তরুণ কমিউনিস্ট আসাদের মহান মৃত্যু ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানসূচনা করে। পূর্ববাঙলার কমিউনিস্টদের সংগঠিত ট্রেডইউনিয়নসংগ্রাম ও গরীব কৃষক সংগ্রাম ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকারাখে। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান পাকিস্তানেরস্বৈরাচারী বুর্জোয়ারাষ্ট্র কাঠামোকে একটি বড় আঘাত করে। কিন্তু সঠিক তত্ত্বগতলাইন ও রাজনৈতিক কর্মসূচীর অভাবেপূর্ববাঙলার কমিউনিস্টরাশেষ পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ে পিছিয়ে পড়ে। আসাদের মৃত্যুর তাৎপর্যক্রমশঃ অনুজ্জ্বল হয়ে পড়ে।
কঠিন সত্য হলো লেনিন উত্তর রাশিয়া ও চীনের কমিউনিস্টপার্টির ভ্রান্ত তত্ত্বগত লাইনের কারণে বৃটিশ আমল,পাকিস্তানআমল ও বাঙলাদেশ আমলে কমিউনিস্টরাবিভ্রান্তিমূলক তত্ত্বগত লাইন প্রয়োগ করে। বিশেষতঃকমিউনিস্টরা বৃটিশভারতে সাম্রাজ্যবাদী বুর্জোয়াদের গুণগতবিপরীত, পাকিস্তান আমলে বৃহৎ বুর্জোয়াদের গুণগত বিপরীত ওবাঙলাদেশআমলে বৃহৎ বুর্জোয়াদের গুণগত বিপরীত কর্মসূচীউপস্থিত করেনি।
সঠিক কর্মসূচীর রাজনৈতিক কর্মসূচীর ভিত্তিতে বৃটিশ ভারতেকমিউনিস্ট আন্দোলন জাতীয় পর্যায়ে প্রভাবশালী হলেদেশেহিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণকরতোনা। বৃটিশ ভারতে শেষ পর্যায়ে প্রধানতঃ গণতান্ত্রিকসংগ্রাম, পাশাপাশি সমাজতান্ত্রিক সংগ্রাম বিকশিত ও শক্তিশালীহতে পারলে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি বুর্জোয়া রাষ্ট্রেরউদ্ভবহতো না। অখন্ড স্বাধীন ও সমাজতান্ত্রিক ভারতবর্ষ(নিপীড়িত জাতিসমূহের আত্মনিয়ন্ত্রন অধিকারসহ) সৃষ্টিহওয়ারসম্ভাবনার উদ্ভব হতো।
পাকিস্তানে, পূর্ববাঙলায় সঠিক কর্মসূচীর রাজনৈতিক কর্মসূচীরভিত্তিতে কমিউনিস্ট আন্দোলন জাতীয় পর্যায়ে প্রভাবশালীহতেপারলে সারা দেশে শ্রেণী দ্বন্দ্ব তীব্রতর হতো, জাতীয় দ্বন্দ্ব এতটাতীব্রতর হতোনা। অপর কথায় পাকিস্তান, পূর্ববাঙলায়শ্রমিকশ্রেণীর মেহনতী জনগণের সমাজতান্ত্রিক সংগ্রাম জাতীয়পর্যায়ে প্রভাবশালী হতে পারলে অখন্ডসমাজতান্ত্রিক পাকিস্তান(নিপীড়িত জাতিসমূহের আত্মনিয়ন্ত্রন অধিকারসহ) সৃষ্টি হওয়ারসম্ভাবনা দেখা দিতো। পাকিস্তানে, পূর্ববাঙলায় নিপীড়িতজাতিসমূহের আত্মনিয়ন্ত্রন অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম এতটাতীব্রতর হতো না।
বৃটিশ আমলে, পাকিস্তান আমলে ও বাঙলাদেশ আমলে এইভৌগলিক ভুখন্ডের (সাবেক পূর্ববাঙলা) সমাজ বিকাশেরধারায়ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও আসাদের মৃত্যু একটি বিশালসামাজিক রাজনৈতিক ক্যানভাস ও অন্যান্যসাধারণঅধ্যায়। বাঙলাদেশের আন্তরিক কমিউনিস্টদের কর্তব্য হলোঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও আসাদের মৃত্যুর অসাধারণ ওসুগভীরতাৎপর্য অনুধাবন করা।
বাঙলাদেশের আন্তরিক কমিউনিস্টদের কর্তব্য হলোবাঙলাদেশের সমাজের গুণগত পরিবর্তনের লক্ষ্যেমার্কসবাদ-লেনিনবাদের তত্ত্ব সৃজনশীলভাবে প্রয়োগ করা। লেনিন উত্তর রাশিয়া ও চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ভ্রান্ত তত্ত্বগতলাইনকেপরিহার করা। বাঙলাদেশে প্রধানতঃ পুঁজিবাদ বিরোধীসমাজতান্ত্রিক সংগ্রাম সংগঠিত করা। এখানে উল্লেখ্য,বাঙলাদেশেসমাজতান্ত্রিক সংগ্রাম ছাড়া বুর্জোয়া রাজনীতি ওকমিউনিস্ট রাজনীতির মধ্যকার পার্থক্য যথাযথ সুনির্দিষ্ট হতেপারেনা। আর পাশাপাশি গণতান্ত্রিক সংগ্রাম (সাম্রাজ্যবাদ ও ধর্মীয়মৌলবাদ বিরোধী সংগ্রাম) গড়ে তোলা।
দক্ষিণএশিয়াসমাজতান্ত্রিক সংগ্রাম ও আরব সমাজতান্ত্রিক সংগ্রামশক্তিশালী করা। মার্কসবাদ-লেনিনবাদ ওসমাজতন্ত্র-কমিউনিজমেরবিজয় অনিবার্য।
তারিখঃ ২০.০১.২০১১
আইউব রেজা চৌধুরী
View this link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।