বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের
৮৩তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৩০ সালের এ দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে প্রাথমিক লেখাপড়া করেন। সামাজিক রীতি-নীতির কারণে পরে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়াশোনা করেছেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা, কারাগারে আটকদের খোঁজখবরাদি নেওয়া ও পরিবার-পরিজনের যে কোনো সংকটে পাশে দাঁড়াতেন তিনি।
স্বামীর রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছেন বেগম মুজিব। রাজনৈতিক অনেক জটিল ও সংকটময় পরিস্থিতিতে স্বামীর পাশে থেকে সৎ পরামর্শ দিয়েছেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় তদানীন্তন পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ ও গ্রেফতারের হুমকি দেয়। তবুও তিনি অবিচল থেকেছেন। বঙ্গবন্ধু কারাগারে কাটিয়েছেন বছরের পর বছর।
তার অবর্তমানে মামলা পরিচালনার ব্যবস্থা, দলকে সংগঠিত করতে সহায়তা করা ও আন্দোলন পরিচালনায় পরামর্শ দেওয়াসহ প্রতিটি কাজে তিনি অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। নেপথ্যে থেকে তিনি '৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। তিনি পুলিশ ও গোয়েন্দা নজরদারি এড়িয়ে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন এবং বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা পেঁৗছে দিতেন।
১৯৭১-এর ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হওয়ার পর বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হানাদার বাহিনীর চোখ এড়িয়ে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, শেখ জামাল, শেখ রাসেল প্রমুখ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আত্দগোপন করেন। কিন্তু শেষাবধি পাকিস্তানি সামরিক গোয়েন্দারা তাদেরকে মগবাজারের একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
এরপর তাদের ধানমন্ডি ১৮ নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। সে সময় স্বামীর বন্দীদশা ও পাকিস্তানের কারাগারে তাকে হত্যার আশঙ্কা সর্বোপরি নিজেদের বন্দিত্ব ও নির্যাতন সত্ত্বেও তিনি মুহূর্তের জন্যও ভেঙে পড়েননি এবং মাথানত করেননি। ১৯৭১-এর ১৭ ডিসেম্বর তাদের বন্দীদশার অবসান ঘটে। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজেও বঙ্গবন্ধুর পাশে দাঁড়ান তিনি। অনেক বীরাঙ্গনাকে বিয়ে দিয়ে সামাজিকভাবে মর্যাদাসম্পন্ন জীবনদান করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সময় পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে বেগম মুজিবকেও ঘাতকরা হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর আজীবন সুখ-দুঃখের সঙ্গী এই মহীয়সী মৃত্যুকালেও তার সঙ্গী হয়ে রইলেন।
কর্মসূচি : বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিনকে যথাযোগ্যভাবে পালনের জন্য বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে কবরস্থানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, কুরআনখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং আলোচনা সভা। এ ছাড়াও এ মহীয়সী নারীর জন্মদিন পালন উপলক্ষে শ্রমিক লীগ, যুব মহিলা লীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানাবিধ কর্মসূচি নিয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।