আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কবিতার অপারেশন থিয়েটার

সকাল আর আসেনা গোলাপ হয়ে ফোটেনা কিশোরীর হাতে

আমার বন্ধু রোমেন। আমার দেখা ভালমানুষদের প্রথম সারির একজন। আজ ফোন করে বল্ল- অনেকদিন পর একটা কবিতা লিখলাম,শুনবি? আমি বললাম -শুনব অবশ্যই ,দাঁড়া রেকর্ড করে রাখি। কবিতার দুইটা লাইন কিন্ত্ত তোর কাছ থেকে চুরি করা আরে চুরি দারি যাই হোক আগে শোনা। সে তার দরাজ গলায় আবৃত্তি করতে থাকে- জ্যোৎস্না খেকো জোনাকিদের প্রতি রোম্যান (দুই লাইন চুরি করা) ক্ষয়িষ্ণু এ সময় আমার বিষণ্ন সুন্দর স্বপ্নগুলো বৃষ্টির স্নানে সিন্গ্ধ আমার শুভ্র পবিত্র রা কুয়াশার দ্যুতিময় আমার গানের পাখিরা, যারা সকল উদ্ভাসিত নক্ষত্র ছোয়ার প্রাণ দৃশ্যলোকের অন্তরালের আলো ধরার তাল একদিন আকাশ ছুঁবি, তোরা আলো ছুঁবি নক্ষত্র ছুঁবি।

দিগন্তের ওপারে মিলিয়ে যাওয়া দীর্ঘ রেখার মত দীর্ঘ হয়ে মাথা উঁচু করে ছুঁবি শুভ্রনীল। বিশাল যে নীল আকাশের ছায়া এসে পড়বে তোদের দীর্ঘ দেহে দেখিস তার একটুকু জুড়ে কোথাও যেনো আমিও আছি। সৃষ্টিনেশায় বুঁদ হওয়া সব মাতাল তোরা- যেদিন ঘুমিয়ে থাকা বীজগুলি সব জাগিয়ে দিবি দেখিস জাগরণের সেই মিছিলে- আমিও আছি লাল পতাকার লাল আভাতে তোদের সাথে তোদের মাঝে বুকের অনেক গহীন পথে। বাদল দিনের আঁধার কোন রাতে বুকের গোপন ঘরটা যদি কেঁপে কেঁপে উঠে তবে, খুঁজিস তোদের ছায়ার মাঝে অন্য কোন ছায়া। একদিন কোন বিষণ্ণ দুপুরে অথবা কোন নির্জন নিশুতি রাতে স্মৃতির পাণ্ডুলিপিতে হৃদয়টা যদি খোঁজে অতীতের কোন আগুণ ঝরানোদিন তবে,দেখবি তার একপাতা জুড়ে আমিও আছি।

রাতের চাদ মাথায় রেখে একা যখন হেটে যাবি, একটু খানি বৃষ্টি যদি হিমেল পরশবুলিয়ে যায় স্বপ্ন খুনের রঙে যখন সিক্ত হবি তবে দেখিস তার একটি ফোঁটায় আমিও যেন মিশে আছি ভালো থাকিস সবুজ থাকিস স্বপ্ন দিয়ে স্বপ্ন কিনিস। তোদের সকল স্বপ্ন মাঝে আমার কিছু স্বপ্ন না হয় জাগিয়ে রাখিস। কবিতাটি লিখে আমার কেনো জানি মনে হলো একটু কাটাকুটি করার। তাকে ফোনে বল্লাম তোর কবিতাটির একটু অপারেশন করব। কোন আপত্তি আছে?প্রথমে খুব ইগুতে লাগলো।

( আমার কবিতার উপর হাত?)এমন একটা ভাব। আমাকে বল্ল কি সমস্যা ভালো হয়নি?আমি বল্লাম ভালো হয়নি মানে। অসাধারণ হয়েছে। সত্যিই অনেক সুন্দর হয়েছে। তবুও তোর এটার উপর আমি কিছু কিছু কথা পুশ ইন অথবা পুশ আউট করতে চাই।

কোন আপত্তি আছে?তোর কাছে তো মূলটা আছেই তাইনা?সে বল্ল তা আছে(অনিচ্ছা সত্তে)। আমি বলি তাইলে তো তোর আর কোন আপত্তি থাকার কথা না। শেষে আমাকে বলে আচ্ছা শুনাইছ কি কাটাকুটি করছস। একটা সত্যি কথা বলি এখানের অনেক কথাই আমার চরম ভালো লেগেছে। আমাকে সারারাত ভাবিয়েছে।

আমার মনের কথাগুলোই মনে হয়েছিল সে লিখে ফেল্ল। যাক এবার আমার সদ্য অপারেশন থিয়েটার থেকে ছাড়া পাওয়া কবিতা। এটাকে সংকর কবিতা ও বলা যেতে পারে। নাম এবং চমৎকার কিছু শব্দ আর লাইন থেকেই গেল। জ্যোৎস্না খেকো জোনাকিদের প্রতি (রোম্যানহেপি) ক্ষয়িষ্ণু এ সময় আমার নীড়হারা সব স্বপ্নপাগল বৃষ্টিস্নানে স্নিগ্ধ আমার শুভ্র দামাল মেঘেরদল কুয়াশায় দ্যুতিময় আমার গানের পাখিরা যারা সকল উদ্ভাসিত নক্ষত্র ছোঁয়ার প্রাণ দৃশ্যলোকের অন্তরালের আলো ধরার কীর্তিনাসা একদিন আকাশ ছুঁবি তোরা আলো ছুঁবি নক্ষত্র ছুঁবি,দিগন্তের ওপারে মিলে যাওয়া দীর্ঘরেখার মত দীর্ঘ হয়ে মাথা উঁচু করে ছুঁবি শুভ্রনীল।

স্বপ্নফলা বৃক্ষ যেদিন ঝুলবে হাতের মুঠোর ভেতর সূর্য যেদিন ছায়া দেবে সূর্যপোড়া আগুণ থেকে, সে ছায়ায় হাসবি যেদিন চন্দ্রহাসি যে নিশিতে নাচবি তোরা চন্দ্রকলা, সে প্রান্তরের এতটুকু তার কোনটি জুড়ে দেখিস তোরা কোথাও যেন আমিও আছি। সৃষ্টি নেশায় বুঁদ হওয়া সব মাতাল তোরা যেদিন ঘুমিয়ে থাকা বীজগুলো সব জাগিয়ে দিবি দেখিস জাগরণের সেই মিছিলে স্বপ্নছেঁড়া আমিও আছি লাল পতাকার লাল আভাতে তোরা যেদিন তুলবি ফণা সর্পমতন। বুনো যৌবন তুফান তোলা রাতে যখন খেলবি খেলা সুরা সাকীর সেদিন, সুরা মাতাল তোরা যদি করিস স্মৃতির জলসামিছিল ঝরাপাতার শোকে যদি বুকে তোদের কাঁপন লাগে তবে খুঁজিস তোদের ছায়ার মাঝে অন্য কোন ছায়া দেখবি সেথায় আমিও আছি। শ্রান্ত দুপুর শেষে মৌনবিকেল যৌনআলোক বেলায় যদি মরসিয়া সুর উথলে উঠে স্মৃতির খাঁজে ভাঁজ করা গান উছলে পড়ে থরথরথর সেই সুরেতে বাজবে দেখিস তোরা একটু হলেও আমার করুণ সুর। আগুণ ঝরা ফাগুন বেলার গানের খাতায় যাবি যেদিন চোখ বুলিয়ে দেখবি সেদিন তার একপাতা জুড়ে আমিও আছি।

ছুটবি যেদিন নাটাই বিহীন মাখবি যখন মাতাল চাঁদের মাতাল আলোর পাতালনেশার ঝর্ণা ধারা বাঁধন ছেড়া হাঁটবি যখন একলা পথে ছন্নছাড়া স্বপ্ন খুনের রঙে যখন সিক্ত হবি একটু খানি বৃষ্টি যদি হিমেল পরশ বুলিয়ে যায় তবে দেখিস তার একটি ফোঁটায় আমিও আছি। ভালো থাকিস ,সবুজ থাকিস স্বপ্ন পুড়ে ,স্বপ্ন আঁকিস। তোদের অনেক স্বপ্ন মাঝে আমার কিছু স্বপ্ন না হয় জাগিয়ে রাখিস। ..

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।