আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গল্প: পরগাছা



'তা হলে তুই বলছিস, তুই রাকিব না?' থানার ওসি তাঁর দশাসই ভুরিটা দিয়ে যেন ঠেসে ধরতে চাইল মাহবুবকে, মাহবুব যেন বাঘের থাবায় পড়া কাতর হরিণী। দারোগা সাহেবের মুখ থেকে জর্দা আর বগলের তলা থেকে ঘামের বিচ্ছিরি গন্ধ আসছে। পুলিশ মানুষ। সারাদিন হাজারটা ঝামেলায় থাকেন। গোসল-টোসলের সময় হয়তো পান না।

মাহবুব গন্ধটাকে তাই পাত্তা দিতে চাইল না। তা ছাড়া প্রথম প্রথম যতটা খারাপ লাগছিল, গা গুলিয়ে আসছিল, এখন আর ততটা লাগছে না। সবচেয়ে বড় কথা, দারোগা সাহেব দ্রুত 'তুই'-এ নেমে এসেছেন। এটা ভালো লক্ষ্মণ। তার মানে দারোগা সাহেব বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন, মাহবুব আসলে রাকিব না।

রাকিব হলে তাকে তুইতোকারি করার দুঃসাহস এই দুই পয়সার দারোগার হতো না। এতণে যেন ধরে প্রাণ ফিরে পেল মাহবুব, 'বিশ্বাস করেন স্যার। আমার নাম মাহবুব। আমি থাকি সেই খিলগাঁও। আমি যদি রাকিব হইতাম, ধরেন আমি রাকিব, তাইলে কি আর গুলিস্তানের ১০০ টাকা দামের শার্ট পরতাম? বলেন, আপনিই বলেন।

' 'হুম'। ভুরির ব্যারিকেড সরিয়ে নিলেন দারোগা প্রণব বিশ্বাস। যদিও সেই 'হুম' কাতর হরিণীর কানে 'হালুম'ই শোনাল। নামের শেষে পদবি যা-ই থাক, কাউকে একরত্তি বিশ্বাস করেন না প্রণব দারোগা। 'মাইনষেরে বিশ্বাস করা আর বালুতে মোতা একই কথা'-সুযোগ পেলেই নিজের তামাটে দাঁতের পাটি বের করা হাসি দিয়ে এই সরল কিন্তু স্থূল দর্শনের কথা জানিয়ে দেন।

তা ছাড়া চাকরিটাই এমন, সহজ জিনিসও এখন আর সহজভাবে দেখতে পারেন না। ২৫ বছর ধরে চাকরি করছেন। কন্সটেবল থেকে ঠেলতে ঠেলতে চাকরির শেষ বয়সে এসে ওসি হয়েছেন, সেটা তো আর এমনি এমনি না। তবে ছেলেটার কথায় যুক্তি আছে। এমনিতে প্রথম দেখায় ওকে রাকিবই মনে হয়।

কিন্তু পুলিশি চোখ দিয়ে দেখলে পার্থক্য টের পাওয়া যায়। শার্টটা যতই বাহারি হোক না, দাম আসলে বেশি না। চকচক করলে সোনা হয় না, রাকিবের মতো দেখলেই যেমন সে বিখ্যাত তারকা রাকিব হয়ে যায় না। কিন্তু তার পরও মনের ভেতর সন্দেহের ইঁদুর ঘুরঘুর করে প্রণব বিশ্বাসের। কে জানে, সামনে বসা ছেলেটা আসলেই রাকিব।

এ ধরনের তারকারা অনেক সময় ভ্যাস ধরে। তা ছাড়া তাদের হাজারটা পাগলামো আছে। কখন কী করে বসে, বলা মুশকিল। একবার তো এ ধরনের এক হাঙ্গামায় পড়ে প্রণব বিশ্বাস চাকরিটাই খুইয়ে ফেলেছিলেন প্রায়। গত ঈদের ঘটনা।

প্রণব বিশ্বাসের ডিউটি গাউছিয়ায়। অভিজ্ঞ চোখে কড়া নজরদারি রাখছিলেন ভিড়ে। সেই সময় বোরখা-পার্টির উৎপাত গিয়েছিল বেড়ে। দেখলে মনে হবে, ভদ্র পরিবারের বোরখা পরা ধর্মভীরু মহিলা। কিন্তু বোরখার আড়ালে আসলে থাকে মহিলা পকেটমার, নেতা বেশের আড়ালে যেমন লুকিয়ে থাকে দুর্নীতিবাজ।

ফাঁদ পাতা ছিল। সহজেই ধরা পড়ল শিকার। কিন্তু এ কী কেলেঙ্কারি! বোরখা ওঠাতেই দেখা গেল, কোথায় বিলকিস, ইনি যে বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা শানবুর! ওই ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে কম হ্যাপা পোহাতে হয়নি। সেই থেকে প্রণব বাবু আরও সাবধানী। তবে এই ছোকরাটার চেহারার মধ্যে কী যেন একটা আছে।

প্রথম দেখাতেই মায়া লাগে। ভয়টাও ওখানেই। প্রণব দারোগা তাঁর অভিজ্ঞতা থেকেই জানেন, এ ধরনের লোকই সবচেয়ে বেশি টাউট-বাটপার হয়। তা ছাড়া, কে জানে, এই মাহবুব পরিচয় দেওয়া ছোকরাটা আসলেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জনপ্রিয় অলরাউন্ডার রাকিব আল হাসান। নিজের পরিচয় লুকাতে চাইছে।

ক্রিকেটারদের তো আসলে ঠিক নাই। আজ যে হিরো, কাল সেই ভিলেন। ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, কাস ইজ পারমানেন্ট দর্শনে কোনো আস্থা নেই বাঙালির। ছেলেটার ওপর একটু দরদ জমেছিল। হাঁস যেভাবে পানি ঝেরে ফেলে, সেভাবেই সেই দরদ ঝেরে ফেললেন প্রণব বিশ্বাস।

'সেন্ট্রি, ওকে লকআপে ঢুকাও। ' অবিশ্বাস্য দ্রুতটায় দুজন ঠোল্লা টাইপের পুলিশ মাহবুবকে টেনে হিঁচড়ে গারদে ভরল। সত্যি বলতে কি, টানা হেঁচড়ার দরকার ছিল না। মাহবুব বুঝেই গেছে তার নিয়তি। বুঝেই গেছে, চৌদ্দশিকের ওপারের অন্ধকার ঘরটাই তার অমোঘ পরিণতি।

অথচ একটা মিথ্যা কথা বললেই আজ তার এই দশা হতো না। একটা মিথ্যা কথা বললে এই পুলিশরা তাকে জামাই আদরই করত। কথায় কথায় স্যালুট ঠুকতো। সত্যি বলতে কি, একটা মিথ্যা বললে তাকে তো থানা পর্যন্ত আসতেই হতো না। নিউমার্কেটের সামনে গ্যাঞ্জামটাও লাগত না।

মিথ্যা, শুধু একটা মিথ্যা। শুধু তাকে স্বীকার করে নিতে হতো_'হঁ্যা, আমিই রাকিব। ' মাহবুব যে একেবারে সত্যবাদী যুধিষ্ঠির, তাও নয়। বরং নিজেকে 'রাকিব' হিসেবে জাহির সে অনেকবারই করেছে। বাসে, রাস্তায়, মার্কেটে কি দোকানে; সবাই তার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকাচ্ছে, দু-একজন সাহস করে এগিয়ে এসে হাই-হ্যালোও করছে দেখে মাহবুব দ্রুত বুঝে গিয়েছিল, সবাই আসলে তার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলছে রাকিবকে।

চতুর মাহবুব বুঝে গিয়েছিল, এই তো আসল সময়! আর দশটা রোজগেরে মানুষ হয়ে তেলাপোকার জীবন যাপন করে কী লাভ! চাইলে সেও তো অনায়াসে হয়ে যেতে পারে তারকা। শুধু নিখুঁত অভিনয় করে যেতে হবে রাকিবের ভূমিকায়। আল্লাহ রাকিবকে যদি ক্রিকেট প্রতিভা দিয়ে থাকেন, তাকেও তো দিয়েছেন হুবহু রাকিবের মতো চেহারা। রাকিব যদি দেশের সেরা তারকাদের একজন হয়, সেই খ্যাতির জীবন তো মাহবুবেরও পাওনা। হিসাব সহজ।

মাহবুব তাই সময় সুযোগ পেলেই 'রাকিব' হয়ে গেছে। বলা উচিত, সময়ে অসময়ে সেটার ফায়দাও লুটেছে। তিনবারের এইচএসসি ফেল, বরিশালের মুলাদি থেকে ওঠে আসা মাহবুব ধন্য হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুলকি চালে হাঁটা সুন্দরীদের উষ্ণ সানি্নধ্যেও। বিদেশি দামি লিপস্টিকের স্বাদ যে কেমন নেশাধরা মিষ্টি মিষ্টি, সেই তথ্যও আজ তার জানা। শুধু একটা মিথ্যার কারণে।

শুধু মিথ্যা! তার নিজের কি কোনো অবদানই নেই? এর জন্য তাকে কি কম পরিশ্রমও করতে হয়েছে? শুধু তার চেহারার সঙ্গে রাকিবের চেহারা হুবহু মিলে গেলেই তো আর হয় না। রাকিব সেলিব্রেটি। আর মাহবুব তখনো জানেই না, সেলেব্রেটি বানানের শুরু 'এস' নাকি 'সি' দিয়ে। মঞ্চের কৃত্রিম আলো নয়, টিভি ক্যামেরার বুজরুকিও নয়; জীবনের, বাস্তবতার মঞ্চে নিখুঁত অভিনয় করে যেতে চাইলে উৎপল দত্তকেও দুই দিয়ে গুণ করতে হয়। আর তাই রাকিবের ভূমিকায় বিশ্বাসযোগ্য অভিনয় করতে হলে সেই দতা থাকা চাই।

হ্যাপাও বিস্তর। চলনে-বলনে সেই ঠাঁটবাট তো থাকতে হবে। কিছু মানুষ জন্মসূত্রে কিছু প্রতিভা পেয়ে থাকে। রাকিব পেয়েছে ক্রিকেট খেলার সেই সহজাত প্রতিভা, ফেলনা নয় মাহবুবও। তার আছে অভিনয় করার গুণ।

গ্রামের যাত্রাপালায় চাঁদ সওদাগর সে হয়েছে অনেকবারই। হ্যারিকেন-কুপির মায়াবি আলোয় রাজ্জাক-জসিমদের পার্ট নকল করে কতবার কাঁদিয়েছে গ্রাম্যবধূদের। কিন্তু এ তো শখের যাত্রাপালা নয়, নয় আব্দার মেটানোর জন্য ণিকের রাজ্জাক-জসিম হয়ে যাওয়া। শুধু প্রতিভা যথেষ্ট নয়। মাহবুবের মাথায় তখন চেপে বসেছে ভূত।

ঢাকায় পা দেওয়ার পর প্রথম ছয়টি মাস সে কাটিয়েছে রাকিব হয়ে ওঠার স্বেচ্ছাপ্রশিণে। টিভিতে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছে রাকিবের কথা বলা। দেখেছে, তার প্রায় সমবয়সী ছেলেটা কী করে সটাসট মুখের ওপর বলে দেয় নিজের মনের কথা। কে কী মনে করবে না করবে, তার ধারই ধারে না। রাকিবের জন্য অন্য রকম এক ভালো লাগা জন্ম নেয় তার মধ্যেও।

বলা যায়, মানুষকে পর্যবেণ করতে পারার অসাধারণ গুণের কারণে রাকিবের চলব-বলন মাহবুব রপ্ত করে নিয়েছিল দ্রুতই। সমঝে নিয়েছিল ক্রিকেটারদের আদব-কেতাও। ঝামেলার শেষ কিন্তু ওখানেই নয়। তারকা হতে চাইলে পোশাক-আশাকও হতে হবে সেই রকম। এসবের পেছনেও তো কম খরচ না।

ভাগ্য ভালো, তার এক মামা থাকে দুবাইয়ে। প্রতিমাসে হাজার পাঁচেক টাকা দিচ্ছেন গত কয়েক বছর ধরে। সেখান থেকেই প্রতি মাসে জমিয়ে জমিয়ে একটা মাঝারি অঙ্কের সঞ্চয়ও গড়ে তুলেছিল সে বালিশের কভারের ভেতরের দিকে থাকা গোপন পকেটটায়। ঢাকা আসার আগেই তার হাতে জমে গিয়েছিল কয়েক হাজার টাকা। মাহবুবের ইচ্ছে ছিল, আরও কিছু টাকা জমিয়েও সেও দুবাই যাওয়ার পাঁয়তারা করবে।

পুরো টাকা হয়তো নিজের সঞ্চয় থেকে ম্যানেজ করা সম্ভব হবে না। সেেেত্র মামার উদাহরণ তো আছেই_লাখখানেক টাকায় গ্রামের কোনো সরল কিন্তু অবস্থাপন্ন কৃষককে কন্যাদায় থেকে মুক্ত করা। স্বাভাবিকভাবেই জমানো টাকা মাহবুব যরে ধনের মতো আগলে রেখেছিল অনেক দিন। অথচ সেই টাকার পুরোটাই সে খরচ করে ফেলেছে অজপাড়ার মাহবুব থেকে দেশের শীর্ষ তারকা রাকিব হতে। তারকা হওয়ার নেশা এক অদ্ভুত নেশা! যেন রক্তের স্বাদ পেয়ে লোলুপ হয়ে ওঠা বুনো বাঘ! অথচ দুই বছর আগেও সে ছিল একেবারেই অন্য রকম।

সহজ সরল মাহবুবের জীবন আসলে ওলটপালট হয়ে গিয়েছিল গঞ্জের দোকানে চা খেতে গিয়ে। তাদের গ্রামের নিস্তরঙ্গ জীবনে তখনো ক্রিকেটের ঢেউ লাগেনি। দিনের তাজা পত্রিকাও সেখানে পেঁৗছায় না। পেঁৗছানোর প্রয়োজন আসলে পড়ে না। তার পরও পত্রিকা, বলা ভালো পত্রিকার কাটা একটা অংশ পাল্টে দিল মাহবুবের জীবন।

গঞ্জের মায়ের দোয়া হোটেলে বসে চায়ে টোস্ট বিস্কুট ভিজিয়ে খাওয়া ছিল মাহবুবের জীবনের সবচেয়ে বিলাসিতা। সেদিনও তা-ই করছিল। বিস্কুটটা মুড়িয়ে দেওয়া ছিল একটা খবরের কাগজের ঠোঙ্গায়। এসব কাগজে প্রায়ই নায়ক-নায়িকার ছবি ছাপা হয় বলে বিস্কুট চিবোতে চিবোতে ঠোঙ্গাটা উল্টেপাল্টে দেখছিল মাহবুব। তখনই তার নজরে পড়ে ছবিটা।

প্রথম দেখায় সে নিজেই চমকে ওঠে। সু্যটবুট পরনে, কোজআপ হাসি দিয়ে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে, আর কেউ নয়, সে নিজেই! আতঙ্কিত মাহবুব সেদিনই ছুটে গিয়েছিল ফয়সাল ভাইয়ের কাছে। ফয়সাল তাদের গ্রামের একমাত্র বিএসসি পাস ছেলে। অনেক জানা শোনা। সেই ফয়সালও প্রথমে হকচকিয়ে গিয়েছিল।

ক্রিকেটের খবর সে মোটামুটি রাখে। কিন্তু রাকিবের সঙ্গে যে তাদেরই অজপাড়াগাঁয়ের মাহবুবের চেহারা একেবারেই মিলে যায়, আগে কখনো ভাবেনি। ভাবার প্রয়োজনও পড়েনি। এ তো বাংলা সিনেমার গল্প। শৈশবে হারিয়ে যাওয়া যমজ ভাইয়ের একজন।

তার পর গান গেয়ে মিল হওয়া সিনেমার শেষে! মাহবুবকে ছোট থেকে চেনে বলেই ফয়সাল জানে, বাংলা সিনেমার গল্প এখানে অন্তত খাটেনি। প্রাথমিক বিস্ময়ের ধাক্কা সামলে ফয়সাল খুঁজে পেয়েছিল বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। মাহবুবকে ডিএনএ, জিন এসব বোঝানোর অর্থহীন চেষ্টা করে গিয়েছিল ঘণ্টাখানেক। শেষে ছেড়ে দিয়েছিল হাল। জিন আর জি্বনের পার্থক্য মাহবুবদের জানা নেই।

সরল মাহবুব ধরেই নিয়েছিল, এ সবই জি্বনের কাজ-কারবার। তার পর তার জীবনটা যে সরল থাকেনি, সে গল্প আরেকবার বলা অর্থহীন। বেশ চলছিল মাহবুবের। ঢাকায় আসার পর মাস ছয়েক পর থেকে রীতিমতো স্বপ্নের ঘোরে কেটেছে তার একেকটা দিন। ঠিক কী কারণে মাহবুব মত পাল্টাল, রাকিবের মুখোশটা ছুড়ে ফেলতে চাইল, তা আমাদের জানা নেই।

তবে এটা অনুমান করে নিতে পারি, একদিন এই দার্শনিক উপলব্ধি হয়েছিল তার, অর্কিড যতই সুন্দর হোক, সেটা শেষ পর্যন্ত পরগাছাই। মাহবুবের জীবনটাও তাই পরগাছার চেয়ে বেশি কিছু নয়। বড় কোনো স্বপ্ন মাহবুবের কোনো কালেই ছিল না। কিন্তু আগাছার জীবনও তো সে চায়নি। রাকিব জীবনটার প্রতি তাই ঘেন্না ধরে গিয়েছিল তার।

যতই চাকচিক্য থাক, শেষ পর্যন্ত সেটা জ্বর থেকে ওঠা রোগীর মতো বিস্বাদের জীবন। আর তাই সেই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিল মাহবুব। চেয়েছিল বলে সেদিন নিউমার্কেটে, ঘোর লাগিয়ে দেওয়া সুন্দরীদের গায়ে ঢলে পড়া অগ্রাহ্য করে, উষ্ণ সানি্নধ্যের হাতছানিকে পাশকাটিয়ে, দৃঢ় স্বরে মাহবুব বলেছিল, 'আমি রাকিব না, আমার নাম মাহবুব। ' সুন্দরীদের ভিড়টা প্রথমে সেটিকে খ্যাতিমান তারকার কৌতুক হিসেবে ধরে নিয়ে হেসে নিয়েছিল একচোট। এর পর এই ভেবে ঠোঁট উল্টেছিল, রাকিব হয়তো তাদের পাশ কাটাতে চায় বলেই গোপন করছে পরিচয়।

ভিড়ের অতি সাহসীদের একজন মাহবুবের থুতনি ধরেই ফেলেছিল প্রায় আহাদি ঢংয়ে। বলেছিল, 'কেন ঠাট্টা করছেন রাকিব ভাই!' ঘেন্নায় গা গুলিয়ে আসছিল মাহবুবের। দুলে উঠেছিল পৃথিবী। নিজের, অতিসাধারণ মাহবুব পরিচয়টা আর কোনোদিন ফিরে না পাওয়ার আশঙ্কায় অনির্বচনীয় এক ভয় গ্রাস করেছিল তাকে। তুনি পাগলের মতো কান্ডটা করে বসেছিল সে।

চুল ছিঁড়বার ভঙ্গিতে মাথা ধরে চিৎকার করে উঠেছিল, 'আমি মাহবুব, আমি মাহবুব, আমি মাহবুব...' .................. ---রাজীব হাসান কাটাসুর, মোহাম্মদপুর

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.