ওড়াওড়ির দিন(আগের পর্ব)
দেখতে দেখতে অনুষ্ঠানের দিন এসে গেল। প্যান্ডেল ঢাকা মাঠে দর্শক থৈ থৈ করছে। গমগম করছে চারপাশ। কিন্তু ওস্তাদের মার শেষ রাতে। রমরমা অনুষ্ঠানের মাঝে ও যে এভাবে সবাইকে ফাসিয়ে দেবে কল্পনাও করিনি।
অনুষ্ঠান যখন তুঙ্গে হঠাৎ তখন ওর এক ভাই ভীতসন্ত্রস্ত চেহারায় দৌড়ে এল আমার কাছে। তার চাউনি বিভ্রান্ত,বিস্ফোরিত। আপনাকে এখনই আসতে হবে। সুমন ভাই আত্মহত্যা করছে।
অনুষ্ঠান-মঞ্চ লাগোয়া ওদের বাসা।
ছুটতে ছুটতে গেলাম সেখানে। যাওয়ার পথেই ওর ভাইয়ের কাছে শুনতে পেলাম পুরো ঘটনা। জানালা দিয়ে কিছুক্ষণ অনুষ্ঠান দেখার পর হটাৎ ও দড়াম করে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। তারপর আগে থেকে তোষকের নিচে লুকিয়ে রাখা একটি লম্বা ধারালো ছুরির তীক্ষ মুখটা হৃদপিন্ড বরাবর দুই হাতে চেপে ধরে ভয় ধরানো গলায় হুমকি দিচ্ছে:"মোট দশ মিনিট"। মানে মোট দশ মিনিট সময় দিলাম।
এর মধ্যে গান গাওয়ার সুযোগ না পেলেএই ছুরি আমি বুকের মধ্যে আমূল ঢুকিয়ে দিচ্ছি।
ওর হুঙ্কারে বাড়িসুদ্ধ কান্না কাটির রোল পড়ে গেছে। কে কী করবে বুঝে পাচ্ছে না। ওর আব্বা আম্মা অনেক কাকুতি মিনতি করে ওকে দরজা খুলে বেরিয়ে আসতে বলেছে। কিন্তু ও অনড়।
আজ সে মরবেই। আর সত্যিই যে সে ঘটনা ও ঘটাতে যাচ্ছে তার প্রত্যক্ষদর্শীও এর মধ্যে পাওয়া গেছে। ওর এক ভাই ফ্ল্যাটের কার্নিশ বেয়ে ওর ঘরটার ভেতর উকি দিয়ে দেখেছে:মেঝের উপর দই পা দুদিকে ছড়িয়ে দুই হাতে বুকের ভিতর ছুরি ঠেকিয়ে সে দাড়িয়ে আছে। দৃষ্টি দেয়াল ঘড়ির দিকে। দশ মিনিট শেষ হলেই ছুরিটা আমূল ওর বুকে ঢুকে যাবে।
আমি পৌছাতেই ঘরের ভেতর থেকে ওর বুক কাপানো গর্জন কানে এল:'ছয় মিনিট!' মানে চার মিনট পেরিয়ে গেছে। আর মাত্র ছয় মিনিট। এর মধ্যে সুযোগ দেওয়া না হলে সেই ঘটনা নির্ঘাত ঘটে যাবে।
খবর পেয়ে পাশের ফ্ল্যাটের কিছু বাসিন্দা বাড়িতে ঢুকে ততক্ষণে হুলস্থুল শুরু করেছে। ওকে সবার ডাকাডাকি যখন চরমে সেই সময় ঘরে ভেতর থেকে আবার সেই ওর ভয় জাগানো হুঙ্কার:'পাচ মিনিট'।
ছেলেটার মা আর বোন বুক চাপড়ে একসঙ্গে হাউমাউ করে উঠল। বিশৃঙ্খলা উত্তেজনা যখন দুঃসহ সেইসময় জলদগম্ভির কন্ঠে আবার সেই বজ্রপাত:'চার মিনিট। '
ওর মা পুরো দিশেহারা হয়ে গেলেন। আলুথালু চুলে আমার সামনে প্রায় আছড়ে পড়লেন,আমার ছেলেটাকে বাচান। ও সত্যি বুকে ছুরি বসাচ্ছে।
নিরুপায়ের মত ঘরটার সামনে দাড়ালাম। চিৎকার করে বললাম,ছুরি ফেলে চলে এসো। তোমাকে অনুষ্ঠানে চান্স দেওয়া হয়েছে।
ঠিক দশ মিনিটের মাথায় দরজা খুলে বেড়িয়ে এল ও-লাশ হিসেবে নয়,বিজয়ী বীর হিসেবে। তারপর মঞ্চে যখন ও গান গাইল তখন উপস্থিত শ্রোতাদের মাঝে যে অভূতপূর্ব মাতম উঠল তা ওর পরিবারের মাতমের প্রায় হাজারগুণ।
ফলে ও লাশ না হলেও,পুরো লাশ হয়ে গেল আমাদের অতি কষ্টে আয়োজন করা সেদিনের জমজমাট বিনোদনরজনী।
আশা করি গল্পটা বলে বোঝাতে পেরেছি কেন এসব অনুষ্ঠানে'স্থানীয় শিল্পীদের' বাদ দেওয়া এত কঠিন। শ্রোতাদের যত অসহ্যই লাগুক, রাত পার হয়ে পরের রাত আসুক তবু সবাইকে চান্স দিতেই হবে। না হলে যে অগণিত আত্মঘাতের ঘটনা ঘটবে তা ঠেকাবে কে?দেখতে দেখতে অনুষ্ঠানের দিন এসে গেল প্যান্ডেল ঢাকা মাঠে দর্শক থৈ থৈ করছে। গমগম করছে চারপাশ।
কিন্তু ওস্তাদের মার শেষ রাত। রমরমা অনুষ্ঠানের মাঝে ও যে এভাবে সবাইকে ফাসিয়ে দেবে কল্পনাও করিন। অনুষ্ঠান যখন তুঙ্গে হঠাৎ তখন ওর এক ভাই ভীতসন্ত্রস্তচেহারায় দৌড়ে এল আমার কাছে। তার চাউনি বিভ্রান্ত,বিস্ফোরিত। আপনাকে এখনই আসতে হবে।
সুমন ভাই আত্মহত্যা করছে।
অনুষ্ঠান-মঞ্চ লাগোয়া ওদের বাসা। ছুটতে ছুটতে গেলাম সেখানে। যাওয়ার পথেই ওর ভাইয়ের কাছে শুনতে পেলাম পুরো ঘটনা। জানালা দিয়ে কিচুক্ষণ অনুষ্ঠান দেখার পর হটাৎ ও দড়াম করে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়।
তারপর আগে থেকে তোষকের নিচে লুকিয়ে রাখা একটি লম্বা ধারালো ছুরির তীক্ষ মুখটা হৃদপিন্ড বরাবর দুই হাতে চেপে ধরে ভয় ধরানো গলায় হুমকি দিচ্ছে:"মোট দশ মিনিট"। মানে মোট দশ মিনিট সময় দিলাম। এর মধ্যে গান গাওয়ার সুযোগ না পেলেএই ছুরি আমি বুকের মধ্যে আমূল ঢুকিয়ে দিচ্ছি।
ওর হুঙ্কারে বাড়িসুদ্ধ কান্না কাটির রোল পড়ে গেছে। কে কী করবে বুঝে পাচ্ছে না।
ওর আব্বা আম্মা অনেক কাকুতি মিনতি করেওকে দরজা খুলে বেরিয়ে আসতে বলেছে। কিন্তু ও অনড়। আজ সে মরবেই। আর সত্যিই যে সে ঘটনা ও ঘটাতে যাচ্ছে তার প্রত্যক্ষদর্শীও এর মধ্যে পাওয়া গেছে। ওর এক ভাই ফ্ল্যাটের কার্নিশ বেয়ে ওর ঘরটার ভেতর উকি দিয়ে দেখেছে:মেঝের উপর দই পা দুদিকে ছড়িয়ে দুই হাতে বুকের ভিতর ছুরি ঠেকিয়ে সে দাড়িয়ে আছে।
দৃষ্টি দেয়াল ঘড়ির দিকে। দশ মিনিট শেষ হলেই ছুরিটা আমূল ওর বুকে ঢুকে যাবে।
আমি পৌছাতেই ঘরের ভেতর থেকে ওর বুক কাপানো গর্জন কানে এল:'ছয় মিনিট!' মানে চার মিনট পেরিয়ে গেছে। আর মাত্র ছয় মিনিট। এর মধ্যে সুযোগ দেওয়া না হলে সেই ঘটনা নির্ঘাত ঘটে যাবে।
খবর পেয়ে পাশের ফ্ল্যাটের কিছু বাসিন্দা বাড়িতে ঢুকে ততক্ষণে হুলস্থুল শুরু করেছে। ওকে সবার ডাকাডাকি যখন চরমে সেই সময় ঘরে ভেতর থেকে আবার সেই ওর ভয় জাগানো হুঙ্কার:'পাচ মিনিট'।
ছেলেটার মা আর বোন বুক চাপড়ে একসঙ্গে হাউমাউ করে উঠল। বিশৃঙ্খলা উত্তেজনা যখন দুঃসহ সেইসময় জলদগম্ভির কন্ঠে আবার সেই বজ্রপাত:'চার মিনিট। '
ওর মা পুরো দিশেহারা হয়ে গেলেন।
আলুথালু চুলে আমার সামনে প্রায় আছড়ে পড়লেন,আমার ছেলেটাকে বাচান। ও সত্যি বুকে ছুরি বসাচ্ছে।
নিরুপায়ের মত ঘরটার সামনে দাড়ালাম। চিৎকার করে বললাম,ছুরি ফেলে চলে এসো। তোমাকে অনুষ্ঠানে চান্স দেওয়া হয়েছে।
ঠিক দশ মিনিটের মাথায় দরজা খুলে বেড়িয়ে এল ও-লাশ হিসেবে নয়,বিজয়ী বীর হিসেবে। তারপর মঞ্চে যখন ও গান গাইল তখন উপস্থিত শ্রোতাদের মাঝে যে অভূতপূর্ব মাতম উঠল তা ওর পরিবারের মাতমের প্রায় হাজারগুণ। ফলে ও লাশ না হলেও,পুরো লাশ হয়ে গেল আমাদের অতি কষ্টে আয়োজন করা সেদিনের জমজমাট বিনোদনরজনী।
আশা করি গল্পটা বলে বোঝাতে পেরেছি কেন এসব অনুষ্ঠানে'স্থানীয় শিল্পীদের' বাদ দেওয়া এত কঠিন। শ্রোতাদের যত অসহ্যই লাগুক, রাত পার হয়ে পরের রাত আসুক তবু সবাইকে চান্স দিতেই হবে।
না হলে যে অগণিত আত্মঘাতের ঘটনা ঘটবে তা ঠেকাবে কে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।