আমি পথ মঞ্জরী ফুটেছি আঁধার রাতে
রিয়াদ শহরে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নেই বললেই চলে। বেতনের একটা বড় অংশ চলে যায় লিমোজিনের পেছনে। কাজেই সবাই চেষ্টা করে ড্রাইভিং শিখে নিজে গাড়ি চালাতে। গাড়ি খুব সস্তা এবং তার চেয়েও সস্তা তেল। কাজেই ড্রাইভিং শেখাটা জরুরী।
ওখানে ড্রাইভিং স্কুলে যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তা খুবি অপ্রতুল। কাজেই প্রায় সবাই অন্য কারো গাড়ি নিয়ে বাইরে প্র্যাক্টিস করে নেয়। বলা বাহুল্য বাইরে প্রশিক্ষণ নেওয়াটা বে-আইনি। কিন্তু সবাই এ বে-আইনি পথটাই বেছে নিতে বাধ্য হয়। আমিও হানা কোম্পানির একজন বাংলাদেশী ড্রাইভারকে ওস্তাদ বানালাম।
প্রথম দিন গাড়ির সাথে পরিচিত হওয়ার পালা। এটা স্টিয়ারিং, এটা গিয়ার, এটা ক্লাচ, এটা এক্সেলারেটর, এটা ব্রেক ইত্যাদি। দ্বিতীয় দিন গিয়ার ২ এ সোজা রাস্তায় গাড়ি চালালাম। এর পরদিনই ঘটল বিপত্তি। গাড়িকে সোজা নিয়ে গিয়ে ঘুরিয়ে রাস্তার অপরদিকের লেনে ঢুকতে হবে।
ওস্তাদ তালিম দিল- ক্লাচ চেপে ব্রেকে হাল্কা চাপ দিয়ে গিয়ার ২-এ নিয়ে আসবেন, তারপর বাঁয়ের মিররে দেখবেন কোন গাড়ি পেছন থেকে আসছে কিনা, এরপর টার্ণ নেবেন। মহা সমস্যা শুরু হল। গিয়ার ধরিতো ক্লাচ চাপতে ভুলে যাই, অথবা ব্রেকে বেশি চাপ পড়ায় টার্ণের আগেই গাড়ি থেমে যায়, মিরর দেখতে ভুলে যাই। তিন চারবার ভুল করার পর ওস্তাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেল। সে বলে উঠল “কি হইছে আপনার? আপনারে কি বাঘে ধরছে?” মনে মনে বললাম বাঘ-সিংহের দেখছিস কি? তোর এই যন্ত্র এদের চেয়েও অনেক ভয়ংকর।
যাই হোক। অনেক চেষ্টার পর অবশেষে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে সফল হয়েছিলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।