জীবনটা যেন এক বর্ণীল প্রজাপতি
শিরোনামঃ “চুমুকেই তৃপ্তি!”
আকারঃ ১২ইঞ্চি বাই ৬ইঞ্চি, জলরং
জলরং এর কাজ করার পদ্ধতিঃ
সুচনা বক্তব্যঃ
জলরং এর কাজ হতে হয় সফট। দেখলেই একবারে জীবন্ত অনুভূতি আসবে। করার জন্য প্রথমে এই রঙ এর কাজ করারউপযুক্ত পৃষ্ঠায় ছবিটি এঁকে নিতে হবে। জলরং এর কা করা হয় কার্টিজ পেপারে। এ কাজ সবচেয়ে ভাল হয় ‘হ্যান্ড-মেড’ পেপারে।
এর জন্যে ‘জলরং’ ই লাগবে।
উপকরণঃ
১। কার্টিজ বাঁ হ্যান্ড-মেড পেপার,
২। জলরং এর টিউব- (আর্টিস্ট ক্যামেল রঙ বেশি ভালো),
৩। জলরং এর কাজ করার জন্য মসলার বাটির মত খোপ খোপ বাটি,
৪।
জলরং এর কাজ করার ব্রাশ(তুলি),
৫। রঙ গুলানোর জন্য একটি পরিস্কার বাটিতে পরিস্কার স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি।
ধাপঃ০১
প্রথমে যে জিনিস আঁকবো তা আমি সামনে রেখে নিলাম। আমি ডাইনিং টেবিলের এক কোনায় একটি অফসেট পেপার এর উপর ৪টি আম যে এঙ্গেলে আঁকতে চাই সেভাবে সাজিয়ে নিলাম।
দৃশ্য-০১
তারপরে টেবিলের অন্য পাশে বসে ঝটপট ছবিটি আমার ‘কার্টিজ পেপার’ এর কোয়ার্টার সাইজ খাতার একটি পৃষ্ঠায় এঁকে নিলাম।
আমার অংকন কেমন হলো তা যাচাই করার জন্য আমার বিষয়বস্তুর পাশে আমার আঁকা ছবিটিকে দাঁড় করিয়ে যেখানে বসেছিলাম, সেখান থেকে লক্ষ্য করতে থাকলাম কিছুক্ষণ।
দৃশ্য-০২
আঁকা মনঃপূত হলে রঙ বের করে বাটিতে পানি নিয়ে কাজে কামে লেগে গেলাম।
দৃশ্য-০৩
ধাপঃ ০২
জলরং এ কাজ করার সময় বেশ যত্নের সাথে করতে হয়। পাশাপাশি কয়েকটি জিনিস থাকলে একটি একটি করে জিনিসের রঙ করে নিলে ভালো হয়। (অত্যন্ত দক্ষ শিল্পী একসাথে পুরো ছবিটা ঝটপট শেষ করতে পারে।
আমি অত দক্ষ না হলেও পারি; কিন্তু-আজ আমি শেখাবো বলে একটি একটি করে করে দেখাচ্ছি। )
প্রথমে রঙ এর প্লেটের ছোট খোপগুলোতে সবুজ, হলুদ, নীল, লাল, খয়েরী, বেগুনী রংগুলো টিউব থেকে একটু একটু করে বের করে নিয়ে রাখি।
প্রথমে আমি একটি আম এ রঙ করে নিচ্ছি। ডান পাশের পেছনের আমটা। তারপরে একে একে বাকিগুলো।
সবুজ কোন ফল, পাতা, গাছ রঙ করতে হলে আগে হলুদ রঙ দিতে হয় বেশি করে। সেটা কাঠ রঙ বা জলরং-উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
জলরং এর ছবিতে যেকোন রঙ দেয়ার আগে পেনসিলে আঁকা মূল ছবিটায় পরিস্কার পানিতে তুলি সামান্য ভিজিয়ে ভেজা তুলি দিয়ে প্রথমে যে অংশে রঙ করতে যাচ্ছি সেখানে ভেজাতে হয়। আমিও ভিজিয়ে নিলাম। এরপরে রঙ এর প্লেটে পরিস্কার হলুদ রঙ পানি দিয়ে গুলিয়ে নিতে হবে।
তারপরে ছবির ভেজা অংশে তাড়াতাড়ি হলুদ রঙ দিয়ে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেখানে সবুজ রঙ লাগাতে হবে। এজন্য রঙ এর প্লেটের মধ্যে যা যা রঙ লাগবে বলে মনে হয়, তা আগেই গুলিয়ে ঠিক করে রাখলে সুবিধা হয়। মনে রাখতে হবে, জলরং এর ছবিতে ভেজা ভেজা থাকতেই রঙ এর কাজ করতে হয়। পৃষ্ঠা শুকিয়ে গেলে রঙ দিতে গেলেই ছবি হয়ে যাবে পোস্টার এর মত শক্ত। জল রঙ এর আঁকা ছবি হতে হয় কোমল।
ছবিতে ধাপ গুলো দেখে নেই পর পর----
দৃশ্য-০৪ হতে দৃশ্য-১১
ধাপ-০৩
এর পরে ছবিতে আলো ছায়ার কাজ। আগে বিষয়বস্তুর সাথের ছায়ার কাজ করে নিতে হবে। যেখানে যেখানে আমের গায়ে ছায়া পরেছে বলে মনে হচ্ছে তা ঐ রঙ এর কাছাকাছি রঙ গুলিয়ে আমের গায়ের সেই জায়গাগুলোতে দিয়ে নিতে হবে। সেটা উপরের ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে খেয়াল করুন।
ধাপ-০৪
বিষয়বস্তুর নিজের ছায়ার কাজ শেষ।
এখন তার নিজের অবস্থানের ছায়ার কাজ। দেখুন, ৪টি আমের নিচেই গাঢ় ছায়া পরেছে। এই ছায়ার জন্য কি রঙ দিবেন? আপনার রঙ এর প্লেটের মধ্যে খয়েরী, নীল, সবুজ, লাল রঙ কে মিলিয়ে ময়লা রঙ বানিয়ে সেটি তুলিতে মোটামুটি গাঢ় করে নিয়ে যতটুকু ছায়ার আয়তন মনে হয়, ততটুকু অংশতে অইভাবে দিয়ে যান। ৪টি আমের ছায়া দেয়া শেষ।
চিত্রঃ
ধাপ-০৫
এখন পুরো বিষয়বস্তু ও পরিবেশের আলো-ছায়া ফুটিয়ে তুলতে হবে।
যে অফসেট কাগজের উপরে ছবিটি এঁকেছি, সেটাও ফুটিয়ে তুলতে হবে। বন্ধুরা লক্ষ্য করুন, কাগজের সামনের দিকে কাগজের নিচে ছায়া পরেছে। আমিও সেখানে একটু ময়লা রঙ ঘষে দিলাম। তারপরে যেটা লক্ষ্য করবেন, যেকোন বস্তুর সামনের দিকে লাইট পরে বেশি আর পেছনে অন্ধকার।
তাই কাগজের সামনের দিলের খালি জায়গায় হালকা করে ময়লা ঘষে যাই কোণিক ভাবে।
তারপরে ছবিটির পিছনের দিকে তুলি দিয়ে কখনো সবুজে বা খয়েরী বা ময়লা হলুদের রঙ্গে তুলি দিয়ে ঘঁষে দেই। এতে করে কাছের আর দূরের বিষয়টি ফুটে উঠবে।
শেষ চিত্রঃ
সবশেষে ছবির নিচে সিগনেচার ও তারিখ দিয়ে দিলাম।
(শেখানোর ইচ্ছায় আজকে কাজের ফাঁকে ফাঁকে ফটোসেশন করতে হয়েছে। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।