আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মারকুটে ব্যাটসম্যান আফতাব বললেন::অবহেলার জবাব ব্যাটেই দেব

জাকির

ইংল্যান্ডের কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়টি এসেছিল ২০০৫ সালে। অস্ট্রেলিয়া বধের অবিস্মরণীয় সেই ম্যাচে ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী ভূমিকা ছিল ক্রিকেটার আফতাব আহমেদের। দলের অতি প্রয়োজনের মুহূর্তে জেসন গিলেস্পিকে যে ছক্কা হাঁকান আফতাব, সেটি কখনও ভুলে যাওয়ার নয়। ওই ছক্কায়ই শেষ পর্যন্ত বিশ্বসেরা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এমন গৌরবময় জয় পায় বাংলাদেশ। তার ওই বীরত্বপূর্ণ ব্যাটিং না হলে ওই ম্যাচে আশরাফুলের সেঞ্চুরিও যে বিফলে যেত! শুধু এই ম্যাচই নয়, জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ২০০৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বল হাতে মাত্র ৩১ রানে পাঁচ উইকেট পাওয়ার স্মরণীয় ম্যাচটিসহ অসংখ্য ম্যাচে রয়েছে আফতাবের প্রতিভার ঝলক।

সেই আফতাব আহমেদ ২০১১ সালের বিশ্বকাপের প্রাথমিক স্কোয়াডেও উপেক্ষিত! ঘরের মাঠে হতে যাচ্ছে এবারের বিশ্বকাপ। নিজ শহরের চিরচেনা মাঠে গ্যালারিভরা দর্শকের সামনে বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলাটা যে কোনো ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্রিকেটার আফতাবও। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশ দলে যে ৩০ জনের ডাক পড়েছে, তাতে নেই আফতাবের নাম। এ দল ঘোষণার পর শুধু অবাকই নয়, হতবাকই যেন হয়েছেন আফতাব আহমেদ।

'খুবই অবাক হয়েছি, বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলেও নিজের নাম না দেখে। আমি এত খারাপ খেলোয়াড় হয়ে যাইনি যে, ৩০ জনের দলেও আমার নাম থাকবে না?' চট্টগ্রামের ছেলে আফতাবের ছোটবেলা থেকে ক্রিকেটই ধ্যান-জ্ঞান। ক্রিকেটই তার সবকিছু। সেই ক্রিকেট নিয়ে দেখা নিজ মাঠে বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলার লালিত স্বপ্ন মুহূর্তেই ধূলিসাৎ হয়ে গেছে তার। বুধবার রাতে ঘোষিত বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশ দলের ৩০ জনের প্রাথমিক দলেও নেই ৮৫টি ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আফতাব আহমেদ।

বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলে স্থান না পেয়ে ভীষণ হতাশ আফতাব বলেন, 'এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। গতকালই (বুধবার) শুনেছি, ৩০ জনের দলেও আমার নাম নেই। খুবই অবাক হয়েছি। ভীষণ খারাপ লাগছে। আরও বেশি খারাপ লাগছে, আমাকে নাকি খুঁজেই পাওয়া যায় না কথাটি শুনে।

যেটা সত্যি নয়, সেটা মেনে নিতেও ভীষণ কষ্ট হয়। আমি তো টাচেই ছিলাম। প্রিমিয়ার লীগে খেলার জন্য নিয়মিতই মিরপুরে গিয়ে প্র্যাকটিস করেছি। তবুও কেন আমাকে খুঁজে পাওয়া যায় না, এমন অপবাদ দেওয়া হচ্ছে? এই অভিযোগ কোনোভাবেই মেনে নেব না আমি। ' আফতাব সর্বশেষ জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমেছিলেন ২০১০ সালের ৫ মার্চ।

চট্টগ্রাম জহুর আহমদ চৌধুরী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ওয়ানডে ম্যাচে দলীয় সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন তিনি। এরপর দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ এবং সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের সঙ্গে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আফতাবকে দলের বাইরে রাখা হয়। এমনকি এশিয়ান গেমসে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ দলেও রাখা হয়নি তাকে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচক রফিকুল আলমের সাফ কথা, 'পারফর্ম না করলে দলে জায়গা নেই। দলে জায়গা পেতে হলে পারফর্মের বিকল্প নেই।

' ঠিক এখানেই প্রশ্ন আফতাবেরও। পারফর্ম করার সুযোগই তো দেওয়া হলো না তাকে? 'আইসিএলের পর এক বছর ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে হয়েছিল। এরপর গতবারের প্রিমিয়ার লীগে পারফর্ম করেই জাতীয় দলে কামব্যাক করেছিলাম। সর্বশেষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও ওয়ানডে ম্যাচে রান পেয়েছি। তারপরও কেন আমি ৩০ জনের দলেও নেই, জানি না।

' এ প্রসঙ্গে আফতাব আরও বলেন, 'আশা করেছিলাম, এবারের প্রিমিয়ার লীগের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বকাপের প্রাথমিক দল ঘোষণা করা হবে। সেখানে পারফর্ম করেই জাতীয় দলে ঢুকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে সুযোগও পেলাম না। ' এই অবহেলার জবাব ব্যাটেই দিতে চান আফতাব। 'প্রিমিয়ার লীগে ভালো পারফর্ম করে জাতীয় দলে ঢুকতে চেয়েছিলাম।

বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলেও স্থান না পেয়ে সেই ভালো করার জেদটা আরও বেড়ে গেল। ক্রিকেট ছাড়া আমার আর কিছুই নেই। ক্রিকেট নিয়েই আছি। ক্রিকেট নিয়েই থাকব। আমাকে এমন অবহেলার জবাব ব্যাটেই দেব।

' ৮৫টি ওয়ানডে ম্যাচে ২৪ দশমিক ৭৩ গড়ে মোট এক হাজার ৯৫৪ রান করা আফতাব যে তা পারবেন, এটা নিয়ে সংশয় থাকার কথা নয় কারও।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।