আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!
দবীরের হিসাব আর একটুস খানি ভুল: ১
দবীরের হিসাব আর একটুস খানি ভুল: ২
৫.
সকালের সূর্যটা মুখের উপর পড়তেই মুখটা বাকা করে বা হাতটা দিয়ে রোদটাকে ঢাকতে চায়। চোখ বন্ধ অবস্হাতেই ডান হাতে হাতড়াচ্ছে মোবাইলটা কোথায়। গরম লাগবার কোনো কারন দেখছে না, শরীরের ক্লান্তিটা কেটে গেলেও চোখের ঘুম যাচ্ছে না। একটু বেশী রাত করে ঘুমানোর ফল ওটা।
যাক মোবাইলটা পাওয়া গেলো। মোবাইলটা হাতে নিয়ে চোখের সামনে ধরতেই দেখে ১০:২০। বিশেষ কোনো কাজ নেই আজকে। গতকালকেই হাইড্রোলিক ড্রিলারের ডিজাইনটা দিয়ে দিয়েছে, ব্যাংক খুলবার কথা ৯ টায়, টাকাটা মনে হয় এসে গেছে। শাহেদের মোবাইল ধরা হাতটা বিছানায় পড়তে পড়তেই খেয়াল করলো জেনারেটর চালু হয় নি।
কারন ফ্যান চলছে না। শরীর ঘামতে কেবল শুরু করেছে সে হিসাবে লোড শেডিং শুরু হয়েছে মাত্র ১০ মিনিট হবে, জেনারেটর টাইমার ৩০ সেকেন্ড, ১ মিনিটে ফুল লোডে জেনারেটর চালু হবার কথা। তেল কি আছে ট্যান্কে?
উঠে বসলো, দেখলো লাইট বন্ধ, পাখা বন্ধ। জানালা দিয়ে বাইরে উকি দিতেই রহিম হোটেল এন্ড কাবাব ঘরের থেকে সেই ভাঙ্গা রেকর্ডের জাতীয় সঙ্গীত "আমি বসে আছি এখনো তোমার আশায়!"
শাহেদের ব্যাপারটা ভালো ঠেকলো না। দ্রুত উঠেই কেসিং এর হার্ড ডিস্কটা আইড ক্যাবল এক টানে খুলে সোজা কীচেনে নিয়ে গেলো, ওখানে চুলোটা দ্রুত জ্বালিয়ে একটা কড়াইতে পানি দিয়ে ডুবিয়ে দিলো, সাথে সিন্দুকের ভিতর ডায়েরীটা দ্রুত কেরোসিনে ডুবিয়ে আগুন ধরিয়ে বাল্টিটে রেখে দিলো, দাউ দাউ করে জ্বলছে।
দ্রুত নিজের ঘরে এসে একটা এসএমএস করলো রামপুরায় থাকা রইসকে,"খরগোশ দৌড়ের উপর, সিগন্যাল অন!" রহিম চাচাকে লিখলো,"চাচা, ২০ ক্যাশ করেন! আর শামসুদের অবস্হান জানান!"
এমন সময় দরজায় জোরে লাথী। ও দ্রুত হাতের মোবাইলটার কেসিং খুলে ব্যাটারী খুলতেই দেখে দরজায় আরো প্রচন্ড লাথীতে খুলে গেলো। কাঠের দরজা খুলতেই সিমটা ভেঙ্গে ফেললো শাহেদ। দুজন সাদা পোশাকের লোক ওর দিকে এগিয়ে এসে রিভলবার তাক করে বললো,"শাহেদ সাহেব, এক পাও নড়বেন না, লাভ নেই!" এমন সময় দরজা দিয়ে একজন পেটমোটা মোছ ওয়ালা লোক, গায়ে হাওয়াই টি শার্ট ঝুলানো হাটতে হাটতে," বডি তো পুরা মাশাল্লাহ, চেহারা হিরো হিরো। তা চলো, একটু জামাই আদর খাইতে হইবো।
" কথা শেষ হবার পরই পাশের একজন দ্রুত মুখে একটা কালো কাপড় জড়িয়ে পিছনের দিকে হাত দুটো বেধে ফেললো। তারপর ঠেলতে ঠেলতে বাইরে নিয়ে এলো। শাহেদ পায়ের জুতোর ভিতর থাকা ক্যাপসুলটা ঠিক মতো প্লেস করতে লাগলো, নাহলে সেন্সরটায় সমস্যা হয়!
শাহেদকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে নিয়ে যাওয়া দেখে আশেপাশে লোকজন জমে গেলো। ১০-১২ জন দিনে দুপুরে দুটো মাইক্রো আরেকটা জীপে করে নিয়ে যাওয়াটা একটু অস্বাভাবিক। এরা পুলিশ না, আর্মিও না, কারা এরা?
শাহেদ চুপচাপ মাইক্রোতে বসে আছে।
শুধু শুনছে সামনের লোকটি কিছুক্ষন পর বলছে "বা্ড্ডা ক্রসিং ক্লিয়ার?" ও পাশ থেকে স্পষ্ঠ কন্ঠে বলছে,"ছোটখাটো জ্যাম, একটু স্লো....ক্লিয়ার!" গাড়ি জ্যামে কিছুক্ষন থামে তারপর চলতে থাকে। পাশের লোকটির পান খাবার শব্দটা বেশ বিরক্তিকর। আবার সামনে বসা লোকটা বলা শুরু করলো,"রেলগেট ক্লিয়ার করো। ইমার্জেন্সী। " অমনি শাহেদ আস্তে আস্তে করে বা পায়ে চাপতে থাকলো, তার বা পায়ের চাপা চাপিতে পাশের পান খাওয়া লোকটা বলে উঠলো,"পায়ে কি গরম লাগে?" শাহেদ বললো মুখোশের ভিতর থেকেই," ছোট টা ধরছে, আর কতক্ষন লাগবে?"
অমনি সময় সামনের জীপটায় হঠাৎ নীচ থেকে আগুন ধরে পুরো ট্যান্কিতে আগুন ধরে গেলো।
সবাই হুলস্হুল করে নামতে শুরু করলো। মাইক্রোর সামনে বসে থাকা একজন বলে উঠলো, "গাড়ি পিছাও, পিছাও দ্রুত!" গাড়িটা পিছাতে গিয়ে পিছনের মাইক্রোতে জোরে একটা ধাক্কা লাগলো, ওমনি ওটার সামনের গ্লাসটা ভেঙ্গে গেলো আর সবাই সামনে ঝুকে পড়লো! সামনের লোকটি বললো,"টেক পজিশন, মনে হয় কেউ বোমা মারছে!" মুখের সামনে ওয়াকিটকিটা নিয়ে,"স্যার, উই আর আন্ডার এটাক, জঙ্গি এটাক!" গাড়ি থেকে সবাই নেমে গেলো, শাহেদকে এক হাতে ধরে রেখে দুজন নিয়ে যাচ্ছে আর ওদেরকে কভার দিচ্ছে মাইক্রোতে সামনে বসা লোকটি। শাহেদের বা পাশের লোকটি বলে উঠলো,"স্যার, গলির ভিতর রিক্সা নেই!" ওমনি সামনের লোকটি বলে উঠলো,"তোমরা ওকে নিয়ে যেভাবেই হোক কোয়ার্টারে চলে যাও, আমি আসছি!"
ওরা দুজন শাহেদকে নিয়ে গলির ভিতর ঢুকবার পথে হঠাৎ পিছন থেকে একটা প্রাইভেট কার এসে ওর বা পাশের লোকটিকে সজোরে আঘাত করে। লোকটি গাড়ির উপর পড়ে ছিটকে যায় রাস্তায় শাহেদের ডান হাত ধরে রাখা লোকটা একবার ডানে তাকায়, একবার বায়ে তাকায়, আরেকবার রাস্তায় পড়ে থাকা অফিসারটার দিকে তাকায়। তার আজকে প্রথম দিন, কিন্তু এরকম পরিস্হিতি তার কাছে একটু নতুন, শুধু ওর প্রায়োরিটি হলো এই ডেলিভারীটা ভিভিআইপি এখন ওদের কাছে!
এমনি সময় একটা গাড়ি এসে থামে ওদের সামনে।
দরজা খুলে সামনে বসা সেই লোকটি,"উঠে পড়ো, কিছুই না শুধু আজাইরা সমস্যা!" এটা বলতে বলতে আঘাত প্রাপ্ত অফিসারকে উঠিয়ে নিলো গাড়িতে। গাড়ির দিকে এগিয়ে দেখে ড্রাইভার একটা সুন্দরী মেয়ে ভয়ে কাপছে। কাচের সামনে গিয়ে বলে,"লাইসেন্স আছে খুকী মনি?"
মেয়েটি ওনার দিকে না তাকিয়ে স্টিয়ারিং এ হাত ধরেই বলছে,"আমি কিছুই জানি না, হঠাৎ করে উনি গাড়ির সামনে এসে পড়ে,আমার বাবা আপনাদের পুলিশ কমিশনার শাহাদাৎ হোসেন!ওনাকে একটু ফোন করবেন?"
অফিসারটি একটু ঢোক গিললো, সোজা হয়ে দাড়িয়ে আবার ওয়াকিটকি মুখে দিয়ে,"এটা মামা তোমাগো পুলিশ কেস, কি জন্য যে এসব বাগড়া বাজাও?"
যাই হোউক, শাহেদের তারপরও কিছুই বোঝার কথা না, তারপরও ও অনুভব করছে দুইতলায় সিড়ি দিয়ে উঠতে হলো, তারপর বায়ে একটা বড় রুমে ঢুকিয়ে তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো মেঝেতে। তারপর দরজা আটকানোর শব্দ!
কেউ একজন চেয়ার টেনে শাহেদকে উঠিয়ে বসালো। তারপর কালো কাপড়টা মাথা থেকে খুলে ফেললো।
শাহেদ চোখ খুলতেই দেখে সামনে দুজন লোক সিগারেট টানছে আর হাত চুলকাচ্ছে। চোখ খুলেই মনে হলো সে কোনো চুলকানীর জায়গায় এসে পড়েছে। শাহেদের চোখ খোলা দেখতেই একজন এগিয়ে এসে বললো,"আমি রহমত সিকদার, আপনি এখন ডিবির অফিসে। আমি আসলে দুঃখিত এখানে আপনাকে ওরা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। আসলে আপনারা পত্রিকায় যত হাবিজাবি শোনেন তার কিছুই করি না।
কিন্তু সমস্যা হলো যারাই এখান থেকে যায় তারা মনে হয় নিজেকে আরও গুরুত্বপূর্ন বানানোর জন্য এসব বলে আমাদের বদনাম করে। তবে এটা ঠিক, ওরকম যে আমরা করতে পারি না এটা ঠিক না। এ ঘরটা কিন্তু ওধরনের কাজের জন্যই ব্যাবহার করি! যাই হোউক, পানি খাবেন?"
শাহেদ মুখে একটু হাসি দিলো," ফান্টা খাবো!"
ওমনি রহমত নামের লোকটি পিছনে দাড়িয়ে থাকা লোকটির দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললো উচ্চ সহকারে,"হুজুরের জন্য বিরানীর ব্যাবস্হাও করা হবে, কুনো সমস্যা নাই!"
শাহেদের দিকে তাকিয়ে,"দেখুন শাহেদ সাহেব, আমরা সবাই জানি আপনার সম্পর্কে। আপনার ডিজাইন করা মেশিন দিয়া কাল রাতে যমুনা টাওয়ারের ছাদ কেটে জুয়েলারীর ৬ টা দোকান লুট করা হইছে। সমস্যাটা কি জানেন, একটা দোকানেরও কোনো সোনা লুট হয় নাই।
আজকে সকাল থেকে পুরো শহর তল্লাশী কইরা কোনো কিছু পাওয়া যায় নাই! যতদূর জানতে পারি, এইসব ডিজাইনের কাজে আপনের উপর কেউ নাই। তা ডিজাইনটা কারে সা+লাই দিছইলেন আর যন্ত্রটা কই?"
শাহেদ হাসতে থাকে," কি বলতে চান আপনি? প্রমান আছে কি ওটা আমার ডিজাইন করা?"
রহমত সাহেব একটু হেসে বলে,"আসলে এই দেশে সবকিছুই সম্ভব। ঐযে লোকটি দাড়িয়ে আছে সে ইচ্ছা করলে আপনাকে এখনি কোর্টে নিয়ে গিয়ে আমাকে হতয়ার মামলায় এমন একটা কেস দাড়া করাবে যে আপনার ফাসি হয়ে যাবে। কিন্তু আআমি ব হাল তবিয়তে বেচে থাকবো! তো আসল কথাটা বলুন!"
শাহেদ একটু থুথু ফেলে বলে," আর মাত্র ৫ মিনিট! তারপর আপনারাই আমাকে ফান্টা খাওয়াবেন"
রহমত সাহেব ভু্রু কুচকে বললেন,"কুদরত ভাই, দেশে কি শুরু হইছে? মোতালেবরে যে মাইয়াটা গাড়ি চাপা দিলো সে নাকি কমিশানরের মাইয়া। এই মদনটা আবার বলে ৫ মিনিটের কথা।
প্রধানমন্ত্রীর নাতনীর জামাই নাকি?" এটা বলেই দুজনে হেসে দিলো।
এমন সময় কুদরত নামের লোকটির মোবাইলটা বেজে উঠলো, সে মোবাইলটা কানে দিতেই "স্যার" বলে সোজা দাড়িয়ে গেলো। "হ্যা স্যার", "৫ মিনিট হলো", "না কিছুই করা হয় নাই" এসব কথা বলে কিছু একটা শুনে ফোনটা রেখে দিলো। রহমত সাহেব তার দিকে তাকিয়ে থাকাতে কুদরত সাহেব ফোনটা পকেটে রেখে,"ডিজিএফআই, ওরা টেক ওভার করছে। এক মিনিটের মধ্যে প্যারামিটার সব ক্লিয়ার করতে বলছে!"
রহমত সাহেব ওনার দিকে তাকিয়ে বলে,"এতো দেখি মঘের মুল্লুক!" কথা শেষ করবার আগেই পুরো রুমে আর্মি দিয়ে ভরে গেলো আর ৬ জন সোনালী চুল ওয়ালা কোর্ট টাই পরা লোক!রহমত সাহেব ভির্মি খাবার আগাই একজন উচা লম্বা আর্মির লোক এসে," শাহেদ সাহেবের হাত খুলে দিন!"
রহমত এগিয়ে শাহেদের হাত খুলবার সময় শাহেদের ফিসফিস করা গলা," ৫মিনিট মনে হয় একটু ওভার এসটিমেট হয়ে গিয়েছিলো!
হাতের হ্যান্ডকাফ খুলতেই আর্মিরলোকটা আবারও বললো,"কখনো কোনো আসামী বা যাকেই ধরে আনেন, পায়ের জুতোটা অবশ্যই খুলে নেবেন!"
রহমত সাহেবের বয়স ৫২ র কাছাকাছি।
ডিবিতে ১৫ বছর, কিন্তু কখনো কোনো বন্দীর বা রিমান্ডে আনা কারো পায়ের জুতো কেউ খুলতে বলেনি! যাই হোউক পায়ের জুতোটা খুলতেই আর০মি বা পায়ের জুতোটা হাতে ভিতর থেকে ছোট একটা পিতলের মতো ক্যাপসুল খুলে বলে,"সাহেদ সাহেব, আপনার সাথে আমরা একটু ঘুরবো। রহমত সাহেব তার আগে একটা ফান্টার ব্যাবস্হা করবে আপনার জন্য, আপনি কি খাবেন?"
শাহেদ হাত দুটো কচলাতে কচলাতে, "আমি আমার বাইকে করে ঘুরবো আপনাদের সাথে!"
রহমত সাহেব ওমনি কুদরত সাহেবের উপর ঝাড়ি দিয়ে বলে বসলেন,"পুরা তাবানীর ফ্যাক্টরী উঠায় নিয়া আসেন, ফান্টার ব্যাবস্হা এখনই করেন!"
৬.
দবীর আজকের তাপমাত্রা মাপছে। একটু আগে দারুন একটা টার্কি রো্স্ট দিয়ে লান্ঞ্চ সেরেছে। নর্লিন আর যাই হোউক, রাধতে পারে দারুন! কদিন ধরে কিছু ব্যাপার বেশ আশা ব্যান্জ্ঞক। জঙ্গলের মধ্যবর্তি গাছগুলোর আলোড়ন বাতাসের দিকে নড়ছে না আর এগুলো সবুজ বর্নটা কেমন যেনো ফিকে হয়ে যাওয়া।
এটা দুদিন ধরে। যদিও শীত আসতে কিছুটা দেরী। কিছু দিন ধরে আরো বেশ কিছু ব্যাপার লক্ষনী্য, পাহাড়ের গায়ের ২০ ফুট নীচে কিছুটা সিজমিক এক্টিভিটি সাথে তাপমাত্রা বাড়তির দিকে। এই জঙ্গলে ওর হিসাবে ১০ টির মতো পাখির বাসা আছে, কিন্তু সেখানে পাখি নেই একটিও। সব টুইটগুলো দুই দিন ধরে লাপাত্তা!
এমনসময় নীচের দিকে দুটো গাড়ির থামবার আওয়াজ! দবির আসলে ওদের জন্য অপেক্ষা করছিলো।
ও নীচে নীচে নামতে দেখলো নর্লিন ওদের সাথে পরিচয় হচ্ছে! দবীরকে দেখেই সবচেয়ে লম্বা লোকটি বলে উঠলো,"দবীর সাহেব, কেমন আছেন? আমাদের ম্যাসেজটা কি পেয়েছেন? আমি মি. এন্ডারসন!বিএইচপি থেকে। "
নর্লিন সোফায় বসতে বসতে,"বিএইচপি মানে কি? এতো উদ্ভট নামের প্রজেক্ট কেনো? যাই হোউক, আপনাদের কাজ কতদূর?"
এন্ডারসন দবিরের দিকে তাকিয়ে বললো,"আমারা কি নর্লনকেও নিচ্ছি?"
দবীর এন্ডারসনকে বসতে দিয়ে সোফার দিকে এগিয়ে গেলো," এস করিমের ব্যাপারটা এত ঘোলাটে হলো কিভাবে?"
এন্ডারসন হাতে থেকে একটা খাম বের করে ওখানে থেকে কিছু স্যাটেলাইট স্নাপ শট বের করে বললো,"আমাদের বিশ্বাস এস করিম নিউট্রিনোর উপর যে কাজগুলো করছিলেন সেটা আসলে বড় কোনো অস্ত্রের পরীক্ষা নিয়ে, অথবা লোকটা কোনো রিএক্টর নিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু আজ যেটা শুনলাম উনি বেশ কিছু ডাকাতির সাথেও সম্পৃক্ততার সাথে নাম উঠে এসেছে। এই ছবিগুলো দেখেন, আপনাদের দেশে উত্তরান্ঞ্চলের যেদিকটায় লোহার পরিমান একটু বেশী তার ১৮০ ডিগ্রী বিপরীতে সে ১০০০ মে.টন স্ক্রাপ মেটাল ডাম্প করে ডিস্টিলড ওয়াটারে, তারপর ওখানে ১২০০০ ভোল্টের ইলেক্ট্রিসিটি দিয়ে ওখানে দুমাস আগে একটা এক্সপেরিমেন্ট চালায়। অনেকেই বলছেন সে নিউট্রিনোর হিসাব নিচ্ছেন আবার কেউ কেউ বলেছে সে আসলে একটা মাইক্রোওয়েভ গানের উপর কাজ করছে, ডিরেকশনাল হাইওয়েভ যা দিয়ে যে কোনো কিছু ফ্রাই করা সম্ভব!"
দবীর ছবিগুলোর দিকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে লাগলো, প্রথম দুটো একটা কূয়োর ছবির টপ ভিউ তারপরের টা একটা মাঠের ছবির এক্সরে।
এন্ডারসনের দিকে ওটা দেখিয়ে," এছবিটা তো সব হিসাব পাল্টে দিচ্ছে। ওকে কি আমরা পেতে যাচ্ছি? তার আগে এখানে কেউ দেখে আসার চেস্টা করেছে?!"
এন্ডারসন হাত ঘড়িটা দেখে বললো," পরশুদিন সে প্রথমে সুইডেনে আসবে, ফরসমার্কে। ওখানে সি১ রিএক্টরে কিছু স্যাম্পল নিয়ে সোজা বাটাভিয়ায়!"
দবীর হেসে বললো," ভালোই!"
এন্ডারসন ওর দিকে তাকিয়ে বললো," আপনার দুদিন আগেই যাবার কথা!"
দবীর বললো," স্মিথকে বলে দিন , আমি ফিউচার ল্যান্সিং নিয়ে কাজ করছি। সামনের সপ্তাহে আমরা বাটাভিয়ায় দেখা করবো। আর ড্রিলিং এর ব্যাপারে আমরা তখনই কাজ শুরু করবো।
নর্লিনের সাথে আমরা তখন কাজ শুরু করবো!"
"স্মিথ শুধু এটাই বলতে পাঠিয়েছে, যেটা আগে কখনোই সম্ভব হয়নি বা সেটা পরে কি হবে সেটার ছায়া এখন খুজে বেড়ানোটা পাগলামী!" এটা বলেই এন্ডারসন উঠে পড়লো! ৫মিনিটের পরই ঘর ফাকা! নর্লিন সোফায় বসেই দবীরের চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,"ফিউচার ল্যান্সিং কি?এটা কি স্কূপ নাকি হাইপ ? জানতে পারি?"
দবীর ওকে উপরে উঠে আসতে বললো। নর্লিন উপরে আসতেই বললো ," জেফ টোলাকসন নামের এক কানাডীয়ান একটা ব্যাপার নিয়ে কাজ করছিলো, সেটা হলো ভবিষ্যত থেকে আসলেই যদি অতীতে আসা যায় তাহলে কোয়ান্টাম ওয়ার্ল্ডে সেরকম একটা ম্যাকানিজক অবশ্যি থাকবে যেটা দিয়ে ভবিষ্যতের ব্যাপারটা এখন থেকে আচ করা যাবে। তখন থেকেই এটার উপর কাজ শুরু করেন, যদিও এর উপর ককনোই কোনো পাবলিকেশন বের করেননি। আমি সেটা নিয়েই কাজ শুরু করেছি, এবং দেখো আমর কাজটাও শেষের দিকে। একটা কথা আছে আনসারটেইনিটি থেকে আন প্রেডিক্টিবিলিটি।
এমন কিছু প্যারামিটার থাকে যেগুলো সবকিছুর সাথে খাপ খাইয়ে আমরা প্রেডিক্ট করতে পারি না। কারন আমরা ভবিষ্যত জানিনা। কিন্তু প্রকৃতির ভবিষ্যতের ব্যাপারটা আগেই আচ করার ক্ষমতা রাখে সেটা হয়তোবা স্বতঃস্ফূর্ত নয় যেমনটা পারে পশু পক্ষী। কিন্তু ফিজিক্স এটা গনিতের র্যান্ডম মডেলে ফেলতে পারেনি। র্যান্ডম সিকোয়েন্স নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে কিন্তু কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্সের এই র্যান্ডম প্রোবাবিলিটির র্যান্ডম ইভেন্টকে ছকে ফেলা এখনো সম্ভব হয়নি।
আমি এটার প্রাকটিক্যালি প্রয়োগ পরীক্ষা করছি, আর তুমি এখানে যত প্যারামিটারের আপ ডাউন দেখছো, এখানেই লুকিয়ে আছে আমাদের ভবিষ্যতের কথা! তোমাকে আমি আমাদের ভবিষ্যত দেখাচ্ছি!"
নর্লিন হা হয়ে গেলো! ছেলেটা কি বলছে তাকে?
চলবে....।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।