আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কিসে পুরুষের উপকারঃ বিবাহে না ব্যাভিচারে?

চিন্তাচেতনার স্বাধীনতাহীন জীবন মৃতপ্রায়।

লেখক মাই নেম ইজ খান "বিবাহ না ব্যভিচার : কিসে নারীর উপকার?" রচনাটিতে বলতে চেয়েছেন "ইসলামি বিবাহে" নারীর উপকার। এবার প্রশ্ন করা যাকঃ "বিবাহ না ব্যভিচার : কিসে পুরুষের উপকার?" জানিনা লেখকের উত্তর কি হবে এ প্রশ্নের। তবে ইস্লামি তত্ত্বে উত্তর হবেঃ 'উভয়েই - বিবাহে ও ব্যভিচারে'। কোন বিবাহিত ব্যক্তির তার স্ত্রী বা স্বামী বিনা অন্য কারো সাথে যৌন মিলনকে ব্যভিচার (adultery) গণ্য করা হয়।

ইসলাম কোন নারীর দ্বিতীয় পুরুষের সাথে যৌন মিলনের খায়েসকে ঠিকই বন্ধ করেছে ব্যভিচারকে মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য অপরাধ রায় দিয়ে। কিন্তু পুরুষের ক্ষেত্রে ভিন্ন ব্যাপার। পুরুষ তো আল্লাহর অনেক কাছাকাছি; কম করে হলে পুরুষ ও আল্লাহ একই লিংগধারী। কাজেই পুরুষকে তো আর নারীর সাথে একই মাপে মাপতে পারেন না আল্লাহ্‌। মৃত্যুদণ্ড দিয়ে নারীর ব্যাভিচারে লিপ্ত হওয়ার আকাংখাকে বন্ধ করেছেন আল্লাহ্‌, কিন্তু সম-লিংগের পুরুষের ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আকাংখাকে তো বাস্তবায়ন না করে পারেন না তিনি।

কিন্তু কিভাবে করবেন সেটা। সমস্যার সমাধান সহজ আল্লাহ্‌ কাছে। পুরুষের জন্য ব্যাভিচারকে "বৈধ" করে দিলেই হলো। কাজেই ইসলামে পুরুষের রয়েছে তিনটি অতিরিক্ত নারীর সাথে ব্যাভিচারের "বৈধ" অধিকার (কোরান ৪.৩): "If ye fear that ye shall not be able to deal justly with the orphans, Marry women of your choice, Two or three or four; but if ye fear that ye shall not be able to deal justly (with them), then only one, or (a captive) that your right hands possess, that will be more suitable, to prevent you from doing injustice." এখানেই শেষ নয়ঃ আল্লাহ্‌ মুসলিম পুরুষের ব্যাভিচারে লিপ্ত হওয়ার খায়েসকে চার নারীর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেন নি। আল্লাহ্‌ আমাদের মহানবীকে -- যার ব্যাভিচারে লিপ্ত হওয়ার খায়েস ছিল সাধারণ মানুষের তুলনায় লাগামহীন মাত্রায় বেশি -- অবারিত করে দেন একই সঙ্গে লাগামহীন ব্যাভিচারে লিপ্ত হওয়ার সু্যোগ দিয়ে।

সুতরাং আল্লাহ্‌ বলেন (Qur'an 33:50) - "O Prophet! surely We have made lawful to you your wives whom you have given their dowries, and those whom your right hand possesses out of those whom Allah has given to you as prisoners of war, and the daughters of your paternal uncles and the daughters of your paternal aunts, and the daughters of your maternal uncles and the daughters of your maternal aunts who fled with you; and a believing woman if she gave herself to the Prophet, if the Prophet desired to marry her-- specially for you, not for the (rest of) believers; We know what We have ordained for them concerning their wives and those whom their right hands possess in order that no blame may attach to you;"। এ আয়াতটির মাধ্যমে আল্লাহ্‌ আমাদের মহানবীকে যে কোন সংখ্যক নারীকে বিয়ের অনুমোদন দেন। এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী তার সদ্ব্যবহারও করেন জীবনে ২২-২৩ খানা বিয়ে করে। বিদায় হজ্জ্বের সময় মহানবীর সংগী ছিলেন তার ৯ জন স্ত্রী। মনে হয় আল্লাহ্‌ বুঝতে পেরেছিলেন নবির মত অসংখ্য নারীর সাথে যৌনকর্মে লিপ্ত হওয়ার বাসনা সাধারণ মুসলিম পুরুষের মাঝেও রয়েছে।

কাজেই তিনি তাদেরকেও চারের অধিক নারীর সাথে সংগমের সু্যোগ করেছেন পুরুষকে যখন-ইচ্ছা-তখন স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অধিকার দান করে। সুতরাং আল্লাহ্‌ বলেন (কোরান ৩৩.৫১): "You may put off whom you please of them, and you may take to you whom you please, and whom you desire of those whom you had separated provisionally; no blame attaches to you; this is most proper, so that their eyes may be cool and they may not grieve, and that they should be pleased." অন্যান্যদের মধ্যে মহানবীর বড় নাতি হাসানকে দেখা যায় আল্লাহ্‌র এ বাণীর সদ্ব্যবহার করতে। তিনি তালাক দিতেন আর বিয়ে করতেন। এভাবে তিনি ১০০টি বিয়ে করেছিলেন, তবে এক সংগে চারটির বেশী নয়। কিন্তু পরম করুনাময় আল্লাহ্‌ সাধারণ মুসলিম পুরুষের উপর এক সংগে চারটি নারীর সাথে ব্যাভিচারের অধিকার সীমিত করে স্বস্তি বোধ করেন নি বলে মনে হয়।

নবীর মতো সব পুরুষকে লাগামহীন সুযোগ দেওয়াটাই পরম স্রষ্টার মত সুবিচার নয় কি? আর সুবিচার না করে কি আল্লাহ্‌ পারেন? সুতরাং সব মুসলিম পুরুষকে আল্লাহ্‌ তাদের করায়ত্তাধীন নারী দাসী/ ক্রীতদাসীদের সাথে যৌন-সম্ভোগের অধিকার বৈধ করে আয়াত নাজিল করেন (কোরান ৪.৩, ৪.২৪)। যুদ্ধ করে ক্রীতদাসী করায়ত্ত করাকেও উৎসাহিত করেন আল্লাহ্‌ কোরানের ৩৩.৫১ আয়াতে। যৌন আচরনে আল্লাহ্‌ ইস্লামে পুরুষের জন্য যে অঢেল সুযোগ-সুবিধার যোগান দিয়েছেন আর মেয়েদের ক্ষেত্রে করেছেন তার উলটো -- সেটা বুঝলে যে কোন নারী আফসোচ করতে বাধ্য যেঃ আল্লাহ্‌ তাকে পুরুষ করে জন্ম দিলেন না কেন? লেখকের আলোচ্য এ রচনাটি পশ্চিমা সমাজে যৌনাচার, প্রধানত ব্যাভিচারকে ধীক্কার দেওয়ার একটা প্রয়াস মাত্র, কেননা সেখানে ব্যাভিচারকে শায়েস্তা করা হয় না। আসলে প্রকৃত ইসলামেও ব্যাভিচারের ছড়াছড়ি, তবে বৈধতার লেবাসে; এবং লজ্জাহীনভাবে সে ব্যাভিচারের অধিকার রয়েছে কেবল পুরুষের, নারীর জন্য সেটা মৃত্যুদণ্ডমূলক অপরাধ এবং সে মৃত্যু কার্যকর হবে পাথর ছুড়ে হত্যার মত বর্বর পন্থায়। যৌনাচারের এরূপ নিয়ম সভ্য মানুষ ও সমাজ চরম বর্বরতা হিসেবে গণ্য করে।

পশ্চিমা সমাজের সাথে ইসলামি সমাজের যৌনাচারের পার্থক্য হলোঃ পশ্চিমা সমাজ নারী-পুরুষ উভকেই ব্যাভিচারে লিপ্ত হওয়ার সমান অধিকার দিয়েছে। সেটা ভাল কি মন্দ যাই হোক, বর্বরতামূলক ইসলামি যৌনাচারের রীতি তারা গ্রহণ করবে বলে মনে হয় না। পরিশেষে লেখক মাই নেম ইজ খানকে অনুরোধ করব এটা ভেবে দেখতেঃ ইসলামে যৌন আচরনে পুরুষের অধিকার নারীকে আর নারীর অধিকার পুরুষকে দিলে (যেমন নারী চার থেকে বহু পুরুষকে বিয়ে করবে ও সেই সাথে অসংখ্য পুরুষ ক্রীতদাসকে যৌন সম্ভোগ হিসেবে ব্যবহার, পুরুষ সে সুযোক পাবে নয়া) কেমন হবে? তখন কি তিনি "বিবাহ না ব্যভিচার : কিসে পুরুষের উপকার?" শিরোনামে একটি অনুরূপ রচনা লিখবেন যৌন আচরনে নারীর অবারিত সু্যোগকে মহিমান্বিত করে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।