আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাঝে-মাঝে হেমায়েতপুরে যাইতে মঞ্চায়!! (একজন স্বঘোষিত সুশীল পাগলের বাই-বর্ন পাগলামির চাঞ্চল্যকর ইতিবৃত্ত!)

সত্য একবার বলতে হয়... সত্য বারবার বললে মিথ্যার মত শোনায়... মিথ্যা বারবার বলতে হয়... মিথ্যা বারবার বললে সত্য বলে মনে হয়...

আমি খুব রেস্টলেস এন্ড ইমপেশেন্ট টাইপসের একটা মানুষ। আমি যে কী মাত্রায় চঞ্চল তা আমার আশে-পাশের মানুষগুলো খুউব ভালো করে জানে! কলেজ ও ভার্সিটি লাইফের শুরুর দিকে শুধুমাত্র চাঞ্চল্যের কারনে আমার ইয়ার-মেটদের অনেকেই আমাকে অপছন্দ করত! ফাইনাল ইয়ারে উঠতে উঠতে পরে অবশ্য তাদের অনেকেই আমার খুব ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছিলো! অনেকেই মনে করতে পারেন যে রেস্টলেসনেসের সাথে অপছন্দের কি সম্পর্ক?! আসলে আমি চাঞ্চল্যের কারনে হাটি বাতাসের বেগে। আমার কথা-বার্তা কাজ কর্ম দেখলে যে কেউ বলবে,"মেয়ে তোমার কি ট্রেন ছেড়ে দিবে??" এজন্য অনেকে আমাকে দায়িত্ব কর্তব্যহীন জ্ঞানহীন মনে করত! আর ভাবতো আমি মনে হয় ঢং করে এমন করি! পরে দেখতে দেখতে বুঝল যে... "না! আমি বাই-বর্ন এমনই!! যেমনটা দেখতেছে তেমনই!!!" এই পোস্ট আমার ভুলো-মন আর তড়িঘড়ি বিষয়ক। তবে এই ভুলো মন কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত চাঞ্চল্যজনিত কারনে! কেউ যদি এই পোস্ট পড়ে ব্লগারকে পাবনায় যাওয়ার টিকিট কেটে দিতে অতি ব্যস্ত হয়ে যায় তবে সেই সকল ব্যাক্তি ও ভক্তবৃন্দের প্রতি লেখক প্রগাঢ় ভালোবাসা নিয়ে একটা কথাই বলবে... "দেশে আমার মত এমন অনেক ভদ্রবেশি সুশীল পাগল আছে! এদের সবাইকে ট্রেস করে পাবনায় ঢুকাইতে গেলে দেশের বারো আনাকেই পাগলা গারদ হিসেবে ডিকলেয়ার করতে হবে! তাই এত ঝামেলা করে লাভ নাইরে ভাই। কারন পাগলের সুখ মনে মনে..দিনের আকাশে রাতের তারা গোনে! আর চুশীল পাগল রা জাতে মাতাল হলেও তালে ঠিক।

বেটার আপনারা পোস্টটা এনজয় করেন! আর যারা বেশি সিরিয়াস তারা এই জাতীয় পোস্ট পড়ে বিরক্তি ঝেড়ে যান! মনে রাখবেন....ঝাড়ি খাওয়াটা কিন্তু... পাগলের জন্য পিওর এন্টারটেইনমেন্ট। " এইখানে অল্প কয়টা ঘটনা বলব...তো শুরু করি... **আমি তখন এস.এস.সি পাস করি নাই। তো সেদিন বাসায় কেউ ছিল না! আমি নামাজে দাড়াইছিলাম। তো নামাজে দাড়ানোর পর টি-এন-টি ফোনে রিং হল। যেটার রিং টোন ভয়াবহ লাউড।

আমার নামাজ ছুটে ছুটে অবস্থা!! যে ফোন দিসিলো তার মনে হয় খায়া-দায়া কাজ ছিল না সে ফোন করেই যাইতেছিল... করেই যাইতেছিল!! আমি তো.. লাইক.. গিম্মি এ্য ব্রেক ইয়ার!! আচ্ছা! কোনমতে নামাজ শেষ করেই একছুটে রিসিভার কানে তুলে অতি-চাঞ্চল্যের কারনে মনের ভুলে হ্যালো না বলে বললাম, "সুবহানাকা.... আল্লাহুমমা ওয়াবিহামদিকা....ও্যাতাবারা......" ঐ পাশ থেকে আমার বন্দ্ধুটি আমার তড়িঘড়ি না বুঝে বলল, "কি বলতেছিস এইসব??....এই শোন! আজকে না......." আমি তো লাইক...যাক বাবা!! তাইলে কিছু বুঝে নাই! ঐ যাত্রায় ইজ্জত বাঁচলো!! **এছাড়াও আরেকদিন একদিন আমি টিভি দেখতেছিলাম! এমন কিছু দেখতেছিলাম যেটা খুব ব্রিদ-টেকিং ছিল!! তো এর মধ্যে ডোর-বেল বেজে উঠলো। আমি দরজা খুলতে না গিয়ে দেখতেছি তো দেখতেছি!! পরে বার বার বেল বাজার কারনে তড়িঘড়ির কারনে "কে" না বলে... বলে উঠলাম, "হ্যালো!! কে বলছেন??!!!" **এবারের ঘটনাটা কলেজ লাইফের। আমি এক্স সিটি কলেজ ছিলাম। তখন সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি! তো আমাদের ক্লাস শুরু হত সকাল ৭.৩০ তে। আমি তখন কমলাপুরে থাকতাম।

আমি একটা স্লিপিং ম্যাড ছিলাম। তো সেখান থেকে সিটি বাস এ করে একরকম ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ক্লাসে যেতাম। আমি লেইট-লতিফ ছিলাম। একদিন আমাকে ম্যাম বললেন এরপর থেকে লেইট করলে আমাকে আর ক্লাসেই ঢুকতে দেয়া হবে না! কারন হাফিজ স্যার দেখলে আমাকে ডাকবেন সাথে ম্যামকেও! এই কথা শোনার পর যাতে লেইট না হয় তাই আমি তড়িঘড়ি করে ড্রেস-আপ করে পরদিন ক্লাসে গেলাম। একটু পর সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি শুরু করল।

কারন আমি উল্টা সালোয়ার পরে ক্লাসে চলে গেছিলাম!!! **কয়েকমাস আগের ঘটনা। সেদিন সন্ধ্যায় আমার ট্যুশানি ছিল। কিন্তু টায়ার্ডনেসের কারনে ক্যাম্পাস থেকে এসেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। তো হঠাং জেগে দেখি আমি অলরেডি হাফ-এন-আওয়ার লেইট! এন্ড স্টুডেন্টের পরদিন এক্স্যাম। তাই সেদিন কোনভাবেই মিস দেয়া যাবে না! আবার তড়িঘড়ি করে রেডি হয়ে চলে গেলাম! পড়ানো শেষ করে যেই না নিজের স্যান্ডেল পরতে যাবো দেখি আমার স্যান্ডেল নাই।

কোথা থেকে একজোড়া বিদঘুটে স্পন্জের স্যান্ডেল রাখা!!! আমি তো লাইক.... থ!! স্টুডেন্টকে জিজ্ঞেস করলাম, "অনি আপুর স্যান্ডেল কৈ?" সে ভয়ে ভয়ে বলল, "ম্যাডাম আপনি তো আজকে এটাই পরেই আসছেন। " আসলে ওটা আমার বাথরুমের স্যান্ডেল ছিল!! তড়িঘড়িতে ওটা পরেই বের হয়ে গিয়েছিলাম!! **এছাড়াও তারও কিছুদিন পরে আমি আরেকদিন তড়িঘড়ি করে ঘুম থেকে উঠে স্টুডেন্টের বাসায় চলে গেছিলাম!! তো তাকে টাস্ক দিয়ে আমি নিজের হাতের দিকে তাকালাম। হঠাৎ মনে হল কোথাও একটা প্রবলেম আছে। ভালো করে অবজার্ভ করে দেখি আমার পরে থাকা ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট ড্রেসটা আসলে উল্টা!!!!! ভাগ্যভালো সেদিন আমি আমার ওড়নাটা অনেক বড় করে মাথায় সুন্দর করে পরে ছিলাম! নাইলে আমার মান-ইজ্জতের ব্যান্ড বেজে যেত!!! চাঞ্চল্যের কারনে মাঝে মাঝে আমি যে কোন পৃথিবীতে থাকি! **আরেকদিন এরকম কলেজে যাব! তো তাড়াহুড়া করে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ব্রাশ করছিলাম। আমি ত্রিশা ব্রাশটা ইউজ করতাম যেটার কালার ছিল নীল।

তো যারা ত্রিশা ইউজ করেন তারা জানেন এই ব্রাশটা সফটলি বেন্ড হয়। মুখে দিলেই পার্থক্যটা বোঝা যায়! কিন্তু আমি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ভাবলাম যে কি ব্যাপার আজকে ব্রাশটা এত হার্ড কেন?? তারপরও চেক না করে ব্রাশ করেই করেই যাচ্ছি.... করেই যাচ্ছি! কুলি করতে গিয়ে দেখি হায় আল্লাহ!! এটা কার ব্রাশ?!?! কালারতো ঠিকই আছে!! কিন্তু আমি ঘুমের ঘোরে আমাদের বাসায় আম্মুকে বাসার কাজে যে ছেলেটা হেল্প করত ওর ব্রাশ দিয়ে এতক্ষন আয়েশে দন্ত-মাজন করিতেছিলাম!! এই ঘটনা সবচে করুন। **আমি প্রায়ই ভুল করে হাতের সেল-টাকে রিমোট-কন্ট্রোল হিসেবে ইউজ করি! **আগে প্রায়ই চা খেয়ে কাপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখতাম! এই ভুলটা করতাম যদি ফোনে কারো সাথে কথা বলতে থাকতাম!! **অনেকেই চশমা হাতে নিয়ে চশমা খুঁজে বেড়ান। আমার কাহিনী উল্টা! আমি চশমা না পরে থেকেও প্রায়ই অদৃশ্য কিছু একটা চোখ থেকে খোলার চেষ্টা করি! **ছোটবেলায় পড়াশোনার নামে আঁতলামি করতাম। সারাক্ষন পড়তাম আর যা পড়তাম তাই লিখতাম।

মাঝে মাঝে কলম টা খুজে পেতাম না! ওমা! এই মাত্র না হাতে ছিল?? কৈ গেল!! খুঁজতে খুঁজতে অস্থির!! পরে চুল আঁচড়াতে গিয়ে টের পেতাম আমার লং পনিটেল টা তে পড়তে পড়তে কোন ফাঁকে পেন টা গুঁজে রেখেছিলাম বলতেও পারব না!!!!! আজীীীীীীীববববব!!!! এছাড়াও এরকম বহু ঘটনা আছে যেগুলা আরো মারাত্মক! বললে অনেকেই বলবে যে "আফা!! আফনের হেনে থাইক্কা কাম নাইক্কা! হেমায়েতপুর আফনেরে মিছায়! হেনে যান গিয়া। " আমি তো স্বঘোষিত সুশিল পাগল! মাঝে মাঝে হেমায়েতপুরে যাইতে মঞ্ছায়!!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।