যার নিকট নিজের ও নিজের পরিবারবর্গের জরুরী খরচ পত্র বাদেও অতিরিক্ত মালামাল থাকে তার জন্য ছদকায়ে ফেতর আদায় করা ওয়াজিব। ঈদের রাত্রে কিংবা দিনে নিজের,নিজের সন্তান সন্ততির ,স্ত্রীর ,চাকর-চাকরানির,পিতা-মাতা, ভাই-ভগ্নির এবং ভরণ -পোষণের দায়িত্বগ্রস্ত অন্যান্য ঘনিষ্ঠ ও নিকটবর্তী আত্নীয়দের তরফ থেকে ছদকায় ফিতর আদায় করতে হবে। (যে কোন বয়স)
হয়রত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রাঃ হইতে বর্ণিত,রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যাক্তিকে মক্কার অলিগলিতে এই কথা ঘোষণা করতে পাঠোলেন যে, মুসলমান নারী -পুরুষ ,আযাদ-গোলাম এবং ছোট বড় সকলের উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজেব। এই সদকার পরিমান দুই মুদ্ (প্রায় দুইসের) গম অথবা এক ছা (সাড়ে তিন সেরের কিছু অধিক) খাদ্য শস্য । (তিরমিজী)
পরিমাণঃ
খেজুর, কিসমিস,গম,যব,ছাতু,আটা প্রভৃতি এক ছায়া পরিমান যা সাড়ে তিন সেরের কিছু অধিক পরিমান হয়।
আর যে সকল শহর বা এলাকায় উল্লেখিত জিনিসগুলি না থাকে সে সকল জায়গায় যে সকল খাদ্য শস্য পাওয়া যায় তা বা উল্লেখিত দ্রব্যের মূল্য দিয়া ছদকায় ফিতর আদায় করবে। (উৎস -গুনিয়াতুত তালেবীন)
১)যদি গম বা যব না দিয়ে উপরোক্ত পারিমান গম বা যবের মূল্য নগদ পয়সা দিয়া দেয় তবে তাহা সবচেয়ে উত্তম।
২) ফেৎরা যদি গম বা গমের আটা বা ছাতু দিয়ে আদায করতে চায় তবে আধা ছা অর্থাৎ ৮০ তোলার সেরে এক সের বার ছটাক দিতে হবে। কিন্তু পূর্ণ দুই সের দেয়া উত্তম। কেননা বেশি দিলে ক্ষতি নাই।
কম হলে ফেৎরা আদায় হবে না্ ।
৩)যব বা যবের ছাতু দিয়ে আদায় করতে চাইলে পূর্ণ এক ছা অর্থাৎ তিনসের নয় ছটাক দিতে হবে পূর্ণ চারি সের দেয়া উত্তম।
৪) বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত এই বৎসর ফেৎরার পরিমান ৬৬ টাকা ।
ফেতরা দেয়ার সময়ঃ
১)সদকায়ে ফিতর ঈদের দিবসে ঈদগাহে যাওয়ার আগে আদায় করা মুস্তাহাব বা উত্তম। যদি কোন ব্যক্তি ঈদ উল ফেতরের আগেই সদকায়ে ফিতর আদায় করে তাহলেও সদকায়ে ফিতর আদায় হয়ে যাবে।
২)যদি কেউ ঈদের দিন ফেৎরা না দেয় তবে তার ফেৎরা মাফ হয়ে যাবে না;
ফেৎরা কার উপর ওয়াজিব?
১) ঈদের দিন যে সময় ছোবহে ছাদেক হয় সেই সময় ছদকায়ে ফেৎর ওয়াজিব হয়। কাজে ই কেউ ছেবহে ছাদেকের আগে মারা গেলে তার উপর ছদকায়ে ফেৎর ওয়াজীব নয়।
২) ঈদের দিন ছোবহে ছাদেকের পূ্র্বে যারা জন্মগ্রঞন করে তাদের পক্ষে ফেৎরা দিতে হবে। পরে জন্মালে দিতে হবে না।
৩)ঈদের দিন ছোবহে ছাদেকের পর কেউ মুসলমান হলে এটি দিতে হবে না কিন্তু আগে হলে দিতে হবে ।
ফেতরা কাকে দিতে হবে?
১)আত্নীয় স্বজন পাড়া-প্রতিবেশি এবং পার্শ্ববর্তী লোকদের মধ্যে যাহারা গরীব-দুঃখী আছে তাদেরকে দিতে হবে। সাইয়্যেদকে, মালদারকে,মালদারের নাবালেগ সন্তানকে এবং নিজের মা বাপ দাদা নানা নানী বা নিজের ছেলেমেয়ে নাতি নাতনী ইত্যাদিকে ফেৎরা ,যাকাত দেওয়া যায়েয নহে। অবশ্য সাইয়্যেদ বা বাবা মা দাদা দাদী নানা নানী বা ছেলেমেযে , নাতি নাতনি যদি গরীব হয় তবে তাদেরকে হাদিয়া -তোহফা স্বরূপ পৃথকভাবে দান করে সাহায্য করতে হবে।
২)মসজিদের ইমাম ,মোয়াযযিন বা তারাবীহর ইমাম গরীব হলে তাদেরকেও ফেৎরা দেয়া দূরস্ত আছে কিন্তু নেসাব পরিমান হলে দেয়া যাবে না এবং বেতন স্বরূপও দেয়া যাবে না। বেতন স্বরূপ দিলে ফেৎনা আদায় হবে না।
৩) একজনের ফেৎরা একজনকে দেয়া বা একজনের ফেৎরা কয়েকজনকে ভাগ করে দেযা উভয়ই জায়েজ আছে।
৪)কয়েকজনের ফেৎরা একজনকে দেয়াও জায়েজ আছে।
উৎসঃ-বেহেশতি জেওর( আশরাফ আলী থানবী রঃ, ওসওয়ায়ে রাসুল আকরাম
সঃ (ডাঃ আব্দুল হাই) গুনিয়াতুত তালেবীন (মূল -বড় পীর আব্দুল ক্বাদের জিলানী অনুবাদ)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।