আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টিউটোরিয়াল : কিভাবে আপনার প্রথম চলচ্চিত্রটি বানাবেন ? -০৯

জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই
০৫) ক্যামেরা কোণ : আনুভূমিক ক্যামেরা কোণ : সাধারণত আমরা কোন চরিত্রের সামনে থেকে ছবি তুলতে অভ্যস্ত। কিন্তু কেবল সামনে থেকে ছবি তোলা নয়, চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য চরিত্রের বিভিন্ন দিক থেকে ছবি তোলার দরকার হয়। সে ক্ষেত্রে চরিত্রের চারপাশে ক্যামেরা ঘুরে আসতে পারে। চরিত্রের পাশে যখন ক্যামেরা থাকে, তাকে বলে প্রোফাইল এঙ্গেল বা কোণ। এই কোণে ক্যামেরা রেখে যে শট নেয়া হয়, তাকে প্রোফাইল শট বলে।

চরিত্রের পেছনের যখন ক্যামেরা থাকে, তাকে বলে ব্যাক এঙ্গেল বা কোণ । এই কোণে ক্যামেরা রেখে যে শট নেয়া হয়, তাকে ব্যাক শট বলে। আনুভূমিকভাবে ক্যামেরা বিভিন্ন কোণে রেখে কিভাবে শট গ্রহণ করা যায়, সেটা নিচের ছবিতে দেখুন। আনুভূমিকভাবে ক্যামেরার বিভিন্ন কোণ আনুভূমিক ক্যামেরা কোণ ব্যবহার করে বিভিন্ন দিক থেকে ছবি তুলতে পারা যায়। ক্যামেরা ক্রমশ ডান দিকে কোণ করে সরতে শুরু করলে নিচের ছবিগুলোর মতো ছবি তোলা যাবে।

এই ভঙ্গিতে ডান দিকে ক্যামেরা সরে যাওয়াকে বলা হয় পজিটিভ এঙ্গেল। যেমন : অন্য দিকে ক্যামেরা ক্রমশ বাম দিকে কোণ করে সরতে শুরু করলে নিচের মতো করে ছবি তোলা যাবে। এইভাবে ক্যামেরা বাম দিকে ক্যামেরা সরে যাওয়াকে বলে নেগেটিভ এঙ্গেল। যেমন : আনুভূমিক এই কোণগুলিতে কতগুলি নামে ডাকা হয়। নামগুলো জেনে নিলে কাজ করতে সুবিধা হবে।

আসুন উদাহরণসহ নামগুলো জানি। নিচের ছবিটি দেখুন। সামনে থেকে মডেলের ছবি তোলা হয়েছে। একে বলে ফ্রন্টাল ক্যামেরা এঙ্গেল বা সামনের ক্যামেরা কোণ। ফ্রন্টাল ক্যামেরা এঙ্গেল বা সামনের ক্যামেরা কোণ চারভাগের তিনভাগ কোণে ক্যামেরা ডানে বা বামে সরালে দুটি বিশেষ কোণ পাওয়া যায়।

ক্যামেরা ডানে সরালে তাকে বলে ত্রি ফোর্থ ফ্রন্ট রাইট ক্যামেরা এঙ্গেল বা ৩/৪ ডান কোণের সামনের শট। অন্য দিকে চারভাগের তিনভাগ কোণে ক্যামেরা বামে সরালে তাকে বলে ত্রি ফোর্থ ফ্রন্ট লেফট ক্যামেরা এঙ্গেল বা ৩/৪ বাম কোণের সামনের শট। আবার এই দুই প্রকার শটকেই সংক্ষেপে ৩/৪ প্রোফাইল নামেও ডাকা হয়। এই শটের ক্ষেত্রে রুল অব থার্ড মেনে লুক রুম রাখা ভালো । সাধারণত চলচ্চিত্রে যে কোন চরিত্রের কোজ আপ শট নিতে গেলে এই কোণ বেছে নেয়া হয়।

এই কোণের ক্ষেত্রে বিশেষ কতগুলো সুবিধা আছে। এই কোণে ছবি তুললে ছবিটি ত্রিমাত্রিক দেখা যায়। নাক, চোখ, মুখ, ঠোঁট ইত্যাদিতে আলোর খেলা ও অভিব্যক্তি পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। নিচে পাশাপাশি দুটি শট আমরা দেখি। ৩/৪ ফ্রন্ট লেফট ক্যামেরা এঙ্গেল ৩/৪ ফ্রন্ট রাইট ক্যামেরা এঙ্গেল ক্যামেরা আরও ডানে বা বামে সরিয়ে ৯০ ডিগ্রি কোণে নিয়ে গেলে যে কোণের শট পাওয়া যায়, তাকে বলে প্রোফাইল শট।

নিচে দুটি প্রোফাইল শট দেখুন। প্রথমটি বাম দিকে ক্যামেরা সরিয়ে তোলা এবং দ্বিতীয়টি ডান দিকে ক্যামেরা সরিয়ে তোলা। লেফট প্রোফাইল শট রাইট প্রোফাইল শট এ ছাড়াও ৩/৪ প্রোফাইল শট পেছন দিক থেকেও হতে পারে। এটাকে বলা হয় থ্রি ফোর্থ ব্যাক প্রোফাইল শট। যেমন : ৩/৪ লেফট ব্যাক প্রোফাইল শট ৩/৪ রাইট ব্যাক প্রোফাইল শট ৩/৪ ব্যাক প্রোফাইল শটের সাহায্যে মডেল বা চরিত্র কী দেখছে সেটা একটা শটের মাধ্যমে খুব সহজে ফুটিয়ে তোলা যায়।

তাছাড়া অন্য কেউ তাকে পেছন থেকে দেখছে এই ধরনের শটের েেত্র এই শট দুর্দান্তভাবে ব্যবহার করা যায়। পরিপূর্ণ ১৮০ ডিগ্রি ক্যামেরা ঘুরে গেলে দেখা যায় ফুল ব্যাক শট। এই ধরনের শটে মডেলের মুখ পুরোপুরি দেখা যায় না। বরং মডেলের পিঠ বা পিছন দিক দেখা যায়। ফুল ব্যাক শট উল্লম্ব ক্যামেরা কোণ : উপর নিচে ক্যামেরা উঠানোর েেত্র বিবেচনা করা মানুষের চোখ ।

মানুষের চোখ আনুভূমিকভাবে তাকায়। আমরা সাধারণভাবে ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার সময় ক্যামেরা আনুভূমিক কোণে রাখি। মডেলের দিকে আনুভূমিকভাবে তাক করি। কিন্তু ক্যামেরাকে উল্লম্বভাবে মডেলের চারপাশে ঘুরিয়ে আনা সম্ভব। ক্যামেরা উপরে এবং মডেল নিচে থাকলে তাকে বলে হাই এঙ্গেল শট।

ক্যামেরা ও মডেল আনুভূমিক থাকলে তাকে বলে ন্যাচারাল এঙ্গেল শট। ক্যামেরা নিচে এবং মডেল উপরে থাকলে তাকে বলে লো এঙ্গেল শট। যেমন : ক্যামেরার বিভিন্ন উল্লম্ব কোণ : এবার বিভিন্ন উল্লম্ব ক্যামেরা কোণ সম্পর্কে জানা যাক। আগেই বলেছি, ক্যামেরা উপরে এবং মডেল নিচে থাকলে তাকে বলে হাই এঙ্গেল শট। হাই এঙ্গেল শটে মডেল বা অভিনেতা সরাসরি সামনের দিকে তাকিয়ে থাকলে সেেেত্র লুক রুম দরকার নাই।

তবে হেড রুম থাকবে। তবে মডেল ডান বা বামে তাকালে সেেেত্র লুক রুম রাখার দরকার আছে। হাই এঙ্গেল থেকে গৃহীত শট নিচের ছবির মতো দেখায়। হাই এঙ্গেল শট চলচ্চিত্রে হাই এঙ্গেল শট দ্বারা কোন চরিত্রকে ছোট, তুচ্ছ, শোকগ্রস্ত, অসহায় ইত্যাদি মনে হয়। ফলে ওই রকম কোন পরিস্থিতিতে হাই এঙ্গেল শট ব্যবহার করা হয়।

ক্যামেরা নিচে এবং মডেল উপরে থাকলে তাকে বলে লো এঙ্গেল শট। লো এঙ্গেল শটে চলচ্চিত্রের চরিত্রকে বড়, অহংকারী, প্রতাপশালী, প্রভাবশালী ইত্যাদি বলে মনে হয়। ফলে ওই ধরনের পরিস্থিতি বা চরিত্রকে উপস্থাপন করতে লো এঙ্গেল শট ব্যবহৃত হয়। লো এঙ্গেল শট এই ধরনের শট ছাড়াও সরাসরি মাথার উপর ক্যামেরা বসিয়ে যেই শট নেয়া হয়, তাকে বলা হয় টপ শট। টপ শটে কেবল মাথা দেখা যায় এবং চারপাশের পরিবেশ বড় হয়ে দেখা দেয়।

টপ শটের আরেকটি ধরণ হল এরিয়াল শট। হেলিকপ্টার বা বিমান থেকে এই শট নেয়া হয়। টপ শটের ক্ষেত্রে ক্যামেরা একটা স্থানে স্থির রাখা হয়। কিন্তু এরিয়াল শটের ক্ষেত্রে ক্যামেরাসহ হেলিকপ্টার বা বিমান চলমান থাকে। মডেল : স্মৃতি আঁচল।

ফটোগ্রাফি : এটিএম জামাল। (চলবে) আমি চেষ্টা করছি এই টেকনিক্যাল বিষয়গুলো যতটা সহজ করে লেখা যায়, ততটা সহজ করে লিখতে। যাতে করে যে কেউ এই ধরনের বিষয় খুব সহজে বুঝে ফেলে। আমি কি সহজ করে লিখতে পারছি ? আরেকটা কথা, অনেকে এই বিষয়গুলো অনেক ভালো জানেন, তারা যদি মন্তব্যের আকারে আমাকে পরামর্শ দেন, খুবই খুশি হব। (অফ টপিক : আমার লেখা "কিভাবে আপনার প্রথম চলচ্চিত্রটি বানাবেন ? " নামের একটি অপ্রকাশিত বই থেকে লেখাটি দেয়া।

এই পোস্টটি অনেক বড় হয়ে গেল বলে দুঃখিত। ) পর্ব - ০১ পর্ব - ০২ পর্ব -০৩ পর্ব - ০৪ পর্ব - ০৫ পর্ব -০৬ পর্ব - ৭ পর্ব -০৮ পর্ব -১০
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.