আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুয়াম্মার আল গদ্দাফি ; উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আমি এক পথহারা পথিক, ঠিকানা খুজে ফিরি পথে পথে.....

প্রাথমিক জীবন: মোয়াম্মার আল গাদ্দাফী ৭ই জু্‌ন, ১৯৪২ সালে সিরত শহরের এক যাযাবর বেদুইন পরিবারে। অন্যসব লিবিয়ান শিশুর মতো তিনিও শৈশবে ঐতিহ্যগত ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করেন। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে লিবিয়ার সর্বময় ক্ষমতায় রয়েছেন মুয়াম্মার আল গাদ্দাফি। ১৯৭২ সালের ১৬ জানুয়ারি ১২ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রিসভা গঠন করে নিজেকে লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন তিনি। কিন্তু বছর দুয়েক পর হুট করেই আবার মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে লিবিয়ার সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে 'নেতা' উপাধি গ্রহণ করেন।

যে কোনো বিষয়ে ঝটপট সিদ্ধান্ত গ্রহণে গাদ্দাফির জুড়ি মেলা ভার। তার গতিপ্রকৃতি বোঝা কোনো সাধারণ লোকের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে গাদ্দাফির নামের পাশে 'আনপ্রেডিক্টেবল লিডার' খেতাব জুড়ে যেতে সময় লাগেনি। ১৯৬৯ সালের সেপ্টেম্বরে নিজের ভাগ্যের চাকা নিজেই ঘুরিয়ে নেন মুয়াম্মার আল গাদ্দাফি। লিবিয়ার সর্বময় ক্ষমতায় তখন বাদশাহ ইদ্রিস।

আর ২৭ বছরের তরুণ গাদ্দাফি লিবিয়ান সেনাবাহিনীর একজন সাধারণ কর্মকর্তা। বছর ছয়েক আগে যোগ দিয়েছেন মিলিটারিতে। পদোন্নতি হতে হতে ক্যাপ্টেন পর্যন্ত এসে থেমেছেন ততদিনে। সাধারণ এক বেদুইন পরিবারে জন্ম হলেও অনাদরে বড় হননি। একমাত্র পুত্রসন্তান গাদ্দাফিকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল বাবা-মায়ের।

তাই শত অভাব-অনটনে থেকেও স্কুলে ভর্তি করে তাকে। পরিবারের এই ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা কখনো ভুলেননি তিনি। ছোটবেলায়ই সিদ্ধান্ত নেন, যে করেই হোক কোনো একটা জায়গায় পেঁৗছতে হবে। স্কুলে পড়ার সময় মিসরের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গামেল আবদেল নেসার ছিলেন গাদ্দাফির সুপারহিরো। বক্তৃতা দেওয়ার সময় গামেলের ভরাট কণ্ঠস্বর মুগ্ধ করত তাকে।

ইহুদি ও ইসরায়েলবিরোধী ছাত্রসংঘতি গড়ে তুলেছিলেন সেসময়েই। কিন্তু পড়াশোনায় লবডঙ্কা! আবার পড়াশোনায় মনোনিবেশ করে ১৯৬৩ সালে শেষ করলেন হাইস্কুল। কিন্তু ততদিনে রাজনীতির পোকা ধরে ফেলেছে তাকে। ১৯৫১ সালে ইতালির কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে লিবিয়া শাসন করে চলছিলেন বাদশাহ ইদ্রিস। কিন্তু বাদশাহকে ভালো লাগেনি গাদ্দাফির।

১৯৬৩ সালে লিবিয়ান মিলিটারিতে ঢোকার পর থেকেই গোপনে জল ঘোলা করতে শুরু করেছিলেন তিনি। ব্রিটেন এবং আমেরিকার কাকতাড়ুয়া বাদশাহ ইদ্রিসকে শায়েস্তা করতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি তাকে। সুযোগ এসে গেল ১৯৬৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর। শারীরিক অসুস্থার কারণে বাদশা ইদ্রিস তখন দেশের বাইরে। ব্যাস, গাদ্দাফির অনুসারী সেনাবাহিনীর তরুণ কিছু কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে লিবিয়াতে ঘটিয়ে দিলেন এক রক্তপাতবিহীন সফল সামরিক অভ্যুত্থান।

মুহূর্তেই প্রেক্ষাপট বদলে গেল লিবিয়ার। নিজেকে রেভুলেশনারি কমান্ড কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে জন্ম দিলেন রিপাবলিক অব লিবিয়ার। ক্ষমতায় এসেই আইডল গামেল আবদেলের নীতি অনুসরণ করলেন তিনি। গাদ্দাফির ক্ষমতা দখল করার অন্যতম লক্ষ্য ছিল, লিবিয়া থেকে পশ্চিমাপন্থী রাজতন্ত্রকে উৎখাত করে ইসলামী সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। ক্ষমতায় আরোহণের পর থেকেই পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের কঠোর সমালোচনা শুরু করেন গাদ্দাফি।

শুরু থেকেই পশ্চিমা ও ইসরায়েলবিরোধী নীতি গ্রহণ করেন। শুরুতেই বিতাড়িত করলেন লিবিয়ায় ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকা ব্রিটিশ এবং মার্কিন সেনাদের। তারপর বহিষ্কার করলেন ইহুদিদের। ইহুদিদের বিপক্ষে বরাবরাই শক্ত অবস্থানে ছিলেন গাদ্দাফি এবং এখনো আছেন। ব্যাংক আর তেল খাতকে জাতীয়করণ করে মুহূর্তে পথে বসিয়ে দিলেন বিদেশি কোম্পানিগুলোকে।

১৯৭০ সালের জুন মাসের মধ্যেই নিজের অবস্থানকে পুরোপুরি গুছিয়ে নিলেন তিনি। কিন্তু সমস্যা দেখা দিল অন্য জায়গায়। রিভুলেশনারি কমিটির আর্মি অফিসারদের সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব শুরু হলো তার। গাদ্দাফি দেশের শাসনভার গ্রহণের পর প্রকৃত অর্থে কোনো ক্ষমতাই প্রদান করেননি তাদের। কিন্তু মুখে মুখে তোয়াজ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়তই।

একসময় এরকম অবহেলা আর সহ্য করতে না পেরে অভ্যুত্থানের সময় সঙ্গে থাকা সেই সামরিক কর্মকর্তারাই সিদ্ধান্ত নিলেন গাদ্দাফিকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার। শুধু তারাই নন, সঙ্গে যোগ দিল পশ্চিমারাও। শুরু হয়ে গেল একের পর আক্রমণ। কিন্তু গাদ্দাফিও কম যান না। সবাইকে কাঁচকলা দেখিয়ে প্রতিটি ষড়যন্ত্রই ব্যর্থ করে বহাল তবিয়তেই টিকে রয়েছেন তিনি।

এমনকি ১৯৮৬ সালে তাকে হত্যার জন্য লিবিয়ায় বোমা হামলাও চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেবার অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিলেন তিনি। বহু বছরের সেই সাপে-নেউলে সম্পর্কের সীমারেখা পেরিয়ে ২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান গাদ্দাফি গত এক দশক আগেও মোয়াম্মার আল গাদ্দাফীর সাথে পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক ছিল রীতিমত সাপে-নেউলে। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর মধ্যে নীতিগত ভাবে বেশ উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর তিনিই প্রথম এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানান।

২০০২ সালে তিনি ১৯৮৮ সালে স্কটল্যান্ডের লকারবির আকাশে মার্কিন বিমানের উপর বোমা বিস্ফোরণের জন্য প্রকাশ্যে জনগণের কাছে ক্ষমা চান এবং এর জন্য বিপুল অংকের ক্ষতিপূরণ প্রদান করেন। ২০০৩ সালে মার্কিনীদের হাতে সাদ্দাম হুসেইনের পতনের পর তিনি স্বেচ্ছায় তাঁর সকল গণ বিধ্বংসী অস্ত্র কর্মসূচী বাতিল করার কথা ঘোষণা করেন। সাম্প্রতিক অবস্থাঃ এবছরের জানুয়ারির চার তারিখে তিউনিসিয়ার ছোট্ট শহর সিদি বুঝিদ এর যুবক মোহাম্মদ বুআজিজি সৈরাচারী নিষ্পেষণের প্রতিবাদে নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। সে হয়ত কল্পনাও করেনি তার সে আগুন স্ফুলিঙ্গের ন্যায় সারা আরব বিশ্বে ছড়িয়ে পরবে। বুআজিজির আত্নদান আরব বিশ্বের নিস্পেষিত মানুষকে প্রতিবাদের সাহস যুগিয়েছে, শিখিয়েছে প্রতিবাদের ভাষা।

মাত্র দুই মাসের মধ্যে তিউনিসিয়া আর মিশরের নৃসংশ একনায়কদের পতন হয়েছে। প্রতিবাদ ছড়িয়ে পরেছে আলজেরিয়া, লিবিয়া, বাহরাইন, ইয়েমেন এমন কি মরোক্কোতেও। মাত্র দুই মাস আগেও কেউ চিন্তা করেনি লিবিয়ায় কেউ গাদ্দাফির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলতে পারবে যেখানে গাদ্দাফির কথায় আইন। ৪২ বছর ধরে সংবিধান ছাড়াই লিবিয়া চলছে গাদ্দাফির ইচ্ছানুযায়ী। বেহিসেবি খরচের জন্য বিখ্যাত গাদ্দাফির দেশের অধিকাংশ মানুষ বাস করে দৈনিক ২ ডলারের থেকেও কম আয় নিয়ে।

যদিও তেলের সাগরে ভাসছে লিবিয়া কয়েক দশক ধরে, সে তেল থেকে আয় মানুষের কাজে লাগেনি। প্রায় পুরোটাই আত্নসাত করেছে গাদ্দাফি আর তার অনুচররা। তবে সেইদিন বোধ হয় ফুরিয়ে এসেছে। গাদ্দাফি বিরোধী হিসেবে পরিচিত বেনগাজি লিবিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। গত সপ্তাহে সেখানে বিক্ষোভ শুরুর সাথে সাথে গাদ্দাফি সেনা বাহিনী আর আফ্রিকার ভাড়া করা মার্সেনারি পাঠিয়েছিল।

দুইদিনেই তারা খুন করেছে দুইশ'র বেশি মানুষ। তারপরেও তারা রুখতে পারেনি মুক্তিকামী মানুষ কে। আর্মির একটা অংশ যোগ দিয়েছে বিপ্লবীদের সাথে। দখল করে নিয়েছে বেন গাজী শহর। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছে বাইদা , দারনা, তব্রুক এবং মিস্রাতা শহরে. এমনকি ত্রিপোলিতেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ইতিমধ্যে বেনগাজীর বড় গোত্র যুয়ায়ী বহির্বিশ্বে তেল সরবরাহ বন্ধের হুমকি দিয়েছে। বিপ্লবীদের সাথে যোগ দিয়েছে লিবিয়ার সবচেয়ে বড় গোত্র গুলোর একটি আল ওয়ারফালা, যারা দক্ষিন ত্রিপলিতে বসবাস করে। লিবিয়াতে অধিকাংশ এলাকা এখন বিক্ষোভকারীদের দখলে । গোটা পূর্ব লিবিয়াতেই জোর কমে গেছে গাদ্দাফীর। সেখানে এখন দেয়ালে দেয়ালে গাদ্দাফী বিরোধী শ্লোগান।

পূর্ব লিবিয়ার আগুন এখন ছড়িয়ে পড়ছে পশ্চিম লিবিয়ায়। সেখানকার নিয়ন্ত্রণ গাদ্দাফিীর হাতে থাকলেও মিসরাতা, সাবরাথা, জাওয়িয়ায় তীব্র বিক্ষোভ চলছে। গাদ্দাফী বিদ্রোহ দমনে সেনাবাহিনী ব্যবহার করেও সফল হতে পারছেন না। কেননা মিসর কিংবা তিউনিসিয়ার মতো লিবিয়ার সেনাবাহিনী ততটা শক্তিশালী নয়। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, সেনা বিদ্রোহের আশঙ্কায় ১৯৬৯ সালে ক্ষমতায় আসা গাদ্দাফী নিজেই তাদের দুর্বল করে রেখেছেন।

তার উপরে সেনাবাহিনীর কয়েকটি ইউনিট ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে চলে গেছে। গাদ্দাফীর অস্বস্তি আরো বাড়িয়ে দিয়েছে তার সরকারের আমলা, মন্ত্রীরা। ইরাকের পরিণতির কথা ভেবে মন্ত্রীরা পদত্যাগ করছেন। একই কারণে, মন্ত্রীদের সাথে পদত্যাগ করেছেন বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত। অবশ্য লিবিয়া বলছে, হুমকি, চাপ এবং ঘুষ দিয়ে রাষ্ট্রদূতদের পদত্যাগ করাচ্ছে শক্তিধর দেশগুলো।

এছাড়া গাদ্দাফীর ঘনিষ্ঠ সহযোগিরাও তাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। সম্ভবতঃ একই কারণে। এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন লিবিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের হুমকি দিয়েছে। আমেরিকা গাদ্দাফীর সকল সম্পদ আটক করেছে, সে দেশের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। অভ্যন্তরীণ সমস্যা মোকাবেলা করতে লিবিয়াকে চাপ দিচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক সমাজ’, আর লিবিয়া বলছে তারাই সমস্যা সৃষ্টি করেছে।

অসমর্থিত খবর বলছে বিপ্লবীরা অগ্রসর হচ্ছে গাদ্দাফির আল যাওয়িয়ায় অবস্থিত প্রাসাদের দিকে। সম্ভবত আরব বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী একনায়ক গাদ্দাফীর দিন শেষ হয়ে এসেছে। ব্যক্তিগত জীবনঃ মোয়াম্মার আল গাদ্দাফীর সন্তান-সন্ততি আট জন। এদের মধ্যে সাতজন ছেলে এবং একজন মেয়ে। তার আরেকটি মেয়ে ১৯৮৬ সালে তার বাড়িতে মার্কিন বিমান হামলায় মৃত্যুবরণ করে।

গাদ্দাফীর বড় ছেলে মোহাম্মাদ গাদ্দাফী লিবিয়ান অলিম্পিক কমিটি এবং তাঁর দ্বিতীয় ছেলে সা’দ গাদ্দাফী লিবিয়ান ফুটবল ফেডারেশন পরিচালনা করছেন। সা'দ নিজেও একজন বেশ ভালো ফুটবলার এবং তিনি লিবিয়ার জাতীয় দলে খেলেন। তাঁর তৃতীয় পুত্র সাইফ আল ইসলাম একজন চিত্রশিল্পী এবং একটি চিকিৎসালয় এর পরিচালক। তাঁর একমাত্র কন্যা আয়েশা গাদ্দাফী একজন আইনজীবী এবং তিনি ইরাকের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেইনের পক্ষে আইনী লড়াই করে বেশ আলোচিত হয়েছিলেন। এছাড়া দেশের ভেতরে শিক্ষা-স্বাস্থ্য প্রভৃতি জনকল্যাণমূলক কাজে তিনি আত্মনিবেদিত।

তার অপর তিন ছেলে আল মুতাস্সীম, হানওয়ীল এবং খামীস এখনও অখ্যাত। সম্প্রতি ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর ষষ্ঠ পুত্র হানওয়ীল প্যারিসে পুলিশি ধাওয়ার শিকার হন। ১৯৪২ সালের ৭ জুন জন্ম নেওয়া মুয়াম্মার আল গাদ্দাফির বাহারি পোশাক, সানগ্লাস এবং উদ্ভট কর্মকাণ্ড বিশ্বে তাকে পরিচিত করেছে এক রহস্যময় চরিত্র হিসেবে। দীর্ঘকাল লিবিয়ার শাসনক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছেন তিনি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার চাপ ও নানাবিধ অবরোধ সত্ত্বেও তিনি এ দেশটির ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ।

পররাষ্ট্র নীতিতে অত্যন্ত তুখোড় এই লিবিয়ান নেতা বহু দেশ ভ্রমণ করেছেন। নানাবিধ সহায়তায়ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বহু দেশে। বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলোতে তার জনপ্রিয়তা বেশ চোখে পড়ার মতো। আফ্রিকার দুই শতাধিক রাজা ও আদিবাসী নেতা তাকে 'রাজাদের রাজা' উপাধিতে ভূষিত করেন। আফ্রিকাজুড়ে একই মুদ্রাব্যবস্থা ও পাসপোর্ট চালু করার পক্ষপাতী গাদ্দাফি।

কিন্তু কতটুকু সফল হতে পারবেন সে ব্যাপারে সন্দিহান রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই। কেননা কাজের চেয়ে কথা বেশি বলেন তিনি। অন্যদের বিরক্তির উদ্রেক করে দীর্ঘ সময় ধরে বক্তৃতা দিতে তিনি সক্ষম। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে নির্ধারিত ১৫ মিনিটের জায়গায় প্রায় একশ' মিনিট অপ্রাসঙ্গিক বক্তৃতা দেওয়ার ঘটনা তা-ই প্রমাণ করে বিশ্ববাসীর সামনে। মোয়াম্মার আল গাদ্দাফী রচিত অমর গ্রন্থ হল কিতাবিল আখদার বা দ্যা গ্রীন বুক বা সবুজ গ্রন্থ।

এটি ১৯৭৬ সালে প্রকাশিত হয়। তিন খন্ডে প্রকাশিত এই গ্রন্থে সমাজ এবং রাষ্ট্র সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিল সমস্যা সমাধানে তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্ত হয়েছে। এটিই মূলত লিবিয়ার সংবিধান। ইংরেজিতে মোয়াম্মার আল গাদ্দফীর নামের বানান নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। ২০০৪ সালের মার্চ মাসে London Evening Standard পত্রিকায় তাঁর নামের উপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

সেখানে সম্ভাব্য ৩৭টি বানানের কথা উল্লেখ করা হয়। তথ্যসূত্র1. Salak, Kira। National Geographic article about Libya। প্রকাশক: National Geographic Adventure। http://www.kirasalak.com/Libya.html।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।