বৃষ্টির মতো গোলাগুলি ও বোমা বিস্ফোরণে এবার রণক্ষেত্র হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল। নেপথ্যে ছাত্রলীগের টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার। গতকাল রাত সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত হল ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষে তিন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৭৫ জন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সময় হলের ভেতরে ২০/২৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণ, ৩০টি হাতবোমা বিস্ফোরণ এবং অন্তত ২০টি কক্ষ ভাংচুর করা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে একটি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলিসহ প্রচুর দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
সংঘর্ষের জেরে এখনও হল ও ক্যাম্পাস থমথমে রয়েছে। হলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় হল প্রশাসন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এছাড়া ওই হল শাখা কমিটি স্থগিত এবং হল সভাপতিসহ ১১ জনকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ।
রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ : প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্ররা জানায়, সংঘর্ষ হয়েছে সভাপতি শেখ মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মহিউদ্দিনের সম্মিলিত গ্রুপ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মাহী গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে।
সন্ধ্যা থেকেই হলে উত্তেজনা বিরাজ করলেও মূলত মারামারি প্রথম দফায় শুরু হয় রাত সাড়ে ৩টার দিকে। এ সময় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সম্মিলিত গ্রুপের কর্মীরা অবস্থান নেয় তৃতীয় তলায় এবং মাহী গ্রুপের কর্মীরা অবস্থান নেয় দ্বিতীয় তলায়। প্রথম দফায় প্রায় আধা ঘণ্টা উভয় গ্রুপের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ চলতে থাকে। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা হলের বারান্দার রেলিংয়ের ইট ভেঙে একে অপরের ওপর নিক্ষেপ করতে থাকে। মূল মারামারি হয় ভোর সাড়ে ৫টার দিকে।
এর আগে উভয় গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় কিছুসংখ্যক রুম ভাংচুর হয়।
মারামারিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী জানায়, মাহী গ্রুপের কর্মীরা দ্বিতীয় তলার উত্তর ব্লককে কেন্দ্র করে ২৫১ নম্বর রুমের দিকে একত্রিত হলে সভাপতি গ্রুপের ক্যাডাররা সম্মিলিতভাবে আক্রমণ করে। এ সময় কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়। পরে ২৫১ নম্বর রুম ও তার আশপাশে রক্তের চিহ্ন দেখা যায়।
প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় এ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে মাহী গ্রুপের কর্মীরা দ্বিতীয় তলায় টিকতে না পেরে নিচতলার টিভি রুমে আশ্রয় নেয়। এ সময় অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। টিভি রুমের চার পাশ দিয়ে আক্রমণ চালিয়ে এক একজন করে কুপিয়ে মাহী গ্রুপের কর্মীদের আহত করে। এ সময় তারা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে অন্য গ্রুপের কয়েকজন কর্মীও আহত হয়।
আহত ছাত্রলীগ কর্মীরা দাবি করে, টিভি রুমেই সবচেয়ে বেশি ছাত্র আহত হয়েছে। এখানেই মাহী গ্রুপের সবাইকে আটকিয়ে ধরে ধরে কোপানো হয়েছে। এ ঘটনার সময় পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও তারা এগিয়ে আসেননি। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. আমজাদ আলী জানান, মাহীর রুমের সামনে ত্রিমুখী সংঘর্ষের পরই টিভি রুমের সামনে ও ভেতরে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ উপস্থিত ছিল সত্য, কিন্তু তাদের সঙ্গে ঢাল ও টিয়ার সেল না থাকায় তারা সামনে এগুতে পারেনি।
তারা কয়েকবার হলের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালালে ছাত্রলীগ কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। মারামারিতে সম্মিলিত গ্রুপে নেতৃত্ব দেয় রাহাত, মিজান, মইনুল, কামরুজ্জামান ও বরিশালের সোহাগ। আর মাহী গ্রুপে মাহীর নির্দেশনায় মারামারিতে নেতৃত্ব দেয় মেহেদী, রিপন, তুষার, ইসমাইল, আশিক. ফিরোজ প্রমুখ। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা ২৫৬, ২৫৭, ২৫৮, ২৫৯, ২৬০, ২৬৩, ২৬৪, ২৬৭, ১০২১, ১০২০, ই-৬সহ অন্তত ২০টি রুম ভাংচুর করে।
এদিকে সংঘর্ষের সময় ফিল্মি স্টাইলে মাথায় পাগড়ি বেঁধে দু’হাত উঁচিয়ে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে অস্ত্রবাজি করতে দেখেছে হলের সাধারণ ছাত্ররা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আমজাদ আলী বলেন, হলের এ অস্ত্রবাজের নাম রাহাত। সে আইইআর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। সেই মাহীকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। কিন্তু তার ছোড়া গুলিতেই সুজন ও হাসান গুলিবিদ্ধ হয়।
গুলিবিদ্ধ ৩ জনসহ আহত ৭৫ : রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মাহী, সুজন ও হাসান গুলিবিদ্ধ হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় পঙ্গু হাসপাতালে ১১ জনকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৫ জনকে, বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার ও রাজধানীর কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে ৬ জনকে চিকিত্সা দেয়া হচ্ছে। বাকিরা হাসপাতাল থেকে চিকিত্সা নিয়ে হলে ফিরেছে। এরা হলো ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ মাস্টার্সের ছাত্র এবং হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মাহী, লোকপ্রশাসনের মারুফ, ম্যানেজমেন্টের মশিউর রহমান, অ্যাকাউন্টিংয়ের মেহেদী হাসান, ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমের মামুনুর রশিদ, ফার্সির এএসএম মিজানুর রহমান, সমাজবিজ্ঞানের হিমু আহসান, আরবির আবুল কাশেম, অ্যাকাউন্টিংয়ের মাহফুজ, ভাষা বিজ্ঞানের পারভেজ, বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতির আশিক ইকবাল, আইইআরের শেখ কৌশিক ইকবাল, আরবির আরিফুল ইসলাম, অতিথি আলী আসাদ, ম্যানেজমেন্টের সোহেল, সমাজকল্যাণের হাবিবুল্লাহ, পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজের হেলাল উদ্দিন সুমন, মার্কেটিংয়ের আল আমিন, সমাজবিজ্ঞানের আবু তাহের, একই বিভাগের আশিকুর রহমান, বাংলার মোস্তাফিজুর রহমান, ম্যানেজমেন্টের সৌরভ, একই বিভাগের তুষার, সুজন, দর্শনের সাইফুর রহমান, ইসলামের ইতিহাসের গোলাম রসুল, বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতির সৌহার্দ্য, একই বিভাগের রাসেল, শান্তি ও সংঘর্ষের মীর মোহাইমেনুল, সমাজবিজ্ঞানের ইস্রাফিল হোসেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মোহাম্মদ আলী, ইতিহাসের সালাম, আরবির জহিরুল, ইতিহাসের আসাদ, ইংরেজির কামরুজ্জামান, বাংলার মেহেদী হাসান, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেসের রাসেল, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের তানভীর, ইসলামের ইতিহাসের বিপ্লব, দর্শনের মাহমুদ, ম্যানেজমেন্টের কবির, সমাজবিজ্ঞানের ইমরান, সংস্কৃতির মোস্তাকিম বিল্লাহ, আইইআরের এখলাস, চারুকলার আফিয়াজ, ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমের অপু, লোকপ্রশাসনের সোহাগ, সোহেল, তুহিন, নিটোল, সাকের, যুবায়ের, সাকিব, রাজ, সুজন, রুবেল, সবুজ, মুন্না, আইন বিভাগের তারেকসহ ৭৫ জন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিত্সক মো. জামিল জানান, ৭০ জনের মতো ছাত্র এখানে চিকিত্সা নিয়েছে। আহত বেশ কয়েকজনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
জানা গেছে, আহত গুলিবিদ্ধ মাহী, হাসান ও আশিকের অবস্থা গুরুতর। এদের পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হল ছাত্রলীগ কর্মীরা জানিয়েছে মাহীর পায়ে দুটি গুলিবিদ্ধ হয়েছে। সারা শরীরে প্রচুর ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর।
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কারও দেহেই গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
পিস্তল, গুলি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার : সংঘর্ষ শেষে পুলিশ হলের সামনের মাটির নিচে পুঁতে রাখা অবস্থায় একটি দেশি পিস্তল ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। পরে হলের ছাত্রলীগের কিছু বিশেষ রুমে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ বেশকিছু চাপাতি, বিপুল পরিমাণ রড, পাইপ, রামদা, হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটা উদ্ধার করেছে। তবে হলের সাধারণ ছাত্ররা জানায়, সংঘর্ষের পর পরই ছাত্রলীগ কর্মীরা অস্ত্র সরিয়ে ফেলেছিল। পুলিশের তল্লাশিতে অনেক সময় লাগায় ছাত্রলীগ কর্মীরা এ সুযোগ পায়।
ঘটনার নেপথ্যে : রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ব্যাপারে শাহবাগ থানার ওসি রেজাউল করিম জানান, মূলত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই হলের সভাপতির অনুসারী দুটি পক্ষের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন, মুহসীন হলের অবস্থান বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে প্রশাসনিক ভবন খুব কাছে। ফলে বিভিন্ন টেন্ডারের কাজে প্রভাব রাখা যায় এ হল থেকে। আর সেসব কারণে হলের নিয়ন্ত্রণ রাখতেই এ সংঘর্ষ।
এছাড়াও ছাত্রলীগ ও গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, বাহ্যত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হল সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক গ্রুপ বনাম সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে সংঘর্ষ হলেও এর পেছনে রয়েছে টেন্ডারবাজির ঘটনা। ক্যাম্পাস সংলগ্ন শিক্ষা ভবন, খাদ্য ভবন, বিদ্যুত্ ভবন ও গণপূর্ত ভবন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে টেন্ডারবাজিই ছিল ঘটনার উত্স। হলের সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলামই ঘটনার মূল হোতা। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত হল শাখার সভাপতি ছিলেন। শফিকুল ইসলাম টেন্ডারবাজি করার সহযোগী শক্তি হিসেবে বর্তমান হল সভাপতি মুহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিনকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করছেন।
সম্প্রতি টেন্ডারবাজির ভাগাভাগিতে যুক্ত ছিল সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিনও। কিন্তু সম্প্রতি তাদের মধ্যে এক বৈঠকে এ নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। মহিউদ্দিন হলে যশোর ও ঝিনাইদহ জেলার কর্মীদের আলাদা শক্তি ও বলয় সৃষ্টি করে। হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা জানান, হলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহী হল শাখা সভাপতি শেখ মুহাম্মদ আলী গ্রুপের কর্মী হিসেবেই পদ পেয়েছে। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে মাহী মুহাম্মদ আলীকে টেক্কা দিয়ে তার একটি বাহিনী তৈরি করে ক্ষমতার বলয় তৈরি করে আধিপত্য বিস্তার শুরু করে।
সে অন্য গ্রুপের কর্মীদের ছাত্রদল আখ্যা দিয়ে এরই মধ্যে বেশ কয়েক ছাত্রলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হল থেকে বের করে দেয়। এভাবে প্রভাব বিস্তার শুরু করলে সভাপতি মুহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন একাট্টা হয়ে মাহীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। এছাড়া আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ছাত্রলীগের গণশিক্ষা কার্যক্রম কর্মসূচির অংশ হিসেবে কয়েকদিন আগে হল লাইব্রেরিতে কিছু বই উপহার দেয় ছাত্রলীগ। সেখানে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুল ৩ লাখ টাকা চাঁদা দিয়েছেন। বই উপহার অনুষ্ঠানে শফিকুল ইসলাম অংশ নিয়েছেন।
তবে চাঁদার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে মতৈক্য না হওয়ায় মাহী ক্ষুব্ধ হয়ে অনুষ্ঠান বর্জন করেন। এসব নিয়ে ক্রমেই তাদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাধে। শেষ পর্যন্ত উভয় পক্ষ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ছাত্রলীগের কয়েক নেতা জানান, সংঘর্ষে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের অস্ত্রশস্ত্রের যোগান দিয়েছেন সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি অনেক আগেই ছাত্রলীগ ছেড়েছি। তাই হল ছাত্রলীগ নিয়ে কোনো রাজনীতি করার প্রশ্নই আসে না। বইয়ের জন্য আমি হল প্রশাসনের কাছে মাত্র ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়েছি। শফিকুল বলেন, সুনাম ক্ষুণ্ন করতে ছাত্রলীগের কেউ কেউ আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তদন্ত কমিটি : ঘটনা তদন্তে গতকাল দুপুরে তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছে হল কর্তৃপক্ষ।
হলের আবাসিক শিক্ষক আবু তালেবকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলী আক্কাস। কমিটিকে সাতদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কেএম সাইফুল ইসলাম খান জানান, হল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তারাই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
হল কমিটি স্থগিত, ১১ বহিষ্কার : সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ওই হল ইউনিট ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে।
এছাড়া হল সভাপতি মোহাম্মদ আলীকে আজীবনের জন্য ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে দেখামাত্র গ্রেফতারের জন্য পুলিশকেও অনুরোধ করা হয়েছে। তবে বাঁচিয়ে দেয়া হয়েছে সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিনকে। রহস্যজনক কারণে তাকে একটি শোকজও করা হয়নি। এছাড়া আরও ১০ জনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশাহ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জানান, খবর পেয়ে তিনি এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি টিপু হলে ছুটে যান। রাত ৩টা পর্যন্ত সবাইকে বুঝিয়ে নিবৃত করে চলে আসেন। হলে এসে (এফএইচ হল) খবর পান যে, সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। তিনি জানান, গোটা ঘটনা তারা সাংগঠনিকভাবে তদন্ত ও পর্যালোচনা করে ওই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমান সরকারের বিগত আড়াই বছরে ছাত্রলীগের আত্মকলহে বেশ কয়েকটি বড় সংঘর্ষের ঘটনার মধ্যে এটি অন্যতম।
এর আগে ২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাবির এফ রহমান হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মারা যায় মেধাবী নিরীহ ছাত্র আবু বকর।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।