আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আন্দক জারকির কবলে 'বোচকা পার্টি'!! (নাউজুবিল্লাহ)

সামনে মহা লড়াই পেছনে মৃত্যু!

আসসালামু আলাইকুম ইয়া রহমাতুল্লাহ! আন্দক পাগলা চমকে ফিরে তাকায়। দেখে নুরানী চেহারার এক তরুণ যুবক তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। সঙ্গে বিভিন্ন বয়সী আরও সাত আটজন সারি বদ্ধভাবে বিনীত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে। আন্দক জারকি টিহাভাংনা হতে আগত এক নব্য পাগল। এর কথা আপনাদের আগেও বলেছি।

আন্দক পাগলা গ্রামের বাইরে রাস্তার পাশে গাছতলায় বাঁশের মাচার উপর বসে আছে। সময়টা পড়ন্ত বিকেল। আন্দক পাগলা এই সময় সাধারনত ঘরেই বসে থাকে । আজ কী কারণে যেন বাইরে মুক্ত পরিবেশে বসে আছে। আন্দক জারকি পাগল হলেও সাধারণ পাগলের মত নয়।

তাকে গ্রামের সবাই খুব সমীহ করে। দেখে পাগল বলে মনে হয়না। নাটক সিনেমার পাগলের মত ছেঁড়া কাপড় পরে লাঠি হাতে সে কাউকে তাড়া করে বেড়ায় না। তার সবই ঠিক আছে, বেঠিকের মধ্যে কেবল মাঝে মাঝে কী লেকচার মারে কিছু বোঝা যায়না। আন্দক পাগলা লোক খারাপ না।

!! যুবক আবার সালাম দেয় এবং হাত মেলানোর জন্য হাত বাড়িয়ে দেয়। জিজ্ঞেস করে ভাইজানের নামটা কী? -আন্দক জারকি। যুবক থমকে যায়। সাধারণত এই সময় তার বলার কথা মাশাল্লাহ কী সুন্দর নাম! কিন্তু আন্দক জারকি নাম শোনার পর মাশাল্লাহ কী সুন্দর নাম বলা কি ঠিক হবে? যুবক নিশ্চিত হবার জন্য বলে, জ্বী? -আমার নাম আন্দক জারকি। যুবক সামলে নেয়।

অপ্রস্তুত হয়না। জীবনে বহু রকম লোকজনের সাথে চলাফেরা করতে গিয়ে এই গুণটা রপ্ত হয়েছে। সে প্রশ্ন করে ভাইজান কী করেন? - কী করা যায় তাই ভাবছি! - যুবক ভাবে এই লাইনে কাজ হবেনা। যা বলার সরাসরি বলতে হবে। সে বলতে শুরু করে দেখেন ভাই আল্লাহ তায়ালা আমাদের দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন তার ইবাদত করার জন্য ব্ল্যা..ব্ল্যা.............. দেখেন তাঁর কত নিয়ামত ব্ল্যা..ব্ল্যা............. তিনি আমাদের হাত দিয়েছেন মুখ দিয়েছেন খাবার জন্য...........ব্ল্যা..ব্ল্যা............. কত সুন্দর ব্যবস্থা.... ধরেন আমাদের মুখ যদি সামনে না হয়ে পেছনে হত তাহলে হাত ঘুরিয়ে খাওয়া কত কষ্ট হত ব্ল্যা..ব্ল্যা....................... আল্লাহ তা করেন নাই আমাদের যেভাবে সুবিধা সেভাবে দিয়েছেন ব্ল্যা..ব্ল্যা.................. আলহামদুলিল্লাহ কত নিয়ামত................. আম জাম ...............ব্ল্যা..ব্ল্যা ............ব্ল্যা..ব্ল্যা আন্দক জারকির মাথায় একটা প্রশ্ন জাগে আচ্ছা আল্লাহর যদি এতই সুবিধা করার ইচ্ছা তাহলে আমাদের হাড্ডি গুলো লোহা দিয়ে বানাতে পারত ...হার ভাঙ্গার কোন ব্যাপারই থাকত না!!! তবে সে কোন প্রশ্ন করেনা।

সে ভাবল আজকে সব এড়ায়ে যাবে। যা বলবে সব শুনবে। - ব্ল্যা..ব্ল্যা............... তো ভাই আপনাদের মসজিদে আমরা আসছি ব্ল্যা..ব্ল্যা.............................মাগরিবের পর কিছু কথা বার্তা হবে ............আপনি আমাদের সাথে চলেন......................ব্ল্যা..ব্ল্যা - ইনশাল্লাহ যাব । আন্দক জারকির উত্তর। - না ভাই আপনি এখনি চলেন।

আন্দক জারকি ওঠেনা। যুবক নাছোড়বান্দা। ........দেখেন এক ওয়াক্ত নামাজের জন্য আশি হোকবা সময় দোযখে থাকতে হবে...ব্ল্যা..ব্ল্যা.............................. তা ভাই নামায পড়া কি দরকার না?....ব্ল্যা..ব্ল্যা..... মসজিদে যাওয়া কি দরকার না? - জ্বী জনাব দরকার! - তাহলে চলেন । - আপনারা যান আমি পরে যাব। - পরে আর কবে যাইবেন? মরলে? কবরে গেলে?...........ব্ল্যা..ব্ল্যা ............ব্ল্যা..ব্ল্যা.....................ব্ল্যা..ব্ল্যা যুবকের সাথে থাকা পঞ্চাশোর্ধ লুঙ্গি পড়া দাড়িওয়ালা একজন রেগে গিয়ে বললেন কথাগুলো।

যুবক কিছুটা অপ্রস্তুত। বোচকা পার্টির লোকেরা সাধারনত এই টোনে কথা বলেনা। তবে সাথের কয়েকজন ভাবে উচিৎ কথা হইছে! আন্দক পাগলার মনটা খারাপ হয়ে যায়। সে তো কারো সাতে পাঁচে নাই। তাহলে তাকে বাড়ি বয়ে এসে অপমান করে যাওয়ার মানেটা কী? তার পাগল সত্ত্বা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।

সে বিনীত ভাবে বলে দেখেন চাচাজান আমি কেন নামাযে যাই না শুনবেন? আমি নামাযে যাই না কারণ আমি মদ খেতে পছন্দ করিনা। দুধ , মধু ইত্যাদি খাই তবে এর জন্য নদী লাগবে বলে মনে করিনা। আম আমি গাছ থেকে পেড়ে খেতেই মজা পাই.......... সেখানে পেটের মধ্যে ঢুকে যাওয়া ...... আর এর জন্য প্রাণ ফ্রুটো তো আছেই। আর আমার গাঙ্গিনারপার যাওয়ার অভ্যাস নাই। (গাঙ্গিনারপার যাওয়া ব্যাপারটা ময়মনসিংহের লোকেরা ভালো বুঝবে!! তবে এখন আপনারও বুঝে যাওয়ার কথা এটা কোন জায়গা!!) আন্দক পাগলা কথা বোচকা পার্টি ভাল না বুঝলেও এটা বুঝে তাদের এখন এখান থেকে ভাগা উচিৎ.........।

(আন্দক পাগলা কথা গুলো বলতে পারলেও এই ভাষ্যকার জীবনে বোচকা পার্টির বহু অত্যাচার, কটু কথা সহ্য করেছে । আর খালি বলেছে ইনশাল্লাহ যাব। শীতের সকালে ঘুম থেকে ডেকে তুলে , বিকেলে নেট ব্রাউজিং থেকে তুলে , দুপুরে ......কতবার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে এই সব কথা শুনতে বাধ্য করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে.......... উফ!! একবার যদি আন্দক পাগলার মত বলতে পারতাম!!!! আজ আন্দক জারকির ঘটনা বলে দুধের সাধ ঘোলে মেটানো হলো ) আন্দক জারকির প্রথম গল্প: তাকদীরের অসারতা প্রমাণ ; বিফলে মুল্য ফেরত!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।