সামনে মহা লড়াই পেছনে মৃত্যু!
১.
ধানাই পানাই বাদ দেন। চলেন যাই আসল কথায়। কি বলেন আপনারা !
এইটুকু বলে আন্দক জারকি থামল। উপস্থিত জটলার লোকজন কোনো কথা বলে না। তারা জানে কথা বলা নিরর্থক।
আন্দক জারকি টিহাভাংনা হতে আগত এক নব্য পাগল। তার পাগলামির নমুনা ইতোমধ্যে তাদের অনেক দেখা হয়েছে। তবে উপস্থিত জনতা সরেনা। আন্দক পাগলার পাগলামি ব্যাপক চিন্তাশীল পাগলামি! সেই সাথে ব্যাপক বিনোদন। দেখা যাক ব্যাটা আজ কী করে।
আন্দক পাগলা গল্প বলা শুরু করল:
“ একটা কলেজ আসিল। গ্রামের কলেজ। ইন্টার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ। প্রাকটিকাল পরীক্ষা নিতে হইব। রসায়ন হইল, জীব হইল।
পদার্থ আর নেওয়া হয়না। কেডায় নিব। বিভাগীয় প্রধান গেছে গোফালগঞ্জ।
প্রিন্সিফাল পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ডেপুটি সাররে ডাইকা কয় মিয়াসাব উপায় কী? ডেপুটি সার উপায় কইতে পারে না। প্রিন্সিফাল কয় স্টুডেন কয়জন?
-সার ২৫ জন।
-ফাশ করব কয়জন?
-সার বেবাকতেই পাশ করব।
-তাইলে এক কাম করুইন। সময় কম । পরীক্ষা লওনের আর কাম নাই । একটা মার্শীট বানাইয়ালাইন।
আমি বোর্ডে পাডায়া দেই।
-আইচ্ছা সার।
- আর সবাইরে ভালা মার্ক ই দিবাইন । তয় একটু হুইছ কইরা।
ঝামেলা শেষ।
ছাত্রছাত্রীরা মামুর বাড়িত যাইব না কোচিং ও যাইব তাই লইয়া চিন্তা ভাবনা করতে আছে। এমন সম গোফালগঞ্জ তন পদার্থ বিভাগ সার আইয়া কয় এইডা কী অইল । সব বিভাগে পরীক্ষা অইল । আমার বিভাগে পরীক্ষা অইল না। এইডা হইতাম পারেনা।
পরীক্ষা লওন লাগব।
ডেপুটি কয় সার মার্কসীট পাডায়া দেওয়া হইছে।
-হউক! পরীক্ষা লওন লাগব। মার্কশীট গেছে যাক।
গোফালগঞ্জ থেকে আসছে।
তেজ আর কমেনা। প্রিন্সিফাল কয় আইচ্ছা নেন পরীক্ষা। তয় মার্শিট লইয়া ঝামেলা পাকাইয়ান না।
পরীক্ষা শুরু হল। পদার্থ স্যার একটা ভাষণ দিলেন।
তোমরা সবাই ভাল করে পরীক্ষা দাও। যেমন কাজ দেখাতে পারবা তেমন নাম্বার। যেহেতু তোমাদের ব্যবহারিক ক্লাস আগে নেওয়া হয় নাই। তাই আজ প্রথমে তোমাদের কিছু কাজ দেখিয়ে দেওয়া হবে। তারপর তোমাদের টেস্ট নেওয়া হবে।
আমি যা যা করতে বলব যেভাবে থাকতে বলব তাই করবা। তাহলেই নাম্বার। তবে মনে রাখবা তোমাদের নাম্বার কিন্তু দেওয়া হয়ে গেছে।
-সার নাম্বার যদি দেওয়া হইয়াই থাকে তাহলে আর এত কষ্ট কইরা লাভ কী?
-তোমরা তো আর জাননা কে কত পাইছ। আমাদের একটা হিসাব আছে।
যারে আমরা ভাল নাম্বার দিছি সে আজকেও ভাল করবা। যারে খারাপ দিছি। সে আজকেও খারাপ করবা।
রবিন মনে মনে ভাবে হিসাবের গুষ্ঠি কিলাই। অ্যাভাটার মুভিটা আইনা রাখছি ।
দেখবার পারি নাই। অহন গিয়া দেখি। নাম্বার যা পাওয়ার তো পাইছিই । এখন আর সান্ত্বনা পাওয়ার দরকার নাই।
রবিনরে পালাইয়া যাইতে দেইখা সবুজ কয় ওরে যাইসনা।
৭০ নম্বরের পরীক্ষা. . . .
রবিন আস্তে আস্তে বলে তুই যত ভাল পরীক্ষাই দিস । তোর নাম্বার কি বাড়ব? আর আমি যদি পালায়া যাই তাইলে আমার নাম্বার কি স্যারে কাটতে পারব। নাম্বার তো স্যারে পাঠায়া দিছে। তাইলে আর কষ্ট কইরা লাভ আছে?
সবুজ কয় স্যার যে কইল আমি বেশি নম্বর পাইয়া থাকলে আমার পরীক্ষা ভালা হইব.... তাই আমি ভালা পরীক্ষা দিয়া মনে করতে চাই আমি ভালা নম্বর পাইছি!!!!
আন্দক পাগলার গল্প বলা শেষ।
উপস্থিত জনতা গল্পের মাথামন্ডু কিছুই বুঝতে পারেনা!!
২. টীকা: এই গল্পটা মৌলিক না।
ভাব বস্তু ধার করা।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (স) দু'টি কিতাব হাতে নিয়ে বের হলেন এবং বললেন, তোমরা জান কি, এ দু'টি কিতাব কি? আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল ! জ্বী না। তবে যদি আপনি আমাদেরকে বলে দেন। তখন তিনি ডান হাতের কিতাবের প্রতি ইশারা করে বললেন, এটি বিশ্ব প্রতিপালকের পক্ষ হতে একটি কিতাব।
এতে সমস্ত জান্নাতবাসীর নাম এবং তাদের বাপ দাদার নাম ও বংশ পরিচয় রয়েছে। অত:পর তাদের সর্বশেষ ব্যক্তির নামের শেষে সর্বমোট সংখ্যা যোগ করা হয়েছে। সুতরাং কখনো এতে বৃদ্ধি করা হবেনা। এবং কখনো তাদের সংখ্যা কমানো হবেনা।
অত:পর তিনি বাম হাতের কিতাবটির প্রতি ইশারা করে বললেন, এতে সমস্ত দোযখবাসীর নাম রয়েছে, এবং তাদের বাপ দাদা এবং গোত্রের নামসমূহ রয়েছে।
অত:পর এদের সর্বশেষ ব্যক্তির নামের শেষে সর্বমোট সংখ্যা যোগ করা হয়েছে। সুতরাং কখনো এতে বৃদ্ধি করা হবেনা। এবং কখনো তাদের সংখ্যা কমানো হবেনা।
নবীর কথা শুনে তাঁর সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল ! তাহলে আমলের প্রয়োজনীয়তা কি? ব্যাপার যদি এরুপ চূড়ান্ত হয়ে থাকে । তখন তিনি বললেন, তোমরা সঠিকভাবে কাজ কর এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা কর।
কারণ , জান্নাতবাসীর অন্তিম কাজ জান্নাতবাসীর কাজের মতই হবে। পূর্বে সে যে কাজই করে থাকুক না কেন। এরপর রাসূলুল্লাহ (স) নিজের দু'হাতে ইশারা করলেন এবং কিতাব দুটি রেখে দিলেন। অত:পর বললেন,তোমাদের প্রভু বান্দাগণের কাজ (তাদের তাকদীর ) সম্পূর্ন করে দিয়ে অবসর হলেন। অতএব, এক দল জান্নাতে যাবে এবং আরেক দল জাহান্নামে যাবে।
(এ হাদীসটি ইমাম তিরমিযী (রহ: ) স্বীয় জামে তিরমিযীতে সংকলন করেন)
লেখকের কথা: উপরিউক্ত হাদীসটি আলিম শ্রেণীর পাঠ্যবই মেশকাত শরীফ থেকে হুবহু উদ্ধৃত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।