নিঃস্বার্থ মন্তব্যকে ধন্যবাদ, সাময়িক ভাবে আমি মন্তব্যে নেই
ঝির ঝির বর্ষায় পথে নেমে এল প্রবি। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। খান এণ্ড খান কোম্পাণীর চাকুরে। টেস্টিং ডিপার্টমেন্টে কাজ করে। ইম্পোর্টেড সোলার প্যানেলের ব্যাটারি পরীক্ষা করা তার টিমের কাজ।
ছাতাটা ধনুকের মত টান করে মেলে দেয় প্রবাল। বৃষ্টি শাপলা ফুলের মত পেখম ছড়িয়ে নামতে থাকে চারপাশ দিয়ে। কার্নিশে কাক বসে আছে। মানুষের মতই কাকদের ভিজতে ইচ্ছে হয়। এভাবে গবেষণা করলে নিশ্চয়ই আরো নতুন নতুন প্রানী আবিষ্কার হবে।
প্রবালের রোদ ভাল লাগে । বৃষ্টি শুধু সমস্যাই বাড়ায়। একে দারুণ বলে জাতে তোলার মানে নেই। যদিও তনু এ ভাবে বলতে শুনলে রেগে বলে,
তোর মত নন রোম্যান্টিক মানুষের সাথে চলি এটা শুধুই কপালের দোষ।
কেন? আমাকে জানো কম করে হলেও সাত বছর।
জেনে শুনেই তো কাঠ খোট্টার সঙ্গে ফ্রেন্ড হলি।
ফ্রেন্ডের আবার বাছ বিচার কি। তুই কি আমার ফিয়াসে?
ধুর! মজা করেই বলে তনু।
প্রবাল, তুই এমন কিসিমের ক্যান? মেঘ গোধূলি, বন পর্বত ভাল লাগে না। জ্যোৎস্নাও ভাললাগে না।
চাঁদের গায়ের পূর্নিমা, বুঝলাম তোর সাইন্সের পাথরের উপগ্রহ ওটা কিন্তু যখন জ্যোৎস্নার গরিমা ঘাসের ডগায় রূপার মত রং জুড়ে দেয় সেটা সুন্দর বলতে কি অসুবিধা। তুই আমার প্রেমিকা না। নাইলে কবে সাইজ করে ফেলতাম।
প্রবাল অফিসে ঢুকছে যখন তার মাথায় দিনের কাজের হিসাব। তখন তনু পড়া ফাঁকি দিয়ে কলেজে যায় নি।
ছাদের উপর যে ঘরটা সেখানে ভিজে টই টই হয়ে তোয়ালে দিয়ে নিজেকে মুছছে।
এভাবে দুরত্বৃ বাড়তে গিয়ে হোচট খায়। বৃষ্টির দিন না, পূর্নিমার গল্পও ছিল না কিন্তু তনুর বিয়ের খবরটা ন্যাপথলিনের মত অফিসের সব কাজ ছিন্ন করে বুকে বাজের প্রবালের। প্রবাল প্রথম বারের মত ফোন করে। তনু! তনু ফোন ধরে কিন্তু তেমন কোন উত্তর দেয় না।
বলে কি হয়েছে তোমার? তুমি কি করে এমনটা করতে পারে? নির্বিকার তনু। সে বলেই যাচ্ছে - তুমি তো আমাকে বিয়ে করতে একটি বারও বলো নি। হ্যা বলিনি। বিয়ে করার জন্য নিদেন পক্ষে কিছু প্রস্তুতি তো চাই। তেইশ বছর বয়সে ডিপ্লোমা এক যুবক কতই বা পায়।
কিন্তু নিশ্চয়ই আমার দিন ভাল হয়ে যেত কদিন পর।
তোমার সাথে ফ্রেন্ডশীপ তো থাকবেই..
কখনো বন্ধুর বাইরে কি কিছু হয় নি, তনু? ভাবে প্রবাল।
বাইরে খাবো।
এটাও অবাক বাইরে খেতে প্রবাল কখনো ডাকেনি আগে। তাদের লুকিয়ে দেখা হবার মত সম্পর্ক ছিল না।
প্রবাল কেমন চেতনাহীন মানুষ। লিফটে নেমে আসছিল যখন হঠাৎ তনুকে বিস্মিত করে প্রবাল আঁকড়ে ধরে তাকে। অপ্রস্তুত চুমু খেয়ে বসে তার ঠোঁটে। দ্রুত ব্রেক কষা গাড়ির মত চুমুটা ঠোটের বদলে গালে গিয়ে স্থান পায়।
তনু কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারে না।
তারপরই লিফট অন্য তলায় এসে থামে ..ছিটকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তারা।
প্রবাল চিরকালই বন্ধু হয়ে থেকেছে। বন্ধুত্ব আর ভালবাসার একটা সীমানা থাকে। সেই সীমানায় কৃষ্ণচূড়ার একটা গাছ বড় হয়েছে কবে! আজকে সেই বৃক্ষ ঝুঁকে পড়ছে ভালবাসার রাজ্যে। পাশের ঘড়ির দোকানে ঢং ঢং ঘণ্টা বাজে।
খুব কি দেরী হয়ে গেছে তাদের?
-
ড্রাফট ১.০
অনুশীলন/ আনকমন কিছু না, লঘু গল্প
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।