আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুভি রিভিউঃ যাব তাক হ্যায় জান (যতদিন আছে জীবন)


প্রথমেইঃ এটি সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব চিন্তাধারা আর বিশ্লেষণ থেকে লেখা। আপনার সাথে দ্বিমত হতেই পারে। নিজগুণে ক্ষমা করবেন। মুভিঃ Jab Tak Hai Jaan(২০১২) টাইপঃ রোমান্টিক ডিউরেশনঃ ০২ ঘন্টা ৫৯ মিনিট ২০ সেকেন্ড (মতান্তরে ১৭৫ মিনিট) ডিরেক্টরঃ যশ চোপড়া প্রোডাকশনঃ যশ রাজ ফিল্মস স্টোরিঃ আদিত্য চোপড়া স্ক্রিণপ্লেঃ আদিত্য চোপড়া, দেভিকা ভাগাট মিউজিকঃ এ, আর, রহমান কোরিওগ্রাফিঃ বৈভাবি মার্চেন্ট কাস্টঃ শাহরুখ খান(SRK), ক্যাটরিনা কাইফ(KK), আনুশকা শর্মা(AS) রিলিজ ডেটঃ ১৩ নভেম্বর, ২০১২ বাজেটঃ ৭৭ কোটি ৭৫ লাখ ৮৬ হাজার ৭১০ টাকা ফার্স্ট উইক ইনকামঃ ৫৫৬ কোটি ৬৯ লাখ ৯১ হাজার ০২৫ টাকা মন্তব্যঃ মুভির মেইন ক্যারেক্টার সামার আনন্দ(SRK), মিরা(KK), আকিরা রায়(AS)। সামার আনন্দঃ শুরুতে লন্ডনের রাস্তায় গান গেয়ে, হোটেলে সার্ভ করে, গীর্জার বাইরে স্নো পরিষ্কার করে, গ্যারেজে কাজ করে তার জীবন চলত।

মিরাকে গান শেখানোর বদলে সামার ওর কাছ থেকে ইংরেজি শিখছিল। পরিচয়ের ঘনিষ্টতা বাড়ার সাথে সাথে এংগেইজড মিরার প্রেমে পড়ে সামার। মিরাকে জানায়। মিরা গীর্জায় নিয়ে ওকে প্রমিজ করানোর পরও সামার ওকে ভোলে না। যোগাযোগ করতে গিয়েও থেমে যায়।

মার ব্যাপারে সাজেশন চাইলে সামার ওকে নিয়ে যায় মার কাছে। মার আর মার প্রেমিকের ভালোবাসা আর খুশি দেখে সামারকে প্রেমের কথা জানায় মিরা। সামারের প্রথম অ্যাক্সিডেন্ট হয় যেদিন মিরা বাবাকে সব জানাতে যাচ্ছিল। সামারকে ভুলে যাওয়ার প্রতিজ্ঞার কথা মিরার মুখে শুনে সামার ক্ষেপে ওঠে। রুমমেট যেইনকে সব পাউন্ড দিয়ে ফিরে যায় ভারতে।

বাপ-দাদার মতো আর্মি জয়েন করে। বম্ব স্কোয়াডে লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই বম্ব ডিসপোজ করতে থাকে। সবাই ওকে নাম দেয় “দ্যা ম্যান হু ক্যান নট ডাই”। ৯৭ ডিসপোজালের পর ওদের ক্যাম্পে ডিসকভারির হয়ে রিপোর্টিং করতে আসে আকিরা। সামারের কাহিনী জানা থাকায় আধুনিকা আকিরা ওর প্রতি ইন্টারেস্টেড হয়।

আকিরার প্রস্তাব সামার ফিরিয়ে দেয়। দশ বছর পর আকিরার অনুরোধে লন্ডন আসে সামার। দ্বিতীয় অ্যাক্সিডেন্টের পর ওর স্মৃতিশক্তি দশ বছর পিছিয়ে যায়। ডাক্তার ওর ওই সময়ের বন্ধুদের নিয়ে আসতে বলে। আকিরা মিরা আর যেইনের সাথে যোগাযোগ করে।

সবাই ওর স্মৃতি ফেরানোতে সহযোগিতা করে। ট্রেনে বম্ব অ্যালার্ট শুনে সামার এগিয়ে যায়। বম্ব ডিসপোজালের সাথে সাথে দশ বছরের স্মৃতি ফিরে পায় আর বুঝতে পারে মিরার অভিনয়। গীর্জায় নিয়ে মিরাকে ছল করে জানায় এবং রাগ দেখিয়ে ফিরে যায় ভারতে। ১০৮ বম্ব ডিসপোজালের সময় মিরা ভারতে আসে।

ওদের ভালোবাসা আবার শুরু হয়। মিরাঃ শৈশব থেকেই গীর্জায় যিশুর কাছে কিছু চাইলে তার বদলে নিজের প্রিয় কিছু ত্যাগ করত। বাহিরে ভদ্র রূপে থাকলেও সে লুকিয়ে সিগারেট খেত, বারে যেয়ে নাচতে পারত। সামারের কাছ থেকে পাঞ্জাবি গান শিখছিল বাবার ৫০তম জন্মদিনে গাওয়ার জন্য। এংগেইজমেন্ট হয়ে যাওয়ায় সামারের প্রেমের প্রস্তাবে প্রথমে সে সাড়া না দিলেও পরবর্তীতে দূর্বল হয়ে পড়ে।

সামারকে প্রমিজ করায় ওরা ফ্রেন্ডস থাকবে। মা অন্য লোকের সাথে চলে যাওয়ায় মার উপর অভিমান ছিল তার। বিয়ের কথা জেনে মা উপহার পাঠালে সামারের সাজেশন চায় ও। মার সাথে দেখা করার পর মিরা সামারকে ভালোবাসার কথা জানায়। অ্যাক্সিডেন্টের পর সামারের প্রাণের বিনিময়ে ওর সাথে যোগাযোগ ছিন্ন করার প্রতিজ্ঞা করে মিরা।

সামার এ কথা জানতে পেরে ভারতে চলে যায়। সামারের সাথে যোগাযোগ না রাখলেও বাবার পছন্দের পাত্র রজারকে সে বিয়ে করে না। দশ বছর পর সামারের দ্বিতীয় অ্যাক্সিডেন্ট হয়। সামারের স্মৃতি ফেরানোর জন্য ওর সাথে প্রেমের অভিনয় করে মিরা। স্মৃতি ফিরে এলে সামারের ক্ষোভের মুখোমুখি হয় মিরা।

প্রেমের টানে প্রতিজ্ঞা ভেঙ্গে ভারতে চলে যায় মিরা। সামারের সাথে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে। আকিরা রায়ঃ সামারের ডায়েরি পড়ে জানতে পাড়ে তার আর মিরার প্রেমের ইতিহাস। আধুনিক মেয়ে আকিরা প্রেমে বিশ্বাস করে না, ঈশ্বরেও খুব একটা নয়। ডিসকভারি চ্যানেলে চান্স পাবার জন্য শর্ট ফিল্ম বানাতে সামারের ক্যাম্পে আসে।

সামারের প্রেমে পড়ে যায়। সামারের উপর শর্ট ফিল্ম হওয়ায় সামারকে পার্সনালি নিয়ে আসার নিয়ম থাকায় দশ বছর পর সামার লন্ডন আসে আকিরার অনুরোধে। অ্যাক্সিডেন্টে স্মৃতি চলে গেলে আকিরা মিরাকে খুঁজে বের করে। সামার আর মিরার ভারতে পুনর্মিলনের সময় আকিরা তার শর্ট ফিল্ম প্রেজেন্ট করে। কিছু মনে গেঁথে যাওয়া সংলাপঃ ১।

দ্যা পোয়েমঃ teri aankhon ki namkeen mastiyaan teri hansi ki beparwaah gustakhiyaan teri zulfon ki lehrati angdaiyaan nahi bhoolunga main jab tak hai jaan, jab tak hai jaan the naughty fun in your eyes, the carefree forwardness of your eyes, the wavey stretching of your hair, I'll not forget, as long as I live.. tera haath se haath chhodna tera saayon se rukh modna tera palat ke phir na dekhna nahin maaf karunga main, jab tak hai jaan, jab tak hai jaan.. your leaving hand from hands, your turning away from the shadows (of mine), your not turning back to see, I'll not forgive, as long as I live. as long as I live.. baarishon mein bedhadak tere naachne se baat baat pe bewajah tere roothne se, chhoti chhoti teri bachkani badmashiyon se, mohabbat karunga main Jab tak hai jaan, jab tak hai jaan.. your dancing freely in rains, your getting angry on small things without reason, your small, childish mischieves, I'll love them all, As long as I live, As long as I live.. Tere jhoothe kasme vaadon se, tere jalte sulagte khwabon se, teri beraham duaon se, nafrat karunga main, Jab tak hai jaan, jab tak hai jaan.. Your false promises, your burning dreams, your heartless wishes, I'll hate them all, As long as I live, As long as I live.. (৪ মিনিট) ২। প্রত্যেক প্রেমের একটা সময় থাকে। ওটা আমাদের সময় ছিল না। কিন্তু এর মানে এই না যে ওটা প্রেম ছিল না। যখন প্রেমের সামনে খোদা নড়ে যায় তখন সময় আর কি? ওকে তো বদলাতেই হত।

(১ ঘন্টা ৬ মিনিট) ৩। যখন কেউ কোন কিছুর জন্য পাগল হয় এবং সেটা না পায় তবে জীবনভর সে ওটার পিছনে পাগল থাকে। (১ ঘন্টা ৪০ মিনিট) ৪। বম্ব স্যুট পড়া হয় জখম থেকে বাঁচার জন্য কিন্তু বম্ব থেকে জখম দেয় জীবন। প্রতি মোড়ে কোন ধোঁকা, কোন কষ্ট।

যখন জীবন থেকে বাঁচার জন্য আমরা বম্ব স্যুট পড়ি না তবে মৃত্যু থেকে বাঁচার জন্য কেন? জীবন আমাদের প্রতিনিয়ত একটু একটু করে মারে, বম্ব তো শুধু একবার। (১ ঘন্টা ৪৭ মিনিট) ৫। স্মৃতিশক্তি এক আজব জিনিস। কোন ব্যাপার পুরো জীবনে চাইলেও ভোলা যায় না আবার কোন ছোট ব্যাপার মনে করার চেষ্টা করলেও মনে আসে না। (২ ঘন্টা ৪০ মিনিট) মুভির অন্যতম বিষয়গুলো হল এই মুভিতে কোন অ্যাকশন নেই, তিন ঘন্টার বিশাল মুভি, হালকা কমেডি, দারুণ ৬টি গান, অসাধারণ কিছু মোরাল, সামার হিন্দু আর মিরা খ্রিস্টান এই দিক দিয়ে কিছুটা অসাম্প্রয়দায়িক চেতনা, সর্বোপরি প্রেমের পরিপূর্ণ কাহিনী।

শাহরুখ খানের অলমোস্ট ডাবল ক্যারেক্টারে (লন্ডনের সামার আর মেজর সামার) অভিনয় দারুণ প্রশংসনীয়। আপনি এই মুভি দেখে তিনটি জিনিস অবশ্যই শিখবেন Who to love? Why to love? How to love? শেষ সিনে সামার যখন ১০৮ বম্ব ডিফিউজ করতে যায় তখন যদি সে মারা যেত তবে ঈশ্বরের জয় হত, প্রতিজ্ঞাভঙ্গের শাস্তি দেখতে পেতাম আমরা। তবে তা না হওয়ায় জয় হয়েছে প্রেমের, ভালোবাসার। এই দিক দিয়ে আমরা স্টোরির মুন্সিয়ানার পরিচয় পাই। তাই আমার জীবনে দেখা অন্যতম শ্রেষ্ঠ (বর্তমানে সর্বশ্রেষ্ঠ) প্রেমের ছবি হয়ে থাকবে Jab Tak Hai Jaan(২০১২)।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.