চোখে লাল আলো আর তাপের ঝাপটা লাগতেই চমকে উঠে সামনে তাকালাম। অদ্ভুত চেহারার কিছু লোক নানা কাজে ব্যস্ত। আমি তাদের মাঝে কিভাবে এসে পড়লাম তাই অবাক হয়ে ভাবছি। আমি যে এই খানে আছি সেটা কেউ গ্রাহ্যই করছে না !
বিশাল এলাকা। স্মার্ট পোষাকের তরুন তরুনী থেকে শুরু করে সব ধরনের লোকই আছে।
সবাইকে কোন না কোন ধরনের নির্যাতন করা হচ্ছে। কাউকে গরম পানিতে সিদ্ধ করা হচ্ছে। কাউকে আগুনে ঠেসে ধরা হচ্ছে। তারই হল্কা টের পাচ্ছি।
বেশীর ভাগই অচেনা লোক।
হঠাৎ দেখি এক জায়গায় বেশ কিছু চেনা মুখ। টিভিতে পত্রিকায় বহুবার তাদের মুখ দেখেছি। তাদের দশা বেশী কাহিল মনে হলো।
আরেক জায়গায় আমি কিছু চেনা লোক পেলাম। এদেরকে ভালো লোক বলে সম্মান করি।
সম্বিত ফিরতেই মনে হলো, এটা কি দোজখ ? আমি এখানে কেন ? আমি কি তবে মারা গেছি ! সে সব কিছু তো মনে করতে পারলাম না। কিন্তু ভয় পেয়ে গেলাম। একবার ভাবলাম, পালাই। কিন্তু পালাবো কোথায় ? এই নির্যাতন কেন্দ্রের কোন সীমানাই চোখে পড়ছে না।
এমন সময় এক অদ্ভুত চেহারা লোক আমার কাছে এলেন।
ভয়ে ভয়ে জানতে চাইলাম, আমি কোথায় ?
-হাবিয়া দোজখে। নির্লিপ্ত জবাব।
ভয়ে হাত পা পেটের ভেতর ঢুকে যাবার দশা। লোকটাকে হাসতে দেখে সপ্রশ্ন-চোখে তাকালাম।
হাসতে হাসতে বললেন, আপনার প্রশ্নের জবাব শুনুন।
এখানে যারা আছেন তারা সবাই প্রচুন মিথ্যা বলা আর মানুষের সরল বিশ্বাসের সাথে প্রতারণা করার জন্য শাস্তি পাচ্ছেন।
বললাম, এদের তো দেখতে ভদ্র লোক বলেই মনে হচ্ছে। আমি যাদের চিনি তাদের তো ভালো লোক বলেই জানি।
হো হো করে হাসলেন তিনি। বললেন, এই সব শাস্তি হচ্ছে মিথ্যে কথা বলা আর মানুষের সরলতা নিয়ে প্রতারণার জন্য।
-মানে ?
-মানে হলো আপনাদের যুগে মোবাইল আর ইন্টারনেট এসে এ সমস্যা তৈরী করেছে। বসে বসে গল্প করছেন আর মোবাইলে বলছেন জরুরী মিটিংয়ে আছি। বান্ধবীর সাথে আড্ডা মারছেন আর বউকে বলছেন কাজে ব্যস্ত আছি। সামাজিক নেট ওয়ার্কে মিথ্যা নাম পরিচয় আর ছবি দিয়ে মানুষের সরলতার সাথে প্রতারণা করেছেন। এই সব আর কি !
কথা শেষ করেই ব্যস্ত সমস্ত হয়ে চলে গেলেন তিনি।
আমি মনে মনে ভাবছি আমিও তো এই সব অপকর্ম বহুৎ করেছি। আমারো তাহলে খবর আছে। ভয়ে আবার হাত পা ঠাণ্ডা হতে শুরু করলো।
এমন সময় মোবাইল এলার্ম বেজে উঠলো প্রচণ্ড শব্দে। আমি ধড়মড় করে উঠে বসলাম।
সারা শরীর ঘেমে নেয় একাকার। সূর্যের আলো ঘর ভাসিয়ে দিচ্ছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।