I want to make me as a blog writter. সভ্যতার আদিতে দ্রব্য বিনিময় প্রথার মাধ্যমে শুরু হয়েছিল ব্যবসাবৃত্তি। এর পর সময়ের সাথে সাথে অর্থের ধারণা প্রতিষ্ঠা হয়। ব্যবসা-বাণিজ্যেও নতুন মাত্রা যোগ হয়। তবে শুরু থেকেই দ্রব্য বিনিময় কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্যের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল মানুষের একান্ত প্রয়োজন মেটানো। কিন্তু দিনবদলের সঙ্গে সঙ্গে নৈতিকতাবোধ ও স্বার্থপরতা বৃদ্ধি পায়।
এখন কেবল জনকল্যানের স্বার্থেই ব্যবসা হয় এমন নয়, এখন জনধ্বংসের স্বার্থেও ব্যবসা হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে প্রভাব বিস্তারের জন্য সব মোড়ল দেশই অস্ত্রের জোরে শক্তিশালী হওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। আর এ কারণেই সমরাস্ত্র বানিজ্য হয়ে উঠেছে বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত সবচেয়ে ধ্বংসাতœক বাণিজ্য। আর এই অস্ত্র কেনা-বেচার পেছনে লাভবান হচ্ছে অস্ত্র উৎপাদনকারী নব্য সা¤্রাজ্যবাদী দেশগুলো এবং দরিদ্রতা ও সংঘাতের শিকার হচ্ছে অস্ত্র ক্রয়কারী দেশগুলো।
বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে ধ্বংসাতœক ব্যবসা যেমন মারণাস্ত্র বাণিজ্য, ঠিক তেমনি এ ব্যবসা সবচেয়ে লাভজনকও বটে।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ছয় হাজার কোটি ডলারের সমরাস্ত্র কেনাবেচা হয়। যা বিশ্বের জিডিপি এর ২.৭ শতাংশ। কারা তৈরি করে এই অস্ত্র? আর এর ক্রেতাই বা কারা? সহজাত এ প্রশ্নের উত্তর খুজঁতে গেলেই বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। দেখা যায় যে, যেসব দেশ সব সময় বিশ্বে শান্তি, নিরাপত্তা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার শ্লোগান দেয়, সেসব দেশই এসব সমরাস্ত্র তথা মারণাস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত এবং এই উৎপাদিত অস্ত্র বিক্রয়ের জন্য তারা বিশ্বকে অস্থিতিশীল ও বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দিতেও তৎপর রয়েছে।
বর্তমান বিশ্বে সমরাস্ত্র ব্যবসায়ী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্স, চীন, ব্রিটেন, ইতালি ও ইসরাইল অন্যতম।
সাধারণত আমরা ধারনা করি যে, বিশ্বের পশ্চাৎপদ এবং অনুন্নত দেশগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মতো সা¤্রাজ্যবাদী দেশের ওপর নির্ভশীল। কিন্তু একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে যে,এই সা¤্রাজ্যবাদী দেশগুলো সা¤্রাজ্যবাদী দেশ হিসেবে নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য এই পশ্চাৎপদ ও অনুন্নত দেশগুলোর ওপর ওতপ্রোতভাবে নির্ভশীল। আর তারা তাদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখার জন্য মারণাস্ত্র উৎপাদন ও রফতানি করাকে সা¤্রাজ্যবাদী ব্যবসা হিসেবে বেছে নিয়েছে। কেননা এসব সা¤্রাজ্যবাদী দেশগুলো অন্য দেশকে অস্ত্রে সজ্জিত করার পাশাপাশি সেই অর্থ দিয়ে নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিচ রিচার্স ইনিষ্টিটিউটের তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর প্রতিরক্ষা বাবদ ব্যয় করে ৭১৭ বিলিয়ন ডলার, যা দেশটির জিডিপি এর ৪.৭ শতাংশ।
চীন ১৪৩ বিলিয়ন ডলার,জিডিপি এর ২ শতাংশ। রাশিয়া ১৭৯ বিলিয়ন ডলার, জিডিপি এর ৩.৯ শতাংশ। ব্রিটেন ৬২.৫ বিলিয়ন ডলার, জিডিপি এর ২.৬ শতাংশ। এছাড়াও জাপান, ফ্রান্স, ইতালি, ভারত, সৌদি আরবসহ অন্যান্য বৃহৎ শক্তি গুলো এর কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে।
ফলে দেখা যাচ্ছে এসব অনুন্নত দেশকে শোষণ করে বৃহৎ শক্তিগুলো তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় চালিয়ে যাচ্ছে এবং অস্ত্র ব্যবসা কে গতিশীল ও অস্ত্রের প্রতি অনুন্নত দেশগুলোকে আকৃষ্ট করার জন্য এসব অনুন্নত দেশগুলোকে এক ধরণের ফাঁদে ফেলে সা¤্রাজ্যবাদীরা নিজেদের অস্ত্র ব্যবসাকে জমজমাট করে তুলেছে।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিচ রিচার্স ইনিষ্টিটিউটের তথ্য মতে, ২০১১ সালে বিশ্বে মোট ৪১ হাজার ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি হয়েছে এবং ২০০২ সালের তুলনায় ২০১১ সালে অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ ৫১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এই অস্ত্র বিক্রির শীর্ষে ছিল আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলো। এর মধ্যে আমেরিকা লকহিড ও বোয়িং কোম্পানি ৩০০০ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে এবং ব্রিটেনের বিএই সিস্টেমস কোম্পানি বিক্রি করেছে ২০০০ হাজার ৯১০ কোটি ডলার। এছাড়াও শীর্ষস্থানীয় যে ১০ টি প্রতিষ্ঠান বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি অস্ত্র বিক্রয় করেছে, তার সবই আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলোতে অবসস্থিত।
আর সা¤্রাজ্যবাদীদের মারণাস্ত্র বাণিজ্যের জন্য আজ মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ওশেনিয়া মহাসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো সব থেকে গুরত্বপূর্ণ অঞ্চল।
আর এই সা¤্রজ্যবাদী দেশগুলো এসব অঞ্চলে অস্ত্র বাণিজ্য টিকিয়ে রাখার জন্য সব রকমের নোংরা কূটনৈতিক কৌশল ব্যবহার করছে। প্রত্যেক অঞ্চলে প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্কের পরিবর্তে শত্রুতার সম্পর্ক এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, ¯œায়ু যুদ্ধকালীন সময়ে বিশ্ব পুজিঁবাদী ও সমাজতান্ত্রিক ধারায় বিভক্ত ছিল। তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন মার্কস লেলিনের মতবাদ বা মাও সে তুং এর মতবাদ ও তত্ত্ব রপ্তানির পাশাপাশি অস্ত্র রপ্তানি করেছে দেশগুলোকে এবং তাকে মোকাবেলার জন্য নির্বিচারে অস্ত্র যোগান দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্থান থেকে সোভিয়েতকে হঠানোর জন্য তালেবানদের অস্ত্র যোগান দিয়েছে।
টুইন টাওয়ার হামলার পর আলকায়েদা কে সন্ত্রাসী গ্রুপ হিসেবে আখ্যা দিয়ে ইরাক-আফগান দখল করেছে য্ক্তুরাষ্ট্র। এরপর সারা বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোকে সন্ত্রাসী বিষয়ে সচেতন করে তোলা হলো। রাষ্ট্রগুলো সন্ত্রাসীদের ঠেকানোর জন্য অস্ত্রভান্ডার গড়ার জন্য সা¤্রাজ্যবাদী দেশগুলোর নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অস্ত্র ক্রয় করে আসছে।
১৯৪৮ সালে নাটকীয়ভাবে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল রাষ্ট্রকে প্রতিষ্ঠা করা হলো। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানরা ক্ষুন্ধ হয়ে গেল।
মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রগুলো ইসরাইলের হুমকি মোকাবেলা করার জন্য অস্ত্র কিনে সমকক্ষ হওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। রাজতন্ত্র শাসিত আরব দেশগুলো তাদের তেল বেচা অর্থ দিয়ে অস্ত্রের বিশাল মজুদ গড়ে তুলেছে। অথচ এসব অস্ত্র ব্যবহারের কোন ক্ষমতা বা দক্ষ লোকবল তাদের নেই। ফলে এসব অস্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য ক্রয় মূল্যের চেয়ে চার গুন বেশি অর্থ দিয়ে আরব দেশগুলোতে শত মার্কিন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেয়া হয়। আর এসব বিশেষজ্ঞের উপস্থিতিতে আরব দেশগুলোতে মার্কিন প্রভাব ও কূট-কৌশল আরো বেড়ে যাচেছ।
তবে এ বিষয়টিও ভুলে গেলে চলবে না যে, পাশ্চাত্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে নিরাপত্তহীনতা ছড়িয়ে দিয়ে বিশেষ করে এ অঞ্চলে ইরান ভীতি ছড়িয়ে দিয়ে আরব দেশগুলোকে অস্ত্র কিনতে উৎসাহ যোগাচ্ছে যাতে তেল কেনা বাবদ অর্থ অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে আবারো তাদের কাছে ফিরে আসে। কারণ ঐতিহাসিকভাবেই ইরান সৌদি আরবের প্রতিদ্বন্দ্বি।
ভারত-পাকিস্তান বৈরীতার সুযোগে বৃহৎ শক্তিগুলো দ’ুদেশে প্রতিবছরে বিপুল পরিমান টাকার অস্ত্র যোগান দিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তি মোকাবেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানে ৬৪০ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র বিক্রির বিষয় অনুমোদন করেছে। ফলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য সা¤্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় কৌশলে তাদের সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলেছে এবং অন্য রাষ্ট্রগুলোর জন্য তা ভীতি হয়ে দাড়িয়েছে। এই কারনেও রাষ্ট্রগুলো অস্ত্র ভান্ডার গড়ে তুলতে আগ্রহী হচ্ছে। তাই দেখা যাচ্ছে বৃহৎ শক্তি গুলো তাদের অস্ত্র বাণিজ্য টিকিয়ে রাখার জন্য নোংরা কূট-কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে এবং ভিকটিম রাষ্ট্রগুলো এই ফাঁদে পড়ে নিজেদের অস্ত্রে সজ্জিত করছে, সামরিক শক্তি বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। ফলে এর পেছনে ব্যয় হচ্ছে হাজার হাজার কোটি ডলার। আর অস্ত্রীকরণের ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে সংঘাত ও জনগণ ভুগছে দরিদ্রতায়।
এখন দেখা যাক মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রগুলো সা¤্রাজ্যবাদীদের ফাঁদে পা দিয়ে অস্ত্র ক্রয়ের জন্য কতটাকা ব্যয় করছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে বিশেষ করে সৌদি আরব, কাতার ও আরব আমিরাতের মধ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, গত পাঁচ দশক ধরে সৌদি আরব বাইরের কোন দেশের পক্ষ থেকে হুমকি কিংবা আগ্রাসনের সম্মূখীন না হওয়া সত্তেও গত কয়েক বছরে শুধু আমেরিকার কাছ থেকেই ৩৩০০ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র কিনেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এর তথ্য মতে সৌদি আরব আবারো আমেরিকার সঙ্গে ৪০০ কোটি ডলার মূল্যের এফ-১৫এসএ মডেলের ১৫৪ জঙ্গিবিমান ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এছাড়াও সৌদি আরব নৌ-বাহিনী ও যুদ্ধ জাহাজ আধুনিকায়নের জন্য সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্সের সঙ্গে কয়েক কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র চুক্তি সই করেছে।
ফরাসি দৈনিক লা ট্রিবিউনের এক তথ্য মতে কাতারও পাশ্চাত্যের দেশগুলোর কাছ থেকে ২০০০ কোটি ইউরো মূল্যের জঙ্গিবিমান, হেলিকপ্টার, যুদ্ধজাহাজ, সাজোয়াযান এবং ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসি ব্যবস্থা কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সাথে কাতারের সামরিক সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি রয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের অপর দেশ আরব আমিরাতও গত কয়েক বছরে দুই হাজার কোটি ডলার মূল্যের যুদ্ধ বিমান, ট্যাংকসহ অন্যান্য যুদ্ধসামগ্রী কেনার জন্য পাশ্চাত্যের দেশগুলোর সাথে চুক্তি সই করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রাইভেট কোম্পানি অটোমিক্সের সঙ্গে ১৯৭ মিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করেছে। যার মধ্যে রয়েছে চালকবিহীন ড্রোন ও বিমান। সেই সঙ্গে ৬০০ কোটি ইউরো মূল্যের ৬০ টি তাইফুন জঙ্গিবিমান বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে জার্মানি।
এছাড়া ২০১১ সালে আরব বসন্ত প্রভাবিত অঞ্চল মিশর, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন ও সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়াসহ ২০ টি দেশ ২৪০ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র সরবরাহ করেছে।
এদিকে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিচ রিচার্স ইনিষ্টিটিউটের তথ্য মতে দেখা যাচ্ছে, গত কয়েক বছরের মধ্যে এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলো অস্বাভাবিক হারে অস্ত্র কিনেছে। এ সময় বিশ্বে মোট কেনা-বেচা হওয়া অস্ত্রের ৪৪ শতাংশই কিনেছে তারা। প্রতিষ্ঠানটির এক জরিপে দেখা গেছে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কেনে ভারত। এদিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দঃ কোরিয়া।
যৌথভাবে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান ও চীন। আর ২০০৭-১১ সালে অস্ত্র কেনায় পাঁচটি শীর্ষ দেশই এশিয়ার।
এদিকে দক্ষিণ এশিয়ার গরিব জনগোষ্ঠীর দেশ বাংলাদেশও অস্ত্র কেনায় পিছিয়ে নেই। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরেই রাশিয়া থেকে বাতিল মিগ-২৯ আমদানি করেছিল। যা এখন কেজি দরে বিক্রি করার মত অবস্থা।
তারপর ১৬ কোটি ২০ লাখ ডলার ব্যয়ে চীনের কাছ থেকে ৪৪ টি চীনা এমবিটি-২০০০ ট্যাংক কিনেছে বাংলাদেশ। তার উপর আবার সাম্প্রতিক সময়ে এই দরিদ্র দেশের ১০০ কোটি ডলার খরচ করে রাশিয়ার সাথে অস্ত্র কেনার চুক্তি সই করেছে। অথচ বাংলাদেশের এমন কোন শত্রু নেই যাকে ঠেকানোর জন্য এই অস্ত্রের প্রয়োজন।
বলাই বাহুল্য, যে অস্ত্র ক্রয়ের চিত্র দেখা গেল তা মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি দেশের। বিশ্বে যেভাবে অনিয়ন্ত্রিত অস্ত্র বাণিজ্য হচ্ছে তাতে করে দেখা যাবে যে যদি সব দেশের বিনা প্রয়োজনে অস্ত্র ক্রয়ের অর্থের পরিমাণ হিসাব করা হয় তা হবে উল্লেখিত পরিমাণের কয়েকগুন।
অথচ বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরে যে পরিমাণ সামরিক সরঞ্জাম ও যুদ্ধাস্ত্র উৎপাদন ও ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে ও হচ্ছে সেটা যদি মানুষের কল্যানে ব্যয় হতো, তাহলে বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশই এখন স্বর্গরাজ্যে পরিণত হতো। ভারত ও বাংলাদেশের মত দেশগুলোতে মানুষ চরম দরিদ্র সীমার নিচে বাস করত না। কিন্তু তার পরিবর্তে এই অস্ত্র বাণিজ্যের কারণেই বিশ্বের জনগণের বিশাল অংশ আজ ক্ষুধায় অস্থির, দরিদ্রের চরম অবস্থা তাদের। জীবন তাদের নরকবাসের মত। তাই দেখা যাচ্ছে সা¤্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো নোংরা কূটনীতির মাধ্যমে এসব অঞ্চলে বিভিন্ন রকম সমস্যা সৃষ্টি করে এসব রাষ্ট্র কে অস্ত্র কিনতে প্রলুব্ধ করছে এবং এই অর্থ দিয়ে নিজেদের নাগরীকদের বিলাসবহুলভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করছে।
আর এসব অনুন্নত রাষ্ট্রের নাগরীকরা তাদের প্রয়োজনীয় অধিকার টুকু পাচ্ছে না। দাবি করতে গেলেই শিকার হচ্ছে সংঘাত, দমন,নীপিড়ন ও নির্যাতনের। অথচ দীর্ঘদিন থেকে প্রচলিত অস্ত্রের বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে বহু কাঙ্খিত চুক্তিতে ( আর্ম ট্রেড ট্রিটি) উপনীত হতে প্রস্তাব দিয়েছে জাতিসংঘ। কিন্তু সা¤্রাজ্যবাদী শক্তি আমেরিকা, রাশিয়া, চীন বলেছে চুক্তিতে সই করার আগে তাদের আরো সময় প্রয়োজন। তবে তারা কি আরো ধ্বংসের অপেক্ষায়?
রাশিদুল ইসলাম নাহিদ
শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।