কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়ন বাজারে যৌন হয়রানির শিকার এসমেতারা বেগম (১৪) নামে ৭ম শ্রেণীর স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যায় মামলা হয়েছে। এসমেতারা বেগমের পিতা বানিজউদ্দিন বাদী হয়ে সোমবার কুড়িগ্রাম সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি দায়ের করেন। তবে যৌন নিপীড়ক দুই বখাটে যুবক এরশাদ (২৪) ও ইউপি সদস্য দীনবন্ধু (৩৮) পলাতক রয়েছে। রোববার গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে কিশোরী এসমেতারা। সোমবার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুড়িগ্রাম সদর থানার এসআই আব্দুল গফুর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ জানুয়ারি ঘোগাদহ ইউনিয়নের বানিজ উদ্দিনের কন্যা এসমেতারা বেগমকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অন্যত্র নিয়ে যায় সাতুয়ারটারী গ্রামের আবুল মেকারের বখাটে পুত্র এরশাদ। এ ঘটনার পর ১০ দিন এসমেতারা নিখোঁজ ছিল। ওই সময় বখাটে যুবক এরশাদ ইউপি সদস্য দীনবন্ধুর সহায়তায় কিশোরী এসমেতারা বেগমকে বিভিন্ন স্থানে রেখে তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ইউপি সদস্য দীনবন্ধুর মাধ্যমে কিশোরী এসমেতারা বেগমকে কৌশলে তার বাবার বাড়িতে ফেরত দিয়ে যায়।
এ সময় ইউপি সদস্য দীনবন্ধু এরশাদের সঙ্গে এসমেতারা বেগমের বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়। পরে গত শনিবার স্থানীয় একটি বাড়িতে বিয়ের সিদ্ধান্ত ছাড়াই শালিস বৈঠকটি ভেঙে গেলে পরদিন রোববার কিশোরী এসমেতারা বেগম নিজ শয়নকক্ষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
এ ঘটনার ব্যাপারে আজিজুল ইসলাম (৪০) ও রুহুল আমিন (৩৫) জানায়, কিশোরী এসমেতারা বেগম আত্মহত্যার দু'দিন আগে থেকে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে আকুতি করেছিল, তাকে এরশাদের সঙ্গে তিন দিনের জন্য হলেও বিয়ে দিতে হবে। তা না হলে তার আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো পথ থাকবে না।
নিহত কিশোরীর মামি মনোয়ারা জানান, মেয়েটি আত্মহত্যার দুদিন আগে তার বাবা বখাটে যুবক এরশাদের পরিবারের কাছ থেকে জরিমানা বাবদ ৫৫ হাজার টাকা নেয়।
এ খবর জানতে পেরে মেয়েটি আত্মহত্যা করতে প্ররোচিত হয়।
এদিকে নিহত কিশোরী এসমেতারা বেগমের শোকাহত মা মরিয়ম বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার মেয়ে চেয়েছিল ওই ছেলের সঙ্গে ঘর-সংসার করতে কিন্তু তা আর হলো না। আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেল।
সূএ শীর্ষ নিউজ ডটকম
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।