বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
যেহোভার সাক্ষী । এরা বিশ্বাস করে যিশু অদৃশ্য উপায়ে ১৮৭৪ সালে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন এবং ১৯১৪ সাল থেকে পৃথিবীতে রাজত্ব করছেন। মানবজাতি তার অন্তিম অধ্যায়ে পৌঁছে গেছে।
অতি শীঘ্রই অশুভ এবং শুভের মধ্যে যুদ্ধ আরম্ভ হবে এবং যিশুর নেতৃত্বে শুভ জয়যুক্ত হবে। ক্ষুদ্র এই সম্প্রদায়টির উদ্ভব উনিশ শতকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায়। যেহোভার সাক্ষীর সদস্যরা ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষের কাছে তাদের বিশ্বাসের কথা পৌঁছে দেয়, রাস্তায় দাঁড়িয়ে পথচারীদের কাছে প্রচারপত্র বিলি করে । তারা মনে করে ঐতিহ্যবাহী খ্রিস্টীয় চার্চগুলি ভুল পথে চলছে এবং তাদের ধ্যানধারণা সর্বশক্তিমান যেহোভার শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ন নয়। পক্ষান্তরে মূলধারার খ্রিস্টীয় সমাজ যেহোভার সাক্ষী সম্প্রদায়টিকে বিভ্রান্ত মনে করে ।
এর অন্যতম কারণ যেহোভার সাক্ষী Christian doctrine of the Trinity প্রত্যাখান করেছে। তাদের মতে ধারণাটি অযৌক্তিক ও অ-বাইবেলিয় ...
আমাদের কাছে যেহোভার সাক্ষী অপরিচিত হলেও যেহোভার সাক্ষীর সদস্য হয়ে অনেকেই গর্ব করে ।
প্রাচীন হিব্রু ভাষায় সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের নাম যেহোভা, তিনিই বিশ্বব্রহ্মান্ডের সৃষ্টিকর্তা। আর যারা যেহোভার ঈশ্বরত্বের সাক্ষী এবং তার উদ্দেশ্যের সাক্ষী -তারাই নিজেদের ‘যেহোভার সাক্ষী ’ নামে পরিচয় দেয়। যেহোভার সাক্ষী কেবল মাত্র বাইবেলের (ওল্ড টেস্টামেন্ট এবং নিউ টেস্টামেন্ট) টেক্সট-এ বিশ্বাস করে।
এর বাইরে বাইবেলের মনুষ্যরচিত মনগড়া ব্যাখ্যা বিশ্লেষনে বিশ্বাস করে না। যে কারণে তাদের কাছে ইশ্বর ‘ইয়াওয়ে’ বা ‘গড’ না- যেহোভা। (পরে এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে) ... যেহোভার সাক্ষীর মতে বাইবেল হল স্বয়ং যেহোভার বাক্য । দুটি বাইবেলেরই ৬৬টি অধ্যায় স্বর্গীয় অনুপ্রেরণায় রচিত এবং ঐতিহাসিক ভাবে সত্য।
যেহোভার সাক্ষী মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে তাদের ধর্মমত প্রচার করে।
যেহোভার সাক্ষী মূলধারার খ্রিস্টীয় উৎসব ক্রিসমাস এবং ইস্টার পালন করে না। কারণ, এসব উৎসব হল খ্রিষ্টধর্মের ওপর প্যাগান ধর্মের প্রভাব। তারা প্রশ্ন করে-যিশু কি তার অনুসারীদের জন্মদিন পালন করতে বলে গিয়েছিলেন? যেহোভার সাক্ষীর সদস্যরা ধর্মনিরপেক্ষতাকে পাপ বলে গন্য করে এবং অবিশ্বাসীদের এড়িয়ে চলে। যেহোভার সাক্ষী মার্কিন ধর্মতাত্ত্বিক চালর্স তাজে রাসেল- এর শিক্ষার ওপর প্রতিষ্ঠিত।
মার্কিন ধর্মতাত্ত্বিক চালর্স তাজে রাসেল (১৮৫২/১৯১৬) ।
ইনি ‘সহস্র বৎসর’ তত্ত্বে বিশ্বাস করতেন। বিশ্বাস করতেন পৃথিবীতে অচিরেই ১০০০ বছরের জন্য স্বর্ণযুগ প্রতিষ্ঠিত হবে। যিশু পৃথিবীতে ফিরে ( যা ‘সেকেন্ড কামিং’ নামে পরিচিত) আসবেন এবং ১০০০ বছরের জন্য পৃথিবীতে স্বর্গরাজ্য প্রতিষ্ঠা করবেন । এই বিশ্বাস কে Millennialism বলে। সহস্র বৎসরের এই ভবিষ্যৎবাণীটি বাইবেলের ‘বুক অভ রেভেলেশন’-এ আছে।
১৮৫২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গ-এ চালর্স তাজে রাসেল জন্ম গ্রহন করেন। ছেলেবেলা থেকেই বাইবেল পাঠে গভীর আগ্রহ ছিল। ক্রমশ একটা ভাবনা উঁকি মারছিল মনের গভীরে। আর সে সময় মার্কিন দেশের ধর্মীয় পরিবেশও ছিল উত্তাল । আসলে উনিশ শতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয় ভাবান্দোলন তুঙ্গে উঠেছিল ।
ধর্মতাত্ত্বিক উইলিয়াম মিলার প্রচারিত Adventism তত্ত্বটি জনমনে তুমুল আলোরণ তুলেছিল। তত্ত্বটির মূলকথা হল: শীঘ্রই যিশু পৃথিবীতে ফিরে আসবেন। ১৭ বছর বয়েসেই চালর্স তাজে রাসেল নিজস্ব মতামত প্রচার করতে থাকেন। ১৮৭৫ সালে তিনি বললেন: যিশু অদৃশ্য উপায়ে ১৮৭৪ সালে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন এবং অচিরেই তিনি পৃথিবীতে ন্যায়ধর্মের প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গ করবেন। রাসেল একটি বাইবেল পাঠচক্র গঠন করেন সেই সঙ্গে ধর্মীয় পুস্তকাদি প্রকাশনার প্রস্তুতি গ্রহন করেন।
পেনসিলভানিয়ার অধিবাসীদের কাছে তাঁর বক্তব্য আকর্ষনীয় মনে হল। স্থানীয় জনগন তাঁকে বলতে লাগল ‘প্যাস্টর রাসেল। ’ প্যাস্টর অর্থ: ‘মুর্শিদ। ’ ১৮৭৯ সালে তিনি ‘জিয়ন ওয়াচ টাওয়ার অ্যান্ড হেরাল্ড অভ ক্রাইস্ট প্রেজেন্স ’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। পত্রিকাটি এখনও ‘ওয়াচ টাওয়ার’ নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়মিত বেরয়।
যা হোক। চালর্স তাজে রাসেল এর অনুসারীরা তাঁর শিক্ষা প্রচার, ধর্মান্তর এবং পত্রিকা প্রকাশ অব্যাহত রাখে। এরা অচিরেই ‘রাসেলাইটস’ নামে পরিচিত হয়। ‘রাসেলাইটস’ দের প্রশাসনিক দপ্তর হল ১৮৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ওয়াচটাওয়ার বাইবেল এবং ট্র্যাক্ট সোসাইটি অভ পেনসিলভানিয়া। এর ইউরোপীয় সদস্যরা লন্ডনের আর্ন্তজাতিক বাইবেল স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এর সঙ্গে যুক্ত হয়।
মানচিত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গ।
প্যাস্টর রাসেল-এর রাসেলাইটস দলটি ভারি হয়ে ওঠে। সংগঠনটির ‘যেহোভার সাক্ষী’ নাম হয়েছে আরও পরে। যা হোক। পাশ্ববর্তী অঙ্গরাজ্যে প্যাস্টর রাসেল-এর বাইবেলের নতুন ব্যাখ্যা ছড়িয়ে পড়ে।
এর মূল কারণ হল- আশা। ধনতান্ত্রিক সমাজে নিজের ওপর সমস্ত অধিকার হারিয়ে বসেছিল মার্কিনবাসী -কাজেই, ‘যিশু বিনা গতি নাই’ ... প্যাস্টর রাসেল বলছেন, যিশু ফিরে আসবেন। ফিরে এসে ১০০০ বছর শাসন করবেন। তখন পৃথিবীজুড়ে শান্তি নামবে। প্যাস্টর রাসেল মিথ্যে বলছেন না।
এই ভবিষ্যৎবাণীটি বাইবেলের ‘বুক অভ রেভেলেশন’-এ আছে।
পাঠ করুন-
... And I saw an angel coming down out of heaven, having the key to the Abyss and holding in his hand a great chain. He seized the dragon, that ancient serpent, who is the devil, or Satan, and bound him for a thousand years. He threw him into the Abyss, and locked and sealed it over him, to keep him from deceiving the nations anymore until the thousand years were ended. After that, he must be set free for a short time.... I saw thrones on which were seated those who had been given authority to judge. And I saw the souls of those who had been beheaded because of their testimony about Jesus and because of the word of God. They[a] had not worshiped the beast or its image and had not received its mark on their foreheads or their hands. They came to life and reigned with Christ a thousand years. (The rest of the dead did not come to life until the thousand years were ended.) This is the first resurrection. Blessed and holy are those who share in the first resurrection. The second death has no power over them, but they will be priests of God and of Christ and will reign with him for a thousand years.
বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে বলে বাংলা তর্জমা করলাম না।
হিব্রু অক্ষরে যেহোভা শব্দ। প্রাচীন হিব্রু ভাষায় ঈশ্বরের নাম। গ্রিক অনুবাদে ‘ইয়াওয়ে’ করা হয়েছিল।
পরে ইংরেজি অনুবাদে ‘গড’ করা হয়েছিল। চালর্স তাজে রাসেল মনে করেন যেহোভাই সঠিক এবং হিব্রু ধর্মীয় গ্রন্থে শব্দটি ৬,৫১৮ বার উল্লেখিত হয়েছে।
যেহোভার সাক্ষী বিশ্বাস করে ১৯১৪ সাল থেকে যিশু পৃথিবীতে রাজত্ব শুরু করেছেন। মনে থাকার কথা- চালর্স তাজে রাসেল বলেছিলেন যিশু অদৃশ্য উপায়ে ১৮৭৪ সালে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন এবং অচিরেই তিনি পৃথিবীতে ন্যায়ধর্মের প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গ করবেন। যীশুর নেতৃত্বে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ হবে।
সেই অশুভ শক্তির নেতৃত্ব দেবে শয়তান । যেখানে যুদ্ধ হবে সেই রণক্ষেত্রের নাম -Armageddon. যুদ্ধে জয়ী হওয়ার পর যিশু ১০০০ বছর পৃথিবী শাসন করবেন। এই ১০০০ বছরে মৃতেরা জেগে উঠবে এবং সবাই দ্বিতীয়বার মুক্তি লাভের সুযোগ পাবে । এভাবে এক বিশুদ্ধ মানবজাতির সৃষ্টি হবে। এবং মানুষ পৃথিবীতেই শাশ্বত জীবন যাপন করবে।
শিল্পীর চোখে সহস্র বছরের শান্তিময় পৃথিবী
কিংডম হল। যেখানে যেহোভার সাক্ষীরা মিলিত হয় তাকে বলা হয় কিংডম হল।
যেহোভার সাক্ষী সংগঠনটির আনুগত্য কেবল ‘যিশুর রাজ্যের’ প্রতি। যে কারণে এরা কোনও দেশের পতকাকে সম্মান জানায় না, ভোট দেয় না, এমন কী সামরিক বিভাগেও যোগ দেয় না। এই নীতির ফলে সরকারের সঙ্গে এদের সর্ম্পক বারবার সংঘাতময় হয়ে উঠেছে।
২য় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ইউরোপে যেহোভার সাক্ষী নাৎসীরা গ্যাস চেম্বারে হত্যা করে।
২য় মহাযুদ্ধের সময়ে নাৎসী বন্দি শিবিরে যেহোভার সাক্ষীর কয়েকজন
যেহোভার সাক্ষীরা নিজেদের আদিম খ্রিস্টধর্মের উপাসক মনে করে। যেখানে প্রত্যেক সাক্ষীই একজন 'মিনিস্টার'। জীবনের লক্ষই হল যেহোবার সেবা করা এবং এই বিশ্বাস যেন জীবন যাপনে প্রকাশ পায়। তারা যেহোভা-মগ্ন থাকায় বিশ্বের সঙ্গে এক ধরণের ‘সম্পর্কহীনতা’ বোধ করে।
তারা দাবি করে তারা যদিও পৃথিবীতে বাস করে তথাপি তারা পৃথিবীর নয়। এই ধারণাটি যেহোভার সাক্ষী দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ন দিক। যেহোভার সাক্ষীর সবচে গুরুত্বপূর্ন ধর্মীয় উৎসব হল ‘মেমোরিয়াল অভ ক্রাইস্ট ডেথ। ’ চান্দ্র পঞ্জিকা অনুসারে লাস্ট সাপার-এর বার্ষিকীতে এটি পালন করা হয়। যেহোভার সাক্ষী বিশ্বাস করে এটিই একমাত্র উৎসব যা যিশু উদযাপন করতে বলেছেন।
নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে যেহোভার সাক্ষীর আর্ন্তজাতিক কেন্দ্র।
যেহোভার সাক্ষী সম্প্রদায়ে পেশাদার পুরোহিত নেই। কজেই সাধারন সাক্ষী ও পুরোহিতে মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। প্রত্যেক সদস্যের অধিকার সমান। কিশোর বয়েস থেকেই ধর্ম প্রচারের শিক্ষা দেওয়া হয়।
এদের মতে, যথার্থ ঈশ্বর উপাসনাই হল প্রকৃত বেঁচে থাকা। সেই জীবনে অর্ন্তগত দিক হল সত্যবাদিতা এবং ভদ্র জীবনযাপন। এদের নৈতিক আর্দশ বাইবেলের ওপর গড়ে উঠেছে: "Trust in Jehovah with all your heart and do not lean upon your own understanding. In all your ways take notice of him, and he himself will make your paths straight." (Proverbs 3:5.) Ges "I shall make you have insight and instruct you in the way you should go. I will give advice with my eye upon you." (Psalm 32:8)
‘ওয়াচ টাওয়ার’ পত্রিকার প্রচ্ছদ। ১৮৭৯ সালে পত্রিকাটি প্রথম বের করেছিলেন চালর্স তাজে রাসেল। পত্রিকাটি আজও ১৯০ ভাষায় প্রকাশিত হয়।
যেহোভার সাক্ষীর সদস্যরা আধ্যাত্বিক, নৈতিক, মানসিক এবং শারীরিকভাবে পরিচ্ছন্ন জীবন যাপন করার চেস্টা করে। এরা মনে করে জীবন পবিত্র। কাজেই জীবনের ঝুঁকি নেওয়া উচিত না এবং ঝুঁকিপূর্ন খেলাধূলায় অংশ নেয়া ঠিক না এবং খেলাচ্ছলে প্রাণি হত্যাও অনুচিত। জীবন পবিত্র বলেই গর্ভপাত অনুচিত; এবং টেস্টটিউব বেবির জন্ম দেওয়া বা বীর্য দান করে সন্তান প্রসব করা অনৈতিক। যে মাংসের রক্ত পুরোপুরি ঝরেনি সে মাংস খাওয়া ঠিক না।
কারণ রক্ত খাওয়া পাপ। এরা মিথ্যে বলা, জুয়া খেলা ও চুরি করা অপছন্দ করে।
যেহোভার সাক্ষী সংগঠনটি প্রচুর বইপত্র প্রকাশ করে।
বর্তমান বিশ্বে যেহোভার সাক্ষীর সংখ্যা ৭০ লাখ এবং এরা বিশ্বের ২৩৫ টি দেশে ছড়িয়ে আছে। এর মধ্যে ১০ লক্ষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ...এবং ১ লক্ষ ৩০ হাজার ব্রিটেনে বসবাস করে।
যেহোভার সাক্ষীর প্রত্যেক সদস্যই মানুষের ঘরে-ঘরে গিয়ে বিশ্বাস সম্বন্ধে বলে। এ জন্য প্রায়শ মূলধারার ধর্মবিশ্বাসীদের কাছ থেকে ঠাট্টা ও বিদ্রুপও সহ্য করতে হয়।
এই কার্টুনটিতে যেহোভার সাক্ষী সম্বন্ধে বিদ্রুপ করা হয়েছে। ১০০০ বছরের শান্তিকে "চিজ" এর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
শেষে একটা প্রশ্ন উঠতে পারে।
বাংলাদেশে কি যেহোভার সাক্ষী আছে?
২০০০ সালের মাঝামাঝি। মগবাজারে একটা অফিস বসে আছি। রুমে দু-জন পুরুষ আর একজন মহিলা ঢুকলেন। প্রত্যেকেই মাঝবয়েসি। আমি তাদের বসতে বললাম।
তাদের সম্পর্কে আমি উৎসুখ হয়ে উঠি। কথায় কথায় জানা গেল তারা Jehovah's Witnessesনামে একটি সংগঠন সদস্য। ‘যেহোভা’ শব্দটি পরিচিত হলেও ‘যেহোভাস উইটনেসেস’ নামে কোনও সংগঠনের নাম এর আগে শুনিনি। আমি অবাক হলাম। তিনজনের পোশাকআশাক বাঙালিদের মতোই।
মহিলার পরনে শাড়ি । আমি আমার ভিতরে এক ঐতিহাসিক-এর মন লালন করি। আমি তাদের সম্পর্কে জানতে চাইলাম (... পিয়নকে চা দিতে বললাম) তারাও আমাকে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কে বলতে থাকেন ...অচিরেই যিশু ফিরে আসবেন ...পৃথিবীতে শান্তি নামবে ... আমাকে তারা তাদের কিছু প্রচারপত্রও দিল। ঝকঝকে। চমৎকার করে ছাপানো।
একটা ছবিতে দেখলাম সুন্দর একটা মাঠে অনেক পশুপাখির সমাহার। জায়গাটা কেমন স্বর্গীয় মনে হল । বাঘ ও সিংহের পাশে বসে আছে মানুষ! তারা আমাকে তাদের সংগঠনের কথাও বলল, পৃথিবীর নানা দেশে ‘যেহোভাস উইটনেসেস’ -এর সদস্যরা ধর্ম প্রচার করছে। মানুষ কনভার্ট হচ্ছে, এমন কী মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইতে কোন্ মুসলিম নারীকে কনর্ভাট করেছে ...দুবাইতে? আমি রীতিমতো চমকে উঠি। যা হোক।
তখন বুঝতে পারি নি-আজ বুঝি যে- চালর্স তাজে রাসেল-এর অনুসারীরা আজ থেকে দশ বছর আগে আমার সামনে বসেছিল। আজ আমি এও জানি যে-এখন আর পয়গম্বরদের সেই যুগ নেই, এই যুগটা ধর্মের ব্যাখ্যাকারীদের যুগ। একেক জন ব্যাখ্যাকারী আসবেন, প্রচলিত ধর্মের নতুন ব্যাখ্যা দেবেন, পরিবর্তনকামী জনগন সেই ব্যাখ্যায় শান্তি খুঁজবে ...ওরা আমার কৌতূহল দেখে আমাকে কনভার্ট করার নানা রকম চেস্টা করল। আমি মৃদু হেসে বললাম, দুঃখিত। আমি আপনাদের বিশ্বাস গ্রহন করতে পারব না, তবে-
তবে?
বাংলাদেশে আপনার মত প্রচারে কেউ বাধা দিলে কিংবা কেউ আপনাদের প্রতি নিমর্ম হয়ে উঠলে আমি আপনাদের পক্ষ নেব।
তারা মনক্ষুন্ন হয়ে বিদায় নিয়েছিলেন।
তথ্য নির্দেশ:
http://www.watchtower.org/e/jt/index.htm
Click This Link
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।