আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কে থামায় উত্ত্যক্তকরণের রুদ্র-রথ?

কি বলব

উত্ত্যক্তকরণ বিষয়ে বলার আগে ইংরেজি শব্দ ইভটিজিং নিয়ে কিছু বলা সঙ্গত বলে মনে হয়। মেয়ে উত্ত্যক্তকরণের পরিবর্তে বাংলাদেশের তথ্য মাধ্যমে আজকাল ইভটিজিং শব্দটি ব্যবহৃত হচ্ছে। কেবল এ শব্দটি নয়, এ রকম আরও ইংরেজি শব্দ ব্যবহৃত হয়। এগুলো এক ধরনের সাংস্কৃতিক উত্ত্যক্তকরণ; প্রভু সংস্কৃতি কর্তৃক দাস সংস্কৃতিকে ঠেসে ধরে শোয়ানো, যেমন শোয়ায় মেয়ে উত্ত্যক্তকারী তার শিকারকে। বাংলা যথেষ্ট শক্তিশালী ভাষা।

বাংলা ভাষার গ্রহণ ক্ষমতা ও নির্মাণ ক্ষমতা অসাধারণ। বাংলায় বিস্তর বিদেশি শব্দ আছে। অভিধান খুললেই সেটা বোঝা যায়। বিদেশি শব্দের তালিকায় সবচেয়ে বেশি আছে সংস্কৃত। তারপর আরবি, ফারসি, তুর্কি, পর্তুগিজ, ফরাসি ও ইংরেজি।

চীনা, জাপানি, স্প্যানিশ প্রভৃতি ভাষার শব্দও নিশ্চয় আছে। বাঙালি বিদেশি শব্দ এমনভাবে আত্মীভূত করেছে যে, সেগুলোকে বাংলা ছাড়া বিদেশি বলে আর ভাবা যায় না। যে ভাষা বিদেশি শব্দ যত আত্মীভূত করতে পারে, সে ভাষা তত উন্নত। এদিক দিয়ে ইংরেজি সব ভাষাকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। বাংলা গদ্য বিকাশের অনতিকাল পরে, বিদ্যাসাগর থেকে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত, ইংরেজি থেকে বাংলায় হয়েছে সার্থকভাবে আত্মীভূতকরণ।

এরপর থেকে দেখা দিয়েছে বিদেশি, বিশেষ করে ইংরেজি শব্দকে, বাঙালি সাজ না পরিয়ে স্যুট পরা অবস্থায় হুবহু গ্রহণ। হাল আমলে এটা প্রকট আকার ধারণ করেছে তথ্য মাধ্যমে; বিশেষত সংবাদপত্রে। এটা যে শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদের ল্যাংগুয়েজ টিজিংয়ের ফল, তথ্য মাধ্যমের বন্ধুদের সে বিষয়ে খেয়াল নেই। বাংলা তথ্য মাধ্যমে হুবহু ইংরেজি শব্দ গ্রহণের প্রথম দৃষ্টান্ত হলো গত শতকের ষাটের দশকে সৃষ্ট হাইজ্যাক শব্দটি। তার জনগণের দুর্দশা লাঘবে বিশ্ব নেতাদের এগিয়ে আসতে ফিলিস্তিনি তরুণী লায়লা একটি বিমান ছিনতাই করেছিল।

এই ছিনতাইকে ব্রিটিশ প্রেস অভিহিত করে হাইজ্যাক বলে। শব্দটির মধ্যে একটি জঙ্গি দ্যোতনা থাকায় সারা পৃথিবীর সঙ্গে বাংলা সংবাদপত্রও এটি হুবহু গ্রহণ করে। হাইজ্যাকের ব্যাপক ব্যবহার চলে বাংলাদেশের সর্বত্র। বর্তমানে এ শব্দটি অন্তর্হিত। হালে চালু হয়েছে ইভটিজিং।

মেয়ে উত্ত্যক্তকরণ শব্দগুলো কিছুটা খটমটে বলে সম্ভবত সহজ-উচ্চারিত ইভটিজিং চালু হয়েছে। বিমান ছিনতাই কমে যাওয়ায় হাইজ্যাক যেমন আর ব্যবহৃত হয় না, মেয়ে উত্ত্যক্তকরণ কমে গেলে ইভটিজিং ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তাও আর থাকবে না। তবে বক্তব্যের ধার ও ভার নিশ্চিত করতে বাঙালি তার হীনম্মন্য স্বভাবের কারণে এককালের প্রভুর ভাষা ইংরেজির শব্দ ও বাক্য ব্যবহার ছাড়বে বলে মনে হয় না। এ দেশে নারী উত্ত্যক্তকরণ মোটেও নতুন কোনো ব্যাপার নয়। এ দেশের, শুধু এ দেশের কেন সারা পৃথিবীর নারীই চিরকাল বখাটে পুরুষ কর্তৃক উত্ত্যক্ত ও নিগৃহীত হয়ে আসছে।

নারী বখাটেদের দ্বারা উত্ত্যক্ত হওয়ার মূল কারণ পুরুষতান্ত্রিকতা। ইউরোপ-আমেরিকায় প্রতিদিন নয়, প্রতি সেকেন্ডে নারী উত্ত্যক্ত, ধর্ষিত ও পরে নিহত হয়। অথচ ইভটিজিং নিয়ে ইউরোপ-আমেরিকায় হইচই নেই। নারীবাদীরাও এ নিয়ে কথা বলেন না এ কারণে যে, তারা জানেন এ নিয়ে আন্দোলন করে কোনো ফল হবে না। পুঁজিবাদ বা বাজার অর্থনীতি ইউরোপ-আমেরিকার নারী-পুরুষ উভয়কেই সামন্ত সমাজের নিরাপত্তাধর্মী নৈতিকতা ও আর্থিক নিরাপত্তা থেকে মুক্ত করে মুনাফাচালিত তীব্র প্রতিযোগিতার অনিশ্চিত জীবিকা সন্ধানের মধ্যে এনে ফেলেছে।

এর থেকে মানুষ মুক্তি পেতে পারে নিশ্চিত উন্নত জীবিকার পরিকল্পিত অর্থনীতি প্রবর্তন করে। ইভটিজিং কাকে বলে সোভিয়েত ইউনিয়নের মানুষ ও পুলিশ জানতই না। ১৯৯০ সালে ওই রাষ্ট্রটি ধ্বংস হয়ে মুক্ত বাজারের অধীন যাওয়ামাত্র প্রথমে যার জীবন দুর্বিষহ হলো সে হলো শুধু তরুণী নয়, সব বয়সী নারী; সংসার চালাতে গিয়ে তাদের সবাইকে খণ্ডকালীন ও তাদের মধ্যে নিরুপায়দের সার্বক্ষণিক দেহব্যবসায়ে নামতে হয়। মুনাফাচালিত বখাটেরা কোন্টা মানে? কার্বন দ্বারা দূষণ ও উষ্ণতা বৃদ্ধি এক সময় পৃথিবীর সব প্রাণসত্তা বিনষ্ট করবে জেনেও দূষণ ও উষ্ণতা রোধের জন্য যেসব প্রস্তাব আন্তর্জাতিক নানা সম্মেলনে আনা হয়, তার কোনোটাই তারা গ্রাহ্য করে না। মানে না।

তাদের না করার ও মানার কারণ হলো তাদের অব্যবহিত স্বার্থ। তেল পোড়ানো কমানো, বন ধ্বংস বন্ধ ইত্যাদি করলে তাদের কারও যাবে জীবনমান নেমে। কারও দ্রুত উন্নয়ন হবে বাধাগ্রস্ত। অতএব, দীর্ঘ মেয়াদে পৃথিবীর প্রাণসত্তা লোপ পেয়ে গেলে যাক, দূরের প্রজন্মের জন্য এখনই কান্নাকাটি করে কী লাভ, যতক্ষণ আছি সুখটা করে নিতে দোষ কী? এই মনোবৃত্তি কাজ করছে আজকের প্রবলদের মধ্যে। বাংলাদেশে আজ যে নারী উত্ত্যক্তকরণ বা ইভটিজিং ব্যাপক আকার ধারণ করেছে, তার আদত কারণ উন্মত্ত বা লাগামহীন বাজার অর্থনীতি।

নারী উত্ত্যক্তকরণ একটি চিরকেলে ব্যাপার হলেও বাজার অর্থনীতির জায়গায় সামন্তবাদী সীমিত অর্থনীতির সমাজ বাংলাদেশে থাকায় বখাটে পুরুষ কর্তৃক নারী উত্ত্যক্তকরণ ও নির্যাতন এতকাল চোখে পড়ার মতো দৃশ্যমান ছিল না। সামন্ত সমাজে নারীকে ঘরে আটকে রাখা হতো। গুরুতর প্রয়োজনে নারীকে ঘরের বাইরে কোথাও নিতে হলে তার বাহন যেমন গরুর ও ঘোড়ার গাড়ির এবং নৌকার ছৈ, পালকি, ডুলি ও রিকশার হুড প্রভৃতি পর্দা দিয়ে ভালো করে ঢেকে তার মধ্যে পুরে নিকট সম্পর্কের পুরুষকে তার তত্ত্বাবধায়ক করে সঙ্গে দেয়া হতো। মুসলমান নারীকে অধিকন্তু পরতে হতো বোরকা। গঙ্গাস্নান করতে হলে হিন্দু অভিজাত মহিলাকে পালকিশুদ্ধ গঙ্গায় চুবিয়ে আনা হতো! এসব প্রথা যে অতি উচ্চ স্তরের ইভটিজিং তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

ধর্মীয় ও সামাজিক প্রথা হিসেবে এগুলোকে পবিত্রতা দেয়ায় এর মান্যতা ছিল প্রশ্নাতীত। অবরোধ ও পর্দা প্রথা দ্বারা যে নারী নিজেকে যত পীড়িত ও নির্যাতিত করতেন সবার চোখে তো বটেই, নিজের বিচারেও তিনি নিজেকে তত পুণ্যবতী ও আদর্শ নারী বলে ধরে নিয়ে পরম আত্মতৃপ্তি ও গর্ববোধ করতেন! নিকটাত্মীয় ও বাড়ির পুরুষদের দ্বারা এভাবে তারা উত্ত্যক্ত হতেন বলে কিছু মনে করতেন না। আসলে মনে যে করতেন, সবাই তা প্রকাশ করার সাহস ও সুযোগ না পেলেও, বেগম রোকেয়াা তার কালের ইভটিজিংয়ের বিশদ বর্ণনা রেখে গেছেন। রোকেয়া রচনাবলী, এক কথায় সামন্ত সমাজে যে ইভটিজিং বা নারী নিগ্রহ চলত, তার আক্ষরিক ফুটেজ। রোকেয়ার দেখা নারী উত্ত্যক্তকরণ বাংলাদেশের সমাজে আজও আগের মতোই রয়ে গেছে।

নারীকে আজও স্বাধীনভাবে চলতে ও বলতে দেয়া হয় না। তাকে আপাদমস্তক আবৃত রাখার বাধ্যবাধকতা যথেষ্ট কমলেও আজও তা আছে। সামন্ত সমাজ থেকে পুঁজিবাদী বাজার অর্থনীতির সমাজের দিকে পা বাড়ানো আজকের বাঙালি সমাজের পুরুষের মন-মানসিকতা পুরোপুরি পুরুষতান্ত্রিক। তারা নারীকে ভোগের ও সন্তান উত্পাদনের মাধ্যম ছাড়া ভিন্ন কিছু ভাবে না। এ মানসিকতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরও।

এ সমাজের পুরুষরা নারীকে শিক্ষার সুযোগ দিয়ে ঘরের বাইরে নিকটাত্মীয় পুরুষ সঙ্গীসহ আপাদমস্তক আবৃত করে বাইরে যাওয়ার, এমনকি চাকরি করার অনুমতি দিলেও তার পূর্ণ স্বাধীনতা কস্মিনকালেও অনুমোদন করে না। এই পুরুষপুঙ্গবরা নিজেদের স্মার্ট প্রতিপন্ন করতে ইউরোপীয় বেশভূষা সর্বদা পরিধান করলেও তার নারী সহকর্মীদের শুধু চোখ দুটোর জায়গা সামান্য ফাঁক রেখে হালে কেউ কেউ মুখমণ্ডলটুকু মাত্র অনাবৃত রেখে, পুরো দেহ ঢেকে রাখারই পক্ষপাতী। তাদের ইউরোপীয় পোশাক পরার অনুমতি দান তো সূর্য পশ্চিম দিক দিয়ে ওঠার মতো ব্যাপার। তাদের দেশীয় পোশাক সাবলীল ও শালীনভাবে পরেও বাইরে আসার পর্যন্ত অনুমোদন নেই। বাংলাদেশের তথাকথিত এই শিক্ষিত সভ্যদের এসব ইভটিজিংয়ের তেমন কোনো প্রতিবাদ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী এসব অবোধ নারীও এর প্রতিবাদ করে না। বেগম রোকেয়ার হাঁটু সমান উচ্চতার স্বাধীনচেতা নারী আজকের বাংলাদেশে দেখা যায় না। অথচ প্রত্যাশিত ও আবশ্যিক হলো আজকের নারীদের মনের বল বাড়াতে রোকেয়া রচনাবলী প্রত্যহ পাঠ্য হিসেবে প্রত্যেক বাড়িতে থাকা। সমাজকে এগিয়ে নেয়ার জন্য রোকেয়া- পাঠ কেবল নারীর জন্য নয়, প্রত্যেক পুরুষের জন্যও সমান দরকারি। হালে বাংলাদেশে যেসব তরুণী ও নারী উত্ত্যক্তকরণের ঘটনা ঘটছে, তার অধিকাংশ ঘটতে দেখা যায় নিম্ন আয় ও নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের পরিবারে।

উত্ত্যক্তকারী ও উত্ত্যক্ত হওয়া দু’পক্ষই আর্থিকভাবে তেমন সচ্ছল নয়। তাদের ঘরের পরিবেশ, অসচ্ছলতার কারণে নারীর জন্য অনুকূল নয়। পর্যাপ্ত আয় না থাকায় এসব পরিবারে ছেলেদের লেখাপড়ার দিকেও পিতা-মাতা মনোযোগ দিতে পারেন না। সারা দেশে হাতেগোনা গুটিকয়েক ভালো স্কুল-কলেজ ছাড়া অন্যগুলোয় হাস্যকর বেতনের জন্য শিক্ষক-স্বল্পতা ও শিক্ষাদানে সক্ষম উপযুক্ত ডিগ্রিধারী শিক্ষক না থাকায় লেখাপড়া বলতে কিছু হয় না। এসব স্কুলের অধিকাংশ ‘শিক্ষক’ নিজেরা লেখাপড়া না জানায় ছাত্রছাত্রীদের শেখাবেন কী? তারা ছাত্রদের শর্টকাটে পাস করার উপায় বাতলানো ছাড়া আর কিছু শেখান না।

এসব স্কুলের দু-চারজন মেধাবী শিক্ষার্থী নিজের চেষ্টায় এবং ভালো শিক্ষকদের সহায়তায় ভালো ফল করে। সাধারণ মেধার ছাত্রদের মধ্যে যারা প্রাইভেট পড়তে আর্থিকভাবে সক্ষম, তারাও ভালো পাস করে। এদের বাদে অধিকাংশ আড্ডা মেরে দিন কাটায়। বয়স দোষে এদের অনেকে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। এটাই এদের নিত্যদিনের বিনোদন।

এরা খেলাধুলাও করে না। মূর্খ এই বখাটেগুলোই সাড়া না পেয়ে মেয়েদের অপহরণ বা হাইজ্যাক করে জনশূন্য কোথাও নিয়ে গিয়ে বন্ধু-বান্ধবসহ ধর্ষণ ও জানাজানি হওয়ার আশঙ্কায় তাকে খুন করে। দেশে বেকারত্ব প্রকট। উপার্জনক্ষম যুবকের সংখ্যা এত কম যে, মেয়ে পাত্রস্থ করা সব অভিভাবকের পক্ষেই একটা দুর্ঘট ব্যাপার। মেয়ে একটু বড় হলে তাকে নিশ্চিত বখাটেদের দ্বারা ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হবে ভেবে শঙ্কিত বাবা-মা যথাশিগগির তাকে বিয়ে দিয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত হতে চান।

আয়-রোজগার আছে এমন পাত্র ধরতে হলে মোটা অংকের যৌতুক দিতে হয়। যেসব পাত্রের আয়-রোজগার নেই তাদের ধরতে গেলেও মোটা অংকের যৌতুক দিতে হয়। আয়বিহীন পাত্র মোটা যৌতুক দাবি করে সেই অর্থ দিয়ে সে আয়-রোজগারের একটা উপায় করবে বলে। নিরুপায় পিতা অনেক বলে-কয়ে যৌতুকের কিছু অংশ পরে দেবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়েকে বিদায় করেন। কিছুদিন যেতেই শুরু হয়ে যায় অবশিষ্ট টাকা দেয়ার তাগিদ।

দিতে দেরি হলে মেয়েটির ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু হয়। পুরো টাকা পরিশোধের পরও বহু ক্ষেত্রে আরও টাকা দাবি করা হয়। চালানো হয় আরও নির্যাতন। পিতার সাধ্যে যখন আর কুলায় না, সে যখন ধারদেনা করেও জামাই নামক কসাইকে তুষ্ট করতে পারে না, তখন একদিন খবর আসে মেয়ে মারা গেছে। চরম নির্যাতন করে হত্যা করা হলেও বলে পার পেতে চেষ্টা করা হয় সে আত্মহত্যা করেছে অথবা ভুল করে পোকা-মারা বিষের পাত্রে পানি খেয়ে মরেছে।

নারী উত্ত্যক্তকরণের ও তদ্দরুণ নিহত হওয়ার পেছনের ঘটনা বিশ্লেষণ করলে বেরিয়ে আসে যে অমোঘ সত্যটি, তাহলো দারিদ্র্য ও বেকারত্ব। এ দুটো ঘুচানোর আগে ইভটিজিং কখনও বন্ধ করা সম্ভব হবে না। সম্ভব যে হবে না, তার প্রমাণ নারী উত্ত্যক্তকরণের বিরুদ্ধে সরকার হঠাত্ করে কিছুটা নড়েচড়ে বসার পর, অনিচ্ছুক পুলিশেরও কিছুটা সক্রিয় হয়ে ওঠার ভাব লক্ষ্য করা গেলেও ইভটিজিং ও কিশোরী এবং তরুণী ধর্ষণ ও হত্যা বন্ধ হয়নি। এটা আর্থিক অনটন ঘুচানোর ব্যাপার, তথাকথিত গণসচেতনতা সৃষ্টির দ্বারা বন্ধের ব্যাপার নয়। বাংলাদেশের অন্য প্রধান সমস্যা হলো এক্সপ্রেসের গতিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ বাল্যবিবাহ।

এর সঙ্গে ইভটিজিংয়ের যে সম্পর্ক রয়েছে, আগেই তা উল্লেখ করা হয়েছে। এ দুই বিস্ফোরক সমস্যার সমাধান হলো বেকার তরুণ-তরুণীকে কাজ দেয়া ও কর্মীদের উপযুক্ত পারিশ্রমিক দেয়া। ভালো আয়-রোজগার থাকলে পরিবার আপনা-আপনি ছোট থাকে। আর কাজে নিয়োজিত যুবক কখনও মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে না। ইভটিজিং থামাতে হলে সবাইকে কাজ দিতে হবে এবং ভালো বেতন দিতে হবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.