এক দেশে ছিলো অনেক অনেক রাজা। তাদের মধ্যে এক রাজা সেবার বেজায় খুশি।
আর খুশি হবেই না কেন? তার যে সন্তান হয়েছে, প্রথম সন্তান! ঢাক-ঢোল পিটিয়ে,
রাজ্যের লোক ডেকে- খাওয়ানো হলো।
সপ্তা-কাটতে না কাটতেই দরবারে রাজাকে চিন্তিত দেখা গেলো। মহারাজ কোনো
কারনে চিন্তিত।
মন্ত্রী-উজির-প্রজা সকলেই উদ্বিগ্ন। মহারাজের কি সেই দুশ্চিন্তা?
তারা কি এতই অধম, মহারাজের দুশ্চিন্তা দূর করতে পারেন না?
একদিন সুযোগ বুঝে মন্ত্রী মহারাজ কে জানালেন: "মনের ব্যাথা মনে রাখতে নেই
তাতে ব্যাথা বাড়ে বই কমে না"
মহারাজ মন্ত্রীর ঈঙ্গিত বুঝতে পেরে মন্ত্রী কে তার দুঃখের কথা সব বললেন।
মন্ত্রী বললেনঃ "মহারাজ! এ কথা কি করে গোপন রাখলেন? লোক জানাজানি-কেলেংকারীর
ভয়ে কেনই বা চুপ রয়েছেন আপনি? আপনি যাই বলুন, আমি এক্ষুনি ডাক্তার
ডাকছি" মহারাজ মন্ত্রীকে বাধা দিলেন না।
মন্ত্রীর কথামতো ডাক্তার এলো, দেশ-বিদেশ থেকে নামী-দামী সব ডাক্তার।
অনেক পরীক্ষা করেও কেউ কোনো সমাধা করতে পারলো না।
সকলেই একে একে গোমড়া মুখে বিদায় নিলো।
মহারাজের দুশ্চিন্তা আরো বেড়েই চললো।
মাস দু'এক বাদে গোপন কথা আর গোপন রইলো না।
মহারাজের সন্তান- 'মানুষের মতো দেখতে ঠিকই, কিন্তু কুকুরের মতো হাঁটে
বেড়ালের মতো চাটে, ভালো খাবার উগড়ে দেয় আর পঁচা বাসিতে পেট ভরে'
লোক জানাজানিতে মহারাজ আরো চিন্তিত হয়ে পড়লেন। ধীরে ধীরে অসুস্থ
হতে লাগলেন।
কো'থেকে জানা গেলো এক দরবেশ, মহারাজের দুশ্চিন্তার সমাধা করতে পারবেন।
মহারাজ ছুটে গেলেন দরবেশের কাছে।
দরবেশ মহারাজ কে দেখে বললেনঃ "মহারাজ! আপনার রাজ্যে বহু লোক ভালো
খেতে পায়না, ভালো পরতে পারেনা, তারা যখন আপনার কাছে আসে একমুঠো
অন্নের আশায়, এক টুকরো কাপড়ের আশায়, তখন আপনি তাদের কুকুর-বেড়ালের
মতো তাড়িয়ে দেন। তাদেরই মনের যন্ত্রনা, কষ্ট আজ অভিশাপ হয়ে এসেছে আপনার
ঘরে। মহারাজ..."
দরবেশের কথা শেষ হওয়ার আগেই মহারাজ উঠে দাঁড়ালেন, ছুটে গেলেন তার
দরবারে।
ঘোষনা দিলেন "আজ থেকে তার সব সম্পত্তি রাজ্যের যতো গরীব-দুখিদের জন্য,
আর কেউ না খেয়ে থাকবেনা, আর কেউ ঘুমুতে কষ্ট পাবেনা, গরীব-ধনী সবাই
ভাই ভাই"
সেদিনের পর থেকে সে রাজার রাজ্যে এলো শান্তি আর শান্তি, তার সন্তানও ধীরে ধীরে
সুস্থ হয়ে উঠলো। অতঃপর তারা সকলে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে রইলো। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।