দালাল আর সোর্সনির্ভর হয়ে পড়েছে মিরপুর মডেল থানার কিছু কার্যক্রম। পুলিশকে সহায়তার নামে একশ্রেণীর পেশাদার অপরাধী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন অনেক নিরপরাধ মানুষ। জিডি, মামলা দায়ের, তদন্ত, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও আসামি গ্রেফতার করা নিয়ে চলছে রমরমা বাণিজ্য। সাধারণ মানুষের কিছু সীমাবদ্ধতা পুঁজি করে পুলিশের নীরব চাঁদাবাজি থেমে নেই।
এসব কারণে মিরপুর থানাকে জনবান্ধব বা মডেল থানা হিসেবে মেনে নিতে চান না এলাকার বেশিরভাগ মানুষ।
মিরপুর থানা এলাকার আয়তন দুই বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ লাখ। এছাড়া বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রতিদিন আরও কয়েক লাখ লোকের সমাগম ঘটে। মিরপুর থানার সামনেই অবস্থিত বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেট গ্রাউন্ড শেরেবাংলা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম।
গোটা এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও অনেক। আছে শতাধিক তৈরি পোশাক কারখানা। মিরপুর থানাকে অপেক্ষাকৃত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে ঢাকা মহানগর পুলিশ সদর দফতর। চারতলা একটি ভবন থেকে পরিচালিত হচ্ছে থানার সার্বিক কার্যক্রম। দু'জন ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে মাঠ পর্যায়ে রয়েছেন ২০ জন সাব-ইন্সপেক্টর, ১৯ জন সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর, ৫৩ জন কনস্টেবল, ১২ জন এপিবিএন ও ৮ জন আনসার সদস্য।
ওসির গাড়িসহ মোট ৬টি পিকআপ আছে।
মিরপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন এখানে গড়ে ৩৫ থেকে ৪০টি অভিযোগ দায়ের হয়। এরমধ্যে মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয় গড়ে ৩টি। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, নারী নির্যাতন ও চুরির ঘটনা বেশি ঘটে। এছাড়া ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, নীরব ও প্রকাশ্য চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছেই।
থেমে থেমে ঘটছে কিছু চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড।
সম্প্রতি এক রাতে (রাত সাড়ে ৯টা) মিরপুর মডেল থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানা চত্বরে অনেক মানুষের ছোট ছোট জটলা। তারা একে অপরের সঙ্গে আলাপ করছেন। এ রকম একটি জটলায় দাঁড়ানো তানজিনা বেগম বলেন, গাঁজা খাওয়ার অপরাধে তার মেয়ে জামাই রানাকে পুলিশ আটক করেছে। হাজতখানায় তার সঙ্গে দেখা করতে সেন্ট্রি রফিককে ৫০ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে।
পুলিশ বলছে, দুই হাজার টাকা দিলে রানাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
থানা ভবনের প্রবেশমুখেই আটক মোটরসাইকেলের সারি। ডান পাশের প্রথম কক্ষে দায়িত্ব পালন করেন সার্ভিস ডেলিভারি ও ডিউটি অফিসার। চারতলা ভবনের নিচতলার ডান পাশের শেষ প্রান্তে ওসির কক্ষটি খালি পাওয়া যায়। এ কক্ষের সামনে সবসময় কয়েকজন চিহ্নিত দালাল ও সোর্স বসে থাকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।