আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আরমানী টোলার এক এক জলসা ঘরের কাহিনী। এলিটস আর নর্তকীদের কীর্তি দেখলাম।

সকল প্রসংশা আল্লাহর জন্য। আমার চলমান মেইল এড্রেস ঃ shimantodhk2010@gmail.com ,

শুক্রবার সকাল, বন্ধের দিন ঘুমাচ্ছি। এই সময়ে হঠাত আমার বন্ধু খালেদের ফোন আসলো। বিরক্তি নিয়ে ফোনটা রিসিভ করলাম। ওই পাড় থেকে ভেসে এলো- দোস্ত কই তুই? এই তো বাসায়।

তারাতারি আমার বাসায় আয়, তোকে দিয়ে আজই এক্সপেরিয়ান্স করবো। আমার মিশন সাকসেস। আমি আনন্দীত আর ভীত দুইটাই হলাম--- তাইলে আমি যা ইচ্ছা করেছিলাম সেটাই হতে যাচ্ছে? তারাতারি রেডী হয়ে বাসায় বলে ঘর থেকে রেরিয়ে গেলাম আজকে আর ফিরবো না ফ্রেন্ডের বাসায় জরুরী কাজে যাচ্ছি। ঘর থেকে বের হয়ে একটা সিএনজি ঠিক করে দ্রুত চলে গেলাম আমার বন্ধুর বাসা উত্তরাতে। ওর বাসায় কেউই নেই, বাসার সবাই বাড়ীতে গেছে।

খালী বাসায় আমি আর আমার বন্ধু খালেদ। আমার বন্ধু আমাকে দেখে মুচকি হাসি হাসলো। আর বললো- আই এম দ্যা সুপার হিরো অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড। আজকে তোকে দিয়েই শুরু করবো আর তুই-ই শেষ। এই এক্সপেরিমেন্ট আর কখনোই করবো না।

আমি ভয়ে গলা শুকিয়ে ফেললাম। আমি দোস্তকে বললাম- ভয় লাগতেছে, কিছু হবে না তো? খালেদ আমার দিকে হেসে বললো- আরে না আমি আছি না। তোর কোনো বিপদ হোক এটা আমি কখনোই চাই না। নিরাপত্তার ব্যাবস্থা সব করে রেখেছি। তবে হ্যা তোকেও সাবধান থাকতে হবে, তোর ভুলের জন্য তুই চিরদিনের জন্য ফেসে যেতে পারিস।

তখন আমার কিছুই করার থাকবে না। তুই চিরতরে কালের গহবরে হারিয়ে যাবি। প্রফেসরের রিচার্ড মার্কের প্রিয় ছাত্র হওয়ার জন্য আমি জিনিসটা দুই দিন আমার কাছে থাকবে। কালকে সারা রাত এসেম্বলিং করেছি। উনি এখন ঢাকাতেই অবস্থান করছে।

পরশু আবারো যুক্তরাস্ট্রে চলে যাবে। উনার সাথে আমাকেও যেতে হবে বাকি প্রজেক্টের কাজের জন্য। তাই মাঝ খানে ভাবলাম তোকে কিছু আনন্দ দেই। এই বিস্ময়কর জিনিসের স্বাদ তুই সারাজীবন মনে রাখবি। এর পরে সে আমাকে শেরওয়ানী পড়িয়ে দিলো।

অনেক দামী শেরোয়ানী। উজ্জ্বল রেশমী। সাথে জিন্স আর সিল্কের মিশ্রনে তৈরি ফুলপ্যান্ট/পায়জামা পরলাম। পায়ে রুপার খচিত জুতা। এর পরে গলায় পরলাম দামী মুক্তার মালা।

হাতে টোপাজ আর পান্নার আংটি। এই জিনিস গুলি খালেদ কয়েকদিন আগেই অর্ডার দিয়ে বানিয়ে রেখেছিলো। সাথে দিলো ১০০ টি স্বর্ন মুদ্রা। ৫০ ভরি স্বর্নকে ৫০০ টি কয়েনে তৈরি করেছে। কয়েনের ডিজাইন অসাধারন, মুকুট, পাখী আর গাছের ছবি খচিত কয়েন।

খালেদ বললো-দোস্ত চেস্টা করেছি সব কিছু সেই রকম করে তৈরি করতে। তবে সাবধান, ভুলেও ধরা পড়বি না। তাইলে তুই চিরদিনের জন্য সেখানে আটকে যাবি। তোর উপস্থিত বুদ্ধি তোকে সেফ করবে। পরিস্থিতি বুঝতে পেরেছিস তো? আমি ধীরে ধীরে মাথা ঝাকালাম।

আমি প্রশ্ন করলাম এতো টাকা কই পেলি? সে উত্তর দিলো আমেরিকার কোনো সিক্রেট রিসার্চের জন্য টাকার কোনো অভাব হয়া না। আর এই প্রজেক্টের জন্য অনেক অনেক মাল্টিন্যাশলান ইউপন কোম্পানী স্পন্সর আছে। তবে সেটা খুবই সিক্রেট। টাকা পয়সা নিয়ে ভাবতে হবেনা তোকে। বলেই বিষয়টি এড়িয়ে গেলো।

এর পরে সে আমাকে ম্যাপ দেখালো। বললো, ডিভাইস কাছা কাছি ফোকাস করার চেস্টা করছি। কিন্তু পৃথিবীর আহ্নিক গতির জন্য পুরাপুরি সঠিক যায়গায় ফোকাস হচ্ছে না। তুই নবাবগঞ্জ এ ল্যান্ড করবি। নবাবগঞ্জ নায়েব পাড়া।

সেখানে জুলমত গাড়োয়ানের দেখা পাবি। সেই গাড়োয়ান কে নিয়ে পুরান ঢাকায় যাবি। আরমানি টোলার আরমেন প্যালেস। এই টাই আমার মিশন। আর তোর শেরওয়ানীর কলারের নিচে গোপন ক্যামেরা আছে, সেটাতে ভিডিও হবে।

এর পরে আমাকে ঘটনা শিখিয়ে দিলো- ১৯০২ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারী থেকে ২০শে ফেব্রুয়ারী এই দেশীয় জমিদার, ব্যাবসায়ী আর ইংরেজ এলিটদের জলসা হয়েছিলো সেখানে পাবনার জমিদার আমির চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন, তিনি ১৩ই ফেব্রুয়ারী মানে একদিন পরে উপস্থিত হয়েছিলেন। আর তোকে তার এই একদিনের অনুপস্থিতির সুযোগ নিতে হবে। মানে আমাকে জমিদার আমির চৌধুরী সেজে সেখানে উপস্থিত হতে হবে। আর এই ঐতিহাসিক ঘটনার পুনরায় ভিডিও হবে আধুনিক যুগের ক্যামেরাতে। বলতে বলতে সে এক রহস্যময় হাসি হেসে উঠলো।

এর পরে সে একটা অত্যাধুনিক পিস্তল বের করলো। ইটালির তৈরি বেরেটা পিস্তল। ওর চাচা সামরিক বাহিনীতে চাকুরী করতো এখন রিটায়ার্ড। আর চাচার থেকে সে অনেক অনুরোধ করে পিস্তলটি নিয়েছে। চাচা দিতে চায়নি, বিশেষ অনুরোধে শুধু ভিডিও করবে একটা টপিক্স এর জন্য এই শর্তে দিয়েছে।

পিস্তল ভর্তি গুলি। আমাকে দেখিয়ে দিলো গুলি করার নিয়ম। এর পরে আমাকে বললো তুই যেই যায়গা দিয়ে যাবি সেগুলো ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবীদের আনাগোনা আছে। ওদের সামনে পড়ে গেলে প্ল্যান সব ভেস্তে যাবে। আর যেহেতু তোর সাথে পাইক পেয়াদা বা লস্কর থাকছে না।

তাই এই পিস্তল তোর ভরসা। আর মনে রাখিস, রাত শেষ হওয়ার আগেই তোকে আবারো এই টাইম মেশিনের দরজার সামনে আসতে হবে। এই গেট ক্লোজ হয়ে গেলে আর সহজে ওপেন করা যাবে না। তুই চিরতরে ফেসে যেতে পারিস। আমাকে কি কি করতে হবে সব কিছুই বলে দিলো।

এর পরে আমাকে নিয়ে গেলো ওদের বাড়ীর আন্ডার গ্রাউন্ড গাড়ী পার্কিং এ। সেখানে টাইম মেশিন ডিভাইস ফিট করলো বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে, তীব্র আলো গিয়ে পড়লো দেয়ালে। এর পরে সেই মেশিলের কাটা ফিট করে বাটন চেপে টাইম সেট করলো। দেয়ালের সাথে একটি আয়নার মতন একটি দরজা তৈরি হলো। সেই আয়নাতে ভেসে উঠলো একটি গ্রাম,বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে আসা একটি গ্রাম।

আমাকে এখন সেই দরজা দিয়ে অতীত দুনিয়াতে যেতে হবে। আমি কম্পিত পায়ে ধীরে ধীরে সেই দরজার দিকে পা বাড়ালাম। .......... (পরের পর্বে শেষ হবে) **অতীতের দুনিয়া কেমন ছিলো সেটা নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ আছে, যদিও আমরা ইতিহাস পড়ি তবুও আমাদের মনে ইচ্ছা জাগে যদি সেই দিনে আমরা আধুনিক মানুষ যেতে পারতাম তাহলে কেমন হতো।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।