বাংগালি, গল্প উপন্যাসের প্রথম ক'পাতা পড়ার পর সরাসরি শেষ পাতায় চলে যায় নায়ক নায়িকার পরিণতি জানবার জন্য। দু কারনে হতে পারে, এক ধৈর্য কম অথবা নদীর পাড়ের দেশের মানুষ,দরদ বেশী,নায়ক নয়িকার পরিণতিটা আগেভাগেই জেনে নিতে চায়। পশ্চিমাদের দয়াবান হতে হলে নির্মম হতে হয় - have to be cruel to be kind.বাংগালির দরদি হবার জন্য নির্মম হবার দরকার নেই,এমনিতেই দরদি। তবে এর উল্টোটাও ঘটে, জোড় পুকুড়ের জুয়েলকে যদি সেক্সপিয়ার সাহেব দেখতেন তাহলে kind to be cruel এর উদাহরনও দেখতেন।
জুয়েল তখন সবে কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে,টিন এজ আর ঢেউ টিন এজের মাঝামাঝি বয়স।
কলেজটা অনেক ডিসিপ্লিন্ড এবং কড়া। জুয়েল সিগারেট ধরার পাশাপাশি ছাত্র নেতাদের চামচামি করে একটা অস্ত্রও জোগাড় করেছে। একদিন কেমিস্ট্রি স্যার ক্লাস নেবার সময় আবিস্কার করলেন ছাত্ররা ক্লাস ফলো করছেনা,সবাই করিডোরের জানালা তে বিষ্ময়ে তাকিয়ে!ব্যাপারটা বোঝার জন্য কেমিস্ট্রি স্যার বারান্দায় এসে দেখে জুয়েল তার অস্ত্র খান দিয়ে বিভিন্ন অংগ ভংগি করছে,ওয়েস্টার্ণ নায়কদের মতো অস্ত্র নিয়ে খেলা দেখাচ্ছে!হঠাৎ স্যারকে দেখে জুয়েল দে দৌড়। একলাফে বারান্দা থেকে সোজা বাউন্ডারি ওয়াল ডিংগিয়ে পগারপার। স্যার জুয়েলকে চিনতেন না।
উত্তেজিত অবস্থায় চিৎকার করে বলতে লাগলেন,"তুই এ কলেজে কিভাবে পড়িস তা দেখে নেবো"।
ঘটনার অনেক দিন পার, হয়েছে চার পাঁচ মাস হবেওবা।
জুয়েল এতোদিন কলেজে যাবার সাহস করেনি।
জুয়েল জোড়পুকুরপাড়-ওর পাড়াতে যে চা দোকানে বসে তার পাশেই এক বহুতল ভবণ উঠছে। কিছুক্ষন পর পর ছাদ থেকে ফেলা সিমেন্ট বালুর পতনের ধুম ধাম শব্দে কান পাতা দায়।
এলাকার পথচারি আর অধিবাসিরা এতে অভ্যস্ত। একদিন ,জুয়েল চা দোকানে বসে- এমন সময় দেখে কেমিস্ট্রি স্যার সামনের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। জুয়েল হুট করে বিনয়াবত হয়েএবং ততধিক কড়া লিকারের এক সালাম ঠুকলো,স্যরকে। কুশল জানতে চাইবার পর
স্যার এবং জুয়েলের কথোপকথন নীম্ন রূপ-
স্যার:আপনাকে চিনলাম না?
জুয়েল: স্যার আমি আপনার ছাত্র,স্যার ভালো আছেন?(এ সময় মুখে বোকা বোকা হাসি)
স্য:হুম,তা কি ব্যাপার?(স্যার চিনতে পারেন নি,কিভাবে চিনবে সয়েন্সের স্যর আর্টসের ছাত্রকে)
জু:স্যার আমি আপনার কাছে রসায়ণ পড়তে চাই(ছাই,কচু,জুয়েল আর্টসের ছাত্র। )
স্য:আমার তো বাবা এতোদুর এসে পড়ালে পোশাবে না।
(জুয়েল দিবে ছাত্র!তাহলেই হয়েছে!)
জু:স্যার আমরা মোট ৫জন পড়বো। আমার বাসায়,এক ব্যাচ হলে তো হবে?(ওর বাসায় ওরই ভাত নাই আবার আরো ৫জন!)
আরো ইতং বিতং কতো কথা!স্যার কথা বলছে জুয়েল অতি মনযোগ দিয়ে শুনছে।
এমন সময় পাশ দিয়ে এক কুকুর যাচ্ছিলো,জুয়েল মনযোগ দিয়ে শোনার ফাকে পিস্তল বের করে কুকুর বরাবর গুলি ছুড়লো।
স্যারের আর কোন কথা নাই বুক সোজা করে ভোঁ দৌড়!এলাকার মানুষ ধরে নি্যেছে শব্দ টা কনস্ট্রাকশন সাইটের,স্যারের দৌড়ের কারণটা আজো জানেনি পথচারিরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।