বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শ্রমমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বলেন, সংশোধিত শ্রম আইন সম্পর্কে বিদেশি সংবাদ মাধ্যম ও আইএলওর সমালোচনা ‘অনভিপ্রেত’।
“শ্রম আইনের সংশোধনের বিল এখনো আইনে পরিণত হয়নি এবং এখনো এর কোনো ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশিত হয়নি। অথচ আইএলও তা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছে। ”
সংশোধিত শ্রম আইন নিয়ে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ এড়াতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে মন্ত্রণালয়।
গত ১৫ জুলাই জাতীয় সংসদে পাস হওয়া বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন) নিয়ে গত ২২ জুলাই একটি বিবৃতি দেয় আইএলও।
সরকারের শ্রম আইন সংশোধনকে ‘শ্রম অধিকার ও নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ‘প্রথম পদক্ষেপ’ হিসেবে স্বাগত জানালেও বেশকিছু বিষয়ে এখনো ঘাটতি রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় ওই বিবৃতিতে।
শ্রম সচিব মিকাইল শিপার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “কারো সঙ্গে আলোচনা না করেই আইএলও এ ধরনের বিবৃতি দিতে পারে না। এটা তাদের নিজস্ব বক্তব্য। আইএলওর ঢাকা কার্যালয়ও এ বিষয়ে কিছু জানে না বলে আমাকে জানিয়েছে। ”
সংশোধিত শ্রম আইনে ট্রেড ইউনিয়নের বিধান ও শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধাসহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরে শ্রমমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “শ্রম আইন সংশোধন একটি চলমান প্রক্রিয়া।
শিল্পের সম্প্রসারণ ও বিদ্যমান বাস্তবতার কারণে স্টেক হোল্ডার-মালিক ও শ্রমিক পক্ষের কিছু প্রস্তাব এ সংশোধনীতে বিবেচনা করা সম্ভব হয়নি। তবে আরো কিছু বিষয় এতে সংযোজন বা বিয়োজন করার সুযোগ আছে। ”
যে বিষয়গুলো নিয়ে আপত্তি তোলা হচ্ছে সেগুলো সংশোধন করা হবে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রাজু বলেন, “এ মুহূর্তে কোনো কিছু রিভিউ করার সুযোগ নেই। ”
শ্রম আইন সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাওয়ার পর তা সংসদে তোলার আগেই কারখানার শ্রম পরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে।
এই প্রেক্ষপটে চার মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রীসহ ১১ সদস্যের একটি কমিটির মাধ্যমে শ্রম আইনের খসড়া আরো যাচাই-বাছাই করে সংসদে বিল আকারে পাস করা হয়।
নতুন আইনে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রমিকদের জন্য ‘গ্রুপ বীমা’র বাধ্যবাধকতা রাখার পাশাপাশি যেসব প্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম ১০০ জন শ্রমিক রয়েছে, তাদের বাধ্যতামূলক বীমা করার বিধান রাখা হয়েছে।
আর যে সব প্রতিষ্ঠানে ৫ হাজার বা এর বেশি শ্রমিক কাজ করে, সেখানে স্থায়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিচালনার কথা বলা হয়েছে।
প্রধান কারখানা পরিদর্শককে কারখানা বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের নকশা অনুমোদনের ক্ষমতাও দেয়া হয়েছে এ আইনে।
শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকারের বিষয়ে শ্রমমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ ইউরোপ নয়, বাংলাদেশের শ্রম আইন করা হয়েছে এ দেশের প্রয়োজন ও বাস্তবতার নিরিখে। ”
সংশোধিত আইনে একটি প্রতিষ্ঠানে তিনটি ট্রেড ইউনিয়ন রাখার বিধান রাখা হয়েছে।
এসব সংগঠনের প্রত্যেকটিতে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ শ্রমিক থাকতে হবে। ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃত্বে বাইরের শ্রমিক নেতাদেরও রাখা যাবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।