কি বলব
0সরকার ওয়াদা রক্ষা করেনি-হিউম্যান রাইটস ওয়াচ0
০বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড বাড়ছেই-এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল00
এ.বি.সিদ্দিক : দেশে আইন-শৃক্মখলার অবনতি এবং মানবাধিকার লংঘনের বিষয়টি এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচিত হচ্ছে। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশের আইনের শাসনের অবনতি, মানবাধিকার লংঘনের খবর ফলাও করে প্রচারিত হচ্ছে, মানবাধিকার সংস্থা সংগঠনগুলো এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের ২০১০ সালের প্রতিবেদনে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ক্রসফায়ার বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বন্ধ না হওয়ায় সমালোচনা করেছে। বিদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত বিডিআর সদস্যরা মানবাধিকার লংঘনের শিকার হচ্ছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই সংগঠন তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে আরো বলে-বাংলাদেশের নারীরা এখনো এসিড সন্ত্রাস, ধর্ষণ, নির্যাতন ও হামলার শিকার হচ্ছেন।
আর এর প্রতিকারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন কার্যকর পদক্ষেপ নেই। এই সংগঠনটি ২০১০ সালের প্রতিবেদনে ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের ঘটনার ওপর আলোকপাত করে। ৪৩০ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে ১৫৯টি দেশের মানবাধিকার চিত্র তুলে ধরা হয়। এই সংগঠনের বাংলাদেশের গবেষক আববাস ফয়েজ একটি বেসরকারী সংস্থাকে বলেছেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথম ৯মাসে ৭০টি বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটেছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়- বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।
এরপর তিন হাজারের বেশি বিডিআর বর্তমান (বিজিবি) সদস্যকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত আটক অবস্থায় ৪৮জন মারা গেছেন। তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ্যামনেস্টি বলেছে- অভিযুক্ত বিডিআর সদস্যদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি বিষয়ে বিচারকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। একাত্তরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়াও এ্যামনেস্টি পর্যবেক্ষণ করছে বলে বেসরকারী সংবাদ সংস্থা বিডি নিউজ-২৪কে জানান আববাস ফয়েজ।
তিনি বলেন, ‘‘এ বিচার হতে হবে স্বচ্ছ ও পক্ষপাতহীন। ’’ প্রতিবেদনে বলা হয়- বাংলাদেশে এখনো সরকার বিরোধীদের ওপর অযথা পুলিশি হয়রানি ও জোর-জবরদস্তি অব্যাহত রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়-বাংলাদেশে যৌতুক দিতে না পারায় হত্যাকান্ডের শিকার ২১ নারী। ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত পুলিশ এ সম্পর্কিত ৩ হাজার ৪১৩টি অভিযোগ গ্রহণ করে। প্রতিবেদনে বলা হয় গত তিন বছরে বাংলাদেশে ৬৪ ব্যক্তিকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।
এদিকে নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালে দেশে গুরুতর মানবাধিকার সমস্যা সমাধানে যে প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রী দিয়েছিলেন তা রক্ষা হয়নি। বন্ধ হয়নি বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড, সেই সঙ্গে এসব ঘটনায় জড়িত আইন-শৃক্মখলা বাহিনীর সদস্যরা দন্ড থেকে পার পেয়ে যাচ্ছেন। র্যা বের বিচার বহির্ভূত হত্যাপদ্ধতি গ্রহণ করছে পুলিশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোয়-পুলিশ কয়েকশ' হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।
গণমাধ্যম ও বিরোধী দলের প্রতি সরকারের বিধ্বংসী মনোভাব চরমে পৌঁছেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তুলে ধরা হয় শ্রমিকদের প্রতি নির্যাতনের কথা। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরপরই আওয়ামী লীগ সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডে ‘এক বিন্দুও ছাড় নয়' এমন সংকল্প গ্রহণ করেছিল। তবে এরপরও তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়- ২০০৪ র্যা ব গঠনের পর এ পর্যন্ত ৬২২ জনকে হত্যার কথা স্বীকার করে বলা হয়েছে যে ‘বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, হেফাজতে থাকা অবস্থায় বেশিরভাগ হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে দেশের আইন-শৃক্মখলার পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। অপরাদমূলক কর্মকান্ড বেড়েই চলছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে প্রকাশিত (দৈ. আমার দেশ) তথ্যে জানা যায় ২০০৫ থেকে ২০১০ সময়ে খুন ৩৫৯২ থেকে ৪৩১৫, নারী নির্যাতন ১১,৪২৬ থেকে ১৫,১৩৪, শিশু নির্যাতন ৫৫৫ থেকে ১৪৫৬ অপহরণ ৭৬৫ থেকে ৮৮০, দস্যুতা-৮৯৮ থেকে ১৩৬৬, দাঙ্গা ৫৭০ থেকে ৯৫০, পুলিশ এসল্ট ২৪০ থেকে ৪৬২, দুর্ধর্ষ চুরি ৮১০১ থেকে ৮৫১৩, মাদক ১৪,১৯৫ থেকে ৫৬,২৪৯, চোরাচালান ৪,৩৩৪ থেকে ৯৭,৭৭৬ ও অন্যান্য অপরাধ ৭০,০৪৬ থেকে ৮৯,৪৪৪ টিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৫ থেকে ২০১০ সময়ে মোট অপরাধমূলক কর্মকান্ড ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৩ থেকে ২ লাক ৪৩ হাজার ৫৩৪ টিতে বৃদ্ধি পেয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।