আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফলাফল বিপর্যয়: জে,এস,সি ও কিছু কথা

নিশাচর-- নিরবে, নিভৃতে কাজ করে যেতে চাই মানবের তরে.।

শিক্ষা ব্যবস্থার উপর দিয়ে পরিবর্তনের হাওয়াটা বেশ জোরেসোরেই বইছে। তার সাথে উন্নয়নের জোয়ার একত্রিত হয়ে জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে। জে,এস,সি নামক সেই জলোচ্ছ্বাসে হাবুডুবু খাচ্ছে নব কিশোর শিক্ষার্থীরা। গত ৩০ শে ডিসেম্বর ২০১০ জে,এস,সি ও জে,ডি,সি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হল।

ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে- ফলাফল মোটেই ভালো হয়নি। বরং তীব্র বিপর্যয়ই মনে হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা হয়তো এর কারণ খোঁজা শুরু করেছেন। আমি এখানে কিছু কারণ উল্লেখ করছি। ১।

বয়ঃসন্ধিকাল। ২। পূর্ণ এক বছর সময় না পাওয়া। ৩। অষ্টম শ্রেণীর পাঠ্যসূচী কিছুটা কঠিন।

৪। এই বছর প্রশ্নপত্র জটিল হওয়ার কারণে। বিশ্লেষণে আসি। জে,এস,সি ও জে,ডি,সি তথা অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা এই সময় তাদের বয়ঃসন্ধিকাল পার করে। তারা শিশু থেকে সদ্য কিশোরে পরিণত হয়।

শারীরিক গঠন ও মানসিক চিন্তায় আসে পরিবর্তন। রবি ঠাকুরের ভাষায়: "কাপড় চোপড়ের পরিমাণ রক্ষা না করিয়া বেমানান রূপে বাড়িয়া উঠে", "এই বয়সে স্নেহের জন্য তাদের মনে অতিরিক্ত কাতরতা জন্মায়"। তাদের কাছে চারপাশের জগত সম্পূর্ণ নতুন মনে হয়। তারা হয়ে যায় লাজুক প্রকৃতির। তারা মনে প্রাণে চেষ্টা করে নিজেকে নতুন জগতে খাপ খাওয়াতে।

মোটকথা- তাদের মনের ও চিন্তাধারার উপর দিয়ে একটা ঝড় বয়ে যায়। তার উপর জে,এস,সি শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার জন্য পূর্ণ এক বছর সময় পায়না। এমনিতে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সিলেবাস বিশেষ করে গণিতকে বয়সের তুলনায় জটিলই বলা চলে। ফলাফলেও তাই দেখা গেছে, গণিত ও ইংরেজীতে অকৃতকার্য বেশী। এছাড়াও উত্তরপত্র দেখায়ও সমস্যা আছে।

যেমন: অল্প সময়ে অনেক খাতা মূল্যায়ন করার কারণে তার যথার্থ মূল্যায়ন হয়নি। এছাড়াও যে শিক্ষক যে বিষয় পড়াননা তাঁকে সে বিষয়ের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করতে দেওয়া হয়েছে!!** কথা হচ্ছে- সরকার নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে। যার অনেক উদ্দেশ্যের মধ্যে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধও একটা উদ্দেশ্য। কিন্তু যারা অকৃতকার্য হয়েছে তারা অনেকেই ঝরে পড়বে; সন্দেহ নেই। তাহলে জে,এস,সি চালু করার সার্থকতা কোথায়? এত শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হলো, তাদের এক বছর সময়ের মূল্য কে দেবে? নাকি দেশের আপামর জনসাধারণের মতো শিক্ষার্থীরাও সিদ্ধান্তের বলি হবে? আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইদানিং একটা কথা বেশ জোর দিয়েই বলছেন।

তা হলো- "কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর বেশী সিলেবাস চাপিয়ে দিয়ে চাপে ফেলবেন না"। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে- শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর কথা ও কাজের হিসাব মেলাতেই চেপ্টা হয়ে যাচ্ছে!! তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব- কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে এমন চাপে ফেলে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলবেন না। এই ঠেলার প্রতিক্রিয়ায় ভবিষ্যতে দেশে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বৃদ্ধি পেতে পারে। **উত্তরপত্র মূল্যায়নের বিষয়ে প্রমাণ রয়েছে। রিজোয়ান আহমেদ তুহিন শিক্ষার্থী, নটরডেম কলেজ


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.