যেটা আপনার ডিভাইসে আছে সেটা ব্যাবহার করতে হবে ভালো পারফরমেন্স পেতে হলে: ভিডিও: ১. এইচডিএমআই থেকে এইচডিএমআই ২. এইচডিএমআই থেকে ডিভিআই বা উল্টাটা ৩. ডিভিআই থেকে ডিভিআই ৪. ভিজিএ থেকে ভিজিএ ৫. কমপোনেন্ট থেকে কমপোনেন্ট ৬. এসভিডিও থেকে এসভিডিও (ভিসিপি ও সাদাকালো টিভি আপনার?) ৭. কমপোসিট থেকে কমপোসিট (হোম থিয়েটার আপনার জন্য নয় ) অডিও: ১. এইচডিএমআই থেকে এইচডিএমআই (ভিডিওর জন্য থাকলে আর আলাদা করে অডিওর জন্য লাগবে না, অডিও ভিডিও একইসাথে যাবে) ২. অপটিকাল থেকে অপটিকাল ৩. কোয়েক্সিয়াল থেকে কোয়েক্সিয়াল ৪. ৫.১ এনালগ থেকে ৫.১ এনালগ ৫. স্টেরিও আরসিএ (হোম থিয়েটার, ডিভিডি, ব্লুরে আপনার জন্য নয়) আমি মোটামোটি নিস্চিৎ যে অনেকের বাসাতেই নতুন এলসিডি টিভি আর ডিভিডি প্লেয়ার আছে এবং তারা ৩ তারের (কমপোসিট ভিডিও, লেফট ও রাইট সাউন্ড) সাহায্যে মুভি দেখেন সবসময়..... আজকেই নতুন ভাবে কানেকশন দিন আর উপভোগ করুন মুভি নতুন ভাবে। টিপস: একটি ডিভিডি প্লেয়ারের ব্যাক সাইড: একটি ব্লু-রে প্লেয়ারের ব্যাক সাইড: ডিভিডি প্লেয়ার ও ডিভিডি প্লেয়ার সফটওয়ারে মুভির প্রথম মেনু থেকে সাউন্ড ডিটিএস বা ডলবি ৫.১ সিলেক্ট করুন। ডিটিএস এ সাউন্ড এফেক্ট ডলবি ৫.১ এর থেকে একটু বেটার। কম্পিউটারের সাউন্ড কার্ডে ৬ চ্যানেল আউটপুট থাকলে কেবল গুলা ঠিকভাবে স্পিকারে লাগিয়ে নিন। ভালো বেশিরভাগ সাউন্ড কার্ডেই কমকরে একটা ডিজিটাল আউট থাকে, সেইক্ষেত্রে একদিকে ৩.৫" মনো প্লাগ ও অন্যদিকে আরসিএ (যদি স্পিকার বা রিসিভারে আরসিএ থাকে) লগিয়ে কেবল বানিয়ে নিন।

অনেক সময় কম্পিউটারের অপশনে সিলেক্ট করতে হয় অডিও আউটপুট ডিজিটাল হবে কিনা, এখানে ডিজিটাল মানে এসপিডিআইএফ কোয়াক্সিয়াল বুঝতে হবে। আমার প্রথম হোম থিয়েটার: কম্পিউটার ও ডিভিডি রোম সাথে ক্রিয়েটিভ সাউন্ড কার্ড ও ৫.১ মাইক্রোল্যাব স্পিকার। বর্তমান সেটাপ: ইনফোকাস ভিডিও প্রোজেকটর সাথে ল্যাপটপ ডিভিআই-ভিজিএ কেবল দিয়ে লাগানো, ডিভিডি প্লেয়ার কমপোনেন্ট কেবল দিয়ে লাগানো, মিডিয়া প্লেয়ার কমপোসিট দিয়ে লাগানো, সাউন্ডের জন্য ফিলিপস ডলবি রিসিভার সাথে ল্যাপটপ স্টেরিও সাউন্ডে লাগানো,ডিভিডি প্লেয়ার অপটিকালে লাগানো, মিডিয়া প্লেয়ার ডিজিটাল কোয়াক্সিয়ালে লাগানো। খেয়াল করলে বুঝবেন আমার সেটাপ বেশ পুরোনো ও এইচডি ভিডিও দেখার মতো না, ইচ্ছা আছে একটা এলসিডি টিভি কিনে এইচডির ভুবনে যাওয়ার **এই লেখাটি আমার ওয়েবসাইটে পূর্বে প্রকাশিত।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.