আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়ে গেলাম! ঝুট-ঝামেলা ছাড়াই!! থ্যাংকস্‌ বিআরটিএ!

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!
ঘুষ, দুর্নীতি, জাল-জালিয়তি, শ্লথ গতির জন্য কুখ্যাত বি আর টি এ থেকে মাত্র ২০ দিনে লাইসেন্স (ফটোযুক্ত মানি রিসিপ্ট) হাতে পেয়ে গেলাম। মোট খরছ হল ২৪৫০ টাকা- ২০৫০ গেছে সরকারী কোষাগারে আর ৪০০ স্পিড মানি (এর মধ্য ব্যাংকে যাতায়তও ওদের ঘাড়ে চাপিয়েছি)। যেহেতু সব পরীক্ষায় পাশ করেছি তাই এহেন ন্যায্যমুল্য! যাহোক ব্লগারকূলের জন্য বিস্তারীত... প্রশিক্ষন বাসার পাশে ভর্তি হয়েছিলাম। ৫০০ টাকা পেমেন্ট করি। ৪ ক্লাস শেষে কায়দামত পালিয়ে যাই! ম্যানুয়াল, ভাঙ্গারী স্টান্ডার্ডের গাড়ীতে বসতে কারই বা ভাল লাগে? এদিক ওদিক করে বাকীসময়ে হাতঝালাই।

গ্রামের আঁকাবাঁকা চিকন রাস্তায় ৩ দিন আর মাঠে ২ দিন চর্চা করি ব্যাকগিয়ার ও পার্কিং ওকে করার জন্য। এপ্লাই-১ এখানে সব ফরম পাওয়া গেল। http://www.brta.gov.bd/app_form_next.php (বাংলাদেশের এ অগ্রগতিটা বেশ ভাল লাগে। ফরমের জন্য সরকারী অফিসে আগের মত দৌড়াতে হয়না)। ছবি মোট কয় কপি লেগেছিল মনে নেই (বেটার ৫ কপি পাসপোর্ট ও ৫ কপি স্টাম্প সাইজ রেডি রাখা)।

কাছের ডিসি অফিসেই বিআরটিএ ডেস্ক। ২৫০ টাকা সহ ফরম-১ জমা দিলে একটা হলুদ কার্ড দেয়। এটা লার্নার কার্ড। নিয়ম হল ১ মাস ওয়েট ও প্র্যাকটিস করা। তবে হালকা তদবির করে এক্সামের ডেটটা পরের সপ্তাহেই নিয়ে নিই।

বলে রাখা ভাল, ৫ রকমের ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে- ১- মোটরবাইক ২-অপেশাদার (নিজের গাড়ী নিজে চালনার) ৩-পেশাদার (পেশা হিসেবে যারা ড্রাইভার) ৪-ইন্সট্রাকটর (যারা অন্যকে শেখাবেন) ৫-কন্ডাক্টর (বুঝতেই পারছেন!!!) ফরম ঐভাবেই ফিলাপ করতে হবে। আমি (ও মনে হয় বেশীরভাগ ব্লগার) ২ নং ক্যাটাগরির লোক। পরীক্ষা ৩ স্তরে বিভক্ত। রিটেন, পাশ করলে মৌখিক, পাশ করলে প্র্যাকটিক্যাল। আমার ক্ষেত্রে পুরোটাই একইদিনে।

কোথাও কোথাও ভিন্ন ভিন্ন দিনে হয়। যাহোক একস্তর পাশ না করলে পরের স্তরে যাওয়া যায়না। এবং প্রতিবার প্রতিস্তর ফেলের জন্য ১০০ টাকা দিয়ে পুনরায় ডেট নিতে হবে হলুদ লার্নার কার্ডে। কি থাকে এসব পরীক্ষায়? দেখুন শেষ প্যারায়। এপ্লাই-২ প্র্যাকটিক্যালে পাশ করা মানেই লাইসেন্সের জন্য এলিজিবল।

তবে তাৎক্ষনিক না! অফিসে কয়েকদিন যোগাযোগ করে পাওয়া গেল চুড়ান্ত আবেদনের তারিখ। যথারীতি কিছু ফরম (সাইটে দেখুন), ছবি, ১৮৫০ (সরকারী) + ৩০০ (স্পিড মানি)+৫০ টাকা (বখশিষ!) জমা দেয়ার ৩ দিন পর ফোন করে জানাল 'আপনার রিসিট রেডি। ' তড়িঘড়ি তা নিয়ে এলাম। ব্যাংকে জমার কম্পিউটার রসিদের মধ্য ছবি স্ট্যাম্পিং করা। চুড়ান্ত কার্ড দিবে অক্টোবরে।

তবে রাস্তাঘাটে এটাই যথেস্ট। নাউ, হ্যাপি এন্ড সেফ ড্রাইভিং! লিখিত প্রশ্ন: হাইওয়েতে সর্ব্বোচ্চ গতিসীমা কত? হেডলাইটের আলো কতদুর যাওয়া উচিত? কি কি কাগজ সবসময় গাড়ীতে থাকতে হবে? কার্বুরেটরের কাজ কি? ডিজেল ও পেট্রোল ইন্জিনের পার্থক্য? সংকেত ক' ধরনের? গাড়ী স্টার্ট দেয়ার আগে কি করতে হবে?...এ ধরনের ৩০ নম্বরের স/মি+শুন্যস্থান+শর্ট কোর্শ্চেন। ফুটপাতে কিছু চটি পাওয়া যায়। তা দেখে নিলেই হবে! মৌখিক: কি করেন? কেন লাইসেন্স করছেন? বাড়ী কোথায়? আচ্ছা বলেন, রাস্তায় গাড়ী নামাতে কি কি কাগজপত্র মাস্ট সাথে থাকতে হবে? প্র্যাকটিক্যাল: [পতাকাযুক্ত লৌহদন্ড দিয়ে মাঠে ১টা S বানানো হল। গাড়ীর প্রস্থের চেয়ে দু হাত চওড়া! বলল, সামনে যান] -সামনে ঠিক মতই গেলাম [পেছনে আসেন] -কিছুদুর এসে গুতা দিয়ে ১টা দন্ড ফেলে দিলাম! মনে করলাম।

এই শেষ। তবে অবাক করে দিয়ে আমাকে পাশ করিয়ে দিল। সাথে উপদেশ ব্যাকগিয়ারটা চর্চা করবেন!
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।