আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বান্দরামির বল্গাহীন সুযোগ দিলে যা হয়ঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশনে আমেরিকান ব্যালে নাচের অনুমতি এবং কারো নামাজের সময় তার মোবাইলে বেজে উঠে কৃষ্ণ গেল রাধার কুঞ্জে!

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ

সেই ১৯৮৯ সালের প্রথম দিকের ঘটনা। পাকিস্তানী গায়কের "হাওয়া, হাওয়া.." গান ভারত, বাংলাদেশ সহ সমগ্র উপমহাদেশে দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এর রেশ পরবতী ৪/৫ বছর থাকে; http://www.youtube.com/watch?v=psYgmvgTJuw এরপর যাই হৌক এরশাদের সময় ১৯৯০ অথবা খালেদা জিয়ার প্রথম শাসনামলে হাসান জাহাঙ্গীর বাংলাদেশে সফরে আসেন(সঠিক সাল মনে নেই দু্ঃখিত)। সে সময় ঢাবিতে আয়োজন করা হয় তার কনসার্ট। সব ছাত্র-ছাত্রী সহ অন্য সব নারী-পুরুষকে হাসান জাহাঙ্গীর মাতিয়ে তোলেন এবং এদের অনেকেই উদ্দম নৃত্যে মেঠে উঠে।

পরের দিন বিভিন্ন আলেম, মাশায়েখ, বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ এর তীব্র সমালোচনা করে বলেন ৯০% মুসলমানের দেশে ছেলে মেয়েদের এমন উদ্দাম নৃত্য দেশকে উচ্ছন্নে নিয়ে যাবে। অন্যদিকে ঢাবির ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী সহ বামপন্থী শিক্ষকগণ আলেম, মাশায়েখদেরকে মৌলবাদী, উগ্র, প্রগতিশীলতা বিরোধী বলেন কারো অধিকার নেই ছাত্র-ছাত্রীদের নাচানাচির বিরুদ্ধে কথা বলার। এরপর বাংলাদেশে এলআরবি, মাইলস, ফিডব্যাক সহ বিভিন্ন ব্যান্ড গ্রুপ সারাদেশে কি টিকিট কি ওপেন এয়ার কনসার্ট কালচার শুরু করলে কে আর এ বিষয়ে আলেম-মাশায়েখদের কথা শুনে। আমি কনসার্টের বিরোধী নই তবে আমাদের দেশে শুধু মুসলমান বলে কথা নয় অনেক হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান পরিবারও এ ধরণের উদ্দমতার বিরুদ্ধে। এখানে বিশেষ করে ফিডব্যাকের মাকসুদ ভাইয়ের ভূমিকা স্মরণীয়।

বন্ধু সহ অনেকের মুখে শুনেছি কোন কনসার্টে ছেলে মেয়েরা উদ্দমতায় মত্ত হওয়া শুরু করলে তিনি বলতেন এ রকম আচরণ তথা আমাদের মূল্যবোধের বিরোধী কিছু করলে তিনি গান গাইবেন না। কিন্তু অন্য ব্যান্ড গ্রুপের কারো এ ধরণের কিছু করেছে বলে জানা নেই। হয়ত তাদের উপার্জনটাই মূখ্য। তারপর স্যাটেলাইট টিভি আসলে ভারত সহ পাশ্চাত্যকে ব্যপাক ভাবে অনুকরণ করা হতে থাকে। আমি অবাধ তথ্য প্রবাহে বিশ্বাস করি কারণ আমি গণতন্ত্রকে শ্রদ্ধা করি।

বিদেশে কি হচ্ছে তা এদেশের ১৮ বছর কি তার উপরে কেউ জানার চেষ্টা করলে তার অধিকার আছে তা জানার ও দেখার। কিন্তু মনে রাখতে হবে বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে....। আমাদের নিজস্ব আবহমান কালের পারিবারিক মূল্যবোধের সংস্কৃতিকে ধারণ করে সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে ইংরেজী শেখা আর ইংরেজ হওয়া ভিন্ন জিনিস। সব ক্ষেত্রেই চেক এন্ড ব্যালান্স তথা ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।

পরিতাপের বিষয় হলো আমরা এই ক্ষেত্রে চরম ব্যার্থ। আমাদের আবেগ, স্বভাব, রিপু, আকংখাকে কোনমতেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা। তার উপর ধর্মনিরপেক্ষতা ও প্রগতীশীলতার নামধারী গোষ্ঠীতো আছেই। তাই কি ব্যাক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এই উচ্ছন্নে যাওয়া রোধ করাতো যায়নি বরং দিনকে দিন বাড়ছে। ঢাকা শহড়ে ডজন ডজন নাইট ক্লাব আছে।

প্রতি বৃহস্পতিবারই হয় ডিজে ঐ সমস্ত জায়গায়। তারপর ইন্টারনেট, মাল্টিমিডিয়া সেল ফোন তথা আধুনিক প্রযুক্তির অপব্যাবহার বাংলাদেশে অবৈধ পর্ণগ্রাফি ব্যাবসা চালু করে দিয়েছে। একই চাকু আমাদের উপকার যেমন করে তেমনি এটা দিয়ে আমরা কারো ক্ষতিও করতে পারি। সবই আমাদের মানসিকতার উপর নির্ভর করে। যেমন প্রভার যদি এক ডজনেরও বেশী বয় ফ্রেন্ড থাকতো তো বলার কিছু ছিল না।

কিন্তু সে ও তার এক প্রেমিক নিজেদের যৌন সম্পর্ককে ভিডিও সহ ইন্টারনেটে উন্মুক্ত করেছে তা আমাদের ভবিষ্যতকে কোথায় নিয়ে যাবে তা ভাবতেই ভয় লাগে। প্রভা তার সেই প্রেমিকের বিরুদ্ধে কোন মামলা বা ব্যাবস্থা নিয়েছে বলে আমার অন্তত জানা নেই। মনে হয় প্রভাও জনপ্রিয় হওয়ার জন্য এমন করেছে। এখন প্রভা ও তার প্রেমিককে অনুসরণ করবে তরুণ প্রজন্মকে অনুসরণ করবে অনেকেই। ইতিমধ্যে মিউচুয়াল যৌনতা সহ ধর্ষণও ভিডিওতে ধারণ করা হচ্ছে।

তাই দেখা যাচ্ছে যে ঐ ১৫-২০ বছর আগের যে উদ্দম নৃত্য নিয়ে আলেম-মাশায়েখগণ বাধা দিয়েছিল আজকের বাস্তবতা তাদের সেই সময়ের মনোভাব তথা আশংকাকে পরম ভাবে সঠিক বলে। আর এবার আমেরিকার ছাত্র-ছাত্রীদের ইসলাম বিষয়ে জ্ঞান নিতে যেয়ে আমাদেরই সরকার মনোনীত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তার অনুমতিতে ইমামদের সামনে আমেরিকান তরুণীরা দেখাল ব্যালে ড্যান্স। ভাগ্যিস LADY GAGAর Bad Romance এর মত খুল্লাম খুলা কিছু দেখায়নি । আমি মোটেই আমেরিকান তরুণীদের দোষ দিব না। কারণ আমাদের দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা এবং তথাকথিত প্রগতিশীলতা গোষ্ঠীই এর জন্য দায়ী।

কারণ এরা ক্ষমতায় কয়েক বার ছিল এবং বর্তমানে আছে। পরিস্থিতি এমন দাড়িয়েছে মোবাইলের রিং টোনে অনেক মুসলমান সেট করেছেন "রাধা, কৃষ্ণর গান"। যখন আমরা নামাজে দাড়াই অনেক সময় মনে থাকে না মোবাইল বন্ধ অথবা ভাইব্রেশনে সেট করতে। তখন যা হওয়ার তা হয়, নামাজ পড়ার সময় হঠাৎ বেজে উঠে "কৃষ্ণ গেল রাধার কুঞ্জে"। সেই সকল নামাজী মুসলমান একদিকে যেমন নামাজ পড়েন অন্যদিকে রাধা-কৃষ্ণর গানও শুনেন।

অথচ এটা হওয়া উচিত শুধু মাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য। কারণ তারা অবতারকে স্রেফ অবতার নন সৃষ্টিকর্তার সাথে তুলনা করেন। একজন নামাজী মুসলমান কিভাবে এ ধরণের শিরকী অথবা কুফরী গান মোবাইলের রিংটোনে সেট করেন তা আমি বুঝিতে পারিনা। এখন সময় এসেছে সব কিছুর বাড়াবাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা এবং একটা সীমার মধ্যে থাকা। ইসলাম সহ এদেশের আবহমান কালের সামাজিক ও সংস্কৃতিক মূল্যবোধকে সংরক্ষণ করা।

কারণ নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমা লংঘনকারীকে পছন্দ করেন না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।