আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আদিগন্ত রাত্রির গান

বাঙলা কবিতা

আদিগন্ত রাত্রির গান ====== রাত্রির নগ্ন-অন্ধকারে, দূর বনভূমি আজ তাকিয়েছে আসমানের দিকে, যেখানে তারকারাজি অট্টহাসি-কোলাহল ক’রে মাতিয়ে রেখেছে এক সীমাহীন নির্জন গ্রাম; আমি শুনলাম— অরণ্যের নম্র নিঃশ্বাস; চাঁদ আজ আসবে না, চাঁদ আর আসবে না, তবু কি সে গুপ্ত থেকে যাবে? তারাদের কোলাহল থেমে গেলে, শেষে, একবার সংগোপন-উঁকি মারবে না? হয়তো জানো না, আমিও তোমাকে দেখি সেইভাবে; আরোপিত আনন্দের অনিচ্ছাসম্মত ভান শেষ হলে— অন্ধকারে ঝরে পড়ে যন্ত্রণার ক্ষীর, বাকরখানির মতো গুঁড়ো গুঁড়ো রৌপ্যরেণু... আমি খুঁটে খুঁটে তুলে রাখি সেইসব কষ্ট কোমল, তোমার অতৃপ্তিগুলি, হৃদয়ের প্রকৃত বাসনা; ঘুম নামে, শরীর ও হৃদয়ের দ্বিবিধ ক্লান্তির শেষে তোমার দু’চোখে, বৃষ্টির মতো নামে নিদ্রাপরীরা... ঘুম... জলোচ্ছ্বাসের মতো মুহূর্তে ভাসিয়ে নেওয়া ঘুম, তুমি চেয়েছিলে, পিপাসার্ত খঞ্জরের তীব্র প্রদাহ, অঙ্গুরীয় নিংড়ে ঢালা হীরকের বিষ, বিশ্বস্ত বিষাদ ছাড়া কিছুই পারিনি দিতে— তবু এই ঘুম, প্রিয়তমা, মনে রেখো, আমার রচনা; তোমার রক্তাক্ত চোখে, সমুদ্রচিলের মতো ঝাঁক বেঁধে নেমে আসা এই ঘুম, আমার রচনা। তুমি বৃষ্টি চেয়েছিলে, জানালার শার্সিতে অবিরাম গুলি বর্ষণের মতো বৃষ্টি চেয়েছিলে, শীত কি গ্রীষ্মের দিন, বড় কথা নয়; মধ্যরাতে বাসনার অনুবাদে বৃষ্টি চেয়েছিলে, তোমার চাহিদামাত্র, এই যে মুষল ধারা, ও আমার হৃৎপিণ্ডের ক্ষত ও জড়ুল, মনে রেখো, এই বৃষ্টি, আমার রচনা; দু’চোখের যুগ্ম-আকাশে যত বৃষ্টির মেঘ পুষে এই বৃষ্টি, আমার রচনা। চাঁদ হয়ে, ঘুম হয়ে, বৃষ্টি হয়ে, মধ্যরাতে ছুঁয়ে দিচ্ছি, ও তোমার বিদ্রোহী চুল, দেহের নিভৃতে পোষা গোপন জড়ুল, ছুঁয়ে দিচ্ছি স্বেচ্ছাকৃত প্রখ্যাত ভুল; সেই ভুল আদমের, অধমের; প্রিয়তমা, তুমিই উদ্যান জুড়ে একমাত্র হাওয়া, তুমি সেই প্রত্ন-পাপ, প্রসিদ্ধ সন্তাপ! আমার হৃদয় জুড়ে আমৃত্যু দাউ দাউ শোক, আমার জীব্নজুড়ে একমাত্র যন্ত্রণাবিদীর্ণ যত সুখ! আমার হৃৎপিণ্ডজুড়ে লেলিহান ক্ষত...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।