http://farm5.staticflickr.com/4084/5106907209_d4c9a50a8b_z.jpg
কাকডাকা ভোরে আকাশের দিকে চোখ মেলে দেখেছো কখনো? কী বিশাল আকার আর টকটকে লাল আভা ছড়িয়ে দিয়ে চারপাশ দেখে নিচ্ছে সূয্যি মামা! আর আয়েশি মন নিয়ে উপভোগ করে নিচ্ছে সকালটাকে। ওমা এ কী! কোথায় গেল সেই টকটকে লাল সূর্যটা। রূপালি আলোতে যে মাখামাখি হয়ে গেল চারপাশ। আর তাকিয়ে থাকা যাচ্ছে না যেন খটখটে এই আলোর দিকে। সাগরের তলদেশেও যদি এমন কোন মাছের খোঁজ পাওয়া যায় তাহলে কেমন হতো! সূর্যের মতো দেখতে আর গায়ের রংটাও বাদামি, সাদা-ধূসরের মিশেলে ঘটজট পাকানো।
দেখলেই মনে হয় পুরো শরীর জুড়ে বিশাল এক মাথা আর লেজ নিয়ে বিরাটাকার সূর্য মাছ কখনও দলবেঁধে কখনও বা একা সাগরের উপরে আরাম করে রোদ পোহাচ্ছে। আর এই সূর্যের আলোই নাকি এদের মজার খাবার। কিন্তু তাই বলে ভেবো না শুধু সূর্যের আলো খেয়েই বেঁচে থাকে। জেলি ফিশ, শামুক, সামুদ্রিক লতাগাছ, কাঁকড়া, চিংড়ি, ছোট মাছও এরা খায়। সে জন্য শিকারের খোঁজে ঘুরেও বেড়াতে হয় ওদের।
তখনই ঘটে বিপত্তি! সমুদ্রের স্রোতে ভেসে আসা পলিথিনকে জেলি ফিশ ভেবে গোগ্রাসে গিলে নেয় এরা। অমনি চোখ উল্টে যাবার উপক্রম হয় সান ফিশদের। আর এভাবেই নাকি অনেক সান ফিশদের মৃত্যু পযর্ন্ত ঘটে যায়। তবে এদের শত্রু সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। সী লায়ন, হাঙ্গররা একবার ওদের দেখতে পেলেই হলো! মুর্হূতেই সান ফিশদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পেটে চালান করে দেয়।
তবে শত্রুদের মোকাবিলা করতে এরাও কম যায় না। আশেপাশে কোন শত্রুর আনাগোনা টের পেয়েছে কী সঙ্গে সঙ্গে বদলে ফেলে নিজেদের গায়ের রং। ওদের দেখে শত্রুরাও তখন বিভ্রান্তিতে পড়ে যায়। কিন্তু কেউ কেউ ঠিকই বাগিয়ে আসে সান ফিশদের ধরতে। ওরাও তখন মুখের মধ্যে পানি পুরে নিয়ে জোরসে ছুঁড়ে দেয় শত্রুর মুখে, অমনি ঝাপসা হয়ে যায় সবকিছু।
সেই সুযোগেই দে চম্পট। উত্তর-দক্ষিণ আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগর, ভারত মহাসাগরের উষ্ণ পানিতেই থাকে এরা। কিন্তু কনকনে ঠান্ডা পানির আশেপাশে কখনই ঘেঁষে না সান ফিশরা। সমুদ্রের পানিতেই এরা ডিম পাড়ে। পানির মধ্যে ভাসতে থাকা এই ডিম থেকেই বের হয় পোনা সান ফিশ।
তবে পোনাদের দেখভাল করার দায়িত্ব বর্তায় তরুণ সান ফিশদের ওপর।
জাপান, কোরিয়ার পেনিনসুলা ও তাইওয়ানে সান ফিশের তৈরি খাবার বেশ সুস্বাদুও বটে। যে জন্য নির্বিচারে ধরাও হচ্ছে এদের। তবে ক্যালির্ফোনিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে সানদের ডানার বেশ কদর রয়েছে। আর যে জন্য জেলেরা শুধু ডানাটুকু রেখে পুরো শরীরটাই ফেলে দেয় সমুদ্রে।
কিন্তু ডানা যে এদের প্রাণভ্রমরা! তাই ডানা কাটা পড়েছে কী সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে এরা। এভাবেই নাকি দিন দিন কমছে সান ফিশদের সংখ্যা। তাই এদের বাঁচাতে উঠে পড়ে লেগেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। এদের না ধরার জন্য আইনও জারি করা হয়েছে রীতিমত।
শাপলা বড়ুয়া
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।