আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আওযা়মী লীগে যুদ্ধাপরাধী-১

good
আওযা়মী বাম বুদ্ধিজীবিরা একাত্তুরের ‘স্বাধীনতার ইতিহাস’কে খুব সচুতরতার সাথে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বহুল প্রচলিত টার্ম- ‘ইহুদী গণহত্যা’ - ‘হলোকাস্ট’র সাথে এক করে ফেলছে। এই ‘হলোকাস্ট’ বর্তমানে এমনই একটা শব্দ যা নিযে় কেউ উচ্চবাচ্য করলেই তার বারোটা বাজিযে় দেযা় হয়। সারা বিশ্বের মিডিযা় একযোগে ইরানী নেতা আহমাদিনেজাদকে নাস্তানাবুদ করে ছেডে়ছিল ‘হলোকাস্ট ডিনাইল’ এর অভিযোগ এনে। তিনি দুই বছর আগে কলাম্বিযা় বিশ্ববিদ্যালযে় ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ও ছাত্রদের লক্ষ্য করে এই ব্যাপারে পরিষ্কার করে বলেছিলেন, “অস্বীকার নয়, আমি বলেছি এ নিযে় রিসার্স হোক। কেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই শব্দটা নিযে় রিসার্চের অনুমোদন নাই, কি করে সভ্য জগত হলোকাস্টের ইতিহাস নিযে় ছাত্রদের চর্চা করতে নিষেধ করে দিলো?” বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস এতদিনে ঠিক ওই পর্যাযে় নিযে় আসছে ইহুদী ঘরানার আওযা়মী বুদ্ধিজীবিরা।

তারা যা বলবে তার বাইরে কোন কিছুই বলা যাবেনা। আওযা়মী ভন্ডামী উন্মোচনের যেকোন গবেষণাকে তারা হলোকাস্টের স্টাইলে ‘স্বাধীনতা বিরোধী’ বলে আখ্যাযি়ত করে। সত্যি বলতে কি এটিই তাদের একমাত্র ‘ফোর্স’ যা দিযে় তাদের কর্মীবাহিনীকে সর্বদাই উজ্জীবিত করে রাখে। তারা মনে করে বাংলাদেশটা তাদের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণে। অন্যরা হবে তাদের দ্বারা চালিত, ঠিক যেমন আমেরিকানরা মনে করে তারাই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জাতি! মুক্তিযুদ্ধের সময় আওযা়মী লীগের জনপ্রিয়তা ছিল ধরাছোঁযা়র বাইরে।

এই দলের নেতাদের চরিত্র কেমন ‘ফুলের মতন পবিত্র’ তা জানতে হলে আজকেই তাদের নিযে় স্টাডি করুন। আপনার আশপাশেই নজর দিলেই তাদের সম্বন্ধে একটা ধারণা পেযে় যাবেন। ২০১০ এ এসে আওযা়মী লীগ যেমন ‘ধর্ষণ লীগ’, টেন্ডার লীগ’, ‘বাজিকর’, আর ‘চাপাতি লীগ’ বলে ব্যাপক পরিচিতি পেযে়ছে, ‘৭১ এবং তার আগেও তাদের পরিচিতি এই রকমই ছিল অথবা তার চেযে় বেশীই ছিল। শেখ মুজিব ছাত্রজীবনে টেন্ডার ছিনতাই করেছেন। তাই দেখে হোসেন শহীদ সোহরাওযা়র্দী ধমকও দিযে়ছেন।

পার্লামেন্টে নিজ হাতে স্পীকারকে চেযা়র দিযে় পিটিযে় হত্যা করেছেন, সিরাজ সিকদারকে হত্যা করে মুজিব বলেছেন, “কোথায় আজ সিরাজ সিকদার”, চল্লিশ হাজার জাসদ কর্মীকে খুন করে বলেছেন “লাল ঘোডা় দাবডি়যে় দিমু”। এরকম অসংখ্য কুকীর্তির উদাহরণ একমাত্র এই দলেই রযে়ছে। অথচ এগুলো নিযে় জাতীয়তাবাদী বা ইসলামিস্ট কেউই বাংলাদেশীদের শিক্ষিত করতে পারেনি। তার মানে মিডিযা় বানাতে পারেনি বা প্রচারণা চালানোর কৌশলও তাদের নেই। সবচেযে় নির্মম সত্য হলো আওযা়মী বিরোধীরা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলেও আওযা়মী জাহেলিযা়তের সর্বসাকুল্য খতিযা়ন তৈরি করতে মনযোগী হয়নি।

স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সমযে় তাদের ভন্ডামী নিযে় কোন রিসার্সও তারা সরকারীভাবে নথিভুক্ত করেনি। মেজর জলিল, বদরুদ্দীন উমর, আহমদ ছফাদের একাডেমিক গবেষণাগুলোকে তারা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়নি যার ফল এখন তারা হাডে় হাডে় টের পাচ্ছে। সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের বিস্তারিত তালিকা করলেই বোঝা যেত কতজন আওযা়মী লীগের লোক ছিল। এমনকি শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাও করা হয়নি। আওযা়মী নেতারা যে জান বাঁচাতে পগার পার হযে় ভারতে ছিল সে কথাগুলো মানুষজন চল্লিশ বছর পরে এসে ভুলতে বসেছে।

আজকের সবচেযে় মুখরা মন্ত্রী ও নেতারা যে তখনকার পরিচিত রাজাকার বা পাকিদের পদলেহী ছিল তা এখন কে বিশ্বাস করবে? মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের ৯৯ ভাগ চেযা়রম্যান ছিল আওযা়মী লীগের লোক। পুলিশের এসপি ও চেযা়রম্যানরা মিলে রাজাকার, শান্তিবাহিনী নিযো়গ দিযে়ছে। তারা ছিল পাক আনসার এবং পুলিশ বাহিনীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে নিযো়জিত একটা বাহিনী। এরা আর্মিদের দেখিযে় দিত কারা মুক্তিযোদ্ধা। সে অনুযাযী়ই বর্বর পাক সেনারা বাংলাদেশীদের উপর অত্যাচার করতো।

পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টে আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনীকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগী বাহিনী হিসেবে ঘোষণা করা আছে। সেসময় ইসলাম পন্থী দলগুলোর রাজনৈতিক মাঠে অবস্থান ছিল ‘ছাগলের তিন নম্বরবাচ্চা’র মত। আওযা়মী লীগের ধারে কাছেও ছিল না জামাযা়তে ইসলামী, নেজামে ইসলামী, মুসলিম লীগ। সংগতকারনেই সংখ্যানুপাতে তাদের ভাগে খুব বেশি পডে়নি। এদের মধ্যে সবচেযে় বড় দল ছিল মুসলিম লীগ।

এরপর জামাত। সেই জামাতই বলছে, ‘৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানে জামাযা়তের ৫৫৬ জন রুকন আর মাত্র তিন হাজার কর্মী ছিল। ’ ১৯৭২ সালের দালাল আইনের অধীনে প্রায় ১ লাখ লোককে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে অভিযোগ আনা হয় ৩৭ হাজার ৪৭১ জনের বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে ৩৪ হাজার ৬২৩ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে কোনো মামলা দাযে়র করাই সম্ভব হয়নি।

২ হাজার ৮৪৮ জনকে বিচারের জন্য সোপর্দ করা হয়। বিচারে ৭৫২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং ২ হাজার ৯৬ জন বেকসুর খালাস পেযে় যায়। যে ৭৫২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাদের মধ্যে ইসলামপন্থী নেতারা কেউ ছিলেন না। এদের ফাঁসাতে না পেরে ১৯৭৩ সালের ৩০ নভেম্বর শেখ মুজিবুর রহমান শেষমেষ সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করতে বাধ্য হন। আসুন, এবার আমরা দেখি আওযা়মী লীগের প্রথম সারিতে কারা যুদ্ধাপরাধী।

পুতুলের দাদা শশুর নুরু মিযা় প্রধানমন্ত্রীর বেযা়ই শ্রমমন্ত্রীর পিতা নুরু মিযা় একাত্তুরে শান্তি কমিটির স্থানীয় চেযা়রম্যান ছিলেন। ফরিদপুর জেলায় শান্তি কমিটির সদস্যদের তালিকায় এখন চারটি মাত্র নাম বিদ্যমান- ডা: কাজী ইমদাদুল হক, আজিরুদ্দীন খান, আনিস কাজী ও আদিল উদ্দীন হাওলাদার। বেযা়ইর পিতার নামটি মৃত রাজাকারের নাম থেকেও উধাও হযে় গেছে। ওদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পুতুলের দাদাশ্বশুর রাজাকার হলেও যুদ্ধাপরাধী ছিলেন না। ফরিদপুর আ’লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেছেন, দেশে কোনো রাজাকার নেই (আমারদেশ, ২২ এপ্রিল, ২০১০) Click This Link ফরিদপুর জেলা আওযা়মী লীগ নেতাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কডা় ভাষায় বলেছেন, দেশে রাজাকার বলে কোনো শব্দ নেই।

দেশে কোনো রাজাকার নেই। তার মেযে় সায়মা ওযা়জেদ পুতুলের দাদাশ্বশুর ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেযা়রম্যান প্রযা়ত খন্দকার নূরুল হোসেন নূরু মিযা় ফরিদপুরে রাজাকারদের তালিকার ১৪ নম্বর রাজাকার হলেও তিনি যুদ্ধাপরাধী ছিলেন না বলে শেখ হাসিনা সাফ জানিযে় দিযে়ছেন। একইসঙ্গে তিনি ফরিদপুরের নেতাদের কাছে প্রশ্ন করেছেন, তার ভাই শেখ সেলিম ফরিদপুরের রাজাকার মুসা বিন শমসের ওরফে নূইলা মুসার সঙ্গে ছেলে বিযে় দিযে় আত্মীয়তা করেছেন—এটা কেন তারা কখনও বলেন না; অথচ শেখ হাসিনার মেযে়র দাদাশ্বশুর নূরু মিযা়র নামে সবাই অভিযোগ করেন যে, তিনি রাজাকার ছিলেন। নূরু মিযা় পিস কমিটির সদস্য থাকলেও যুদ্ধের সময় তিনি কোনো অপরাধমূলক কাজকর্ম করেননি বলে শেখ হাসিনা গর্বের সঙ্গে আওযা়মী লীগ নেতাদের মনে করিযে় দেন। এদিকে উপজেলা চেযা়রম্যান সামছুল হক ভোলা মাস্টার প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, শ্রমমন্ত্রীর বাবা নূরু মিযা় একজন রাজাকার ছিলেন।

ফরিদপুরের রাজাকারদের তালিকায় তার অবস্থান ১৪ নম্বরে। ছেলে মন্ত্রী হওযা়র সুবাদে রাজাকার বাবা নূরু মিযা়র নামে ফরিদপুরের বিভিন্ন রাস্তার নামকরণ করা হযে়ছে। রাজাকারের নামকরণ করা রাস্তা ভেঙে ফেলার জন্য ভোলা মাস্টার দাবি জানান। বৈঠকে আওযা়মী লীগ নেতা নূর মোঃ বাবুল বলেন, আমি আপনার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে রাজনীতি করেছি। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি হযে়ছি।

সাব-সেক্টর কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। অথচ আজ ৭৭ বছর বয়সে আমাকে কুপিযে় আহত করা হলো। আমার শরীর থেকে রক্ত ঝরানো হলো। এই সন্ত্রাসী হামলার জন্য তিনি শ্রমমন্ত্রী ও তার ভাই বাবরকে দাযী় করেন। শ্রমমন্ত্রীর গ্রুপের সন্ত্রাসীদের হাতে আহত জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ আহ্বায়ক শওকত আলী জাহিদের ভাই আবদুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করে বলেন, আওযা়মী লীগের রাজনীতির জন্য তাদের পরিবার সারা জীবন যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, তার প্রতিদান হিসেবে আজ তার ভাইকে একটি পা হারাতে হলো।

প্রধানমন্ত্রী সবার বক্তব্য ধৈর্যসহকারে শোনেন এবং প্রযো়জনীয় ব্যবস্থা নেযা়র আশ্বাস দিযে় ফরিদপুর জেলা নেতাদের বিদায় করেন। (চলবে) লেখকঃ সিনিয়র আইনজীবি, মিশিগান। ইমেইলঃ Click This Link
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।