আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ম্যাকগ্রা'র এক বিশ্বকাপে (২০০৭) ২৬ উইকেট নেযা়র রেকর্ড-এর দিকে তাকিযে় আছেন আফ্রিদি।

good

১৯৮০ সালের ১লা মার্চ পাকিস্তানের খাইবার এজেন্সিতে জন্মগ্রহণ করেন আফ্রিদি। তার পুরো নাম সাহিবজাদা মোহাম্মদ শাহেদ খান আফ্রিদি। তিনি ৩১৫ টি ওযা়নডে ম্যাচ খেলেছেন। এর মধ্যে ২৯৬ বার ব্যাট হাতে মাঠে নেমেছেন। অপরাজিত ছিলেন ১৮ বার।

২৩ দশমিক ৮৩ গডে় রান করেছেন ৬হাজার ৬শ' ২৬। শতরান করেছেন ৬বার আর আধাশতক ৩১টি। সর্বোচ্চ স্কোর ১২৪। স্টাইক রেট ১১৩ দশমিক ৮৪। অর্থাৎ প্রতি ১শ' বল মোকাবেলায় তিনি করেছেন প্রায় ১শ' ১৪ করে রান।

এই হার বলে দেয় তিনি কতো আক্রমণাত্মক খেলোযা়ড়। এছাডা়ও ৩৪ দশমিক ০৩ গডে় উইকেট শিকার করেছেন ৩শ' ৬টি। ম্যাচে ৫ উইকেট পেযে়ছেন ৫বার। ওভারপ্রতি রান দিযে়ছেন ৪ দশমিক ৬২। আর টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ২৭টি।

৪৮ বার ব্যাট হাতে নেমে ৩৬ দশমিক ৫১ গডে় রান করেছেন ১হাজার ৭শ' ১৬। এরমধ্যে ৫টি শত আর ৮টি অর্ধশত রানের ইনিংস আছে। টেস্ট বোলিং-এ ৪৭ ইনিংস-এ ৩৫ দশমিক ৬ গডে় উইকেট নিযে়ছেন ৪৮টি। ২০০৭ টুযে়ন্টি ২০ বিশ্বকাপে ফাইনালে পাকিস্তান ভারতের কাছে পরাজিত হলেও এই টুর্নামেন্টে ৯১ রান ও ১২ উইকেট পেযে় পেস্নযা়র অব দ্য সিরিজ মনোনীত হন। ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর কেসিএ সেন্টেনারী টুর্নামেন্টের চতুর্থ ম্যাচে তার ওযা়নডে ক্যারিযা়র শুরু হয়।

কেনিযা়র বিরুদ্ধে নাইরোবির আগা খান স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ডে সেদিন কিন্তু আফ্রিদি সম্পর্কে কিছুই অাঁচ করা যায়নি। এই ধরনের বোলিং প্রধান অলরাউন্ডারের জ্বলে ওঠার সুযোগ থাকে এমন দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। অধিনায়ক সাঈদ আনোযা়র পুরো ১০ ওভারই বল করান নবীন আফ্রিদিকে। কিন্তু লো স্কোরিং-এর ওই ম্যাচে পুরো ১০ ওভার বল করেও কোন উইকেট পাননি তিনি। খরচ করেন ৩২ রান।

ওই ম্যাচে অভিজ্ঞ স্পিনার সাকলাইন মুসতাক ২৭ রান দিযে় ৩ উইকেট নেন। অসাধারণ স্ট্রোকে পারদর্শী বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এই খেলোযা়ডে়র সেদিন ব্যাট হাতে মাঠেই নামা হয়নি। মাত্র ১৪৯ রানের টার্গেটে পাকিস্তান পেঁৗছে যায় ৬ উইকেট খরচায়। দলের পক্ষে অবদান বলতে কেনিযা়র পক্ষে ডেবু্য ম্যাচ খেলা টনি সুজির ক্যাচ নিযে়ছিলেন সাকলাইনের বলে। তবে জ্বলে উঠতে আর বেশি সময় নেননি এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সফল এই অধিনায়ক।

পরের ম্যাচেই ৪ অক্টোবর শ্রীলংকার বিরুদ্ধে। ব্যক্তিগত ২৩ রানে আর দলীয় ৬০ রানের মাথায় ওপেনার সেলিম এলাহি আউট হযে় গেলে রানের গতি সচল রাখতে আফ্রিদিকে মাঠে ডেকে নেন অধিনায়ক। নেমেই ব্যাটে ঝড় তোলেন এই ড্যাশিং হিরো। মাত্র ৩৭ বলে করেন দ্রুততম সেঞ্চুরি। রেকর্ডটি আজো অক্ষত রযে়ছে।

ওই ম্যাচে আফ্রিদি আউট হন ৪০ বল মোকাবেলা করে। রান ১০২। চার মারেন ৬টি, আর ছক্কা রেকর্ডসংখ্যক ১১টি। ২০০৮ সালে ১২টি ছক্কা মেরে এই রেকর্ড ভেঙ্গে দেন ওযে়স্ট ইন্ডিজের মারশাল। সেদিন সাঈদ আনোযা়রও করেছিলেন ১১৫ রান।

৯ উইকেটে পাকিস্তান করে ৩৭১ রান। অরবিন্দু ডি সিলভা ১২২ করলেও ম্যাচে জয়লাভ করতে পারেনি শ্রীলংকা। এক বল বাকি থাকতেই তারা থেমে যায় ২৮৯ রানে। আর একটিমাত্র রান করতে পারলেই নেট রান রেটের হিসেবে পযে়ন্ট টেবিলে সমান থাকা পাকিস্তানকে টপকে সাউথ আফ্রিকার সাথে ফাইনাল খেলতে পারতো শ্রীলংকা। এই ম্যাচে আফ্রিদি যেমন রানের খাতা খোলেন, তেমনি শুরু হয় উইকেট প্রাপ্তিরও।

১০ ওভার বল করে ৪৩ রানের বিনিমযে় পান একমাত্র উইকেট। ফাইনালে সাউথ আফ্রিকার কাছে পরাজিত হয় পাকিস্তান। ওইদিন মাত্র ১৪ রান করে আফ্রিদি আউট হলেও বোলিং-এ নেন তিন উইকেট। এই ডেবু্য টুর্নামেন্টেই ম্যান অব দ্য সিরিজ নির্বাচিত হন আফ্রিদি। এবার পাকিস্তানের বিশ্বকাপ শুরু হয় দুর্বল দল কেনিযা়র সাথে খেলার মধ্য দিযে়।

২৩ ফেব্রুযা়রির ওই ম্যাচে পাকিস্তান ২০৫ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করে। অধিনায়ক আফ্রিদি মাত্র ৭ রান করলেও বোলিং-এ জ্বলে ওঠেন। অফ স্পিনের ঘূর্ণি মাযা়জালে আটকে আউট করেছেন ৫ ব্যাটস্ম্যানকে। ৩১৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে কেনিযা়র রান যখন ২ উইকেটে ৭৩ তখন শুরু হয় মাযা়বী ঘাতক আফ্রিদির ধ্বংসযজ্ঞ। শুরু করেন টিকোলোকে দিযে়।

মজার ব্যাপার হলো, এরপর টানা উইকেট নিযে়ছেন আফ্রিদি। মিশ্র, কামান্দে, ওদোযো় ও ওবুযা়কে ফিরিযে় দিযে় কেনিযা়কে বানিযে়ছেন ৮/১১২। এতো গেল দুর্বল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। শক্তিশালী শ্রীলংকার বিরুদ্ধেও জযে়র নায়ক তিনিই। ২৬ ফেব্রুযা়রি এই ম্যাচে তিনি তুলে নিযে়ছেন চারটি উইকেট।

দিলশান, সামেরাভিরা, সাঙ্গাকারা ও ম্যাথুজকে ফিরিযে়ছেন তিনি। ১০ ওভারে রান দিযে়ছেন মাত্র ৩৪। এই ম্যাচ শেষে আফ্রিদি বলেছেন,'জয় অভ্যাসে পরিণত করতে চাই। আমরা কঠোর পরিশ্রম করে প্রত্যেকটা ম্যাচ জিততে চাই। ' এই কথার প্রতিফলন দেখা যায় পরের ম্যাচেও।

দুর্বল কানাডার বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। ব্যাটসম্যানদের চরম ব্যর্থতায় পাকিস্তান অল আউট হয় মাত্র ১৮৪ রানে। ব্যর্থ হন অধিনায়ক আফ্রিদিও। ১৭ বল মোকাবেলা করে মাত্র ২০ রান করেই আউট হযে়ছেন। কিন্তু আবার জ্বলে ওঠেন বোলিং-এ।

কানাডার ব্যাটস্ম্যানদের জন্য পরিণত হন মাযা়বী এক ঘাতকে। পটাপট তুলে নেন ৫ উইকেট। ১০ ওভার বল করে দিযে়ছেন মাত্র ২৩ রান। তার এই দুর্দান্ত বোলিং-এ হারতে বসা ম্যাচে জয় পায় পাকিস্তান। ১৩৮ রানে অল আউট হয় কানাডা।

এই ম্যাচেও ক্রিকেট বোদ্ধাদের চোখে ধরা পডে়ছে তার সুনিপুণ অধিনায়কত্ব। সর্বক্ষণ ছুটে এসে বোলারদের উজ্জীবিত রেখেছিলেন। তিন ম্যাচে তিনটিতেই জয় নিযে় পাকিস্তান প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার সুযোগ। বিশ্বকাপের প্রথম চার ম্যাচে ১৫ উইকেট নিযে় ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের দিক দিযে় শীর্ষে অবস্থান করছেন আফ্রিদি। হ্যাটট্রিক করা ওযে়স্ট ইন্ডিজের কেমাররোচ তিন ম্যাচে ১০ উইকেট নিযে় আছেন দ্বিতীয় অবস্থানে।

গেস্নন ম্যাকগ্রা'র এক বিশ্বকাপে (২০০৭) ২৬ উইকেট নেযা়র রেকর্ড-এর দিকে তাকিযে় আছেন আফ্রিদি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।