বাগানবিলাস
বাঙালি হিসেবে আমরা মজা করতে ভালবাসি। আর আমাদের প্রশাসন আমজনতাদের নিয়ে একটু বেশিই মজা করে। যা আমরা কখনো হাসি মুখে গিলে ফেলি আবার মাঝে মাঝে একটু আধটু বমি করি। তবে বেশিরভাগ সময়েই গিলতে হয়।
যাই হোক এবার যে মজার শিকার হলাম তাই বলি।
যেহেতু ৪বছরের গ্র্যাজুয়েশন এর ১টা যোগ্যতা আছে তাই এখানে ওখানে চাকরীর জন্যে আবেদন করি। অবশ্য শুধু সনদ আছে বলেই নয়। দরকার ও। সবাই জানে এখন চাকরীর দরখাস্ত করতে গেলে ভালই খরচাপাতি লাগে। যার জন্য মনে হয়, শুধুমাত্র এ্যপ্লাই করার টাকা যোগাড় করতেই ১টা চাকরী পেলে ভাল হত।
তো কিছুদিন আগে বিএডিসি(বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন) এর সহকারী পরিচালক পদে দরখাস্ত করলাম। যথারীতি পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র আসা শুরু হল। এর আগে পরীক্ষার ২/৩দিন আগেও প্রবেশপত্র এসেছে। অপেক্ষা করছি আমার ও আসবে। কিন্তু সবার আসলো আমার আসলো না।
পরীক্ষার ২দিন আগে জানতে পারলাম আমার দরখাস্ত বাতিল হয়েছে কোন এক কারণে। তারা নাকি ১৬৫ টা দরখাস্ত বাতিল করেছে খুব সামান্য কিছু কারণে। যাই হোক এটা হয়তো তাদের ১টা strategy। পরীক্ষার আগেই ঝামেলা কমিয়ে ফেলা। ভাল।
তাতেও আপত্তি নাই। কিন্তু কথা হল তারা কেন প্রার্থীদের একবার সুযোগ দিলনা ভুলগুলি ঠিক করার। যেহেতু এ্যপ্লাই করতে খরচ হয়েছে ৫৫৩ টাকা(হিসাব করতে হবে ১৬৫ টা দরখাস্তে কত টাকা আসে!!)। আমরা এত টাকা দিয়ে এ্যপ্লাই করব আর উনারা ঠ্যাং এর উপর ঠ্যাং তুলে সেগুলি ডাস্টবিনে ফেলবেন। নিশ্চই ব্যাংক ড্রাফট গুলিসহ ফেলা হয়নি।
ফেলে দেয়ার আগে তো টাকা গুলি ঠিক ই আলাদা করা হয়েছে। টাকাগুলি ফেরত দেয়া হোক।
তাদের ওয়েবসাইটে ১৩ তারিখের নোটিশ এ বলা হয়েছে যারা এখন ও প্রবেশপত্র পায়নি তাদের যোগাযোগ করতে। অথচ পরীক্ষা ১৮ তারিখ। যাদের বাড়ি দূরে তারা এতদূর এসে যদি দেখে তার আবেদন বাতিল হয়েছে তখন তার নিজের মাথার চুল ছিড়া ছাড়া কোন উপায় কি আছে?
আসলে আমাদের চাকরীদাতারা মনে করে বেশীরভাগ প্রার্থী ই শখ করে আবেদন করে।
আর যাদের দায় একটু বেশি তারা তো নিজের স্বার্থেই আসবে। শত কষ্ট হলেও। চাকরীর এই দুর্মূল্যে আমাদের যতদিন দেয়ালে পিঠ না ঠেকবে ততদিন তারা শুধু মজাই করবেন আর শেখাতেই থাকবেন কিভাবে চাকরীতে আবেদন করতে হয়। শিখতে শিখতে বয়স শেষ হবে আর তখন বাধ্য হয়ে এলাকার কোন এক স্কুলে মাস্টারী করার চেষ্টা করবে । তারপর একমাস বেতন পাবে তো দুই মাস পাবেনা।
একদিন চাকরী ছেড়ে মেয়েরা হবে সংসারি আর ছেলেরা সংসার চালানোর জন্য যে কোন একটা চাকরীতে দাঁত কামড়ে পড়ে থাকবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।