আমি এক পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি। আমরা যত ভাবেই এই ছোট্ট সবুজ গ্রহটিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে ভাগ করার চেষ্টা করি না কেন, দিনের শেষে সেই একই আলো একই বাতাস আমরা সবাই ভাগাভাগি করি, সে আমরা পৃথিবীর যে যে প্রান্তেই থাকিনা কেন।
সাবেক সচিব শাহ আবদুল হান্নান এর একটি লেখা পড়লাম - ইসলামে আর্থিক সুবিধা পুত্রের চেয়ে কন্যার বেশি
Click This Link
লেখক শাহ আবদুল হান্নান বলেছেন,
পত্রপত্রিকার খবরে দেখা যাচ্ছে, সদ্য প্রস্তাবিত নারী উন্নয়ন নীতিতে সরকার উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষকে সমান করতে চাচ্ছে। তা করা হলে কুরআনের সূরা নিসার আয়াত নম্বর ১১-এর নির্দেশিত বিধানের সরাসরি লঙ্ঘন করা হবে। অথচ এটি একেবারেই অপ্রয়োজনীয়।
প্রকৃতপক্ষে ইসলামে পুত্রের চেয়ে কন্যার আর্থিক অধিকার এবং সুবিধা বেশি।
বাংলাদেশ এর সংবিধান কেনো কোরান মতে চলতে হবে এর কারন টা আমার কাছে এখনও পরিস্কার নয়। আমাদের সংস্কৃতি আরবদের সংস্কৃতি নয়। আমাদের রীতি নীতি ও আরবদের মত নয়। ধর্ম যদি ব্যক্তিগত বিষয়ই হয়ে থাকবে, তবে সেটা কেনো রাষ্ট্রকে প্রভাবিত করবে? আমাদের সংবিধান মতে দেশে যদি হিন্দু, মুসলিম, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ সবার সমান অধিকার থাকার কথা, তবে শুধুমাত্র একটি ধর্মের প্রভাব রাষ্ট্রিয় বিধানের ক্ষেত্রে লক্ষনীয় হলে সেটাকে কি বলা যায়? ধর্মকে কেনো রাষ্ট্রের সাথে মেলাতে হবে বা গুলিয়ে ফেলতে হবে?
লেখক আরও বলেছেন,
হিসাব করে দেখেছি, আমেরিকার জনগণ যদি ইসলামি আইন অনুসরণ করে, তাহলে নারীরাই অধিক সুবিধা পাবে।
সেখানে উত্তরাধিকার খুব সামান্যই পাওয়া যায়। কেননা বেশির ভাগ মানুষ ক্রেডিট কার্ডে চলে, তাদের সঞ্চয় নেই বা থাকলেও তা খুবই সামান্য ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে। সে দেশে মাসিক খরচ যদি মাত্র দুই হাজার ডলারও ধরি তাহলে ৩০ বছরের বিবাহিত জীবনে ইসলামি আইন মোতাবেক নারীর সুবিধা হবে (২০০০ X ১২ X ৩০) ৭,২০,০০০ ডলার (বাংলাদেশী টাকায় ৭,২০,০০০ X ৭০=৫,০৪,০০,০০০/- (পাঁচ কোটি চার লাখ টাকা)।
মনে হচ্ছে লেখক ক্রেডিট কার্ড এবং আমেরিকার নারী উভয়ের সম্পর্কেই যথেষ্ট ওয়াকি বহাল নন। হাস্যকর হিসাব।
বেশির ভাগ মানুষ ক্রেডিট কার্ডে চলে, তাদের সঞ্চয় নেই বা থাকলেও তা খুবই সামান্য ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে। - এই কথাতে মনে হচ্ছে যেন আমেরিকার তাবত মানুষ জন ঋণের বোঝা নিয়ে উন্নয়নশীল দেশেগুলোর মত দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে, শুধু ধরনটা ভিন্ন। আর আমেরিকার নারীরা যে সাবলম্বী হতে পারে এবং তাদের যে কারো উপরে নির্ভর করার প্রয়োজন বা ইচ্ছা কোনটাই নাও থাকতে পারে, সেটাও তার মস্তিস্কে উদয় হতে ব্যর্থ হয়েছে।
লেখক হিসাব নিকাশের উল্ল্যেখ করে আরো বলেছেন, অসংখ্য ক্ষেত্রে হিসাব করে দেখেছি, সার্বিক আর্থিক সুবিধা ইসলামি বিধানে পুত্রের চেয়ে কন্যার বেশি। কিন্তু তিনি একবারের জন্যও চিন্তা বা কল্পনা করতে পারেননি যে একটা সাবলম্বী নারীর ক্ষেত্রে ইসলামের এই বিধান কতখানি যুক্তি সম্মত? একটু চিন্তা করলেই দেখা যায়, এই এক বিংশ শতাব্দিতে এটা অস্বাভাবিক কিছু নয় যে, অনেক ক্ষেত্রেই নারী পুরুষের তুলনায় বেশী দায়িত্ব গ্রহন করতে পারেন।
এমন পরিবারও আছে যেখানে পরিবারের পুরুষ বিদেশে উচ্চশিক্ষারত এবং স্ত্রী সংসারের সকল দায়িত্ব বহন করছেন চাকুরীরত অবস্থায় থেকে। আবার অনেক ক্ষেত্রেই স্বামী অসুস্থতার কারনে অপারগ হওয়ায় স্ত্রী সকল দায়িত্ব গ্রহন করছেন, আবার অনেক নারী এ যুগে সাবলম্বী হওয়াকে বাঞ্চনীয় মনে করছেন। এসব ক্ষেত্রে এই ইসলামি বিধান কতটুকু যুক্তিসঙ্গত?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।